শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬

সংখ্যালঘু শব্দ মানেই নির্যাতনের শিকার (২০১৬) !!!

সংখ্যালঘু শব্দ মানেই নির্যাতনের শিকার। মুল অপরাধীদের আড়াল করে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হয় যে কোন দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীরাই। আর শুরু হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা।

সাম্প্রদায়িকতা শব্দটির আক্ষরিক অর্থ সম্প্রদায়গত চিন্তা। সেই সম্প্রদায় হতে পারে ভাষাভিত্তিক, ভূখ-ভিত্তিক, গোত্র ও বর্ণভিত্তিক কিংবা আদিবাসীভিত্তিক। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এ উপমহাদেশে সব কিছু ছাপিয়ে ধর্ম পরিচয়ই সম্প্রদায়ের সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ধর্মের ভিত্তিতে সাতচল্লিশে ভারতবর্ষ ভাগ হয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি দেশ হয়েছে। আবার একাত্তরে এ দেশের মানুষ সেই পাকিস্তানকে নাকচ করে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ যার প্রথম সংবিধানে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

বাংলাদেশে প্রতি বছরই উৎসব মূখর ভাবে নির্যাতন চালানো হয় সংখ্যালঘুদের উপর। কখনও জমি দখল, কখনও ধর্ষণের পরে জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণ, কখনও কখনও মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর, কিংবা চাঁদা আদায়ের মতো ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়, কখনও ভিটেমাটি ছাড়া এমনকি দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল বারকাত এর মতে, ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর প্রতিদিন গড়ে ৬৩২ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী দেশ ছাড়ছেন।

স্বাধীন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম আদমশুমারিতে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা ছিল ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ, যা এখন কমে হয়েছে সাড়ে ৮ শতাংশ। গবেষকেরা বলছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ৩০ বছর পর বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের কাউকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে।

স্বাধীন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর মোটা দাগে হামলার উদযাপন হয় ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদের আমলে ভারতের বাবরী মসজিদের উপর হামলার গুজব ছড়িয়ে দিয়ে।মানে বলতে পারেন,কুপ পরে ভারতের সংখ্যালঘুর উপর আর লাশ পড়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের। তখন আওয়ামী লীগ-বিএনপি মিলিত হয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলো বাংলাদেশী সংখ্যালঘু নির্যাতনের।কিন্তু সেই আবার পুরুনো বাবরী মসজিদের গুজব কাটতে না কাটতেই যখন সত্যি সত্যি বাবরী মসজিদের ঘাড়ে কুপ পড়ে ভারতীয় সংখ্যালঘু মুসলিমদের লাশ পরলো ঠিক তখনই তার জের ধরে বাংলাদেশী বৌদ্ধ এবং হিন্দু সংখ্যালঘুদের লাশের সাথে সাথে সৎকারও সম্পন্ন করা হলো।কিন্তু এই সহিংসতা চলাকালে রাজনৈতিক দল আওয়ামী-লীগ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিল।১৯৯০ সাল এবং ১৯৯২ সালের ঘটনা রাজনৈতিক দলের চরিত্র একটু খেয়াল করে মনে রাখবেন।

এর পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন,মন্দির,হিন্দু বাড়িঘর,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস শুধু আনুপাতিক হারে অতিক্রমই করেছে।তবে হিন্দু নারী ধর্ষণের অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছিল ২০০১ সালে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি ও ইসলামি দল জামাত ক্ষমতায় আসার পরপরই।তার একমাত্র কারণ হলো বাংলাদেশী হিন্দুরা আওয়ামী-লীগের একনিষ্ঠ ভোট ব্যাংক।

এরপর আরেকটি বড়ধরনের হিন্দু নির্যাতন শুরু হয় ২০১৩ সালে। মুক্তিযুদ্ধের মানবাতা বিরোধী অপরাধে মিরপুরের কসাই খ্যাত কাদের মোল্লার প্রত্যাশিত ফাঁসির রায় না পেয়ে বাংলাদেশের লক্ষ তরুন যখন জমায়েত রাজধানী ঢাকার শাহবাগে।ঠিক তখনই ইসলামি দল জামাত এবং প্রধান বিরধী দল বিএনপি মানুষের দৃষ্টি ঘুরিয়ে নিতে আর ক্ষমতার সিঁড়ি হিসেবে আবারও বেছে নেয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি জানোয়ার বাহিনী সদস্যরা এবংরাজাকার বাহিনী জাতিগত নির্মূলীকরণ এর খেলায় নেমেছিল ঠিক তেমনি করে ১৯৭১ সালের মানবতা বিরোধী অপরাধের শাস্তি বিঘ্নিত করার জন্য সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, ধর্ষন, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা, মন্দির-প্রতিমা ভাঙচুর সবই।যা ছিলো ১৯৭১ সালের অনুকরণেই সংখ্যালঘু হিন্দু নিধন।

                                      

এরপর ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের পর আবার শুরু হয় সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতন যেখানে কিছু জায়গাতে শাসকদল আওয়ামীলীগের লোকজনও যে জড়িত ছিল তার স্পষ্ট প্রমান রয়েছে।আর এখান থেকেই শুরু হলো আওয়ামী-লীগের সংখ্যালঘু নির্যাতন,হামলা,উচ্ছেদ,ভূমিদখল থেকে সব ধরণের উগ্রতা।

অথচ সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়কে সব সময় বুঝানো হয় বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় এলে অবস্থা আরও খারাপ হবে। আর আওয়ামিলীগই একমাত্র দল যারা তাদের সুরক্ষা দিতে পারে। এই তথা কথিত সুরক্ষার আশায়ই স্বাধীনতার পর থেকেই সংখ্য লঘু সম্প্রদায় আওয়ামিলীগের ভোট ব্যাংক হিসাবে ব্যাবহার হয়ে আসছে। প্রকৃত পক্ষে হিন্দু সম্পত্তি দখল আর লুটপাটে আওয়ামিলীগ নেতা-কর্মীরাই এখন অগ্রগামী।

এদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নতুন কোন ব্যপার না।আর এই ঘৃণ্য বিষয় নিয়ে সরকারের উদাসিনতাও নতুন না।তবে, বিএনপ-জামাতের আমলে সংখ্যালঘু নির্যাতন ছিল স্বাভাবিক ঘটনার মত হিন্দু কিংবা সংখ্যালঘুদের।তাদের ধারণাই ছিলো আওয়ামী-লীগ ব্যতীত যেকোন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসা মানেই তাদের উপর কারণে অকারণে নির্যাতন হতে পারে এবং তাদের দেশ ত্যাগ করে পাশের দেশ ভারতে আশ্রিত হতে হবে। সংখ্যালঘুরা যাদের চোখে একটু হলেও ভরসা দেখতে পেত সেই বহুল পরিচিত অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিকদল আওয়ামী-লীগ সরকার কি করছে তা একটু চোখ বুলিয়ে দেখা উচিত শুধুমাত্র ২০১৬ সালের কর্মকাণ্ড! যার সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী রাজনৈতিক এমপি-মন্ত্রী-নেতারাই জড়িত প্রায় সকল ক্ষেত্রে।

চলতি বছর জুড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্বিচারে হামলার খবর বারবার এসেছে গণমাধ্যমে। উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোর মধ্যে ছিল; পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে যজ্ঞেশ্বর রায় হত্যা, সাতক্ষীরার আশাশুনিতে ১০০ হিন্দু পরিবারকে গ্রামছাড়া করা, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ৭০ বছরের সাধু পরমানন্দ খুন, কক্সবাজারে হিন্দুদের বাড়িঘর ও মন্দির ভাঙচুর, ঝিনাইদহে হিন্দু পুরোহিত হত্যা, পাবনায় আশ্রমের সেবায়েৎকে হত্যা, মাদারিপুরে কলেজশিক্ষককে হত্যা চেষ্টা, যশোরে সেবায়েতের লাশ উদ্ধার, গাজীপুরে পুরোহিতকে খুনের চেষ্টা, বগুড়ায় পুরোহিত হত্যা, সাতক্ষীরা, কিশোরগঞ্জ ও রংপুরে হত্যার হুমকি ও ঢাকায় রামকৃষ্ণ মিশনে ধর্মপ্রচারে বাধা দেওয়ার ঘটনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে উদ্দেশ্য মূলক ভাবে কাবার শরীফের উপর শিবের মূর্তির ফটোশপ করে হিন্দু পাড়াতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ।

“২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে -৯৮ জন সংখ্যালঘু হত্যা করা হয়েছে , ১০০৯ জনকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে, ১৮ জনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে, ২৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, ২২জন নিখোঁজ রয়েছেন , ২০৯টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে, ৩৬৬টি মন্দিরে পূজা বন্ধ করা হয়েছে , ৩৮ জনকে অপহরণ করা হয়েছে, ৩৫৭ জনকে জখম করা হয়েছে, ৯৯জনকে চাঁদাবাজি-মারধর ও আটকে রেখে নির্যাতন, ১৬৫টি লুটপাটের ঘটনা , ১৩টি বসতঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে, ৮৬টি সম্পত্তি দখলের ঘটনা ঘটেছে, ৬১টি ভূমি দখল, ২১০টি উচ্ছেদে ঘটনা ঘটেছে, ৩২৬টি উচ্ছেদের তৎপরতার ঘটনা ঘটেছে, ৩৪৩১টি উচ্ছেদের হুমকি, ৭১১টি দেশ ত্যাগের হুমকি, ১৪১টি মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, চুরি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, ২,৩২৮ বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, চুরি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে , জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত বা ধর্মান্তরকরণের চেষ্টা এক হাজার ২৫১টি। সব মিলিয়ে চলতি বছর ১৫ হাজার ৫৪টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। সূত্র

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ কোনো একসময় মনে করা হতো আওয়ামী লীগ সরকার আসা মানেই সংখ্যালঘুদের একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলা। কিন্তু আজকাল যে সরকারই আসুক না কেন, সংখ্যালঘুদের কেবল দীর্ঘশ্বাসই ফেলতে হয়। আর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার সাথে জামাত শিবির জড়িত কিংবা বিরোধীদলের চক্রান্ত এটি একটি সরকারী ভাষণ এবং এটি বিশ্বাস করার মত এখন আর ধৈর্য বা শক্তি কোনটাই নাই।কেননা, সংখ্যলঘু নির্যাতনের সাথে সর্বদলীয় সরকার এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ থেকে শুরু করে প্রশাসন এবং কি অনেক সাধারণ লোকও জড়িত।

শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৬

Important Questions in Garment Washing


Garment Washing:


Garment washing is the vast place for the textile engineers or chemical engineers to prove their capability in today’s readymade garment business. New comers of this sector have to learn so many in the earlier stage of their job to sustain here. As a result, so many questions have arisen in their mind. As its importance, this article has presented some common questions with their answer.





Garment washing plant
Basic Questions of Garment Washing:


There are some common questions in garment washing which are frequently asked by the new comer of this sector. Those questions have pointed out in the below with their answer:
1. Why de-size or de-sizing process is important in garment washing?


De-sizing is so much important due to the below reasons:
To remove the sizing materials.
To remove the starch.
To increase the water absorption capacity.
To modify for scouring and bleaching.
To increase the affinity of fabric to chemicals.
To increase the luster after dyeing and printing.
2. What types of problem arise at de-sizing process?


The following problems have arisen during de-sizing process:
If the water is less crease mark will come.
If antiback stainer is less, back staining is more that affect the pocket.
Garments will dull if back staining is more.
If the de-size process will not good, the next process will be affected.
3. Why enzyme process is so important in garment washing?


Some important reasons for which enzyme process is so much important in garments wash:
To remove the color from fabric.
To achieve desired shade.
To achieve cast color.
To achieve desired abrasion.
To increase the cleanliness of garments.
4. What types of problems occurred during enzyme process?


There are some common problems which are seen during enzyme process mentioned in the below:
If water less, crease mark will come.
If enzyme time is more, seam will be damaged.
If enzyme percentage is more that time indigo will lose before abrasion coming.
If enzyme percentage will less, time required more and garments will be damaged.
5. Why bleaching process is important in garment washing?


For the below reasons, bleaching has great importance in garments washing:
To remove the natural color.
To clean up the garments.
To remove stain from the apparel.
To get the desired shade provided by the buyer.
6. What types of problem happened during bleaching stages?


There are some problems which are frequently happened during bleaching process:
If the water percentage is low that time crease mark will come.
If bleach percentage is more, garments will loose the color very quickly.
If the machine will not running at the time of bleach added, bleach spot will come there.
If the machine RPM is high then garments shade will be uneven.
7. Mention some problems that happened for resin application in garment washing.


Those problems are mentioned in the below:
If the resin application is more on specific area that garments will tear.
If we use the same process more than one time then tear may come.
If oven time is more, tear may come.
If oven temperature is excessively high, tear m ay come.
If we used resin more, garments will hard more.
Due to using of resin, garments will be unwanted spotted.
Due to using of resin, sometimes pocket may damage.
8. What are the processes normally used in the dry process section of garment washing?


All the important dry processes of garments washing have pointed out in the below:
Hand sand,
Sand blasting,
Whisker,
Destroy,
PP spray,
Tagging,
Grinding,
Crinkle,
3D crinkle,
Heat pressing,
PP rubbing,
Resin spray,
Pocket marking,
Seam marking,
Centre crease,
Pigment spray,
Crimping,
PP spot,
Bleach spot,
Resin spot etc.
9. Which types of wash mainly applied in garment washing?


There are various types of wash applied in garments washing. Those are in the following:
Light wash,
Rinse wash,
Sand wash,
Garment wash,
Enzyme wash,
Bleach wash,
Enzyme bleach wash,
Heavy enzyme + stone wash,
Heavy enzyme + stone wash + bleach wash,
Softener silicon wash,
Acid wash,
Tie wash,
Towel bleach wash,
Crystal wash,
Rubber ball wash etc.
10. Point out some problems that happened during garment washing.


Some common problems of garments washing are in the below:
Fabric strength sometimes less.
Zipper color changed due to alkali solution.
Fabrics weight less.
If the garments load is high then crease mark will come.
If garments load is high at hydro then crease mark will come.
If time is more at hydro, garments will be damaged by its tension.


-Written by


Mayedul Islam

Merchandiser at Fashion Xpress Buying House.

Badda, Dhaka, Bangladesh.

Email: mayedul.islam66@gmail.com

বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০১৬

হিন্দু বিবাহ এবং বিবাহ বিচ্ছেদ আইন সমাচার !!!

নারী ও পুরুষ এর একত্রে বসবাস করার সামাজিক,ধর্মীয় এবং আইনগত স্বীকৃতকেই বিবাহ বলে।

ভালোবাসাই একজন নারী ও একজন পুরুষের মাঝে হূদয়ের অটুট বন্ধন তৈরি করে দেয়। তৈরি করে সাংসারিক বন্ধন।একজন সুন্দর মনের ও সুন্দর গুণের স্ত্রী সংসারকে তাঁর নিজের আলোয় আলোকিত করে তুলতে পারেন। সাজিয়ে তুলতে পারেন সংসার জীবনকে সুখের স্বর্গীয় বাগানের মতো করে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে ‘সম্পর্ক’ বিশেষজ্ঞ টি তাশিরো বলেছেন,” টাকা-পয়সা, সৌন্দর্য বিবাহিত জীবনকে সুখী করতে পারে না। অন্তত একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। তাঁর মতে, একটি ভালোবাসাময় সুখী বৈবাহিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য সবার মধ্যে যে গুণটি থাকা প্রয়োজন, তা হলো—আন্তরিকতা। আন্তরিক বলতে তিনি এমন কাউকে বুঝিয়েছেন, যিনি হবেন বিনীত, নমনীয়, বিশ্বাসযোগ্য, ভালো স্বভাব, সহযোগী মনোভাবাপন্ন, ক্ষমাশীল, উদার ও ধৈর্যশীল।“

যেহেতু, দুজন নর-নারীর পারস্পারিক সম্মতি এবং পারিবারিক কিংবা সামাজিক ভাবেই বিবাহ সম্পন্ন হয় সেহেতু তাদের সাংসারিক জীবন সুখের হবার কথাই।কিন্তু অনেক সময় হিতে বিপরীত হয়ে সাংসারিক জীবনে নেমে আসে দাম্পত্যকলহ।দাম্পত্যকলহ অনেক কারণেই হতে পারে।যেমন- ভালবাসার অভাব, বিশ্বাস ও বিশ্বস্ততার অভাব, যৌনাচার,বহুগামিতা, দৈহিক যৌন সম্পর্কে অক্ষমতা, পুরুষত্বহীনতা, সমকামিতা, যৌনবিকৃতি, পাশবিকতা, যৌন মিলনের অনিহা এবং এড়িয়ে চলা, সন্তান দানে অক্ষমতা, দায়িত্বজ্ঞানহীন ভবঘুরে, ভুল সঙ্গী নির্বাচন ইত্যাদি ইত্যাদি।আবার, বাইরের কোন শক্তি বা তৃতীয় কোন শক্তিও দাম্পত্য সমস্যার কারণ হয়ে আসে।এর মধ্যে পিতা, মাতা, ভাই বোন, শশুর শাশুড়ি, দেবর ননদ, কোন মিথ্যা গুজব, অন্যের পক্ষপাতিত্য মনোভাব, অন্যের অতিরিক্ত আবেগ সোহাগ ইত্যাদি।

আর এসকল কলহের কারণেই নেমে আসে দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদ।তখন দুইজনের সম্মতিক্রমে একে অপরের সাথে সম্পর্কের ইতি টানতে চায় অথবা একজনের ইচ্ছাতেই আইনগত ভাবে উপযুক্ত কারণ দর্শীয়ে এবং তা আইনের চোখে প্রমান করেও বিবাহ সম্পর্কে ইতি টেনে দেয়।তবে বিবাহ বিচ্ছেদ করা যত সহজ মনে হয় আসলে ততোটা সহজ না।কেও ইচ্ছা করলেই একটা সম্পর্কে ইতি টানা যায় না।আর যদি সেটা রক্ষনশীল সমাজ এবং ধর্মের হয় তাহলে আরো বেশী ঝামেলা পোহাতে হয় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে ‘পারিবারিক আইন বহু পুরানো’। সাড়ে তিন হাজার বছরের অধিক সময় ধরে গড়ে উঠেছে শাস্ত্রীয় ভিত্তিক হিন্দু আইন। প্রথার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে এই আইন। দত্তক, বিয়ে, উত্তরাধিকার, দান-উইল, অভিভাবকত্ব ইত্যাদি প্রশ্নে বাংলাদেশের আদালতে হিন্দু শাস্ত্রীয় আইন অর্থাৎ বিধিনীতির উপর নির্ভর করে বিচার করতে হয়। ইহার সাথে বিভিন্ন সময়ে প্রনীত সংসদীয় আইন রয়েছে। হিন্দু আইন ধর্মীয় আইন, প্রথাগুলো ধর্মের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এই প্রথা নিয়েই হিন্দু আইন, ধর্মীয় অনুশাসনের উপর চালচলন, প্রথা গড়ে উঠেছে। আর সেই অর্থেই হিন্দু আইন শাস্ত্রীয় আইন। হিন্দু আইনে বিবাহ কেবল প্রাতিষ্ঠানিক চুক্তি নয়, এই বিবাহ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একঅলংঘনীয় বন্ধন।

বাংলাদেশে দু’ধরনের বিয়ে প্রচলিত, দানে বিয়ে এবং পনে বিয়ে। উচ্চ বর্ণে কন্যার পিতা কন্যাকে দান করেছেন।আর বর ব্রাহ্মণের বলে দেওয়া মন্ত্র পাঠ করে কন্যাকে বিয়ের মাধ্যমে ঘরে তুলে নিতে চায়।পনে বিয়ে নিম্ন বর্ণের মধ্যে বেশী প্রচলিত।এ বিয়ে মূলত মালা বর কনের মালা বদল এবং হাতে শাখা এবং সিথিতে সিঁদুর পরিয়ে এবং উপস্থিত লোকদের সাক্ষী মেনেই বিবাহ কাজ সম্পন্ন করা হয়।বিবাহ বিচ্ছেদ- উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের মধ্যে শাস্ত্রীয় বিধানে বিয়ে বিচ্ছেদে কোন আইন নেই। নিম্ন বর্নের মধ্যে প্রথাগত কয়েকটি ক্ষেত্রে বিয়ে বিচ্ছেদের প্রচলন আছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে নাই।
বাংলাদেশে হিন্দু বিবাহ বিচ্ছেদ খুবই জটিল। তবে যেটা সহজ তা হচ্ছে, স্বামী-স্ত্রী আলাদা বসবাস করা। বিবাহ বিচ্ছেদের মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও যখন বিবাহ বিচ্ছেদ সম্ভব না তখন স্ত্রী স্বামীর বাড়ি ত্যাগ করে নিজ পিত্রালয়ে বা অন্য কোনো নিরাপদ স্থানে পৃথক বসবাস করতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হন। ১৯৪৬ সালে বিবাহিত নারীর পৃথক বাসস্থান এবং ভরণপোষণ আইন পাস হওয়ার পর, এ আইন অনুযায়ী- এক স্ত্রীর বর্তমানে স্বামী অন্য স্ত্রী গ্রহণ করলে স্ত্রী স্বামীর কাছ থেতে পৃথক থাকলেও স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে স্বামী বাধ্য থাকবেন।

আমাদের দেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘ প্রায় ৪৫ বছর সময় পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশে হিন্দু পারিবারিক আইনের উল্লেখযোগ্য কোন আইন প্রনীত হয়নি।তবে বর্তমান সরকার হিন্দু আইনের ব্যাপক সংস্কার করেছে যেমন-সম্পত্তি বন্টন, হিন্দু বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন আইন, ইত্যাদি এবং বাংলাদেশ ‘ল’ কমিশনের মাধ্যমে হিন্দু আইন সংস্কারের ও সংশোধনের কাজ এগুচ্ছে।

আমাদের বিবাহ এবং বিবাহ বিচ্ছেদ সম্পর্কীত যে মামলাগুলো আদালতে যায় তা মূলত নিম্ন বর্ণ থেকেই যায়।পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ অনুসারে এখতিয়ার ক্ষমতা রয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়েরও আদালতে যাবার। বিয়ে, বিয়ে বিচ্ছেদ, অভিভাবকত্ব, ভরণপোষণ, দাম্পত্য জীবন পুরুদ্ধার বিষয়, এই পাঁচটি বিষয়ে পারিবারিক আদালতের বিচারের ক্ষমতা রয়েছে।

বাংলাদেশের সনাতন হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ ও পুনঃবিয়ের স্বীকৃতি নেই। হিন্দু বিয়েতে কোনো চুক্তিনামা না থাকায় অনেক নারী নির্যাতন সহ্য করেও সংসার করেন। পারিবারিক আইনজীবী মাহবুবুল ইসলাম মজুমদার বললেন, ‘১৯৮৫ সালের পারিবারিক আইনের ৫ ধারায় বিবাহ বিচ্ছেদ, দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার, মোহরানা, ভরণ-পোষণ, সন্তান-সন্ততিগণের অভিভাবকত্ব ও তত্ত্বাবধান এই ৫টি অধিকার দেয়া হয়েছে কিন্তু সেখানে বাদীর নিজ ধর্মের আইন অনুযায়ি প্রতিকার পাবেন।’

২০১২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শাস্ত্রীয় বিবাহের দালিলিক প্রমাণ সুরক্ষার লক্ষ্যে ‘হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন ২০১২’ প্রণীত হয়। অবশ্য এই আইন অনুযায়ী হিন্দুদের বাধ্যতামূলকভাবে বিবাহ নিবন্ধন করতে হবে না, কিন্তু কেউ চাইলে প্রথাগত পদ্ধতিতে বিয়ের পাশাপাশি বিবাহ নিবন্ধনও করতে পারবেন। তাই প্রেমের বিয়েতে কেউ কেউ রেজিস্ট্রেশন করলেও বেশিরভাগ স্যাটেল ম্যারেজের বেলায় প্রথাগত পদ্ধতিতেই হচ্ছে।

বিবাহ বিচ্ছেদ আইনে বলা হয়েছে,

Ø স্বামী অথবা স্ত্রী একজন অন্যজনের উপর শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক ও যৌন নির্যাতন করলে।

Ø যে কোন একজন যদি হিন্দু ধর্ম পরিত্যাগ করিয়া অন্য ধর্ম গ্রহণ করলে।

Ø কোন একজন যদি মানসিকভাবে অসুস্থ থাকেন এবং চিকিৎসা করানোর পরও যদি সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে।

Ø কোন একজন যদি সংক্রামক কোন ব্যাধিতে আক্রান্ত হইয়া থাকেন যা চিকিৎসা দ্বারা ভাল হওয়ার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ অথবা ভাল হওয়ার সম্ভাবনা নাই বলিয়া চিকিৎসক সনদ প্রদান করেন।

Ø স্বামী স্ত্রীকে যদি একাধিক্রমে দুই বছর ধরে ভরণপোষণ প্রদান না করিয়া থাকেন।

Ø স্বামী যদি স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিবাহ করিয়া থাকেন।

Ø স্বামী অথবা স্ত্রী যদি দুই বছর ধরে নিরুদ্দেশ থাকেন।

Ø স্বামী অথবা স্ত্রী যে কোন একজন কোন অপরাধে জড়িত থাকার কারণে সাত বছরব বা তার দণ্ডপ্রাপ্ত হইলে।

Ø স্বামী অথবা স্ত্রী যদি একজন অন্যজনকে অপরাধমূলক কাজ করিতে বাধ্য করিয়া থাকেন।

Ø স্বামী বিবাহের সময় পুরুষত্বহীন থাকিলে এবং তাহা আবেদন দাখিল করা পর্যন্ত বহাল থাকিলে আদালতে আবেদন করলে উভয়পক্ষের মতামতের ওপর ভিত্তি করিয়া বিবাহ বিচ্ছেদের ডিক্রি প্রদান করিবেন। এক্ষেত্রে শর্ত থাকে, স্ত্রী গর্ভবতী থাকিলে সন্তান ভূমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ বিচ্ছেদ কার্যকর হইবে না।

Ø বহু বিবাহের ক্ষেত্রে খসড়া আইনে বলা হয়েছে, একজন হিন্দু নারী ও একজন হিন্দু পুরুষের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকা অবস্থায় যদি কোন হিন্দু পুরুষ এক বা একাধিকবার অন্য কোন নারীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করিয়া থাকেন তাহা হইলে সেই ব্যক্তি সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন অথবা দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হইবেন। এবং দণ্ডিত হইবার পর দণ্ডিত পুরুষের স্ত্রীর বিবাহে কোন বাধা থাকিবে না।

উপরিউক্ত শর্তসাপেক্ষে এবং উপযুক্ত কারণ দর্শিয়ে এবং দম্পত্যির উভয়ের সম্মতিক্রমেই কেবল মাত্র আইনের আওতায় বিবাহ বিচ্ছেদ করতে পারবে।

বি.দ্রঃ ঠেকছিলাম যেখানে শিখছিও সেখানে।
©      সূত্রঃ ল অফ ওমেন,কালের কন্ঠ,দেশ বিদেশ,প্রথম আলো

শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৬

হজ্ব করে হাজী হলেই নিষ্পাপ !!!

যাদের পরিবারের শিরা উপশিরায় মিশে থাকে দূর্নিতীর ছোয়া তাদের পরিবার থেকে সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুটিও যে তাদের মতই দূর্নিতীবাজ,তেলবাজ এবং ধান্ধাবাজ হবে এটাই স্বাভাবিক।এখন বলা যেতে পারে বাপ চোর দেখেই যে ছেলেও চোর হবে তা না কিন্তু!হুম ঠিক আছে,কিন্তু বাপে চোর হলে যে অনেকাংশে ছেলেও চোর হয় তা কিন্তু আমাদের সমাজের দিকে একটু চোখ কান খোলা রেখে তাকালেই হয়।আমাদের সমাজ ব্যবস্থা শিক্ষিত হওয়ার পথে আগালেও পিছিয়ে যাচ্ছে নৈতিক দিয়ে।কারণ আমাদের সমাজ পরিবার এখান সরাসরি বলতে ২য় বার ভাবে না যে,সৎ পথে থেকে কোন লাভ নাই।অর্থাৎ তারা বলেই দিচ্ছে সৎ পথে চললে সামনে ভয়াবহ দিন অপেক্ষা করছে।তাই যত খুশি তেলবাজী করে পয়সা কামাও আর বিত্তের পাহাড় গড়ে তুলো।মানুষ অন্যায় করলে যে পাপবোধটা জাগ্রত হতো অলৌকিক কিংবা ধর্মের কারণে আজ সেটাও বোধ হয় ধ্বংস হবার পথে।সেটার একটা অবশ্য কারন আছে।যদিও সেটা সম্পর্কে অনেক মানুষ এবং অনেক বিজ্ঞ লোকের কাছে প্রশ্ন করে ভিন্নভিন্ন উত্তর পেয়েছি।

আমার পরিচিত এক লোক আছে,যে সরকারী চাকরি করে এমন একটা সেক্টরে যেখানে মানুষ গেলেই টাকা লাগে ।শুধু টাকা লাগে না অনেকে টাকা দিতে দিতে নিজের ভিটা বাড়ী পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েও তাদের পেট ভরাতে পারে না অনেক সময়।যাই হোক,লোকটির বেসিক বেতন যা সেই বেতন দিয়ে এখন বা শুরু থেকেও যদি এখনকার বেতন হিসাব ধরা হয় তবু মনে হয় না যে সে মধ্যবিত্তের পরিবারের থেকে খুব বেশী ভালো নাতো বৈকি খারাপভাবেই চলতে হবে পরিবারের চাহিদা মিটাতে গিয়ে।কিন্তু সেই বয়স্ক লোকটা আজ যেভাবে বা গত জীবন থেকে যেভাবে চলে আসছে তা কেবল উচ্চবিত্ত পরিবার থেকেই চলা সম্ভব ছিলো।কিন্তু না ,সেই আজ উচ্চবিত্তের মধ্যে পরে যাচ্ছে কেবল মাত্র কথায় তেলবাজ আর ধান্ধার ফলেই।যাই হোক সেই লোক সম্পর্কে ধারণা পাই তারই ছেলের সাথে পরিচয়ের সুবাদে।সেও একদিন কথায় কথায় বলে যে,সৎ থেকে জীবনে কিছুই করতে পারবি না।কিন্তু আমি যখন তার এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়েই ক্ষান্ত ঠিক তখনই পাশের অন্য একটি ছেলে বলে উঠে,পরকালে গিয়ে হিসাব কি দিবি?

তারও উত্তর ছিলো হিসাব বরাবর।আমরা মুসলিমরা একদিন হলেও বেহেশতে যাব।আর তাছাড়া দূর্নিতী,চাকরি এসবতো আর সারা বছর করব না।একটা সময় যখন চলে আসবে তখন সব ছেড়ে দিয়ে হজ্ব করে হাজী হয়ে যাব,কারণ হজ্ব করার পর একজন মানুষ সদ্য জন্ম হওয়া শিশুর মত নিষ্পাপ।আর পরিবারের একজনকে যদি প্রচন্ড রকমের ধার্মিক এবং সৃষ্টিকর্তার অনুসারী বানানো যায় তাহলে বাকী লোকদের টেনে সে বেহেশতে নিয়ে যাবে।আর এজন্য ছোট ভাইকে প্রচন্ড ধার্মিক বানানোর জন্য মাদ্রাসায় দিছে এবং তাকে সৎ মানুষ বা ধার্মিক লোক বানানোর জন্য বাড়ীতে টিভি পর্যন্ত দেখার সুযোগ দেওয়া হয় না।কিন্তু অপরদিকে বয়স্কর বড় ছেলে চাপবাজ,তেলবাজীতে সেই উচ্চ মার্গীয়।আপনি তার যতই অপরিচিত হোন না কেন,সে যদি আপনার সাথে কথা বলার সুযোগ পায় তাহলে আপনি নিজেই তাকে আপন করে নিতে ২য় বার চিন্তা করবেন না বলেই আমার মনে হয়।এবং সে শুধু উচ্চ মার্গীয় তেলবাজই না,উচ্চ মার্গীয় ধান্ধা বাজ।যা কিনা আমার সহিত একের অধিকবার ধরা খেলেও চাপাবাজীতে হারে নাই।মানে হার মানে নাই।

যাই হোক,মূল কথা হলো কিছুদিন আগে সে কোন এক কথার ছলে বলতেছিলো যে,এই বার আব্বাকে বললাম হজ্ব করে আসতে যে বয়স তো ভালই হচ্ছে কিন্তু সে না করে।কারণ সে হজ্ব করবে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর পেনশনের টাকা দিয়ে।যা কি না হালাল টাকা।অর্থাৎ ,কথাটা খেয়াল করবেন,তার এতো এতো টাকা এখন কিন্তু সেখানে সে হালাল টাকার কোন অংশই খুজে পায় না,যে টাকা দিয়ে সহী ভাবে হজ্ব করা যাবে।অথচ সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী।কিন্তু এখন আমার প্রশ্ন হলো একজন মানুষ যে কিনা সারা বছর দূর্নিতী করে অর্থের কুমির হয়েছে,অথচ সেই আজ হজ্ব করে নিষ্পাপ সদ্য জন্ম হওয়া শিশুর মতই হয়ে যাবে তাও কিনা আবার টাকার জোড়ে !!!

বি.দ্রঃতারমানে একজন মানুষ সারাবছর ,সুদ,দূর্নিতী করার পরেও কি সে হজ্বের পর নিষ্পাপ শিশু হয়ে যায় মুসলিম ভাইদের কাছে যৌক্তিক উত্তর চাচ্ছি।আমি কয়েকজনকে প্রশ্ন করে ছিলাম তারা বলেছে হুম হজ্ব করার পর নিষ্পাপ হয়ে যায়,কিন্তু আবার এই গল্পটা বলার পর যখন প্রশ্ন করেছি তখন বলে আসলে আল্লাহ কার হজ্ব গ্রহন করে নিবে তাতো আর জানি না!অর্থাৎ আমি আমার আশানোরুপ উত্তর পাইনি।তারাই একবার বলেছে নিষ্পাপ হয়ে যায় আবার তারাই দ্বিধায় পরে যায়।আর উপরের গল্পের মুল বিষয়ের মত ধারনাও অনেকের মধ্যে পাইছি।তাই এই বিষয় নিয়ে জানার ইচ্ছা থেকেই জানতে চাওয়া।আবার অনেকে এও বলেছেন যে,জীবন বাঁচাতে শুকরের মাংস খাওয়াও হালাল,সেহেতু তার এই ঘোষ,দূর্নীতিও কোন না কোন ভাবে আল্লাহ মাফ করে দিয়ে তার হজ্ব কবুল করে নিবেন।

শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আলোচনার শীর্ষে যখন ভারত-পাকিস্তান !!

গত রোববার চার অস্ত্র ও গ্রেনেডধারী উরির সামরিক ঘাঁটিতে ঢুকে হামলা চালিয়ে ১৭ ভারতীয় সেনাকে হত্যা করে; হামলায় আহত হন আরও ৩৫ জন। পরে হামলাকারীরাও পাল্টা গুলিতে মারা যান।কাশ্মীরে হামলা চালিয়ে ১৭ জন ভারতীয় সেনাকে হত্যার পর ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশে উত্তেজনা বিরাজ করছে।উরি সেনাঘাঁটিতে হামলার ঘটনায় সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত ।অন্যদিকে এই হামলা ভারতেরই সাজানো ঘটনা।আর পাকিস্তান পাল্টা অভিযোগ করছে কাশ্মীরে তীব্র সহিংস গণবিক্ষোভ থেকে দৃষ্টি ফেরানোর চেষ্টা করছে ভারত। যে বিশেষ সময়ে ঘটনাটি ঘটেছে, তা থেকেই সেটা স্পষ্ট বলে পাক সংবাদপত্রগুলোর দাবি।বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুক-টুইটারের মাঝেও ক্রমশ উত্তেজনার ফলেই চুলচেরা বিশ্লেষন করছে বিভিন্ন দেশের সাধারণ রাজনৈতিক সচেতন মানুষ থেকে সকলস্তরের মানুষেরা ।এই দুই দেশের উত্তেজনা ছড়িয়েছে বহি:র্বিশ্বেও।

মঙ্গলবার এমন একটি বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি বাংলা। বিশ্লেষণটি করেছেন ভারতে বিবিসি'র সংবাদদাতা সৌতিক বিশ্বাস।

বিশ্লেষণে বলা হয়, ভারতের অনেক রাজনীতিবিদ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কড়া ভাষায় কথা বলছেন। পাকিস্তানকে 'সমুচিত জবাব' দেবার হুমকি দিচ্ছেন অনেকে।

বিজেপির একজন সিনিয়র নেতা রাম মাধব বলেছেন, 'তথাকথিত কৌশলগত কারণে সহ্য করার সময় শেষ হয়ে গেছে।'

ভারতের সাবেক সেনা কর্মকর্তারাও একই ধরনের মনোভাব পোষণ করছেন। তারা মনে করেন, ভারতের পাল্টা আঘাত করা উচিত।

দিল্লির সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ-এর প্রতাপ ভানু মেহতা মনে করেন কৌশলগতভাবে ভারত এতদিন ধরে যে সংযম দেখানোর ভূমিকা নিয়েছে, সেটা ভালোই কাজে দিয়েছে।

তার মতে, 'একমাত্র চীন ছাড়া অন্য সবার কাছ থেকে পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের আহবানও জানাতে পারি।'

মেহতা মনে করেন, এ ধরনের কৌশল ভারতকে দীর্ঘ মেয়াদে লাভবান করবে। তবে এ ধরনের চিন্তা-ভাবনার বিপরীতেও কথা আছে।

কৌশলগত সংযমের নীতি ভারতের উপকারে আসছে না মন্তব্য করে প্রতিরক্ষা বিষয়ে আরেক বিশেষজ্ঞ সি ক্রিস্টিন ফেয়ার বলেন, 'ভারতের উদ্দেশ্য যদি হয় পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ করা, তাহলে এটা কাজে দিচ্ছে না।'

লেখক ব্রাহ্মা চেলেনি মনে করেন, ভারত যদি নিশ্চুপ থাকে তাহলে সেটি তার পারমাণবিক এবং সামরিক শক্তিকে অবজ্ঞা করা হবে এবং শত্রুরা তাদের হামলা অব্যাহত রাখবে। কিন্তু একই সঙ্গে একথাও ঠিক নয় যে, ভারত তার মাটিতেই পাকিস্তানের হামলার বিরুদ্ধে লড়াই করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, প্রতিশোধ নেবার কথা জনসম্মুখে না বলে ভারতের ভিন্ন উপায় বের করতে হবে। এর মধ্যে একটি বিষয় হতে পারে, ইসলামাবাদের সঙ্গে দিল্লির কূটনৈতিক সম্পর্ক অবনমন করা।

এছাড়া চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরবের ওপর চাপ সৃষ্টি করা। কারণ এ দেশগুলো থেকে পাকিস্তান নানাভাবে উপকৃত হয়।

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক স্টিফেন কোয়েন মনে করেন, 'ভারত-পাকিস্তান বৈরিতা এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে পাকিস্তান কখনোই জিতবে না এবং ভারত কখনোই হারবে না।'

আবার, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ভারতের জন্য এটা সহজ হবে না কারণ পাকিস্তানের রয়েছে শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

ভারতের একজন নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অজয় শুক্লা মনে করেন, নরেন্দ্র মোদি সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নানা রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম রেখেছে। কিন্তু কোনো সন্ত্রাসী হামলার বিপরীতে কড়া জবাব দেবার মতো সামরিক শক্তি এবং পরিকল্পনা তৈরি করেনি নরেন্দ্র মোদির সরকার।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সাবেক দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রুস রিডেল 'টাইমস অব ইন্ডিয়া'-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন,‘সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের ভেতরে হামলা চালালেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখে পড়বে ভারত। 'পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সামরিক পদক্ষেপ ভারতের জন্যই কাল হয়ে দাঁড়াবে। হামলার ঘটনায় দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ তো বাড়বেই, এমনকি ওয়াশিংটনও ভারতের পাশে দাঁড়াবে না।তবে ভারতে সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের হাত থাকার বিষয়ে দ্বিমত নন রিডেল।‘অন্যদিকে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারতের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি দেশ রাশিয়া।আর অন্যদিকে পাকিস্তানকে সহযোগীতা করতে প্রস্তুত চীন।

ভারতের রাজনৈতিক এবং সামরিক মহলের একটা বড় অংশ গত কয়েকদিন ক্রমাগত বলছেন, পাকিস্তানকে একটা শিক্ষা দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

কিন্তু ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আরো একটি যুদ্ধ কি আসলেই হতে পারে ? পাকিস্তান কি সেরকম কোনো আশঙ্কা করছে ?

ড: আয়েশা সিদ্দিকা বলছেন পাকিস্তানের ভেতর একটা চিন্তা কাজ করছে যে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনা যেখানে রয়েছে, সেখানে ভারত, পাকিস্তানের ভেতর দু:সাহসিক কোনো অভিযানের আগে দশবার চিন্তা করবে।

কিন্তু তারপরও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে এরকম কথা ঘোরাফেরা করছে যে ভারত হয়তো সামরিক পন্থা নিতেও পারে।পাকিস্তানের এরকম আশঙ্কার একটা কারণ যে কাশ্মীরে বিপুল সৈন্য সমাবেশের খবর ।

ড: আয়েশা সিদ্দিকা বলছেন তিনি মনে করেন পাকিস্তানের জন্য এখন যেটা জরুরি সেটা হলো আফগানিস্তান বা বাংলাদেশের মত প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ট করা।তবে এই মুহূর্তে পাকিস্তানের সামনে পথ চীন এবং মুসলিম কিছু দেশের শরণাপন্ন হওয়া। তার বাইরে রয়েছে তুরস্ক।কিন্তু সেনাঘাঁটিতে হামলায় হতাহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে কঠিন এই সময়ে ভারতের পাশেই রয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে পাঠানো এক বার্তায় আশ্বাস দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘সন্ত্রাসী এই হামলায়’ নিহত ও আহত সৈনিকদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান। বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস ও উগ্রবাদী সহিংসতার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির অংশ হিসেবেই বাংলাদেশ এই কঠিন সময়ে ভারতের পাশে থাকবে। ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী হিসেবে এই অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ও সীমানাজুড়ে চলমান সব হুমকি নির্মূলে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। সব ধরনের সন্ত্রাস ও উগ্রবাদী ধ্যান-ধারণা এবং এর সহিংস প্রকাশের নিন্দা জানিয়ে এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

ভারতের সংবাদমাধ্যমের শিরোনামগুলো দেখলে একটি বিষয় পরিষ্কার - এ হামলা নিয়ে ভারতের ক্রোধ এখন চরমে। এ হামলার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দেয়ার বিষয়ে প্রতিজ্ঞা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটা অংশ সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে সীমিত আকারে হলেও প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়ে উচিত শিক্ষা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে সরকারে প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি নির্ধারকরা এখনই কৌশলগত আক্রমণের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন।যদিও পাকিস্তানের অভ্যন্তরে যেকোনো সাঁড়াশি আক্রমণ, গোপন সামরিক অভিযান বা ধাওয়া করে হামলা চালানোর বিষয়টি এখনও বিবেচনা করেনি সরকার। তবে নিয়ন্ত্রণ রেখা পার না হয়েই পাকিস্তানি সেনাদের রক্ত ঝরানোর বিষয়ে ভারতীয় সেনাদের সামনে কোনো বাধা নেই।

সোমবার দিনভর দফায় দফায় বৈঠক শেষে ভারতীয় নীতি নির্ধারকরা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, পাকিস্তানে সামরিক হামলার পরিবর্তে কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে করে দিয়ে জবাব দেয়ার কথা ভাবছে ভারত।

এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ভারতের বিরুদ্ধে আগাম কূটনৈতিক অস্ত্র প্রয়োগ করতে শুরু করেছেন।জানা গেছে, ভারত যদি ড্রোন বিমান দিয়ে পাকিস্তানে আক্রমণ করে তাহলে দেশটি পরমাণু অস্ত্র দিয়ে এর জবাব দেয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে।পাকিস্তানে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে যে ভারতের সেনাবাহিনী পাকিস্তানের সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় ক্রমশই সরে আসছে।শরিফ বলেন, পাকিস্তান ওই এলাকায় কৌশলগত স্থিতিবস্থা আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল । পাকিস্তান ভারতের সাথে অস্ত্র প্রতিযোগিতা চায় না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।তিনি আরো অভিযোগ করে আলোচনায় বসার মতো অগ্রহণযোগ্য শর্ত ভারত নিয়ে আসছে। সেনাপ্রধান রাহিল শরীফ বলেছেন, তার দেশ সব ধরনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হুমকি মোকাবেলায় প্রস্তুত। পাকিস্তান আক্রান্ত হলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন রাহিল।পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফও ভারতকে সতর্ক করেছেন।

ভারত পাকিস্তানে হামলা চালাতে পারবে কিনা এবং পারলেও পাকিস্তানের পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। পাকিস্তান ইতোমধ্যেই তাদের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। শোনা যাচ্ছে দুই দেশের পরমাণু অস্ত্রের প্রস্তুতির কথাও। সীমান্তে দুই দেশের বাহিনীকে সতর্ক প্রহরায় রাখা হয়েছে।

এরই মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে ৭৭৮ কিলোমিটার সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ রেখায় আর্টিলারি ব্যারেজ ও স্নাইপার রাইফেলধারী সেনা মোতায়েনসহ অন্যান্য অভিযান পরিচালনায় প্রস্তুতি নিতে মনোযোগী হতে বলা হয়েছে।

এদিকে ভারতীয় প্রতিরক্ষা দফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, পাকিস্তানকে মোকাবেলায় একাধিক সামরিক উপায় বেছে নেয়ার সুযোগ রয়েছে। সরকার ইচ্ছা করলে সংক্ষিপ্ত আকারে পূর্ণ যুদ্ধে জড়াতে পারে। এক্ষেত্রে দুই দেশের সীমান্তে পদাতিক বাহিনীর বা অপ্রচলিত যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষিত বিশেষ বাহিনীর অভিযানের বিষয়টি আমলে আনা যেতে পারে।

কর্মকর্তারা বলছেন, বড় দূরত্বের আক্রমণের ক্ষেত্রে ৯০ কিলোমিটার রেঞ্জের স্মার্ট রকেট বা ২৯০ কিলোমিটার রেঞ্জের ব্রাহ্মস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল ব্যবহার করা যেতে পারে। সাঁড়াশি বিমান হামলার ক্ষেত্রে মিরেজ-২০০০, জাগুয়ার এবং সুখই-৩০ কেআই বিমানযোগে লেজার নিয়ন্ত্রিত স্মার্ট বোমা অথবা ক্লাস্টার বোমা ব্যবহৃত হতে পারে।

তবে পাকিস্তানে হামলার বিষয়টি ভারতকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। কারণ পাকিস্তানের সম্পূর্ণ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই ভারতের লক্ষ্য করে মোতায়েন করা আছে।

ভারত পাকিস্তানে যেকোনো মুহূর্তে হামলা চালাতে পারে এমন একটি আশংকাও তৈরি হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তান প্রথমে হামলা চালাবে না। তবে ভারতের হামলা প্রতিরোধে সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। পাকিস্তান ভারতকে সীমান্তের রেড লাইন পার হতে দেবে না।

মার্কিন পরমাণু বিশেষজ্ঞ হ্যানস ক্রিসটেনসেন টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, পাকিস্তান যদি ভারতের সঙ্গে সামরিক দিক দিয়ে কোনভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয় তাহলে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবে না। আর সেক্ষেত্রে ভারতীয় বাহিনী সমস্যায় পড়তে পারে, যদি না তাদের কোন প্রস্তুতি না থাকে। পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে এনিয়ে বেশ সতর্ক অবস্থা অবলম্বন করা হচ্ছে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা পিআইএ’র মুখপাত্র ডেনিয়েল গিলানি জানিয়েছেন, বুধবার সকাল থেকে গিলগিট, স্কার্দু ও চিত্রাল এলাকায় ‘বিমান পথ বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। ভারত পাকিস্তানে আক্রমণ করতে পারে এমন আশংকায় এসব ফ্লাইট বন্ধ রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসলামাবাদ ও পেশোয়ারের মধ্যকার মূল মহাসড়কের কিছু অংশও বন্ধ রাখা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, সংস্কারের জন্য মহাসড়ক বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এই মহাসড়ক যুদ্ধবিমানের ওঠানামায় ব্যবহার করা সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে পরমাণু অস্ত্র হ্রাসের পদক্ষেপ নিতে বললেও পাকিস্তান তা সরাসরি প্রত্যাখান করেছে বলে গনমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ ভারত ও পাকিস্তান। এছাড়াও দুই দেশের সামরিক বাহিনীই জনবল ও অত্যাধুনিক অস্ত্রসম্ভারে সমৃদ্ধ।

সিআইএ, দুই দেশের পাবলিক ডোমেইনসমূহ, সংবাদমাধ্যম এবং উইকিপিডিয়ার তথ্য বিশ্লেষণ করে দুই দেশের সমর শক্তির তুলনামূলক চিত্র তৈরি করেছে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ডটকম।

জনবল
ভারত: ১২৫ কোটি ১৬ লাখ ৯৫ হাজার ৫৮৪ জনসংখ্যার দেশটিতে ৬১ কোটি ৬০ লাখ জনশক্তি রয়েছে। এর মধ্যে সার্ভিসের জন্য উপযুক্ত ৪৮ কোটি ৯৬ লাখ জন। দেশটিতে প্রতি বছর সামরিক দায়িত্ব পালনের উপযুক্ত বয়সী হন ২২ কোটি ৯ লাখ ব্যক্তি। ভারতে ১৩ লাখ ২৫ হাজার সেনা রয়েছে। সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল ২১ লাখ ৪৩ হাজার।

পাকিস্তান: ১৯ কোটি ৯০ লাখ ৮৫ হাজার ৮৪৭ জনসংখ্যার দেশটিতে ৯ কোটি ৫০ লাখ জনশক্তি রয়েছে। এর মধ্যে সার্ভিসের জন্য উপযুক্ত ৭ কোটি ৫৩ লাখ ২৫ হাজার জন। দেশটিতে প্রতি বছর সামরিক দায়িত্ব পালনের উপযুক্ত বয়সী হন ৪ কোটি ৩ লাখ ৪৫ হাজার ব্যক্তি। পাকিস্তানে ৬ লাখ ২০ হাজার সেনা রয়েছে। সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল ৫ লাখ ১৫ হাজার।

বিমান বাহিনী
ভারত: সব মিলিয়ে ভারতের দুই হাজার ৮৬টি বিমান রয়েছে। এছাড়াও দেশটির ৬৪৬টি হেলি কপ্টার, ১৯টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার, ৮০৯টি নির্ধারিত পাখাযুক্ত অ্যাটাক বিমান, ৬৭৯টি যুদ্ধ বিমান, ৩১৮টি প্রশিক্ষণ বিমান এবং ৮৫৭টি ট্রান্সপোর্ট বিমান রয়েছে।দেশটির ৩৪৬টি ব্যবহার যোগ্য বিমানবন্দর রয়েছে।

পাকিস্তান: সব মিলিয়ে পাকিস্তানে ৯২৩টি বিমান রয়েছে। এছাড়াও দেশটির ৩০৬টি হেলিকপ্টার, ৫২টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার, ৩৯৪টি নির্ধারিত পাখাযুক্ত অ্যাটাক বিমান, ৩০৪টি যুদ্ধ বিমান, ১৭০টি প্রশিক্ষণ বিমান এবং ২৬১টি ট্রান্সপোর্ট বিমান রয়েছে।দেশটির ১৫১টি ব্যবহার যোগ্য বিমানবন্দর রয়েছে।

সেনা বাহিনীর অস্ত্র সম্ভার
ভারত: দেশটির ছয় হাজার ৪৬৪টি ট্যাংক, ছয় হাজার ৭০৪টি আর্মার্ড ফাইটার ভেহিক্যাল, ২৯০টি সেল্ফ প্রপেল্ড গান, সাত হাজার ৪১৪টি টানা কামান এবং ২৯২টি মাল্টিপল লাঞ্চার রকেট সিস্টেম রয়েছে।

পাকিস্তান: দেশটির দুই হাজার ৯২৪টি ট্যাংক, দুই হাজার ৮২৮টি আর্মার্ড ফাইটার ভেহিক্যাল, ৪৬৫ টি সেল্ফ প্রপেল্ড গান, তিন হাজার ২৭৮টি টানা কামান এবং ১৩৪টি মাল্টিপল লাঞ্চার রকেট সিস্টেম রয়েছে।

নৌ বাহিনীর শক্তি
ভারত: দেশটির ৩৪০টি মার্চেন্ট মেরিন জাহাজ রয়েছে। প্রধান সমুদ্রবন্দর রয়েছে সাতটি। এছাড়া দুটি বিমানবাহী ক্যারিয়ার, ১৪টি সাবমেরিন, ১৪টি ফ্রিগেট, ১০টি ডেস্ট্রয়ার, ২৬টি কর্ভাটি, ছয়টি মাইন ওয়ারফেয়ার ক্রাফ্ট এবং ১৩৫টি পেট্রোল ক্রাফট রয়েছে।

পাকিস্তান: দেশটির ১১টি মার্চেন্ট মেরিন জাহাজ রয়েছে। প্রধান সমুদ্র বন্দর রয়েছে দুটি। এছাড়া পাঁচটি সাবমেরিন, ১০টি ফ্রিগেট, তিনটি মাইন ওয়ারফেয়ার ক্রাফ্ট এবং ১৩৫টি পেট্রোল ক্রাফট রয়েছে।

অথর্নীতি
ভারত: সামরিক শক্তি অনেকটাই অর্থনৈতিক শক্তির উপর নির্ভরশীল। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ভারতই পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। ভারতের ৪৫ হাজার ৯১০ কোটি মার্কিন ডলার বিদেশী ঋণ রয়েছে।ভারতের বার্ষিক সামরিক বাজেট চার হাজার কোটি মার্কিন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৭ হাজার ৭০ কোটি মার্কিন ডলার। পার্চেজিং পাওয়ার প্যারিটি (পিপিপি) ৭৪ লাখ এক হাজার একশ' মার্কিন ডলার। শ্রমশক্তি ৪৯ কোটি ২৪ লাখ। জ্বালানি তেল উৎপাদন সাত লাখ ৬৭ হাজার ৬০০ ব্যারেল, জ্বালানি তেল ব্যবহার ৩৫ লাখ ১০ হাজার ব্যারেল/দিন এবং জ্বালানি তেলের প্রমাণিত রিজার্ভ ৫৬৭ কোটি ৫০ লাখ ব্যারেল/দিন। সড়ক পথ ৩৩ লাখ ২০ হাজার ৪১০ মাইল, রেলপথ ৬৩ হাজার ৯৭৪ কিলোমিটার, নৌপথ ১৪ হাজার পাঁচশ' কিলোমিটার, উপকূলীয় এলাকা সাত হাজার কিলোমিটার, যৌথ সীমান্ত ১৩ হাজার ৮৮৮ কিলোমিটার এবং আয়তনক্ষেত্র ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ২৬৩ কিলোমিটার।

পাকিস্তান: দেশটির ৫৮ হাজার ১৭০ কোটি মার্কিন ডলার বিদেশী ঋণ রয়েছে।পাকিস্তানের বার্ষিক সামরিক বাজেট সাতশ' কোটি মার্কিন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ এক হাজার সাতশ' ৩০ কোটি মার্কিন ডলার। পার্চেজিং পাওয়ার প্যারিটি (পিপিপি) আট লাখ ৮৮ হাজার ৪২০ মার্কিন ডলার। শ্রমশক্তি ছয় কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার জন। জ্বালানি তেল উৎপাদন ৯৩ হাজার ৬৩০ ব্যারেল, জ্বালানি ব্যবহার ৪ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল/দিন এবং জ্বালানি তেলের প্রমাণিত রিজার্ভ ৩৭ কোটি ১০ লাখ ব্যারেল/দিন। সড়ক পথ দুই লাখ ৬০ হাজার ৭৬০ মাইল, রেলপথ ৭ হাজার ৭৯১ কিলোমিটার, নৌপথ ২৫ হাজার ২২০ কিলোমিটার, উপকূলীয় এলাকা এক হাজার ৪৬ কিলোমিটার, যৌথ সীমান্ত ৭ হাজার ২৫৭ কিলোমিটার এবং আয়তনক্ষেত্র ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৯৫ কিলোমিটার।

এ ছাড়া ২০১৩ সালের হিসাব অনুযায়ী ভারতের কাছে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে ৯০-১১০ টি এবং পাকিস্তানের কাছে ১১০-১৩০টি।
ভারত-পাকিস্তান কয়েকবারই মুখোমুখি হয়েছে।তবে প্রতিবারের যুদ্ধই হারজিতের পরিবর্তে সমঝোতার মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে।

১৯৪৭-এ কাশ্মিরে ঢুকে পরে পাকিস্তানের সেনারা ।তখন কাশ্মিরের মহারাজা ভারতের সামরিক সহায়তা চান। তাই ভারতীয় সেনারা অনুপ্রবেশকারী পাকিস্তানি বাহিনীকে ঠেকাতে ঢুকে পরল কাশ্মিরে। প্রায় এক বছর যুদ্ধের পর যখন অস্ত্র বিরতি হল, দেখা গেল কাশ্মিরের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ রয়েছে ভারতের দখলে, এক তৃতীয়াংশ আছে পাকিস্তানের দখলে। সেনা ক্ষয়ক্ষতি, পাকিস্তানের পক্ষে ৬০০০ নিহত, ১৪০০০ আহত, ভারতের পক্ষে ১৫০০ নিহত এবং ৩৫০০ আহত।

১৯৬৫-এ আবার কাশ্মীর দখল করার জন্য ‘অপারেশন জিব্রাল্টারের’ নামে প্রায় ৩০ হাজার পাকিস্তানি সেনা গোপনে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কাশ্মীরে ঢোকে।এবং স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বেশ ধরে এই সেনারা যুদ্ধ করবে ভারতীয় সৈন্যদের সাথে।কিন্তু কাশ্মীরের জনগন তাদের এ গোপননীতি এবং অবস্থান জানিয়ে দেয় ভারতীয় সৈন্যদের। ফলাফল ১৭ দিনের যুদ্ধ শেষে পাকিস্তানের ১৮০০ বর্গ কি:মি: উর্বর এলাকা দখলে নিল, আর পাকিরা দখল করে নিল ভারতের ৫০০ বর্গ কি:মি: মরুভুমি এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত ৯৭টা প্যাটন ট্যাংক ফেলে চলে যায় পাকিস্তানি সৈন্যরা।

১৯৭১-এ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে পাকিরা ভারতের সীমান্ত এলাকা দখল করতে এসে ‘একটি’ মাত্র সীমান্ত ফাঁড়ি দখলের ব্যর্থ চেষ্টায় ৩৪টা ট্যাংক হারানোর পাশাপাশি একটি মোবাইল ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেডের প্রায় ৫০০ গাড়ি ফেলে যেতে বাধ্য হয়।

১৯৯৯-এ ভারতের পরিত্যক্ত কিছু হাই অল্টিচ্যুড বর্ডার পোস্ট দখল করে নেয় পাকিস্তান।দুই মাস যুদ্ধের পর ৪০০০ সৈন্য হারিয়ে বিদায় নিতে বাধ্য হয় পাকিস্তানি সৈন্যরা।

এবার আসি আমাদের হুজুগে বাঙ্গালীর অনলাইন বিপ্লব নিয়ে।একদল আছে যারা পাকিস্তান বিরোধী অন্যদল আছে ভারত বিরোধী।পাকিস্তান বিরোধী হওয়ার কারণ অনেক আছে তার মধ্যে হলো ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে মূলত। কিন্তু ভারতবিরোধীর কারণ ভারত হিন্দুয়ানী রাষ্ট্র এবং অনেক মুসলিম মুমিন ভাইদের ধারণা ১৯৭১ সালে ভারতই চক্রান্ত করে পাকিস্তান থেকে মানে মুসলিম ভাইদের মাঝে দ্বন্দ লাগিয়ে দিয়ে আলাদা করে বাংলাদেশ নামক একটা রাষ্ট্র করে দিছে এবং ভারতের গোলাম হয়ে থাকার জন্য।এজন্যই যখন বাঙ্গালী পাকিস্তানপন্থী সমর্থকরা জানতে পারলো আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারতের পাশে আছে যে কোন ধরনের সন্ত্রাস মোকাবেলায় তখনই যেন তাদের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা পরলো।এবং আমার বাংলাদেশকে অপমান করে ফেসবুকে ট্রল করতে দ্বিধাবোধ করলো না কিঞ্চিত পরিমান।

পাকিস্তানপন্থীদের ধারণা, পাকিস্তান এক মহাশক্তিধর দেশ, ইচ্ছে হলেই ভারতকে শেষ করে দিতে পারে।আর পাকিস্তানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র আছে বলে কথা।কিন্তু অভাগারা এটা জানে না যে,পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থাটা বর্তমানে কোন হালে রয়েছে ! আমাদের ছোট্ট এই দেশের তূলনায় পাকিস্তানের ফরেন রিজার্ভ অতি সামান্য। অনবরত জঙ্গিহামলা আর আভ্যন্তরীণ কোন্দলে দেশটি এখন দিশেহারা। প্রতিটা শুক্রবারে মসজিদে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলা।আর পাকিস্তানী রূপীর বিপরীতে ভারতীয় রূপীর মূল্য দ্বিগুণ।

একসময় পাকিস্তানের সাথে ছিলো আমেরিকা কিন্তু আজ তারাই পাকিস্তানকে একটা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যেহেতু তাদের কাছে অর্থবিত্ত নাই সেহেতু তাদের আর অস্ত্র কেনার সামর্থ নাই এবং আমেরিকার অস্ত্র ব্যবসাও তাদের কাছে আর আগের মত হবে না।বরং এখন ভারত অর্থে অনেক বেশী স্বয়ংসম্পূর্ণ।তাই আমেরিকা এখন ভারতকে হাত করতেই বেশী ব্যস্ত অন্যদিকে পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসীরাষ্ট্র হিসাবে ঘোষনা করায় ব্যস্ত।

তাই পাকিস্তানপন্থী বাঙ্গালীদের বলি, বাস্তবতা বিচার না করেই পাকিস্তানের অনেক পারমাণবিক বোমা আছে, শত শত যুদ্ধবিমান আছে, জাদরেল জাদরেল পাকি সৈন্য আছে ।সবই ঠিক আছে,কিন্তু এসব সৈন্যের ভূড়িভোজ এবং যুদ্ধের পরিচালনার জন্য মানে যুদ্ধের গোলাবারুদ কেনার মতো তহবিলও তাদের স্বয়ংসম্পুর্ন না দীর্ঘদিন যুদ্ধ চালনা করার জন্য।অন্যদিকে চীন এবং আরবের সহায়তা ছাড়া অন্যকোন দেশ তাদের সহায়তা দিচ্ছে না।অন্যদিকে ভারতের প্রেক্ষাপট তা বাস্তবিক হলেই খেয়াল করতে পারবেন।বন্ধুবিহীন একটা দেশ কোন দেশের মিডিয়া সাপোর্ট পাবে না।তাহলে পাকিস্তানের অবস্থা কতটাই করুন হতে পারে তা একবার না ভাবলে হয় না সাধু!

তবে,ভারত এবং পাকিস্তান দুইটাই বুদ্ধিদীপ্ত দেশ। যুদ্ধবিগ্রহের কুফল কমবেশি সবারই গায়ে লাগে। ব্যাবসা বানিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমার ধারণা ঠান্ডা মাথার ভারতীয় রাজনৈতিক শক্তি রক্তপাত এড়িয়ে চলতে চাইবে এবং পাকিস্তানও তেমন বেশী আগাতে চাবে না এখন আর।


সূত্রঃ দৈনিক ইনকিলাব,যুগান্তর,বিবিসি বাংলা,জি নিউজ,এই সময়,জনমত বিডি,এমটি নিউজ,পিএনএস নিউজ,বিবার্তা,ইন্ডিয়ান টাইমস,আনন্দ বাজার,এগিয়ে চলো।

শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আড়ালে যে সাম্প্রদায়িকতার হাসে!

আমরা উপরে উপরে যে যেমনি হই, ভিতরে ভিতরে সবাই কমবেশী সাম্প্রদায়িকতা পোষন করি।হোক সে মুসলিম আর হোক সে হিন্দু।আমার বাস্তবে জীবনে ঘটে যাওয়া একটা কথা বলি।আমার যেহেতু ধূমপান করার বদ অভ্যাস আছে।সেই সুবাদে বিভিন্ন দোকানদারের সাথে একটা ভালো সম্পর্ক থাকে অনেক জাগায়।যেন স্বাচ্ছন্দ্যে ধূমপান করতে পারি এবং কোন বিধি নিষেধ ছাড়াই দোকানের ভিতর প্রবেশ করে নিজের হাতেই সিগারেট নিয়ে খেতে পারি দোকানদেরকে না বলেও।কারণ এই জায়গায় একটা বিশ্বাস আছে আমার প্রতি এবং তার প্রতি আমারো।তবে ভদ্রতার খাতিরে বলেই নিজের হাতে নিই যা নিবার কিন্তু দোকানদার ভাইদের বলেই।তবে আমার মত অনেকেই কিন্তু সে দোকানগুলায় যাওয়া আসা করে তারাও যেন স্বাচ্ছন্দ্যে একটু সময় নষ্ট করে চলে আসে।সেই সুবাদে অনেক অপরিচিত লোকের সাথে কিংবা আমাকে চিনে আমি চিনি না বা আমি চিনি তারা চিনে না এমন লোকের সাথেও পরিচয় হয়,কথা হয় সিগারেটও খাওয়া হয়।আবার অনেক সময় অনেক ব্যক্তিগত কথাও হয়।সেরকমই ভাবে আমার এক বড় ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয়,যে আমাকে চিনতো আমার বাপ-দাদার সুবাদেই।তো একদিন আমার সাথে কথা বলে এবং আমার ফ্যামিলিকে চিনে বলেই।আমার দাদু বেচে থাকতে আমাদের বাড়ীতে আসতো,পূজার সময় এসে খই,মোয়া,মুড়ী,নাড়ু খেতে।সে এই কথা গুলা নিজ থেকেই বললো।এবং সে ওইদিন কথাগুলা এমন ভাবেই আমার কাছে বললো যে, তার মাঝে কোন ভেদাভেদ নাই মানুষের মাঝে।আসলে সে এই কথাটা যদিও মুখে বলে নাই,তবে সেটা আমি ধারণা করে নিছি তার কথা বলার ধরণেই।সেই সুবাদে লোকটাকে আমার কাছে ভালোই লাগতো আর খারাপ লাগারো কোন কারণ নাই।কারণ লোকটা যথেষ্ট পরিমান ভদ্রও আছে।তাও সেটা আমার অনুমান।যাই হোক,গতকাল সন্ধ্যার পরে যখন আমি বাসা থেকে বের হয়ে কাওকে নাই পাই তখন আমার শেষ আশ্রয়স্থল হয় এক দোকানদার ভাইয়ের দোকান।যেখানে আমাদের আড্ডার জায়াগাও বলা যায়।তাই সেই জাগায় গেলাম সিগারেট ফুকার জন্যই।সিগারেট ফুকতে ফুকতেই সেই ভদ্র লোকের আগমন।সেও এসে বিড়ি ফুকা শুরু করে দিলো।কিন্তু তার সাথে আমার কোন কথা হচ্ছে না।সে তার মত আমি আমার মত নিজের কাজে ব্যস্ত।তো দোকানদার ভাই এক লোকের সাথে কথা বলতেছিলো কোন এক বিষয় নিয়ে।বলতে বলতে কথাটা আমার কানেও আসে।তবে কথায় বাম হাত দেওয়া কিংবা হঠাৎ করে কোন কথায় কান দেওয়া বা মাঝখানে কথা বলাটা আমি খুবই কম করি।আবার বলি না যে,তা কিন্তু ঠিক না।তবে লোক, সময় বুঝেই বলি।যাই হোক কাল তাদের কথায় আমি কোন কথা বলি নাই।কিন্তু ভদ্রলোকটা দোকানদারের একটা কথার তীব্র প্রতিবাদ করে মাঝখান থেকে কথা শুনে হোক আর পুরুপুরি কথা শুনেই হোক।কারণ দোকানদার ভাই একটা পর্যায়ে বলতেছিলো খ্রীষ্টানরা,হিন্দুরা সৎ আছে।এই কথাটা ভদ্রলোক মেনে নিতে পারে না।সে বলে প্রশংসা কইরেন না।এই কথাটা শুনেই আমার হাসি পায়।প্রশংসা করতে মানা করার কারণে।কিন্তু হাসিটা আমার কাছেই লুকিয়ে রাখি।আর কারণটা নিজে নিজেই বের করে নিই হয়তো সে খ্রীষ্টানদের সৎ বলছে এই কারণেই ভদ্রলোকটার মনে লাগছে(ধর্ম ফ্যাক্ট)।তবে দোকানদার ভাইও কম যায় না।ও তার আগে দোকানদার ভাই সম্পর্কে ১ লাইনের একটা কথা বলে নিই।সে আসলে তরিকের লোক এবং অনেকটা লালণ পাগল বলা যায়।যার কারণেই সে সত্যিকার অর্থে সৃষ্টিতে বিশ্বাস করে ভেদাভেদে না।যাই হোক আবার মূল আলোচনায় আসি,দোকানদার ভাই ভদ্রলোককে বললো আপনি কেন এই কথা বললেন যে ওদের প্রশংসা করা যাবে না?ভদ্রলোকের প্রত্যুত্তরে উত্তর ছিলো তারা বিধর্মী।তারা যতই ভালো হোক তারাতো আপনার ধর্ম নেয় নি।আপনি কি এটা মানেন যে,আপনার ধর্মের উপরে কোন ধর্ম নাই।তো দোকানদার ভাই স্বভাবগত ভাবেই বলে হুম মানি।কিন্তু এরা কাদের সৃষ্টি,আমরা আল্লাহ ডাকি আর তারা গড,ভগবান ডাকে।কিন্তু কাকে ডাকে তারা?ওই এক জনকেই তো ডাকে।কিন্তু ভদ্রলোকের একটাই কথা,তারা মুসলিম না,তারা আমার আপনার ধর্ম নেয় নি।এটাই তাদের বড় ভুল আমার কথায় বিশ্বাস নাভলে বড় যেকোন হুজুরকে জিগাইতে পারেন।তাহলে দেখুন একটা ভদ্রলোক,যে কিনা হিন্দুদের বাড়িতে খাইতো,যাইতো;সেই আজ ব্যক্ত করলো মনে মনে সে কেমন ঘৃণা পোষন করে বিধর্মীদের প্রতি!আসলে তাহলে সে কি সাম্প্রদায়িকতা ভুলে হিন্দুদের বাড়ীতে যেত মানে আমাদের বাড়িতে নাকি খাবার জন্য যেত?আসলে এখন আমার যা মনে হচ্ছে তা হলো,জিহ্বার লোভ বড় লোভ।যদি লালা ঝরা শুরু করে তাহলে বারবার ডুক গিলেও লালা নিঃস্বরন বন্ধ করা যাবে না।যাই হোক,এখন শেষের কথাটা বলি যখন ভদ্রলোকটা তার কথায় অটল এবং আত্মবিশ্বাসী তখন দোকানদার ভাই শুধু একটাই কথা বললো আপনি তো গান শুনেন, বারী সিদ্দিকির?কিন্তু কিছু কিছু তার গান আছে মনযোগ সহকারে শুইনেন তাহলেই আপনি আপনার উত্তর পাবেন অথবা লালনের গান শুনলে আপনার ধারনা পাল্টাতে পারে।এই কথা বলা শেষে তারা তাদের কাজে ব্যস্ত হয়ে গেল কিন্তু দোকানদার ভাই সেই পূর্বের লোকের সাথে আবার একটা কথা বললো সেটাও আমার খুব মনে ধরেছে(পুর্বের লোক বলতে যার সাথে কথা বলার প্রসংগেই ভদ্রলোকের সাথে লেগে যায়)।তাকে বললো যে, আমরা সবাই একজনেরই সৃষ্টি এই কথা যদি বিশ্বাস করো তাহলে মুচি,চামার,ঢুলি,মেথর,হিন্দু,বৌদ্ধ,খ্রীষ্টান মানে সৃষ্টির কোন জীবকেই অবহেলা করা ঠিক না।কারণ তুমি ইচ্ছা করলেই আল্লাহকে দেখতে পারবা।সে আমাদেরই মাঝে থাকে।এই বলে সে তার কথার ইতি টানলো আর আমি তাদের কথা মনযোগ সহকারেই শুনলাম।দোকানদার ভাইয়ের কথা শুনে অনেক কথাই মনে পড়লো আমার,তবে লালনের এই কথাটাই আমার কানে বেশী বেজে উঠলো- এমন সমাজ কবে গো সৃজন হবে যেদিন হিন্দু-মুসলমান,বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান জাতি গোত্র নাহি রবে..........
বি. দ্র:গান শোনা,নেশা জাতীয় কিছু খাওয়াও কিন্তু হারাম তাও আবার সেটা বিধর্মী কম্পানির পণ্য।আবার আর একটা কথা বলি হিন্দুরা দেখুন কেমন,তাদের রান্না ঘরে যদি কোন নিচু বর্নের লোক কিংবা মুসলিমরা প্রবেশ করতে নেয় তাহলে রাম রাম করে মুখে ফেনা তুলে ফেলে।যদিও এখন আর আগের মত এই আচরনটা গোড়া হিন্দু ব্যতীত খুবই কম দেখা যায়।কালের বিবর্তনে অনেক কিছুই লোপ পাচ্ছে যা,মানব সভ্যতার জন্যই সুফল।

বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০১৬

পুরুষ রচিত ধর্মের চোখে নারী –পর্বঃ০৪ (ইহুদী ধর্ম)

সম্প্রতি নারীদের সামাজিক এবং ধর্মীয় মর্যাদা সম্পর্কে যখন খুব বেশি আলোচনা ও সমালোচনা উঠছে, ঠিক এ সময়ে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ইহুদী ধর্মে নারীদের মর্যাদা সম্পর্কে প্রতেক্যকে অবগত হওয়া আবশ্যক।

হে নারী তুমি কি জান তোমাদের ধর্মগ্রন্থ বলে দিয়েছে, তোমার শিক্ষা, তোমার জ্ঞান, বুদ্ধি, প্রতিভা,তোমার সদাহাস্য চেহারা, মানুষের প্রতি তোমার ভালবাসা, শ্রদ্ধা, তোমার সমুহ মানবিক গুণাবলী থাকা সত্বেও, তুমি একজন নিম্নমানের পুরুষের চেয়ে নিকৃষ্ট। একটিই কারণ -তুমি একজন নারী ।

গ্রীস সভ্যতায় নারী জাতিকে বিশৃঙ্খল ও ভাঙ্গনের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎস বলা হতো।চৈনিক সভ্যতায় নারীকে দুঃখের কারন হিসেবে ভাবা হতো। রোম সভ্যতায় নারী ছিল পুরুষেরগৃহ সুসজ্জিত করার জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের অন্তর্ভুক্ত।জাহেলি যুগে নারী ছিল পুরুষের ভোগের সামগ্রী। তারা ছিল অকল্যাণ অসম্মানের প্রতিক। সে যুগে নারীকে অত্যন্ত ঘৃণা করা হতো। নারীকে অভিশাপ মনে করে শিশু কন্যাকে ঠান্ডা মাথায় জীবন্ত কবর দিত। ঘোড়ার পায়ে বেধে নারীকে হত্যা করা হতো। ইচ্ছামত যত খুশি বিবাহ করা এবং আবার যখন খুশি তালাক দিত। নারী ছিল ভোগ্য পন্যের মত সামগ্রী। মধ্য যুগেও নারীর জাতির মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত ছিল না।আর ইহুদী ধর্মে নারীদের গুণের চেয়ে পুরুষের দোষও ভাল।

ইয়াহূদীগণ মনে করে থাকে যে সর্বপ্রথম নারী জাতি শয়তানের প্ররোচনায় লিপ্ত হয়ে পুরুষদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে আর সেই থেকে নারীদের উপর পুরুষেরা সর্বদা কর্তৃত্বশীল হবে এবং নারীদের এর দ্বারা প্রসবের কষ্ট দেওয়া হয়েছে।তাই তারা নারী জাতিকে এভাবে করে হেয় প্রতিপন্ন করেছে।

আগে ইহুদী সমাজে নারীদেরকে সাক্ষ্যদানের অধিকার দেয়া হত না।ইহুদী পন্ডিতের মতে , বেহেশত থেকে বের হওয়ার পর নারীদের প্রতি যে সমস্ত অভিশাপ এসেছে তন্মধ্যে একটি হচ্ছে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য না হওয়া। বর্তমানেও ইসরাইলে ইহুদীদের ধর্মীয় কোর্টে নারীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় না।এর কারণ হিসেবে ইহুদী পন্ডিতদের ভাষ্য হচ্ছে ইবরাহীম আ. এর স্ত্রী সারাহ মিথ্যা বলেছিলেন। (জেনেসিসঃ১৬/৯-১৮)

আবার,"যদি কোন পুরুষ কোন মহিলাকে বিবাহ করার পর তার নিকটবর্তী হয়ে তাকে অপছন্দ করে এবং সমাজে তার দুর্নাম করে বলে- আমি একে বিবাহ করে কুমারী হিসেবে পাইনি। তখন তার পিতামাতা তাকে নিয়ে যাবে এবং তাদের বাড়ীর সামনে অবস্থানরত সমাজের বয়স্কদের সামনে তার কুমারিত্বের প্রমাণ হাজির করে বলবে, আমি আমার কন্যাকে এই লোকের সাথে বিবাহ দিয়েছি। সে তাকে অপছন্দ করে কুমারী পায়নি বলে সমাজে দুর্নাম ছড়াচ্ছে। এই দেখুন,এটা তার কুমারিত্বের প্রমাণ বলে বয়স্কদেরকে তার কাপড় দেখাবে। তখন সমাজের বয়স্ক ব্যক্তিরা ঐ ছেলেকে ধরে নিয়ে শাসন করবে এবং ১০০ রৌপ্যমুদ্রা জরিমানা করে অপবাদের বিনিময় হিসেবে মেয়ের পিতাকে দেবে। আর ঐ মেয়ে হবে তার আজীবনের জন্য স্ত্রী। তালাক দেয়ার কোন অধিকার তার অবশিষ্ট্য থাকবে না। পক্ষান্তরে, যদি কন্যার কুমারিত্ব না পাওয়া যায় তাহলে, মেয়েকে পিত্রালয়ের সামনে নিয়ে এসে পুরুষেরা তাকে পাথর মেরে হত্যা করবে।কেননা,সে ব্যভিচার করে তার পিত্রালয়কে কলংকৃত করেছে। তাই এ পাপিষ্টকে ওদের থেকে দূর করে ফেলতে হবে। (ডিউটারনমী: ২২/১৩-২১)

ইহুদী বিধি-বিধান ঋতুবতী মহিলাদেরকে কঠোরতার দিকে ঠেলে দিয়েছে।যদি কোন মহিলার শরীরে কোন প্রবাহিত রক্ত থাকে যা গোশতের উপর প্রবাহিত হয়, তাহলে সে এক সপ্তাহ পর্যন্ত অপবিত্র থাকবে। যে তাকে স্পর্শ করবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত নাপাক থাকবে। সে যার উপর বসবে বা শয়ন করবে তা নাপাক বলে গণ্য হবে। যে তার বিছানা স্পর্শ করবে তার শরীরের পোশাক ধৌত করতে হবে, গোসল করতে হবে এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত সে নাপাক থাকবে। সে যার উপর বসেছে এমন কোন আসবাব পত্রকে স্পর্শ করলেও অনুরুপ তাকে গোসল ও তার পোশাক ধৌত করতে হবে। এমতাবস্থায় সে সন্ধ্যা পর্যন্ত নাপাক থাকবে। (লেভিটিকাসঃ ১৫/১৯-২৩)

কোন এক জাগায় পড়েছিলাম প্রফেসর ড.মিনাখিম এম.ব্রায়ারের মন্তব্য।ব্রায়ার বলেন,” টান্নাইটিক যুগে যে সমস্ত ইহুদী মহিলা মাথা অনাবৃত রাখত তাদেরকে বেহায়া হিসেবে গণ্য করে ৪০০ দিরহাম করে জরিমানা করা হত”।

অর্থাৎ,উপরিউক্ত আলোচনা থেকে সহজেই অনুধাবন করা যায় যে,প্রত্যেকটা ধর্মগ্রন্থ নারীদের ক্ষেত্রে কতোটা প্রক্ষর এবং অমানবিক দৃষ্টিকোন রাখে।
(পর্ব আকারে লেখা হচ্ছে, চলতে থাকবে)

বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০১৬

ইস্যু যখন শ্যামল কান্তি স্যার

অনেকেই দেখতাছি স্যার শ্যামল কান্তির ইস্যু নিয়ে মসজিদ এবং মসজিদের মাইক নিয়ে দোষারুপ শুরু করে দিছে।আচ্ছা ভাই,আপনি মসজিদ কিংবা মন্দিরের বা যেকোন ধর্মীয় উপাসনালয়ের দোষ দিয়ে কি কোন লাভ আছে?সেটা হলো সবে মাত্র একটা জড় বস্তু(ঘর)।কারণ,অনেকেই বলা শুরু করছে,আপনি মসজিদের মাইক থেকে আযান দিয়ে দেখুন কয়জন নামাজী উপস্থিতি হয়?কিন্তু সেই মসজিদ থেকে মাইক দিয়ে ধর্ম অবমাননার ভুয়া ঘোষণা দেওয়া হয় তাহলে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়ে যাবে লাঠি, দা-চাপাতি নিয়ে।যুক্তিটা অবশ্যই ভালো মনে হয়েছে।কিন্তু একটা কথা চিন্তা করে দেখেনতো,রাস্তার পাশে যখন কোন লোক একসিডেন্ট হয় কিংবা বিপদে পড়ে আমরা কয়জন তারপাশে যাই এবং ভীড় জমাই (যদিও একজন দুজন যাবার পর অনেকেই পরে আসে)?কিন্তু যখন রাস্তার পাশে যখন কোন পকেটমার কিংবা চোরকে ধরা হয় তখন হাজার হাজার উৎসুক জনতা চলতি বাস কিংবা রিক্সা কিংবা যানবাহন থেকে নেমে মারা শুরু করে দেয় চোরকে।এই কথার কারন একটাই,আমরা একটু বেশী আবেগ প্রবন তবে সেটার লক্ষন তখনই দেখা যায় যখন কেও বিপদে পরে তখন তাকে ঘাড় ধরে ধাক্কায় কূয়ায় ফেলে মজা নেওয়ার সময়।এখন আপনি একটা কথা বলতে পারেন আমি বক ধার্মিক কিংবা অন্যায়ের পক্ষ নিছি।না ভাই সেটা আপনার ভুল ধারনা।আমরা আজ অনেকেই প্রতিবাদ করতাছি,কিন্তু এখানে যে শ্যামল কান্তির সাথে গত ৫ বছর ধরে চক্রান্ত চলতাছে তা নিয়ে কেও কিছু বলতাছিনা।তাকে তো কেবল মাত্র একটা ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে সাজানো নাটকের দৃশ্যস্থাপনা করা হয়েছে।আজ যখন এলাকাবাসী কিংবা ছাত্র বলছে যে,শ্যামল কান্তি স্যার ধর্ম নিয়ে কোন কথা বলে নাই।
আবার সেই ছাত্রই বলতাছে শিক্ষক ধর্ম নিয়ে অনেক কটুক্তি করছে।
উপরের ভিডিও দুইটা দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে,সেলিম গং এবং তার সাঙ্গপাংগদের বাচানোর জন্যই পুনরায় আবার পরের ভিডিওটি করা হয় ক্ষমতার জোরে।কারণ ওসমান গঙদের সম্পর্কে সকলই কমবেশী অবগত আছেন।তাহলে এই কাজটা কে করছে সেটাতো অতি সহজেই বুঝা যাচ্ছে শ্যামল কান্তি স্যারের ভিডিও বিবৃতি থেকে।প্রশাসন কিংবা আমজনতা সেটা নিয়ে কেন কোন কথা বলছে না?আর প্রশাসনও সেই ব্যাপারে চুপ কেন?শুধু সেলিম ওসমানের কানে ধরে মাফ চাইলেই কি সেই শিক্ষকের অপমান এবংতার সাথে শত্রুতা শেষ হয়ে যাবে?মোটেও না,তাই সেলিম ওসমানের সাথে তাদেরও খুজে বের করতে হবে যারা এই দৃশ্যায়নের পরিচালক।তবেই শ্যামল কান্তি স্যার কিছুটা হলেও রেহাই পাবে এবং তার জীবনের নিরাপত্তার ব্যাবস্থা করতে হবে।আজ অন্যায়কারীরা ধরেন সবার সামনে কানে ধরেই মাফ চাইলো এ জাতির সামনে কিংবা কোন সাত রাস্তার মোড়ে।কিন্তু কাল যখন খবরের কাগজে নিউজ হবে,শ্যামল কান্তিকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে এবং প্রত্যক্ষ দর্শীদের ভাষ্য মতে,খুনীরা সেই সাথে আল্লাহু স্লোগান দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছে।তখন কি তাহলে সেখানে আবার ধর্মীয় ইস্যু টেনে জংগী হামলায় ফেলে দিবেন হত্যা ইস্যুকে?তাই সব কিছু করার আগে,শ্যামল কান্তি স্যার এবং তার পরিবারের নিরাপত্তার ব্যাবস্থা আগে করতে হবে।তারপরেই না হয় আমরা বিচারের দাবি করতে পারি।তবে এর মানে এই না যে,আমরা প্রতিবাদ করবো না।প্রতিবাদ অবশ্যই হবে।তবে প্রত্যেক ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়াটাই আগে ভাবা উচিত এবং সেই সাথে ব্যবস্থা নেওয়া।

মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৬

বিচারহীনতায় বাংলাদেশ

যখন একটি রাষ্ট্রে বিচারহীনতার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, অযাচিত রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি পায় তখনই সমাজের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে থাকে। আর তখনই রাজনৈতিক প্রভাবে অপরাধরীরা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে। গোটা দেশটাই হয়ে উঠে অপরাধ রাজ্য।

পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে সমাজের বিশেষ বিশেষ ব্যক্তি। ঘটনার বিশ্লেষণ বা তরজমা এখন আর জনমানসে খুব একটা প্রভাব ফেলছে না। দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে কোপাকুপির আতঙ্ক। কে কখন সন্ত্রাসীদের চাপাতির লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন এই ভয় পেয়ে বসে আছে দেশের সকল শ্রেনীর কিংবা বিশেষ কিছু লোকের মনে।কারণ কে কোথায়,কিভাবে এই টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন তা আমাদের কারো জানা নাই। আর কী অপরাধে মানুষ একের পর এক খুন হচ্ছেন বা তাও কেউ জানছে না।তবে ব্লগার,মুক্তমনা,লেখক,শিক্ষক,প্রগতিশীল,সংস্কৃতিমনারাই খুনীদের টার্গেট তা বিগত হত্যাকান্ড এবং একই কায়দায় হত্যার কৌশল থেকে মোটামোটি সুস্পষ্টভাবেই বলা যায়।আর খুনীদের হত্যার মূল হাতিয়ার হচ্ছে চাপাতির ব্যবহার।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনও এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনও ধারনা দিতে পারছে না। বিগত কয়েক বছর ধরে সংঘটিত হত্যাকান্ডগুলো দেশের স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রতিফল ঘটায় না ৷ সরকার সেইসব হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিধায় একের পর এক হত্যাকান্ড সংঘটিত হচ্ছে ৷ ফলস্বরূপ আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে ৷

সরকারের বিভিন্ন তদন্তে নিয়োজিত বাহিনীগুলোর সক্ষমতা এবং পেশাদারীত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠছে ৷ তদন্তে নিয়োজিত গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সাগর-রুনী হত্যা, নাস্তিক,ব্লগার,প্রকাশক,অধ্যাপক, মুয়াজ্জিন,পুরোহি ত,সাধু,বিদেশী পুলিশ হত্যার সঠিক কারন এবং হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে পারেনি বিধায় খুনীরা এখন কাউকে হত্যা করতে দ্বিতীয়বার ভাবছে না ৷ খুনীরা খুন করে বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে খুন করেও।অন্যদিকে সাধারণ মানুষ অনিরাপত্তায় ভোগছে।

ইদানিং শুধু চাপাতির ব্যবহার করেই খুনিরা আর সন্তুষ্ট থাকছে না। এর সঙ্গে তারা যুক্ত করে নিয়েছে গুলি। টার্গেট করা ব্যক্তির মৃত্যু দ্রুত নিশ্চিত করতেই খুনিরা গুলির ব্যবহার করছে। কুপিয়ে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যাচ্ছে। অথবা মোটরসাইকেলে করে এসে খুন করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করছে।

প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্য একসাথে সবাইকে অনিরাপদ করে ফেলেছে।গত বছর পর্যন্ত চাপাতি হত্যা হতো মাসিক হিসাবে। কিন্তু গ্রীন সিগন্যাল পাওয়ার পর, বর্তমানে তা দৈনিক হিসাবেই শুরু হয়েছে।কারণ চাপাতিবাদীরা জেনে গেছে, দেশের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী তাদের কিছু করতে পারবে না।নাস্তিক,ব্লগার ,প্রকাশক,অধ্যাপক, মুয়াজ্জিন,পুরোহি ত,সাধু,বিদেশী দুতাবাসের কর্মকর্তার পর এবার মন্ত্রী মিনিষ্টারদের আত্মীয়-স্বজনদের গর্দান পর্যন্ত পৌঁছে গেছে চাপাতি। এভাবে চলতে থাকলে অল্পদিনের ভেতরেই মন্ত্রীদের গর্দানেও আঘাত হানবে চাপাতি। বাসায়, অফিসে, রাস্তায়, বাজারে যে কোন জায়গায় আমাকে-আপনাকে কুপিয়ে মারবে।

যাকে হত্যা করা হোল তার পরিচয় যা-ই হোক না কেন, তিনি বিশ্বাসী কি অবিশ্বাসী তাতে কোন হত্যা জায়েজ হয়না। রাষ্ট্র ধারাবাহিকভাবে তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। কোন হত্যারই সুরাহা হচ্ছে না। কারণ যা-ই হোক না কেন "হত্যা" প্রচলিত আইনেই অপরাধ। কিন্তু আমরা দেখছি প্রতিটি হত্যার পর, বিভিন্ন মহল থেকে অন্যের ঘাড়ে দায় চাপানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়।“ এই হত্যাকান্ডে বি এন পি জামায়াত জড়িত”-প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর কলাবাগানে দুর্বিত্তকতৃক দুজনকে বাসায় ঢুকে কুপিয়ে হত্যার পর বিরোধীদলকে ফাঁসানোর জন্য তিনি একটি রাজনৈতিক মন্তব্য করে ফেললেন। একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী কতটা নিন্মমানের হতে পারে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে শিক্ষনীয়।কিন্তু কেনো? হত্যাকারী নিজ দলের হতে পারে না নাকি ?খুনি, ধর্ষক, লুটেরা, সন্ত্রাসীদের কোনো দল নেই। তারা দেশের শত্রু। তারা জাতির শত্রু,বিবেকের শ্ত্রু। ফলে হত্যার তদন্ত ও বিচার অন্ধকারে হারিয়ে যায়।সেই খুনের বিচার করার সাহস এই নাজুক অনুভূতিপ্রবণ রাষ্ট্রের নেই। এই হত্যাযজ্ঞ চলবেই, আমরা যা করতে পারি তা হলো, মৃত্যুচিন্তা মাথায় না নিয়ে যতদিন বেঁচে আছি সময়টাকে উপভোগ করতে পারি। এর বেশি কিছু আমাদের সক্ষমতার সীমায় নেই।

কিন্তু সাধারণ মানুষ আজ স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চায়। কিন্তু সুরক্ষিত কারাগার অঞ্চল ও অরক্ষিত, চাপাতি শিল্পের অগ্রযাত্রায় গত কয়েকটি বছরের ব্যাপক সফল্যে আজ উদ্ভাসিত বাংলাদেশ।

আহামদ ছফা যথার্থই বলেছিলেন- “আওয়ামি-লীগ হেরে গেলে হেরে যায় সমগ্র বাংলাদেশ ,জিতে গেলে পুরুবাংলাদেশ জিতে না”।

বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৬

বেখায়ালী

যোজন যোজন দূরে হারিয়ে গেছ তুমি
ফিরে পাবার নেইকো কোন আশা
তবুও কেন এতো মিছে মায়ায়
বেখায়ালি জীবন কাটছে ভবের পাড়ে।


আখি খুলে চেয়ে দেখ ঐ নীল আকাশের বুকে
উঠেছে নতুন সূর্য,পাখিরা করছে কলরব।
নগরী হয়ে উঠেছে ক্রমশ ব্যস্তময়
একা মনে বসে আছি জানালার পাশে।


বেলা শেষে রাত এসে জানালার প্রানে কড়া নাড়ে
পাখিরা নীড়ে ফিরেছে,চাঁদ মামা আলো ছড়াচ্ছে।
রাতের সংগী হয়েছে নতুন করে নিকোটিনের ধোয়া
আর গিটারের টুং টাং কর্কশ শব্দ
বেখায়ালী সবকিছুতেই তবু জীবনটা কাটছে বেশ।

শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৬

বিধর্মী/নাস্তিক হত্যা কি ইসলাম স্বীকার করে???

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ব্লগার এবং অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নাজিমুদ্দিন সামাদকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।নাজিমুদ্দিন সামাদের ওপর আক্রমণের সময় তার সঙ্গে থাকা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাউথ ইস্টের শিক্ষার্থী নাজিবের ওপরও আক্রমণ হয়। সৌভাগ্যক্রমে নাজিব বেঁচে যান।রাত নয়টার দিকে ঢাকার পুরনো অংশ সূত্রাপুরের একরামপুর ট্রাফিক মোড়ে কয়েকজন যুবক সামাদের গতিরোধ করে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি রাস্তায় পড়ে গেলে তাকে গুলি করে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। ওই সময় হত্যাকারীরা 'আল্লাহু আকবার' স্লোগান দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

নাজিমউদ্দীনকে যে বা যারা খুন করেছে তারা একটা ভিন্ন মতবাদ,ভিন্ন দর্শন,ভিন্ন চিন্তার পার্থক্যের ভিত্তিতেই খুন করেছে। আর এই ভিন্ন পার্থক্যটা হচ্ছে প্রগতিশীলতা,নাস্তিকতা,ধর্মান্ধদের সমালোচনা কিংবা বিশেষ কোন ধর্মকে সমালোচনা করা। আর অনেকগুলো ধর্মের মধ্যে সেই বিশেষ ধর্ম হচ্ছে ইসলাম ধর্ম এবং নবীর সমালোচনা করা। ইসলামী মতবাদ বলে নবী ও ইসলাম সমালোচনাকারীর একমাত্র শাস্তি হচ্ছে তাদেরকে হত্যা করে ফেলা। তাই ইসলাম যে তার সমালোচনাকারীকে হত্যা করতে বলে এটি যাতে প্রকাশিত হয়ে না পড়ে তার জন্য সব রকম চেষ্টা মডারেট মুসলিরা। তাদের প্রচারের মূল লক্ষ্য হলো, ইসলামী নিদের্শে হওয়া খুনগুলোকে প্রচার করা যে, ইসলামের এই ধরণের খুনকে কোনভাবেই সমর্থন করে না। কিন্তু আসুন তাহলে এবার একটু জেনে নিই ইসলাম এ ধরনের হত্যাকে সমর্থন করে কি করে না,তা কোরআনের মাধ্যমেই একটু পর্যালোচনা করা যাক।কারণ হাদিসের কথা বললে সেটাতো আবার জাল হাদিস হয়ে যায় আপনাদের চোখে।তবে আমারও এতো সুভাগ্য হইনি এখনো এত বড় হাদিসের বই ধৈর্য ধরে পড়ার।তবে কোরআনটা পড়া হইছিল এই ইহুদীদের তৈরী স্মার্টফোনের কল্যানে।আচ্ছা ফালতু কথা না বলে এখন একটু নিচের দিকে নজর রাখা যাক,-

# আর তাদের কে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে।বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ।আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষন তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে।এ হল কাফেরদের শাস্তি।(২:১৯১)

# খুব শীঘ্রই আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করবো।কারণ,ওরা আল্লাহর সাথে অংশীদার সাব্যস্ত করে যে সম্পর্ক কোন সনদ অবতীর্ণ করা হয়নি।আরা ওদের ঠিকানা হলো দোযখের আগুন।বস্তুতঃ জালেমদের ঠিকানা অত্যন্ত নিকৃষ্ট।(৩:১৫১)

# যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।(৫:৩৩)

# যখন নির্দেশদান করেন ফেরেশতাদিগকে তমাদ্র পরওয়ারদেগার যে,আমি সাথে রয়েছি তোমাদের,সুতরাং তোমরা মুসলমানদের চিত্তসমুহকে ধীরস্থির করে রাখ। আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়।(৮:১২)

# যুদ্ধ কর ওদের সাথে, আল্লাহ তোমাদের হস্তে তাদের শাস্তি দেবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয়ী করবেন এবং মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন।(৯:১৪)

# তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম।(৯:২৯)

# হে নবী, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফেকদের সাথে তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন।(৯:৭৩)

আর একটা হাদিসের কথা না বললেই না হয়।যেখানে বিভিন্ন সময় ওয়াজ মাহফিলে ইহুদী বৃদ্ধ কবি আবু আফাক এবং আসমা-বিনতে মারওয়ান যখন তার সন্তানকে বুকের দুধ পান করাচ্ছিলেন তখন কিভাবে হত্যা করেছিল নবীর এক অনুসারী এবং হত্যার পর নবী ইবনে আব্দুলার সাথে নামাজ আদায়ের কথা বর্নণা করা হয় খুব গর্ভ সহকারেই।

এরপরেও যদি কোন মডারেট মুসলি বলে ইসলাম নাস্তিক/বিধর্মী কিংবা ইসলাম সমালোচনাকারী হত্যা সাপোর্ট করে না তাহলে এখনো আপনি বোকার রাজ্যে বাস করছেন।আর এপনি যখন কোরআনের আল্লাহর বানী অস্বীকার করবেন তখন আপনিও মুনাফিক।আর মুনাফিকের পরকাল জাহান্নামের আগুন।এ সম্পর্কে কোরআনে আল্লাহ বলেছে,-

‘‘আল্লাহ মুনাফেক নর-নারী ও অবিশ্বাসীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জাহান্নামের আগুনের যেখানে ওরা থাকবে চিরকাল, এই ওদের জন্য হিসেব। ওদের ওপর রয়েছে আল্লাহর অভিশাপ, ওদের জন্য রয়েছে স্থায়ী শাস্তি।’’(৯:৬৮)

‘‘যারা আল্লাহর সঙ্গে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে এবং যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখার জন্য আল্লাহ নির্দেশ করেছেন তা ছিন্ন করে আর পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায় তাদেরই জন্য রয়েছে অভিশাপ এবং তাদের জন্য নিকৃষ্ট বাসস্থান।’’(১৩:২৫)

এখন আপনি বলেন ইসলাম এ হত্যা স্বীকার করে কি করে না?

রবিবার, ৬ মার্চ, ২০১৬

পুরুষ রচিত ধর্মের চোখে নারী –পর্বঃ০৩ (বৌদ্ধ ধর্ম)

কোন সৎ, চিন্তা ব্যক্তি নারীর প্রতি কোনো ধর্মের স্থূল নারীদের প্রতি বিদ্বেষ ও বর্বরতার উপেক্ষা করতে পারে না ।শক্তিশালী সৃষ্টিকর্তা দেবতা পুরুষ শাসিত, উপজাতীয়, সহিংস, অসহিষ্ণু সমাজের পণ্য ছিল। সমাজ জীবনে নারীর তুলনামূলক অনুপস্থিতি এবং নারীর উপর ধর্ষবাদী পুরুষদের যৌন আগ্রাসন ও ধর্ষণের আধিক্য যে কোনও মানুষের চোখে পড়বে।

আমরা জানি যে, নারীর হাত দিয়েই প্রধানত মানুষের সভ্যতার সূচনা হয়। কৃষি, পশুপালন, বস্ত্র, মৃৎ পাত্র নির্মাণ এগুলো মূলত নারীদের উদ্ভাবন এবং অনেক কাল পর্যন্ত এগুলো মূলত তাদেরই কাজ ছিল।কিন্তু সমাজ ও রাষ্ট্রের আয়তন বৃদ্ধি এবং সেই সঙ্গে যুদ্ধ বা সমরবাদের শক্তিবৃদ্ধি নারীর অবস্থার ক্রমাগত অবনতি ঘটায়।

বৌদ্ব ধর্মের অনুসারীগণ মনে করে নারীসংগ নির্বান লাভে অন্তরায়।বৌদ্ব ধর্মের প্রবক্তা গৌতম বোদ্ধ বলেছেন, “নারীদের সাথে কোনরুপ মেলামেশা কর না এবং তাদের প্রতি অনুরাগ রেখ না।তাদের সাথে কথা-বার্তাও বলবে না।কারণ পুরুষের পক্ষে নারী ভয়ংকরস্বরুপ।নারী থেকে বাঁচার চেষ্টা কর।”

বৌদ্ধ ধর্মে নারীরা শুধু সামাজিকভাবে নিগৃহীত হয়নি ধর্মীয়ভাবেও তাদের মর্যাদা ছিল অতিনগন্য যা বৈদিক ধর্মীয় গ্রন্থ 'মনুস্মৃতি'র শ্লোক উদাহরণ স্বরূপ প্রদত্ত হল।
নাস্তি স্ত্রীনাম পৃথগ্ যজ্ঞো ন ব্রতম্ নাপ্যুপোষথম্
পতিম্ শুশ্রুষতে যেন তেন স্বর্গে মহীয়তে। - শ্লোক ১৫৩

অর্থাৎ, প্রয়োজন নেই পৃথক কোন যজ্ঞ কিংবা উপোসনালয়ের,
পতি সেবায় স্বর্গ লাভ হবে স্ত্রীদের।

বৌদ্ধশাস্ত্রের ৫৩৬ নম্বর জাতক - নাম কুণাল জাতক। এই জাতকের প্রধান চরিত্র হল কুণাল যার মুখ নিঃসৃত বানী থেকে আমরা নারীদের সম্পর্কে জানতে পারি । কুণাল বলেন নারী কখনই বিশ্বাসযোগ্য নয়, নারী স্বভাবতই বিশ্বাস ঘাতিনী। নারী কোন ভাবেই প্রশংসার যোগ্য নয় এবং কি নারী কামাচারে পাত্রাপাত্র বিচার করে না।

এ নিয়ে বিদূরপণ্ডিত জাতকে আছে,
“নারীর চরিত্র হায়, কে বুঝিতে পারে?
অসতী প্রগলভা বলি জানি সবাকারে।
কামিনী কামাগ্নি তাপে জবে দগ্ধো হয়
উচ্চে নীচে সমভাবে বিতরে প্রণয়।
খাবার প্রস্তুতে বিচার নাই আগুনের ঠাই
নারীর প্রেমে পাত্রাপাত্র ভেদ জ্ঞান নাই।
অতএব ত্যাজি হেন জঘন্য সংসার
সন্ন্যাসী হইবো এই সংকল্প আমার।”

কুণালের মুখে উচ্চারিত হয় নীতি গাথা-
“সদা রক্ত মাংস প্রিয়, কঠোর হৃদয়,
পঞ্চায়ুধ, ক্রূরমতি সিংহ দুরাশয়।
অতিলোভী, নিত্য প্রতিহিংসা পরায়ণ,
বধি অন্যে করে নিজ উদর পূরণ।
স্ত্রীজাতি তেমতি সর্বপাপের আবাস,
চরিত্রে তাহাদের কভু করো না বিশ্বাস।”

তার মানে, পুরুষের কখনোই নারীর চরিত্রে বিশ্বাস করা উচিত নয়।

নারীরা যে মলের মতো দুর্গন্ধময়, এ সম্পর্কে কুণাল বলেন,
“নারী হল উন্মুক্ত মলভাণ্ডের ন্যায়। উন্মুক্ত মলভাণ্ড দেখিলে মাছি সেখানে ঝাপ দিবেই তাকে রোহিত করা কষ্টকর। কিন্তু একজন জ্ঞানী মানুষ সব সময় এই মলভাণ্ডের দুর্গন্ধ উপলব্ধি করে তা এড়িয়ে চলে। তদ্রূপ নারীরূপ মলভাণ্ডে মাছিরূপ পুরুষ ঝাপ দিবেই, কিন্তু একজন জ্ঞানী ভিক্ষু এই উন্মুক্ত মলভাণ্ডরূপ নারীদের দুর্গন্ধ উপলব্ধি করিয়া তাদের সদাই পরিত্যাগ করেন।“

কুণাল তার নীতিগাথায় আরো বলেন,
“চৌর, বিষদিগ্ধসুরা, বিকত্থি বণিক
কুটিল হরিণ শৃঙ্গ, দ্বিজিহ্বা সর্পিণী
প্রভেদ এদের সঙ্গে নেই রমণীর।
প্রতিচ্ছন্ন মলকুপ, দুষ্কর পাতাল
দুস্তোস্যা রাক্ষসী, যম সর্বসংহারক
প্রভেদ এদের সঙ্গে নাই রমণীর।
অগ্নি, নদী বায়ু, মেরু কিংবা বিষবৃক্ষ নিত্যফল
প্রভেদ এদের সঙ্গে নাই রমণীর।”

বোধিসত্ত্ব এক রাজা ছিলেন, এবং তাঁর পুরোহিতের সঙ্গে নিয়মিত পাশা খেলতেন। খেলার সময় একটি গান গেয়ে চাল দিতেন, এবং গানটির সত্যতা-বলে প্রতিবারই জিততেন। সেটির অংশবিশেষ,

“পাপাচার পরায়ণ জানিবে রমণীগণ,
স্বভাব তাদের এই নাহিক সংশয়;
যখনই সুবিধা পায়, কুপথে ছুটিয়া যায়,
ধর্ম্মে মতি তাহাদের কভু নাহি হয়।”
অর্থাৎ,নারীদের এতোই জঘন্য স্বভাব যে এখানে সেখানে তারা ঘুরাফেরা করে।

দুরাজান (দুর্জ্ঞেয়)-জাতক এর একটি কবিতা আছে ,
“ভাল যদি বাসে নারী, হইও না হৃষ্ট তায়;
যদি ভাল নাহি বাসে, তাতেই কি আসে যায়?
নারীর চরিত্র বুঝে হেন সাধ্য আছে কার?
বারিমাঝে চলে মাছ, কে দেখিবে পথ তার?”

অর্থাৎ, নারীরা সব সময় প্রেমালাপে পুরুষদের বস করে যদিও মনের মধ্যে তাদের থাকে খারাপ অভিলাস।

অনভিরতি-জাতক গল্পের কবিতায় বলা হয়েছে,
“নদী, রাজপথ, পানের আগার উৎস, সভাস্থল আর,
এই পঞ্চস্থানে অবাধে সকলে ভুঞ্জে সম অধিকার।
তেমনি রমণী ভোগ্যা সকলের, কুপথে তাহার মন;
চরিত্রস্খলন দেখিলে তাহার, রোধে না পণ্ডিত জন।”

অর্থাৎ, সুযোগ পেলেই অসতীরা পুরুষের সম্মান নষ্ট করে।
(পর্ব আকারে লেখা হচ্ছে, চলতে থাকবে)

শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

ড.অভিজিৎ রায়'কে স্মরনে

প্রগতিশীল সমাজ ব্যাবস্থা নিয়ে কথা বলা মানে কোন ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলা না,তবে ধর্মের গোড়ামি অন্ধতা নিয়ে কঠোর সমালোচনা করে অন্ধকার থেকে আলোতে ফিরে আসা।কারন ধর্মের উপর অন্ধ বিশ্বাস করে অন্যকে অপমান করা বা ছোট করে দেখা কিংবা ভয় দেখিয়ে অন্যকে দমিয়ে রাখা এবং ধর্মের উপর অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে কোন জাতি বা ব্যাক্তির প্রান নাশ কিংবা ধ্বংষ লিলা কখনো কোন ধর্ম হতে পারেনা।এটাকে একথায় সন্ত্রাসবাদ ছাড়া অন্য কিছু বলে দাবি করা যায় না।যদি কেও সেটা দাবি করে বলে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করার জন্য যাই করা হবে সেটাই ঠিক।তাহলে আমি তাকে বলব তোমার এমন ধর্মের কপালে আমি লাথি মারি।যেখানে কোন মানবতা নাই সেখানে কোন সৃষ্টিকর্তাও থাকতে পারেনা।জয় যদি হতেই হয় তবে মানবতার জয় হোক ।

ও হ্যাঁ, উপরের এই কথা গুলো বলার কারণ বিজ্ঞান মনষ্ক লেখক,মুক্তমনা ব্লগ প্রতিষ্ঠাতা, ব্লগার প্রকৌশলী অভিজিৎ রায় কে স্মরণে।"যারা ভাবেন বিনা রক্তে বিজয় অর্জিত হয়ে যাবে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। ধর্মান্ধতা, মৌলবাদের মত জিনিস নিয়ে যখন আমরা লেখা শুরু করেছি, জেনেছি জীবন হাতে নিয়েই লেখালেখি করছি।"-অভিজিৎ রায় নিজেই নিজের কথার পরিনত হয়েছেন। গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারীর এই দিনে ইসলামী জংগীদের চাপাতির নিচে জীবন দিতে হয় ড. অভিজিৎ রায়কে এবং গুরুতর আহত হয়ে প্রানে বেচে যান তার জীবন সঙ্গী বন্যা আহম্মেদ।গত বছর বইমেলার শেষের দিকে ২৬ ফেব্রুয়ারি নিহত হলেও এবারের আরেকটি বইমেলা প্রায় শেষের দিকে। এখনো তার হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি নেই।কিন্তু বিচারের নামে যেটা হয়েছে সেটা তদন্ত।যার আজও কোন মূল সূরাহ হয়নি।তার কারণ হয়তো,যদি অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারীদের বিচার করা হয় তাহলে হয়তো এদেশে হাজার হাজার অভির জন্ম হবে এদেশের ধর্মান্ধ সুশিলদের ধারণা।তাই তারা বিচারের নামে তদন্ত নামের এক ফাদে ফেলে এদেশের মৌলবাদ,উগ্রবাদী ধর্মান্ধ বিরোধী মানুষকে শান্তনা দেওয়া হচ্ছে।ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠীরা ভেবেছিল কুপিয়ে সব স্তব্ধ করে দিবে অভিজিৎদের।কিন্তু দেখ আজ এক অভিজিতের বদলে হাজারটা অভির কলম চলে,কলম চলবে ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, উগ্রবাদী, মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে।ওহে,মূর্খের দল তোমারা শুনে রাখ,একজন মানুষকে হত্যা করে তাকে এবং তার নিজের হাতে সাজানো অসমাপ্ত কাজটা তার দ্বারা নিঃশেষ হয় না।কিন্তু তার রেখে যাওয়া সম্পদ বা অসমাপ্ত কাজগুলো কেও না কেও তা নিজ দায়িত্বে নিজের কাধে তুলে অসভ্য সমাজকে আলোর পথ দেখায়। কারণ বেচে থাকা সভ্য মানুষদের চিন্তা শক্তিও নষ্ট করা যায় না একজন আলোর দিশারীকে হত্যা করে।হয়তো সাময়িকের জন্য কারো কারো চিন্তা শক্তি থমকে যায়,আবার অনেকের চিন্তা শক্তি তোমাদের হিংস্রতার কারণে বেড়ে যায়।সেটা হোক প্রকাশ্যে কিংবা ভিন্ন পথ অবলম্বন করে।অভির আগেও এই সভ্যতার জন্য কুসংস্কার বাদীদের হাতে জীবন দিতে হয়েছে অনেক স্বপ্নদ্রষ্টাকে,তা আমরা সকলেই কম বেশী জানি।কিন্তু এ সভ্যতাকে আটকানো বা পায়ে শিকল বেধে আটকানো যায় নি তবে সাময়িক বাধাগ্রস্ত হয়তো করা যায়।তবে একজনের অসমাপ্ত কাজ অন্যজন নিজের মনে করেই গুরুত্বসহকারে কাধে তুলে নেয়।সত্য, সৎ, ন্যায়পরায়ন,চরিত্রবান, যারা সৃষ্টিশীল তাদের মুল্য এখনো এসমাজে পরিলক্ষিত। এদের সম্মান কেহ কোন দিন চাইলেও বিনিষ্ট করতে পারেনি আর কোনদিন পারবেও না।যুগে যুগে যাহারা সত্যর পথে ধাবিত হইয়াছে, তাহাদের উপর প্রতিনিয়ত এই অন্ধ সমাজ বিভিন্নভাবে আঘাত করিয়াছে। তাহা শারীরিক ভাবেই হউক কিম্বা মানসিকভাবেও হোক। তথাপি কোনমতেই এই অন্ধ সমাজ তাহাদিগের মতবাদকে অস্বীকার করিতে পারে নাই। আর পারে নাই বলিয়া পৃথিবী আস্তে আস্তে সভ্যতার দিকে ধাবিত হইয়াছে।ঠিক তেমনই আমাদের এই সমাজের স্বপ্ন দ্রষ্টা ছিল অভিজিৎ রায়।
আমরা একজন অভিজিৎ রায়কে হারাইনি; আমরা হারিয়েছি এক স্বপ্নের মরুভূমির মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা এক আলোর দিশারী পথিক; অন্ধ বর্বরদের দেশে এক অনন্য সৃষ্টিশীল মুক্ত মনের মানুষ।যিনি চেয়েছিলেন,ধর্ম কুসংস্কার মুক্ত একটা সভ্য সমাজের অস্তিত্ব।

বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

ফেসবুক দুনিয়ায় এই শব্দগুলো আপনি না জানলে এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছেন

এখন সব কিছু শর্টে বলার যুগ। ধরুন আপনি এ যুগে আপনি কাউকে বললেন, তাড়াতাড়ি কর। তাহলে আপনার বলা উচিত, ASAP (As soon as possible)-কর। কিংবা কোনও কিছুতে আপনার খুব হাসি পেল। এবার সেটা আপনি টেক্সটে লিখবেন, হয় আপনাকে স্মাইলি পাঠাতে হবে। অথবা খুব জোরে হাসি পেলে আপনার লেখা উচিত LOL (laugh out loud)। এরকমই চলছে ফেসবুক, টুইটার, সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে। এগুলোকে নেট দুনিয়ার পরিভাষায় বলা হয় Internet Slang Words বা Computer Slang।
এমনই কিছু Internet Slang Words-এর কথা বলা হল যেগুলো আপনার কাজে লাগতে পারে। কখন কীভাবে ব্যবহার করা যায়, পুরো মানেটাই বা কী হয়।
খুব উপভোগ করার পরামর্শ দিতে
YOLO - You Only Live Once
----------------
সত্যি কথা বলার আগে
TBH - To Be Honest
----------------
আপনি সত্যিই জানি না বলতে
IONO - I Don't Know
-------------
আর দরকার নেই বলতে
SNM - Say No More
-----------
কথা বলতে চাইলে
TTY - Talk To You
------------
মনের মিল হলে
H2H - Heart To Heart
----------
ইয়ার্কি মারার পর
IJK - I'm Just Kidding
-------
শুভেচ্ছা জানাতে
GL - Good Luck
-------------
দ্বিধা কাটাতে
DBA-- Don't Bother Asking
---------
তাড়াতাড়ি করার কথা বললে
QAP - Quick As Possible
------
কোনও কিছুর খুব গুরুত্ব বোঝাতে
VBD-- Very Big Deal
----------
বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর সময়
FHO-- Friends Hanging Out
----------
কাউকে কোনও কিছু জানাতে হলে
INCYDK-In Case You Didn't Know
---------
কোনও কিছু বলতে বা দেখাতে না চাইলে
403-Deny Access To
----------
কাউকে ধন্যবাদ জানাতে হলে
YSVW---You're So Very Welcome
------------
কোনও বড় লেখার অনিচ্ছা প্রকাশ করলে
TLTR Too Long To Read
-------------
জানি না বলতে
IONO - I Don't Know
-------
কোনও কিছু স্বীকার করতে
TBH - To Be Honest
মূল লিখা 

শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

ভাষা আন্দোলনে শহীদ সূর্য সন্তানদের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ব্যক্তিগত তথ্য

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস আমরা সকলই কম বেশি জানি।যে ইতিহাস পড়তে গেলেই আসে ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন “রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই”(২১ শে ফেব্রুয়ারি)।রাষ্ট্র ভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠা করার দাবিতে সেদিন জলে উঠেছিল বাঙ্গালীদের বুক।নিজের জীবন লুটিয়ে দিতে রাজপথে নেমেছিল সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত এর মত আরো অনেক পবিত্র আত্মাগুলো। নিজের জীবনের বিনিময়ে অর্জন করে নিল মায়ের ভাষার অধিকার।তারই অব্যাহত ধারায় ২৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান জাতীয় সংসদে বাংলা এবং উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধান পাশ করে । ৩ মার্চ ১৯৫৬ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি প্রদানকারী পাকিস্তানের সংবিধান এইদিন থেকে কার্যকর হয় এবং ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বরে তমদ্দুন মজলিশের মাধ্যমে মায়ের ভাষায় কথা বলার যে আন্দোলনের শুরু হয়েছিল তার সাফল্য অর্জিত হয় ।
ভাষা আন্দোলনে অনেকেই শহীদ হয়েছেন। তাদের মধ্যে যাদের পরিচয় পাওয়া গিয়েছিলো তাদের মধ্যে সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার , শফিউর ,এর নামই বেশী শোনা বা পাঠ করা যায়। বাংলা উইকিপিডিয়া এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী শহীদের তথ্য এখানে যুক্ত একত্রিত করলাম।

# শহীদ আব্দুস সালাম
শহীদ আব্দুস সালাম ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর জন্মগ্রহন করেন। গ্রাম- লক্ষনপুর, উপজেলা-দাগনভূঁইয়া, জেলা- ফেনী। পিতার নাম- মোঃ ফাজিল মিয়া, মাতার নাম- দৌলতুন্নেসা। ৪ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে আব্দুস সালাম ছিলেন সবার বড়। তিনি দাগন ভুঁইয়ার করিমউল্লাহপুর হাইস্কুলে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এরপর কামাল আতাতুর্ক বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণীতে ভর্তি হলেও পারিবারিক কারণে আর লেখাপড়া করতে পারেন নি। অতঃপর চাচাতো ভাই আবদুল হালিমের সহায়তায় ঢাকা চলে আসেন। ৮৫ দিলকুশাস্থ "ডাইরেক্টরেট অব ইন্ডাস্ট্রুজ" এ করনিক পদে চাকুরী নেন। বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বায়ান্নোর ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সম্মুখের রাস্তায় ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নেন। পরে ছাত্র-জনতার উপর পুলিশ এলোপাথাড়িভাবে গুলি চালালে আবদুস সালাম গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। দেড় মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর ৭ এপ্রিল, ১৯৫২ তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

# শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ
শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ এর জন্ম ১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর। গ্রামের নাম-পারিল (বতর্মানে যার নামকরন করা হয়েছে রফিকনগর) থানা- সিংগাইর, জেলা- মানিকগঞ্জ। তার পিতার নাম- আব্দুল লতিফ, মাতার নাম- রাফিজা খাতুন। ৫ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে রফিক উদ্দিন আহমদ ছিলেন ভাইদের মধ্যে সবার বড়। শৈশবে গ্রামের স্কুলেই তিনি লেখাপড়া করেন। মরহুম আশরাফ উদ্দিন চৌধুরী ও বীরেন্দ্রমোহন দত্তগুপ্ত শিক্ষকদ্বয়ের সুযোগ্য ছাত্র হিসাবে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন।
রফিক বাল্যকালে কিছুটা ডানপিটে ছিলেন। তাই গাছ থেকে পড়ে তার হাত ভেঙ্গে চিকিৎসার জন্য কোলকাতা যান। কোলকাতা আবস্থানের সময়মিত্র ইনিস্টিটিউশনে শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর রফিকউদ্দিনের পিতা ঢাকায় চলে আসেন। এখানে বাবুবাজারে আকমল খাঁ রোডে পারিল প্রিন্টিং প্রেস নামে ছাপাখানা চালু করেন। এখানে রফিক বায়রা স্কুলে ভর্তি হয়ে ১৯৪৯ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বায়রা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে রফিকউদ্দিন মানিকগঞ্জ 'দেবেন্দ্রনাথ কলেজে' বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হন। আই.কম. ক্লাস পর্যন্ত পড়লেও পরে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকায় এসে পিতার সঙ্গে প্রেস পরিচালনা করতে শুরু করেন। পরে ১৯৫২ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজে ( বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন।
শহীদ রফিক সাহিত্যাঙ্গনে ছড়া রচনায় পটু ছিলেন এবং সেলাই ও সূচী শিল্পেও বেশ দক্ষ ছিলেন। সমাজকল্যানেও তিনি গভীর আগ্রহী ছিলেন। কোলকাতা থাকাকালীন পারিল বলধারা যুবক সমিতি’র কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। শহীদ রফিকের পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণআন্দোলনে নিজেদের গভীরভাবে যুক্ত করেছেন এবং নিজেদের জীবনকে কখনোই দেশের স্বার্থের চেয়ে বড় মনে করেননি। তাইতো ১৬৬৯ এর গণআন্দোলনেও জীবন দিয়েছেন এই পরিবারের সদস্য জনাব ইসহাক। রফিকের ভাই আবদুস সালাম ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দুর্ভাগ্যের বিষয় তিনি গুপ্তঘাতকের হাতে নিহত হন।
বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২-র ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সম্মুখের রাস্তায় ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে বিক্ষোভ প্রদর্শনরত ছাত্র-জনতার মিছিলে রফিক অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হোস্টেল প্রাঙ্গনে পুলিশ গুলি চালালে সেই গুলি রফিকউদ্দিনের মাথায় লাগে। গুলিতে মাথার খুলি উড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। মেডিকেল হোস্টেলের ১৭ নম্বর রুমের পূর্বদিকে তার লাশ পড়ে ছিল। ছয় সাত জন ধরাধরি করে তার লাশ এনাটমি হলের পেছনের বারান্দায় এনে রাখেন। তাদের মাঝে ডাঃ মশাররফুর রহমান খান রফিকের গুলিতে ছিটকে পড়া মগজ হাতে করে নিয়ে যান।
সম্ভবত ২১শে ফেব্রুয়ারীর প্রথম শহীদ হওয়ার মর্যাদা রফিক উদ্দিন আহমদই লাভ করেন। তাকে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়। তবে দুঃখজনকভাবে পরবর্তীতে তার কবর চিহ্নিত করা সম্ভব হয় নি।

# শহীদ আবুল বরকত
শহীদ আবুল বরকত ১৯২৭ সালের ১৬ জুন ভারতীয় উপমহাদেশের (অবিভক্ত) মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুর থানার বাবলা গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ছিলেন মৌলবী শামসুদ্দীন সাহেবের জ্যেষ্ঠপুত্র। ১৯৪৫ সালে তালেবপুর হাইস্কুল থেকে মেট্রিক পাশের পর তিনি বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাশের পর ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্সে ভর্তি হয়ে ১৯৫১ সালে অনার্স পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে চতুর্থ স্থান লাভ করেন। এরপরে তিনি একই বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হন। ভালো ছাত্রের পাশাপাশি তিনি স্বভাব-চরিত্র ও ব্যবহারে ছিলেন অমায়িক। ২১শে ফেব্রুয়ারীর দিন আবুল বরকত মেডিকেল কলেজের ১২ নম্বর শেডের বারান্দায় দাড়িয়ে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতাকে উৎসাহ দিচ্ছিলেন।এ সময় মিছিলে ছোড়া পুলিশের একটি গুলি তার গায়ে এসে লাগে ও তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। কয়েকজন ছাত্র গুরুতর আহত আবুল বরকতকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি অবস্থায় রাত আটটার দিকে মৃত্যুবরণ করেন।। সেদিনই গভীর রাতে পুলিশের কড়া প্রহরায় শহীদ বরকতের লাশ আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়। পরে বরকতের পারিবারিক খরচে তার কবর পাকা করা হয়।

# শহীদ আব্দুল জব্বার
শহীদ আব্দুল জব্বার ১৯১৯ সালে জন্মগ্রহন করেন। গ্রাম- পাঁচুয়া, থানা- গফরগাঁও, জেলা- ময়মনসিংহ। তার পিতার নাম- মোঃ হাসেম আলী শেখ, মাতার নাম- সাফিয়া খাতুন। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহন করার পরে পারিবারিক কারনে লেখাপড়া ত্যাগ করে পিতার কৃষিকাজে সাহায্য করা শুরু করেন। ১৫/১৬ বছর বয়সে তিনি খেয়ালের বশবর্তী হয়ে সকলের অজান্তে একদিন গৃহত্যাগ করে ট্রেনে চেড়পে নারায়নগঞ্জ আসেন। সেখানে জাহাজ ঘাটে এক ইংরেজ সাহেবের সান্নিধ্য লাভ করেন। সাহেবের অনুগ্রহে একটি চাকরি লাভ করে বার্মায় গমন করেন। ১০/১২ বছর বার্মায় থাকার পরে তিনি দেশে চলে আসেন। দেশে এসে নিজ গ্রামে তিনি দৈনন্দিন জিনিসপত্রের ছোটখাট একটি দোকান দেন। এরপর তিনি আমেনা খাতুন নামে এক মেয়েকে বিবাহ করেন ও এক পুত্র সন্তানের পিতা হন। সন্তানের নাম রাখেন নুরুল ইসলাম। আবদুল জব্বারের পুত্র জন্ম হওয়ার কিছুকাল পরে তার শাশুড়ি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। শাশুড়িকে নিয়ে ১৯৫২ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারী ঢাকায় আসেন। হাসপাতালে রোগী ভর্তি করে আবদুল জব্বার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রদের আবাসস্থল (ছাত্র ব্যারাক) গফরগাঁও নিবাসী হুরমত আলীর রুমে (২০/৮) উঠেন। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনরত ছাত্রদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হলে, কি হয়েছে দেখবার জন্য তিনি রুম থেকে বের হয়ে আসেন। তখনই পুলিশ গুলি শুরু করে এবং জব্বার আহত হন। ছাত্ররা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জব্বারকে মৃত ঘোষণা করেন। তাকে যারা হাসপাতালে নিয়ে যান, তাদের মধ্যে ছিলেন ২০/৯ নম্বর কক্ষের সিরাজুল ।সারাদিন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে রাতে তিনি মারা যান। তাকে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়।

# শহীদ শফিউর রহমান
শহীদ শফিউর রহমান অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশের হুগলী জেলার কোন্নগর গ্রামে ১৯১৮ সালের ২৪ জানুয়ারী জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম মৌলবী মাহবুবুর রহমান। তিনি কলকাতা গভর্ণমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজ থেকে আই কম পাশ করেন। পারিবারিক কারণে আর লেখাপড়া করতে পারেন নি। পরে ঢাকায় তিনি হাইকোর্টে করনিক পদে চাকুরী নেন। ১৯৫২‌-র ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল দশটার দিকে ঢাকার রঘুনাথ দাস লেনের বাসা থেকে সাইকেলে চড়ে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হন শফিউর। সকাল সাড়ে দশটার দিকে নওয়াবপুর রোডে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে পূর্বদিনের পুলিশের গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ পুণরায় গুলিবর্ষণ করে। পুলিশের গুলি শফিউর রহমানের পিঠে এসে লাগে। ১৯৫৪ সালের শহীদ সংখ্যা সাপ্তাহিক সৈনিকে তাঁর সম্পর্কে প্রকাশিত বিবরণ থেকে জানা যায়, ঐদিন সকাল ১০টায় তিনি সাইকেলে চড়ে নবাবপুর রোড হয়ে অফিসে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি রাইফেলের গুলি তাঁরপৃষ্ঠভেদ করে বের হয়েছে এবং এতে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সরকারি এ্যাম্বুলেন্স যোগে তাঁকেহাসপাতালে নেয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ডা. এ্যালিনসন অপারেশন করেন। ঐদিন সন্ধ্যা সাড়ে৬টার সময় তিনি মারা যান। গুলিতে শহীদ শফিউরের কলিজা ছিঁড়ে গিয়েছিল। অপারেশনের সময় সফিউরের বৃদ্ধা মা, বাবা, স্ত্রী, মেয়ে শাহনাজ হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। মারা যাওয়ার পর পুলিশ আত্মীয়দের কাছে লাশ হস্তান্তর করেনি। ১৪ মার্চ ১৯৫২ তারিখের দৈনিক আজাদে প্রকাশিত সরকারি তথ্য বিবরণী অনুসারে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর জানাজা পড়ান। জানাজায় তাঁর বাবা ও ভাই উপস্থিত ছিলেন। তারপর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। শফিউর রহমানের মৃত্যুর ৩ মাস পরে তিনি একটি পুত্র সন্তানের বাবা হন।



বাংলাদেশের মহান ভাষা আন্দোলনের সাথে জড়িত একটি নাম, শহীদ অহিউল্লাহ।
১৯৫২-এর ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনে আত্মদানকারী আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, রফিকউদ্দিন আহমদ, আবদুস সালাম, শফিউর রহমান ছাড়াও ২২শে ফেব্রুয়ারীতে রথখোলা, নবাবপুরে নিহত হয়েছিলেন আরও দুজন। এরা হলেন ---
১. আব্দুল আউয়াল। একজন রিক্সা চালক, বয়স ২৬ বছর।
২. অহিউল্লাহ, পিতা রাজমিস্ত্রি হাবিবুর রহমান, বয়স:-৯ বছর।

# শহীদ অহিউল্লাহ
ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের তালিকায় একজন নয় বছরের নাবালক ছেলে রয়েছে, যার নাম হলো অহিউল্লাহ। তিনি ছিলেন জনাব হাবিবুর রহমানের ছেলে। হাবিবুর রহমান পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী ছিলেন। শহীদ অহিউল্লাহ ভালোবাসত ছবি আঁকতে, সময় পেলেই কাগজ, পেনসিল নিয়ে বসে পড়ত আকাআকি করতে। ২২শে ফেব্রুয়ারী নবাবপুর রোডে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ প্রদর্শনকালে পুলিশ গুলীবর্ষন করে। নবাবপুর রোডের খোশমহল রেস্টুরেন্টের সামনে দাড়ানো অহিউল্লাহর মাথায় সরাসরি গুলী আঘাত হানে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অহিউল্লাহ। রক্তে ভেসে গেল চারপাশ। এরপর সরকারি অ্যাম্বুলেন্স এসে অহিউল্লাহর লাশ নিয়ে গেল ঢাকা মেডিকেল কলেজে।
অহিউল্লাহর বাবা-মা খবর পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ছুটে গেলেন হাসপাতালে। তারা হাসপাতালে থাকা পুলিশের কর্তাব্যক্তিকে বললেন, 'আমাদের ছেলেটার লাশ দিন। আমরা তাকে দাফন করতে চাই।' কিন্তু পুলিশ নানা বাহানা করে বিভিন্ন কথা বলে অহিউল্লাহর বাবা-মাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিল জোর করে। পুলিশ নিজেদের মতো করে অহিউল্লাহর লাশ দাফন করল, নাকি মাটিচাপা দিয়ে দিল, সে তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে অহিউল্লাহর পকেটে পাওয়া গেল একটি রঙিন কাগজের টুকরো। সেখানে বিভিন্ন ধরনের জীবজন্তু আর প্রজাপতির ছবি আকা ছিল। খুব ভালোবেসে এ ছবিগুলো এঁকেছিল সে।২৩শে ফেব্রুয়ারীর ১৯৫২ তারিখের দৈনিক আজাদে অহিউল্লাহর শহীদ হওয়ার খবর ছাপানো হয়। পুলিশ তার লাশ গুম করে ফেলায় তার কবরের কোন খোঁজ পাওয়া যায় নি।

# শহীদ আব্দুল আউয়াল
শহীদ আবদুল আউয়াল পেশায় একজন রিকশাচালক। তিনি শহীদ হন ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যখন ছাত্র বিক্ষোভ চলছিল, তখন আবদুল আউয়ালও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর বয়স ২৬ বছর। পিতা মোহাম্মদ হাশিম। শহীদ আউয়ালের ঢাকার ঠিকানা ছিল ১৯, হাফিজুল্লাহ রোড। শহীদ আউয়াল সম্পর্কে এর বেশি তথ্য সংগ্রহ করা যায়নি।
তথ্য সমূহঃউইকিপিডিয়া এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট

বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

পড়াশুনা তুমি কার মাথায় ঘুরো

কেলাস ফাঁকি,আড্ডা দেওয়া

কদিন আগেই ছিল মনের মত,

দিন বদলের টানা-পোঁড়েনে

এখন আমি সিরিয়াস ছাত্ররে।

পড়াশুনা তুমি কার মাথায় ঘুরো,

তার মাথা কি আমার চেয়ে বড়?


আড্ডা এখন অতীত

কদিন আগের স্মৃতি কথা

পরীক্ষা স্যারের অনুকূলে থাকে।

আমার বিপরীত,বাবা-মার ছোট্ট চাওয়া

পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা।

তারপর একা ঘরে,মন জড়োসড়ো,

পড়াশুনা তুমি কার মাথায় ঘুরো,

তার মাথা কি আমার চেয়ে বড়?


রুম ভর্তি ছাত্রের পরীক্ষা হল

সুযোগ বুঝে পিছনের সিট খুঁজে বসা।

ভালো ছাত্রের পরীক্ষার খাতায় আমার চোখ

স্যারের কড়া গার্ড,আর তোর একটু না দেখানোয়

আমার স্বপ্ন ভেস্তে যাওয়া।

তারপর বোকা মনে খাতা-কলম জড়োসড়ো,

পড়াশুনা তুমি কার মাথায় ঘুরো,

তার মাথা কি আমার চেয়ে বড়?