মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট, ২০২১

ইসলামি যুদ্ধ!

 

কোরানে জিহাদের আয়াত আছে প্রায় দেড়শতের বেশি [1] তার বিপরীতে শুধু শান্তি শব্দটি আছে ৭৬ বার। [2] কোন ধর্ম প্রচারকের নামে Military career নামে কোনো কোনো চ্যপ্টার পাওয়া যায় না। কিন্তু মুহাম্মাদের নামে প্রতিটি গবেষণায় পবিত্র যুদ্ধ নামে একটি অধ্যায় পাওয়া যায়। [3] তিনি তার সাহাবীদের যুদ্ধে যেতে আদেশ দিয়েছেন ৭৩টি, এবং নিজে যুদ্ধ নেতৃত্ব দিয়েছেন ২৭ টি। [4] [5] অনেকে বলে এই যুদ্ধগুলি আত্মরক্ষার। কিন্তু ঐতিহাসিকদের মতে কয়েকটি ছাড়া সব কয়টি ছিল অন্য সম্প্রদায়ের উপর অতর্কিত হামলা কিংবা ডাকাতির জন্য। [6] মুহাম্মদের পরবর্তী যেসব খলিফা এসেছেন তারা সবাই যুদ্ধ করেই ধর্ম প্রচার করেছিলেন, এবং তারা মুহাম্মদ থেকেও বেশ সফল ছিলেন। [7] আবার নিজেদের মধ্যেও যুদ্ধ করেছেন। মুহাম্মদের মেয়ে ফাতেমা মারা যায় প্রথম খলিফা আবু বকরের হাতে। [8] চারজন রাশেদুন খলিফার মাঝে তিনজন আততায়ীর হাতে খুন হয়েছেন। মুহাম্মদের স্ত্রী আয়েশা এবং মেয়ের জামাই আলীর মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল। [9] মুহাম্মদের সহচর মুয়াবিয়া খলিফা হওয়ার দাবীদার ছিল। আলীর কারনে হতে পারে নি, তাদের মধ্যেও যুদ্ধ হয়েছিল। [10] তার পুত্র ইয়াজিদও খলিফা হওয়ার যোগ্যতা রাখতো। যোগ্যতা অনুসারে সম্মান না পেয়েই কারবালার দুঃখজনক ঘটনার জন্ম দেয়। এইভাবে শুরু হয় প্রথম ফিতনা, অর্থাৎ ইসলামি প্রথম গৃহযুদ্ধ। [11] এসব কিন্তু মুহাম্মদের মৃত্যুর কিছু বছরের মধ্যেই হয়েছিল। ইতিহাস আলোচনা করলে দেখা যায় মুহাম্মদের মৃত্যুর পর থেকেই ক্ষমতার দখলের নাটক চলেছে। [12] এত কিছুর মূল সারসংক্ষেপ হল, ইসলাম কখনোই শান্তির ছিল না এবং মুহাম্মদও খুব ভালো মানুষ ছিল না। কোরান হাদিসে মুহাম্মদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আছে ৪৩ টি। [13] হাদিস অনুসারে মুহাম্মদের নামে অনেক কবি-সাহিত্যিক হত্যার অভিযোগ আছে। [14] মুহাম্মদের হাতে ধর্ষণের অসংখ্য রেফারেন্স পাওয়া যায়। [15] বাংলাদেশে ৪২ বছর পর যুদ্ধপরাধের বিচার হচ্ছে, মুহাম্মদের সময়ের গোত্রগুলো যদি এখন থাকতো তাহলে নিশ্চিত মুহাম্মদের নামেও যুদ্ধাপরাধের বিচার হতো। ইসলাম অর্থ শান্তি, মুসলমান অর্থ শান্তির বার্তা বাহক। মুসলমানরা নিজেদেরকে শান্তির দাবী করে, অথচ মুসলমানদের বলতে হয়, I am Muslim, But I'm not a Terrorist. এই কথা কিন্তু অন্য কোন ধর্মের মানুষদের বলতে হয় না। কেন বলতে হয় জানেন? কারন ইসলাম ধর্ম জন্ম থেকেই হচ্ছে হত্যা আর সন্ত্রাসীর ধর্ম। এমনকি হাদিসে মুহাম্মদ নিজেই বলেছেন, "আমি সন্ত্রাসের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে এনেছি।" [16]

1. http://www.answering-islam.org/Q…/Themes/jihad_passages.html 
2. https://en.wikiquote.org/wiki/Quran_on_peace
3. https://en.wikipedia.org/wiki/Military_career_of_Muhammad
4. https://en.wikipedia.org/wi…/List_of_expeditions_of_Muhammad
5. https://en.wikipedia.org/wi…/List_of_expeditions_of_Muhammad
6. http://www.thereligionofpeace.com/…/myths-mu-self-defense.h…
7. https://en.wikipedia.org/wiki/Rashidun_Caliphate
8. https://www.youtube.com/watch?v=RsieVC8NhU4
9. https://en.wikipedia.org/wiki/Battle_of_the_Camel
10. https://www.youtube.com/watch?v=nTpJDbQkwPc 
11. https://en.wikipedia.org/wiki/First_Fitna
12. https://en.wikipedia.org/wiki/Succession_to_Muhammad 
13. http://wikiislam.net/…/List_of_Killings_Ordered_or_Supporte…
14. http://www.answering-islam.org/Aut…/Arlandson/dead_poets.htm
15. http://www.thereligionofpeace.com/muhammad/myths-mu-rape.htm
16. http://www.quranexplorer.com/…/Had…/bukhari/004.052.220.html

বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯

ভিপি নুরের চাতুরতা এবং মিথ্যাচার


সংখ্যালঘু শব্দ মানেই নির্যাতনের শিকার। মুল অপরাধীদের আড়াল করে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হয় যে কোন দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীরাই। আর শুরু হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা।

সাম্প্রদায়িকতা শব্দটির আক্ষরিক অর্থ সম্প্রদায়গত চিন্তা। সেই সম্প্রদায় হতে পারে ভাষাভিত্তিক, ভূখ-ভিত্তিক, গোত্র বর্ণভিত্তিক কিংবা আদিবাসীভিত্তিক। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, উপমহাদেশে সব কিছু ছাপিয়ে ধর্ম পরিচয়ই সম্প্রদায়ের সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ধর্মের ভিত্তিতে সাতচল্লিশে ভারতবর্ষ ভাগ হয়ে ভারত পাকিস্তান নামে দুটি দেশ হয়েছে। আবার একাত্তরে দেশের মানুষ সেই পাকিস্তানকে নাকচ করে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ যার প্রথম সংবিধানে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল সংগঠন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

স্বাধীন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম আদমশুমারিতে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা ছিল ১৩ দশমিক (১৯৫১ সালের আদমশুমারিতে ২২ শতাংস) শতাংশ, যা এখন কমে হয়েছে সাড়ে শতাংশ। যদিও কিছু চতুর লোক শতকরা হিসাব লুকিয়ে জনসংখ্যার হিসাব দিয়ে বুঝাতে চায় যে, দেশে সংখ্যালঘুর সংখ্যা কমে নাই বরং বেড়েছে। কিন্তু তারা এইটা বলে না কোটি জনগন যখন ১৮ কোটি হয়ে যায় তখন সংখ্যালঘুর পরিমান কি একই থাকবে নাকি তার থেকে একই অনুপাতে বাড়ার কথা। যেখানে মুসলিম জনসংখ্যা দেড় গুন বৃদ্ধি পেয়েছে সেখানে ১৫-২০ লাখ মোট সংখ্যালঘু বৃদ্ধি পাওয়ার হিসাব দেখিয়ে বুঝাতে হিন্দু জনসংখ্যা কমে নাই বরং বেড়েছে। এই দেশে সংখ্যা লঘু নির্যাতন হয় না।সবাই মিলেমিশে থাকে।

কিন্তু বাস্তব চিত্র কিন্তু ভিন্ন কথা বলে। যাই হোক, অনেকদিন পর আবার সংখ্যালঘু নিয়ে লিখতে বসলাম। যদিও এইসব লিখালিখি করে কোন লাভ নাই।কারণ, দিনশেষে সবাই বলবে বাংলাদেশে কোন সংখ্যা লঘু নির্যাতন হয় না।যে প্রসঙ্গে লিখা শুরু, গতকাল (১৭/১২/২০১৯) ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর ভারতের বিতর্কিত মুসলিম বিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইন এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে রাজু ভাস্কর্য চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল সংহতি সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন। যা অবশ্যই যুক্তিগত এবং ন্যায়।

কিন্তু সেই সমাবেশেমুক্তিযোদ্ধা মঞ্চনামে সংগঠনের সাথে কথা কাটাকাটি এবং এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির পর  ডাকসু ভিপি নুর তার বক্তব্য প্রকাশ করে এবং ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবং বর্তমান সরকার, ছাত্রলীগ, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ সংগঠনগুলার বিরুদ্ধেও কথা বলে।সেগুলা কথার সাথে অনেক মত বিরোধ থাকতে পারে অনেকের এবং কি আমারও। তবে তার এই সংহতি সমাবেশটা যে কারণে তার প্রতি পূর্ণসমর্থন নিয়েই তার গতকালের লাইভ ভিডিও দেখতেছিলাম।
কিন্তু তার ভিডিওর এক পর্যায়ে এসে সেও রাজনৈতিক নেতাদের মতোই মিথ্যা দিয়ে শুরু করে দিলো। সে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে নিজ দেশের সাম্প্রদায়িকতাকে অস্বীকার করে দাবী করে, “অথচ বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে সম্প্রতির একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।এখানে হিন্দু মুসলিম সবাই ভাই ভাই।আর ভারতে এনআরসির মাধ্যমে মুসলিমদের নির্যাতিত করে জাতিগত হত্যার চেষ্টা চলছে।

আমি নুরের এই কথার সাথে একমত হতে গিয়েও এক মত হতে পারলাম না।কারণ সে ভারতের সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা বলতে গিয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনকে অস্বীকার করেছে। তার মানে বুঝতে অসুবিধা হয় না, এদের চেতনা, এদের বিবেক শুধু তখনই জাগ্রত হয় যখন মুসলিমরা নির্যাতিত হয় কিন্তু একজন বিবেকবান, মানবিক এবং অসাম্প্রদায়িক মানুষ সবসময় ন্যায়ের পক্ষে এবং ধর্ম জাতি গোষ্ঠীর উর্ধ্বে নির্যাতনের পক্ষে কথা বলবে। কিন্তু নুর অতীতেও যেমন সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে চুপ থেকেছে এবং উনার পক্ষপাতিত্ব খুবই স্পষ্ট। সামনে আরও ক্লিয়ার করবো। কিন্তু তার আগে একবার সংখ্যা নির্যাতন, হামলা গুলা একটু মনিয়ে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করানো যাক।


আমি স্বাধীনতার আগে ফিরে যাবো না তবে স্বাধীনতার পর থেকেই শুরু করার চেষ্টা করবো। যদিও একটা লিখা দিয়ে সব কিছু দেখানো কিংবা বুঝানো যাবে না। তবে কিছুটা হলেও চেষ্টা করবো।

স্বাধীনতার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ১৯৭২ সালের দুর্গাপূজার সময় ঢাকা নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একযোগে পূজামণ্ডপ এবং মন্দিরে হামলা ভাংচুর শুরু হয়। যার ধারাবাহিকতায় এখনো চলছে। সেটার পরিমান কম আর বেশী , কিন্তু কোন বছরই এর বিপরীত কিছু ঘটে নাই।যা পত্রিকা খুললেই বুঝা যায় পূজার মাস গুলোতে।তাছাড়া সারা বছর মন্দির হিন্দু বাড়িতে ছোট খাটো কোন না ঘটনা ঘটেই চলছে। আরও একটা কথা বলা বাহুল্য, সংখ্যালঘু শব্দ মানেই কিন্তু হিন্দুরা না। বাংলাদেশে মুসলিম ব্যতীত যাদেরই বসবাস তারাই সংখ্যালঘু।

১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনের পর ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলা শুরু হয়। আর তখন থেকেই মূলত হিন্দুদের বড় একটা অংশ স্বাধীনতার পর দেশ ত্যাগ শুরু হয় নির্যাতন, হামলা হাত থেকে বাচার জন্য। এখানে আমি হিন্দুদের দেশ ত্যাগ নিয়েও বলবো না তবে সাম্প্রদায়িক হামলা সম্পর্কে বলবো (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল বারকাত এর মতে, ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর প্রতিদিন গড়ে ৬৩২ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী দেশ ছাড়ছেন)

স্বাধীন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর মোটা দাগে হামলার উদযাপন হয় ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদের আমলে ভারতের বাবরী মসজিদের জের ধরে। এরপর থেকেই সাম্প্রদায়িক হামলা যেন তীব্র হতে শুরু করে। কিন্তু ১৯৯৬ সালের পর আবার কিছুটা শীথিল হয়। তবে সকল সাম্প্রদায়িক হামলার  রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছিল ২০০১ সালে  বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি ইসলামি দল জামাত ক্ষমতায় আসার পরপরই। এসব নারকীয় ঘটনাবলী বন্ধে কোনো প্রকার পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে তৎকালীন চারদলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর টানা পাঁচ বছর অত্যাচার, নির্যাতন হালমা অব্যাহত রাখে। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা ঘোষিত হলে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের মাত্রা কিছুটা হ্রাস পায়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠন করলে তাদের উপর নির্যাতন সাময়িকভাবে বন্ধ হলেও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি।

২০১১ ২০১২ সালের বিভিন্ন সময়ে চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, বাগেরহাট সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিন্দুদের উপর নানা প্রকার হামলা হয়। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে কক্সবাজার চট্টগ্রামের বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা, ভাংচুর অগ্নিসংযোগ করা হয়। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরাও হামলা থেকে রেহাই পায়নি। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অন্যতম যুদ্ধাপরাধী দুর্ধর্ষ কুখ্যাত দেইল্যা রাজাকারের ফাঁসির রায় ঘোষিত হওয়ার পর সংখ্যালঘুদের উপর দেশব্যাপী একযোগে সবচেয়ে বড় হামলা হয়।

২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসির নগরে ব্যাপকভাবে হিন্দুদের মন্দির ঘরবাড়িতে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করা হয়।
২০১৬ চলতি বছর জুড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্বিচারে হামলার খবর বারবার এসেছে গণমাধ্যমে। উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোর মধ্যে ছিল; পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে যজ্ঞেশ্বর রায় হত্যা, সাতক্ষীরার আশাশুনিতে ১০০ হিন্দু পরিবারকে গ্রামছাড়া করা, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ৭০ বছরের সাধু পরমানন্দ খুন, কক্সবাজারে হিন্দুদের বাড়িঘর মন্দির ভাঙচুর, ঝিনাইদহে হিন্দু পুরোহিত হত্যা, পাবনায় আশ্রমের সেবায়েৎকে হত্যা, মাদারিপুরে কলেজশিক্ষককে হত্যা চেষ্টা, যশোরে সেবায়েতের লাশ উদ্ধার, গাজীপুরে পুরোহিতকে খুনের চেষ্টা, বগুড়ায় পুরোহিত হত্যা, সাতক্ষীরা, কিশোরগঞ্জ রংপুরে হত্যার হুমকি ঢাকায় রামকৃষ্ণ মিশনে ধর্মপ্রচারে বাধা দেওয়ার ঘটনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে উদ্দেশ্য মূলক ভাবে কাবার শরীফের উপর শিবের মূর্তির ফটোশপ করে হিন্দু পাড়াতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ।

২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে -৯৮ জন সংখ্যালঘু হত্যা করা হয়েছে , ১০০৯ জনকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে, ১৮ জনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে, ২৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, ২২জন নিখোঁজ রয়েছেন , ২০৯টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে, ৩৬৬টি মন্দিরে পূজা বন্ধ করা হয়েছে , ৩৮ জনকে অপহরণ করা হয়েছে, ৩৫৭ জনকে জখম করা হয়েছে, ৯৯জনকে চাঁদাবাজি-মারধর আটকে রেখে নির্যাতন, ১৬৫টি লুটপাটের ঘটনা , ১৩টি বসতঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে, ৮৬টি সম্পত্তি দখলের ঘটনা ঘটেছে, ৬১টি ভূমি দখল, ২১০টি উচ্ছেদে ঘটনা ঘটেছে, ৩২৬টি উচ্ছেদের তৎপরতার ঘটনা ঘটেছে, ৩৪৩১টি উচ্ছেদের হুমকি, ৭১১টি দেশ ত্যাগের হুমকি, ১৪১টি মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, চুরি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, ,৩২৮ বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, চুরি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে , জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত বা ধর্মান্তরকরণের চেষ্টা এক হাজার ২৫১টি। সব মিলিয়ে চলতি বছর ১৫ হাজার ৫৪টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। সূত্র

তাছাড়া প্রায়ই সোস্যাল মিডিয়াতে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা বানোয়াট প্রচারণার শিকার হচ্ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেকেই। অন্যদিকে, পত্রপত্রিকার এবং ইন্টারনেটে বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যাঘলুদের জমিজমা দখল এবং ঘরবাড়ি ভাংচুর অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের অত্যাচার নির্যাতনের খবর প্রকাশ হতে দেখা যায়।

২০১২ সালে কক্সবাজারে রামুর এক বৌদ্ধ পল্লীতে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর পোষ্ট দেবার অভিযোগ তুলে হামলা চালিয়ে বাড়িঘরে মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল।

২০১৩ সালে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বনগ্রাম বাজারে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে অর্ধশত হিন্দু বাড়িঘর মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করা হয়।

০১৬ সালের ২৯শে অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে অনেকটা একই কায়দায় একটি হিন্দু পল্লীতে হামলা চালানো হয় একই ধরণের অভিযোগ তুলে।
২০১৯ সালেও ভোলায় এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে অক্টোবর মাসে। এরকম ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে সাম্প্রদায়িক হামলা করার জন্য।কিন্তু প্রশাসন কঠোর থাকার জন্য সাম্প্রদায়িকতা এবং উস্কানি কিছুটা এড়ানো গেলেও অনেক সময় যায় নাই। বলা বাহুল্য, এই সবগুলা ঘটনার পিছনেই মুসলিমদের ষড়যন্ত্র ছিলো।যা তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রমানিত।

এখন আপনারা বলতে পারেন বেশীর ভাগই রাজনৈতিক কারণেই হয়েছে। সাধারণ মুসলমানদের তেমন কোন দোষ নাই বেশীর ভাগ সময়ই রাজনৈতিক ভাবেই সাধারণ মুসলিমদের উস্কিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি এব্যাপারে দ্বিমত পোষন করবো না। ঠিক ভারতেও রাজনৈতিক কারণেই মুসলিমরা আজ নির্যাতিত হচ্ছে। কিন্তু ভারতের মুসলিম নির্যাতনের পর অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষরাই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছে এবং করে। তারা অস্বীকার করে না , রাজনৈতিক নেতাদের মতো। আপনাদের মনে আছে কি না জানিনা, তবে মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা যেতেই পারে। কয়েক বছর আগে যখন একজন মুসলিমের ঘরে গরু মাংস পাওয়ার অপরাধে পিটিয়ে হত্যা করেছিলো উগ্র হিন্দুরা তখন কি অসাম্প্রদায়িক চেতনার হিন্দু ছাত্র ছাত্রী, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবিরা গরুর মাংস খেয়ে রাস্তায় প্রতিবাদ করেছিল। তারা কিন্তু অস্বীকার করে নাই ভারতে কোন সাম্প্রদায়িক হামলা হয় না কিংবা মুসলিমরা বৈষম্যের স্বীকার হয় না।
অন্যদিকে ভিপি নুর রাজনৈতিক নেতাদের মতো করেই সুন্দরভাবে বাংলাদেশের  সংখ্যালঘু নির্যাতনকে অস্বীকার করলো। কারণ , সে চতুর এবং ভন্ড। সে খুব ভালো করেই জানে এবং বুঝে কোনটা পাবলিক খাবে আর কোনটা খাবেনা। এর বড় একটা কারণ এদেশের বড় একটা অংশ ভারত বিরোধী।

এখন মনে হচ্ছে আমি ভারতের দালাল তাই না? দাড়ান ভাই! ব্যাখ্যা করছি সমস্যা নাই। নুর নিজেই যে একটা সাম্প্রদায়িক তার বড় প্রমান হলো সে এদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন অস্বীকার করেই প্রমান করলো। আজ সে ভারতের মুসলিমদের যেমন চিন্তিত মনে হচ্ছে আপত দৃষ্টিতে এবং বড় গলায় যেভাবে বললো প্রতিটা নির্যাতনের বিপক্ষে তারা রুখে দাঁড়াবে। কিন্তু সে জন পরিচিত পাওয়ার পর থেকে যতগুলা সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে তার একটাতেও সে কোন প্রতিবাদ এবং কথা বলে নাই। সে নাসিরন নগর বলেন আর ভোলা কিংবা সাওতাল পল্লীতে হামলার কথা। ধর্মীয় এবং সংখ্যালঘু সাম্প্রদায়িক  হামলা নির্যাতনের বিপক্ষে কোন কথা বলে নাই। তাও আবার নিজ দেশের নিজ মানুষের উপর আক্রমনের। কারণ সে খুব ভালো করেই জানে এবং বুঝে এইসব বিরুদ্ধে বলা মানে নিজের পাছায় নিজে বাশ দেওয়া। কারণ সে নিজের লাভের জন্যই এইসব করছে আর মানুষের সামনে মূলা ঝুলিয়ে দিচ্ছে।

কি বিশ্বাস হচ্ছে না আমার কথা? হবেও না। কারণ আপনারাতো তাকে জাতীয় বীর বলে মনে করেন এখন

তাহলে আর একটু অপেক্ষা করেন, দেখুন মুসলিমদের বোকা বানিয়ে কিভাবে সে রাজনৈতিক নেতাদের মতোই কৌশল বেছে নিয়েছে। সে মিয়ানমারের মুসলিম নির্যাতন সম্পর্কেও বললো বিডিওতে। কিন্তু  সে পাকিস্তান বেলুচের উপর যে আক্রমন এবং গনহত্যা চালাচ্ছে তা নিয়ে কোন দিন কোন কথা বলে নাই। সে সৌদির আগ্রাসন নিয়ে বলে নাই। কিন্তু সে ভারতে মুসলিম নির্যাতন, কাশ্মীরের ভারতের আগ্রাসন, কিংবা সেইভ গাজা এইগুলাতে তাকে যতোটা সরব দেখা যায় ঠিক অন্যদের ব্যাপারে সে একদমই নিশ্চুপ। তার একটা বড় কারণ সে খুব ভালোভাবেই বুঝেই এবং জানে মানুষ কোনটা হজম করবে আর কোনটা করবেনা।

সে যে শুধু সাধারণ মানুষকে বোকা বানাচ্ছে তাও না কিন্তু। সে বরং বড় বড় রাজনৈতিক দলকেও বোকা বানিয়ে তাদের কাছে প্রতিবাদী কন্ঠ হিসাবে পরিচিত লাভ করছে। অতীতের এমন অনেক কিছুই বুঝা গেছে। যদিও চোখে টিনের চশমা পড়া থাকলে বুঝা যাবে না। তারপরেও এই গতকালের ভিডিওর জের ধরেও যদি বলি, তাহলেও দেখেন সে আবরার হত্যা নিয়ে বললো। আবরার ভারতের বিপক্ষে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে! অথচ তাকে মারার প্ল্যান করা হয়েছে আগেই যা তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রমানিত।অন্যদিকে পাবলিক যেহেতু তদন্তের আগেই এই ডোজ খেয়ে ফেলছে সেহেতু এটা বলে সে গ্রহনযোগ্যতা বাড়াচ্ছে। শুধু তাই না, সে ভিডিওতে আরও বলে এই মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ ছাত্রদলের উপরেও হামলা করে। এই কথাটা আপতত দৃষ্টিতে স্বাভাবিক মনে হলেও সে তার গ্রহনযোগ্যতা বাড়ানোর জন্যই এইসব করছে।

তাছাড়া সে বারবার বললো, তার হাত ভেঙ্গেছে যদিও আঙ্গুল কিন্তু  আঙ্গুল হাত যাই হোক ,আপনারা ভিডিওর শুরুতেই যদি দেখেন তাহলে দেখবেন সেখানে দুই পক্ষেরই হাতাহাতি হয়েছে।এবং নুরুকেও সেখানে লাথি ঘুষি দিতে দেখা যায় ।এইটা অস্বাভাবিক না বরং স্বাভাবিক। আর সে যেভাবে আঙ্গুল দেখাচ্ছিলো যে ভাঙ্গছে কিন্তু ভাঙ্গা আঙ্গুল সে আবার সুবিধামতো নাড়াচ্ছেও। পারবেন আপনার ভাঙ্গা আঙ্গুল নাড়াতে?

কিন্তু এইসব যে নাটক তা বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। কারণ সে খুব ভালো করেই জানে কিভাবে পাবলিকের সিম্প্যাথী নিতে হয় এবং গ্রহন যোগ্যতা বাড়াতে হয়।সেই সাথে মানুষকে বোকা বানিয়ে নিজে লাভবান হওয়া যায়।