শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৬

বিজয় বচন

                                                                  ১-৩১-২০১৭
# ধার্মিকদের পাপ,পূর্ণ, সহি এবং অসহি বুঝতে গিয়ে যদি অমানবিক হতে হয়, তবে তাই হয় ধর্মকে পুজি করে পরকাল নামক অলৌকিক সুখ এবং ভয়ের জন্য।--বিজয়

# যে সকল পুরুষ নারীদের সর্বাঙ্গ দোষ খুজে বেড়ায় সে সকল পুরুষই মূলত নীতি ভ্রষ্ট। আবার যে সকল নারীও পুরুষের সর্বাঙ্গ দোষ খুজে সে সকল নারীও শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টায় আত্মমগ্ন।--বিজয়

# জিতে গেছি তুমি আর আমি,জিতে গেছে আমাদের ভালোবাসা কিন্তু হেরে গেছে সম্পর্ক।--বিজয়

# পরকালের লোভ লালসা এবং ভয় দেখিয়েই একজন মানুষের চিন্তাশক্তিকে নির্দিষ্ট গণ্ডীতে বেধে রাখা যায় বিশেষ কোন প্রশ্ন এবং তার উত্তর খোঁজার সুযোগ না দিয়ে।--বিজয়

# কর্ম,পেট কিংবা অর্থের অভাবে শরীর বিক্রি করায় একটি মেয়েকে বেশ্যা বলে আখ্যায়িত করে অন্য চোখে দেখে আমাদের সমাজের প্রায় প্রতিটি লোকই কিন্তু যারা বিবেক-বুদ্ধি বিক্রি করে দিয়ে দেশ, জাতী কিংবা সমাজের ক্ষতি করে তাদের বিরুদ্ধে কেও সহজে মুখ খুলে না বরং তাদের সামাজিক কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান অতিথি,বিশেষ অতিথি করে মঞ্চায়িত করে পুরুষ্কার প্রদান করতে কার্পণ্যবোধ করে না।--বিজয়

# মানুষ তখনি অহংকারি হয়, যখন সে তার যোগ্যতার চেয়ে বেশি কিছু পায়।--বিজয়
 
# জীবনটা আজ সাদা পাতা,লেখার নেই কিছু ,তবু মরুভূমিতে দাড়িয়ে আছি আমি আর আমার ছায়া।শুধু মাত্র মরুভূমির বালুর ঝড়ে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য।--বিজয়

# বাংলাদেশ একটি বৃহত্তর অসাম্প্রদায়িক দেশ।যেখানে সংখ্যালঘু জন সাধারণের জন্য বিচার পাওয়া অস্বাভাবিক এবং বিচার না পাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা।--বিজয়

# ধর্ম বিশ্বাসের সাথে অবশ্যই ঈশ্বর জড়িত,কিন্তু ঈশ্বর বিশ্বাসের সাথে ধর্ম বিশ্বাস জড়িত হতেও পারে আবার নাও হতে পারে।কারণ ধর্ম কেবলই মাত্র ইহকাল এবং পরকাল মতবাদের ঈশ্বর কেন্দ্রিক ব্যাখ্যা।--বিজয়

# সুখে থাকার উপায় হলো স্ত্রীর প্রথম ডাকে সাড়া দেওয়া আর নিজের সপ্তম ডাকেও স্ত্রী সাড়া না দিলে মাইন্ড না করা!--বিজয়

# কোন ভালোবাসার সম্পর্কই যেহেতু যুক্তি দিয়ে হয়না,সেহেতু সম্পর্কের পরে নানা রকম ভুল বোঝাবোঝির কারণ একে অপরকে যুক্তি দিয়ে বোঝানোর কোন মানেই হয় না।--বিজয়

# পৃথিবীতে একটা জায়গা নিয়ে থাকা মানেই কেবল মনের স্বান্তনা। কারণ আজ আছিতো কাল নাই, কেবলই সময়ের ব্যবধান।--বিজয়

# মুখ বলে বিদায়,মন বলে বিদায় শব্দটাকেই বিদায়৷--বিজয়

# কবি,লেখক,শিল্পী কিংবা যেকোন সৃজনশীল মানুষদের মৃত্যু নাই,আবার অনেকে বেচে থাকতেই অমরত্ব লাভ করেন।তিনি বেচে থাকেন তার সৃজনশীল কর্মগুলোর মাঝে আজীবন।

# আমরা নিজেরা নিজের মতই কিন্তু সবাই অন্যর সাথে অন্যের তুলনা করতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।হোক সেটা ভালো কিংবা মন্দ কিছু।--বিজয়

# সুশীলতা ভালো কিন্তু অতীসুশীলতা কিন্তু শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতোই বলা যায়।

# সম্পর্কের পিছুটান এমন সত্ত্বা নেই, বিশ্বাসে ভরা আত্বাও নেই। আমি আমিই,কবে থেকে শুরু জানিনা, শেষটা জানার ইচ্ছে নেই। শুধু ভাবি চলুক না যেমন চলছে।এ দিল কখনো ভুল ঠিকানায় নিয়ে যাবে না।আর গেলেও খুব একটা মন্দ হবে না,তবে কঠিন মুহূর্ত পার করতে হতে পারে অনিশ্চিত ভাবেই।--বিজয়

# দেখতে ভালো হলেও,ভালো মানুষ হয় না অনেক ক্ষেত্রে।ভালো মানুষ হতে হলে, ভালো একটা মনের দরকার হয়।--বিজয়

# শূন্যতা ও অপ্রাপ্তির খাতায় সাদা পাতা নেই!--বিজয়

# ভগবান অসীম ক্ষমতার অধিকার।সে এক এবং নিরাকার।তার জন্ম কিংবা মৃত্যু নাই।সে চির অমর।কথা গুলা সহজেই মেনে নিতে পারে বিশ্বাসীরা।আমারও মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে না।কিন্তু কথা হচ্ছে শ্রী কৃষ্ণকে ভগবান মানা হয় কি করে!তার মামা কংশকে বধ করার জন্য তার জন্ম হয়েছিলো।যার জন্ম হতে পারে তাহলেতো সে অবশ্যই ভগবান না।এটা আমার কথা না।গীতায় বলা আছে,ভগবানের জন্ম এবং মৃত্যু নাই।তাহলে অবশ্যই বলা যায় কৃষ্ণ কোন ভগবান না।আর যদি সে ভগবান হয় তাহলে গীতার কথা মিথ্যা।ধর্ম বলতেই এমনই গাঁজাখুরি কিছু গল্পের জমজমাট ব্যাবসা।--বিজয়

# আমরা নিজেরা নিজের মতই কিন্তু সবাই অন্যর সাথে অন্যের তুলনা করতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।হোক সেটা ভালো কিংবা মন্দ কিছু।--বিজয়

# অনেক সময় ভুল মানুষটি শিখায় সঠিক মানুষকে খুঁজে নিতে।--বিজয়

# জীবনটা অনির্দিষ্ট পৃষ্ঠার বিরক্তকর অধ্যায়,যার শেষ বলে কিছু নাই।–বিজয়

# ধর্মীয় সন্ত্রাসীদের বিশ্বাস করা যায় কারণ তাদের আদর্শ এবং নীতি আছে এবং নিজের বিশ্বাসের আত্মবিশ্বাসও প্রবল,অন্যদিকে মডারেট ধার্মিকদের বিশ্বাস করলেন তো নিজের পায়ে নিজে কোঠার মারলেন।কারণ এরা আপনাকে মারবেও না আবার না মেরে ঝুলিয়ে রাখার মত কাজ করতে দ্বিধাবোধ করবেনা।–বিজয়

# আমার ভালো কাজের কৃতিত্ব স্রষ্টা ঠিকই নিতে জানে।লোকে এই বলে যে, স্রষ্টা যা করে ভালোর জন্যই করে অথবা সবই স্রষ্টার ইচ্ছায়,কিন্তু অন্যদিকে আমার খারাপ বা ভুল কাজের জন্য আমার এবং আমার বিবেকের মাশুল দিতে হয় যেখানে স্রষ্টার কোন ইচ্ছা বা দোষ থাকে না।–বিজয়

# ধর্ম বিশ্বাসীরা আসলে যতটুকু ধর্ম-কর্ম না করে,না মানে;তার থেকে বেশী আঘাত পায় যখন তার ধর্ম নিয়ে কেও একজন সমালোচনা করে।আসল কথা হলো মনে না আছে ধর্ম তবে কি হয়েছে! চেতনায় তো আছে ধর্মীয় অন্ধত্ব।–বিজয়

# দেখতে ভালো হলেও,ভালো মানুষ হয় না অনেক ক্ষেত্রে।ভালো মানুষ হতে হলে, ভালো একটা মনের দরকার হয়।–বিজয়

# মানুষের কষ্টের এবং সুখের দুই কান্নাই দেখা যায়,কিন্তু কান্নার সাথে মিশে থাকা অনুভূতি গুলো দেখা যায় না তবে অনুভব করা যায় কান্নার কারণ।–বিজয়

# একজন লেখকের বইয়ের পাতা আপনার কাছে অতি মূল্যবান হলেও কিন্তু বাদামওয়ালার কাছে তা কেবলমাত্র ঠুংগাই।ঠিক তেমনি একজন অপরাধী যে ধর্ম,গোষ্ঠী,রাজনৈতিক দলেরই হোক না কেন সে কেবল অপরাধীই।–বিজয়

# এক একটি নতুন দিন পাওয়া মানে আরো একটা দিন বেশী বেচে থাকা।তাই প্রতিটা দিনকেই উচিত কোন না কোন ভাবে ভালো কাজে লাগানো কিংবা জীবনটাকে উপভোগ করা।কারণ আগামীকাল আপনার জীবনে নাও আসতে পারে।–বিজয়

# যে ব্যক্তি আপনার দোষ ধরে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় সে বন্ধু না হলেও শত্রু না,কিন্তু যে আপনার বন্ধু হিসাবে পরিচিত,আপনার ভুল দেখেও চুপ করে থাকতে পারে তাকে বন্ধু ভাবা আর পিছন পিছন শত্রুর তাড়া খাওয়া কিংবা জীবন বিপন্ন করে শত্রুকে সাথে নিয়ে পথ চলা একই কথা।–বিজয়

# কাগজের নৌকা দেখতে অনেক সুন্দর কিন্তু তা দিয়ে কখনো নদী পার হওয়া যায় না । ঠিক তেমনি আবেগ দিয়ে বাস্তব জীবন চলে না।--বিজয়

# তুমি আকাশ দেখেছ, পাহাড় বেয়ে আসা ঝরনা দেখেছ,বয়ে যাওয়া উত্তাল হাওয়ার স্পর্শ নিয়েছ,দেখেছ সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ, শুধু দেখনি আমার মনের হাহাকার আর পারনি আমার না বলা জমে থাকা কষ্টের স্পর্শ নিতে।--বিজয়

# ধর্ম,জাতি,বর্ণই পারেই মানবতা এবং মনুষ্যত্বের মৃত্যু ঘটিয়ে বৃহত্তর গোষ্ঠীর মাঝে বিবেদ সৃষ্টি করে হানাহানি,হিংসাত্বক এবং ধ্বংসাত্বক কর্মকাণ্ড ঘটাতে।–বিজয়

# সব সময় নিজের সিদ্ধান্ত কে প্রাধান্য দেয়া উচিত, নিজের সিদ্ধান্তে যদি কেউ ব্যর্থ হয় বা সফলতা না অাসে তাও ভালো। তবে অন্যের সিদ্ধান্তে কাজ করে ব্যর্থ হলে দোষ টা চলে যাবে সিদ্ধান্তদাতার,যদিও তুমি বিবেকহীন না।--বিজয়

# অন্ধভাবে অন্যের দেখানো পথ অনুসরণ করা মানেই নিজের পায়ে কুড়ালের আঘাত করা।আর যখন আপনি অন্যের দেখানো পথ অন্ধভাবে অনুসরণ না করে নিজের বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে তার দেখানো পথের অনুকরনে চলবেন তখনই আপনি দ্বিতীয় পথ খুজে পাবেন এবং নিজের ভুল বুঝতে পারবেন।--বিজয়

# যদি ঘুমের থেকে প্রার্থনা উত্তম হয়,তাহলে প্রার্থনার থেকে ভালোবাসা উত্তম।কারণ, মানুষ ঘুম এবং প্রার্থনা নির্দিষ্ট সময় পরপর করে অন্যদিকে ভালোবাসার জন্য কোন সময় নির্ধারণ করা নাই।–বিজয়

# যে হারায় সে আর ফিরে না,মিছে মরিচিকায় তার পিছু নিয়োনা।কতো কতো কথা রয়ে যায় মনের গহীনে,রয়ে যায় পুরোনো স্মৃতি।অনুভব হয় মনের গহীনে একাকীত্ব,এক একটা দিন ধূলাবালি মাখা সারাটা প্রহর।যতদূরে যাস অন্যের ছায়ায়,বারে ফিরে তাকাতেই হবে সেই পুরোনো মায়ায়।

# কিছু কিছু মানুষ সত্যি খুব অসহায়। তাদের ভালোলাগা, মন্দলাগা, হাসি-কান্না গুলো বলার মত কেউ থাকে না। তাদের কিছু অব্যক্ত কথা মনের গভীরেই খেলা করে, আর কিছু কিছু স্মৃতি দীর্ঘশ্বাসে পরিনত হয়ে চাতক পাখির ন্যায় দিনের পর দিন কেটে যায় চাপা কান্নায়।–বিজয়

# ধর্ম যেমন মানুষকে ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীতে পরিনত করে দলবদ্ধভাবে বসবাস করতে শিখিয়েছে,ঠিক তেমনই ধর্ম এক গোষ্ঠীর লোকের প্রতি অন্য গোষ্ঠীর লোকের চোখে ঘৃণা,বিদ্বেষ,হানাহানির বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিয়ে মানুষের মাঝে বিবেদ সৃষ্টি করেছে।–বিজয়

# নাস্তিক,বিধর্মী,লেখক,প্রকাশক,নারীবাদী,প্রগতিশীলদেরকে দেশ থেকে তাড়ানো,হত্যার হুমকি,হত্যাসহ কল্লার মূল্য নির্ধারণ করে স্লোগান দিতে অনেক মূল্যাকেই রাজপথে নেমে আসতে দেখা গেছে,কিন্তু আজ যখন জংগীরা অতর্কিত হামলা করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে তখন তারা কেবল মাত্র ফতোয়া দেওয়া ছাড়া নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে।–বিজয়

# জীবন নামের অসমাপ্ত গল্পের তখনই পতন ঘটে.যখনই মৃত্যু অতি সন্নিকটে এসে কড়া নাড়ে।–বিজয়

# মেধাবী,বুদ্ধিমান,বিবেকবান এবং সুস্থমস্তিষ্কের মানুষ কখনো জংগী হয় না,জংগী হয় ধর্মান্ধ,অন্ধকারছন্ন বিবেকহীন মানুষ।–বিজয়

# আমাদের রাজনীতিবিদরা দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানিয়ে আজ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বলে দাবি করে মায়া বড়ি বিক্রি করছে।–বিজয়

# ধর্ম কেবলই একটা মতবাদ,যা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে ঐশ্বরিক শক্তিতে আস্থা রাখার প্রয়ান চেষ্টা ,কিছু ধর্মীয় বিধি-বিধান ধার্য এবং অাধিপত্ত বিস্তারের অপকৌশল মাত্র।–বিজয়

# বিশ্বাসীরা তার কাল্পনিক ঈশ্বরকে খুশি করার জন্য যে সময়টুকু বিভিন্নভাবে ব্যয় করে,ঠিক ওই সময়টুকুই যদি বিশ্বাসীরা এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড এবং সকল প্রানীকূলের জন্য ব্যয় করতো তাহলে এই ভূবন আরো বেশী সুন্দর এবং সুশৃঙ্খল হত।–বিজয়

# যার কোন শরীক নেই,তার কোন অস্তিত্বও নাই।–বিজয়

# টাকা আর মাছ ধরা এমনই এক নেশা যতই পাবে ততোই ধরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে মানুষ।--বিজয়

# অতি চালাক রং বদলানো বন্ধু থেকে বুদ্ধিমান শত্রু উত্তম।–বিজয়

# ধর্ম বিশ্বাস মানুষকে ঠিক ততটাই বোকা বানাতে পারে,যতটা বোকা হলে মানুষ কেবলমাত্র ধর্মের ব্যাপারে দ্বিমতপোষন কিংবা সমালোচনাকারীকে ক্রোধের বসে ভিন্নমতের মানুষকে হত্যা করতে কোন দ্বিধাবোধ করে না।–বিজয়

# নিঃস্বার্থভাবে নিকোটিনের ধোঁয়াই কেবল বেখায়ালীদের সঙ্গী হয়ে রাত জেগে পাহারা দেওয়া থেকে শুরু করে দিনের আলোতেও আড্ডা দিতেও এতটুকু কার্পণ্যবোধ করে না।–বিজয়

# একমাত্র ভন্ড এবং চতুর লোকেরাই পারে মানুষের মনের গভীরে প্রবেশ করতে।–বিজয়

# ছেলেরা মেয়েদের মত হাউমাউ করে কিংবা ফুঁপিয়ে কাঁদতে জানে না ঠিকই কিন্তু তারা আপন মনে নিকোটিন পুড়াতে পারে,গভীর রাতে নিরবে বালিশ ভিজাতেও পারে,আর তারা দু:খকে আপন করে চাঞ্চল্যকর হাসি মুখেই বলতে পারে ভাল আছি, তুমিও ভাল থেকো।–বিজয়

# মানুষ তখনই সমালোচিত হয়,যখন তার ভালো কিংবা খারাপ দিকটা অন্যের নজরে আসে।–বিজয়

# যেখানে আমাদের সমাজে ছোট থেকেই ধারণা দেওয়া হয় যে কালো পিপড়া মুসলমান আর লাল পিপড়া হিন্দু সেখানে আমরা কিভাবে অসাম্প্রদায়িক দেশের স্বপ্ন দেখি তা আমার বুঝে আসে না।—বিজয়

# সৃষ্টিকর্তা এবং ঘোড়ার ডিম দুইটা একই এক ঘাটের মাঝি।যার বাস্তবে কোন অস্তিত্ব নাই কিন্তু মানুষের মুখে মুখে কাল্পনিক হলেও টিকে আছে বছরের পর বছর ধরে।–বিজয়

# মানুষের জীবনে কষ্ট বলতে কিছু নাই। যা কিছু হয় তা কেবলই বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা।–বিজয়

# ধর্মানুভূতি এমনই এক আফিম যে,একজন সুস্থ সুন্দর মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটিয়ে ভিন্নমতের লোক হত্যা কিংবা ধর্মের রোষনলে পড়ে দেশ বিভাগ পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।যেমন হিন্দুস্থান এবং পাকিস্তান যেভাবে বিভাজন হয়েছিল।–বিজয়

# কাগজের নৌকা দেখতে অনেক সুন্দর কিন্তু তা দিয়ে কখনো নদী পার হওয়া যায় না । ঠিক তেমনি আবেগ দিয়ে বাস্তব জীবন চলে না।–বিজয়

# বাস্তব থেকে কল্পনার জগতটাই ভালো,কারণ বাস্তবে অনেক উস্থান-পতনের মধ্যেই জীবনের শেষ ঘন্টা বেজে যায়।অন্যদিকে কল্পনায় সবকিছুকেই নিজের মত করে সাজিয়ে নেওয়া যায়।যেখানে উস্থান আছে পতন নাই।–বিজয়

# কলম এবং কলমের খোচায় সৃষ্ট বর্ণ তখনই আঘাত প্রাপ্ত হয়,যখন কলম ও কলমের খোচায় সৃষ্ট প্রতিটা বর্ণ সৎ ও ন্যায়ের পথে থেকে বিপ্লবী আওয়াজ তুলে।–বিজয়

# কিছু মানুষ তার রাগ অভিমান গুলো প্রথমে প্রকাশ না করে হাসি মুখে অনবরত চেপে যায়,কিন্তু যখন রাগ অভিমান প্রকাশ করে তখন বুঝা যায় সে কতটা হৃদয়হীনা।–বিজয়

# প্রিয় মানুষগুলা যখন বিরক্ত এবং ভুল করতে করতে এমন এক পর্যায়ে চলে যায় তখন চাইলেও তার সাথে আর আগের মত চলার আগ্রহ থাকে না।তবে হয়তো মনে,ঠিক আগের মতই ভালোবাসা থাকে যা কখনো আর প্রকাশ হয় না।–বিজয়

# লোভ যখন জাগ্রত,বিবেক তখন ধর্ষিত।–বিজয়

# যেখানে আমাদের সমাজে ছোট থেকেই ধারণা দেওয়া হয় যে কালো পিপড়া মুসলমান আর লাল পিপড়া হিন্দু সেখানে আমরা কিভাবে অসাম্প্রদায়িক দেশের স্বপ্ন দেখি তা আমার বুঝে আসে না।—বিজয়

# যান্ত্রিক জীবনে পথ চলায় অন্যের উপর আস্থা বা বিশ্বাস রাখা আবশ্যক তবে বিশ্বাসের উপর নির্ভশীল হয়ে পরাটা বোকামী বৈকি আর কিছু না।–বিজয়

# আমাদের বিচিত্র সমাজের মেয়েরা ধর্মকে অগাধ বিশ্বাস করে শিব বা কৃষ্ণের পূজা দিয়ে তাদের মত সুদর্শন ছেলের বর মনে মনে চেলেও কিন্তু তারা শিবের মত গাজা টানা ছেলে কিংবা কৃষ্ণের মত লীলাবাজ ছেলে কিংবা ধর্মীয় নীতি অনুসারে মেয়েরা চার সতীনের ঘর সংসার করতে নারাজ।–বিজয়

# শিশুকালে অবুঝ মন খুব তাড়াতাড়ি বড় হতে চায়,কিন্তু যখন সে বড় হয়ে যায় তখন সে আবার শিশুকাল ফিরে পেতে চায়,যা কখনো সম্ভব না।–বিজয়

# ব্যক্তি স্বাধীনতাহীন জীবন আর গৃহপালিত পশুর জীবনের মধ্যে খুব বেশী তফাৎ নাই।–বিজয়

# পূন্য কিংবা কাল্পনিক শিবকে সন্তুষ্ট করার জন্য শিবের মাথায় দুধ ঢেলে যে আত্মতৃপ্তি বা পূন্য পাওয়া যাবে,তার থেকে বেশী আত্মতৃপ্তি বা পূন্য পাওয়া যাবে পাশের বাড়ীর অনাথ শিশুর মুখে এক গ্লাস দুধ তুলে দিয়ে।–বিজয়

# রাতের নিরবতা মানুষকে চিন্তা করতে শেখায়,আর স্বপ্ন মানুষকে জেগে তুলে।–বিজয়

# একজন মানুষের মিথ্যা প্রলাপ ততক্ষন পর্যন্ত মেনে নেওয়া যায়,যতক্ষন না পর্যন্ত ঐ মানুষের মিথ্যা প্রলাপ অন্যকে স্পর্শ না করতে পারবে।–বিজয়

# একজন ভালো মানুষ হতে হলে প্রথমে সেই মানুষটির চারিত্রিক এবং মানসিক উন্নতি হওয়া বাঞ্চনিয়।–বিজয়

# ধার্মিক বা আস্তিকরা যেমন নাস্তিকের অবিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলে,ঠিক তেমনই নাস্তিকরা ধার্মিক বা আস্তিকদের বিশ্বাস নিয়ে চুটকি বানায়।কারণ দুই দলই ভিন্ন দুই যুক্তির পথে অগ্রসরমান এবং একে অপরের সাথে সাপে নেওলে সম্পর্ক বিশ্বাসের দিক থেকে।–বিজয়

# জন্মের পর থেকেই প্রতিটি প্রানী ধীরে ধীরে পুরাতন হতে থাকে মৃত্যু পর্যন্ত।কিন্তু মৃত্যুর পর হয়ে যায় কেবলই অতীত মাত্র।–বিজয়

# মিলন যেমন সুখের ঠিক তেমনই বিচ্ছেদ বেদনাদায়ক।কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য আমাদের প্রানীকূলের প্রত্যেক প্রানীর কোন না কোন সময় বিচ্ছেদ ঘটবে এই বিশ্বব্রহ্মান্ড থেকে।—বিজয়

# যদি কোন আস্তিক ব্যক্তি তার ধর্মের ঐশ্বরিক কিতাবের উপর কোনরুপ সন্দেহ প্রকাশ করলে যেমন নাস্তিক-মুরতাদ হয়ে যায়,ঠিক তেমন কোন ব্যক্তি যদি নিজের দেশের ইতিহাস সংস্কৃতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তাহলে সেও একজন খাটি বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর।–বিজয়

# জীবনে চলতে গেলে ছোট বড় অনেক স্বপ্নই দেখতে হয়।স্বপ্ন বাস্তবে পরিনত না হলেও হতাশ হওয়াটা এক ধরনের মানসিক রোগ।কারণ স্বপ্নের মৃত্যু নেই,স্বপ্ন অবিচল।–বিজয়

# জীবনের পথ পাড়ি দেওয়াটা খুবই কঠিন।মানুষ এই কঠিন কাজটাই খুব সহজ ভাবে প্রতিনিয়ত করে যায়।তবুও জীবনে চলতে হবে অনিশ্চিত গন্তব্যে।–বিজয়

# সময়ের হাত ধরে প্রত্যেক মানুষেরই চলতে না চাইলেও চলতে হয়।যদি কেও সময়ের হাত ধরে সঠিক সময়ে সঠিক পথ পাড়ি দিতে পারে তবেই সে স্বার্থক হতে পারে।আর যদি সময়ের হাত ছেড়ে গা ভাসিয়ে দেয়,তবে সে অনায়াসে কালের গহ্বরে তলিয়ে যাবে।–বিজয়

# আমি তখনই তোমাকে ভালোবেসেছি,যখন বুঝতে পারছি তোমার কোন কিছু তোমাতে থেকে আমাতে পরিনত হয়েছে।–বিজয়

# আপনাকে খুশি করার জন্য আমার জন্ম হয়নি।আমার জন্মই হয়েছে নিজের মত করে স্বাধীনচেতা হয়ে বেচে থাকার জন্য।–বিজয়

# আমি ততক্ষন জীবিত, যতক্ষন না আমি লাশ হচ্ছি।–বিজয়

# বিনিয়োগ করা অবশ্যই ভালো কথা।কিন্তু বিনিয়োগ করে দেওলিয়ার সংখ্যা নেহাতও কিন্তু কম না।হোক সেটা অর্থ অথবা হৃদয় বিনিয়োগ।–বিজয়

# একটা দেশ কিংবা রাষ্ট্র প্রগতিশীল মুক্তচিন্তার অধিকারী হলে এক শতকে যতবেশী আধুনিক এবং উন্নয়নশীল হবে,তার থেকে দশগুন বা তারও বেশী পিছিয়ে পরবে যদি ঐ রাষ্ট্র কিংবা দেশে পূর্ন ইসলামিক শাসন ব্যাবস্থায় পরিচালিত হতে থাকে।--বিজয়

# একজন মানুষ আপনার কাছে ততোদিন পর্যন্ত বিশ্বাসী,যতদিন না পর্যন্ত আপনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা না করবে।–বিজয়

# আপনি আস্তিক,নাস্তিক কিংবা যাই হোন না কেন,আপনার মাঝে যদি মনুষ্যত্ব বোধ না থাকে তাহলে আপনি বিষাক্ত সাপের থেকেও বিপদজনক।–বিজয়

# আমরা বাংগালী জাতী আমাদের অবুঝ সন্তানদের ছোট থেকেই বড় ধরনের কর্মকর্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখাই,কিন্তু প্রকৃত মানুষ হওয়ার কথা বলি না।--বিজয়

# কাওকে বিশ্বাস করা ভালো,তবে অতিবিশ্বাস করাটা একান্তই বোকামী।--বিজয়

# আপনার কাছে কিছু সময় তখনই মূল্যবান হবে,যখন আপনি কোন কিছু হারিয়ে ফেলবেন অথবা অর্জন করবেন।--বিজয়

# যতদিন না আপনি সত্যিকারের মানুষ হচ্ছেন ততোদিন আপনার ডিগ্রীধারী শিক্ষিত হওয়ার কোন মূল্য নেই।–বিজয়

# জীবনের ছোট বড় প্রতিটা পদক্ষেপই একেকটা যুদ্ধের সমতুল্য।কারণ যুদ্ধক্ষেত্রে একটা ভুল সিদ্ধান্তই পরাজয়ের কারণ হয়ে দাড়াতে পারে,ঠিক তেমনই জীবনের একটা ভুল সিদ্ধান্তই সকল আশাকে অতল সমুদ্রে ফেলে সক্ষম।–বিজয়

# অতি চালাক এবং বোকারাই সহজ কথাটিকে সহজভাবে না বলে,বিভিন্ন ইংগিতে প্যাচিয়ে জটিল রুপে উপস্থাপন করে মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলে।–বিজয়

# মানুষের জীবনের প্রতিটা কষ্টই বাস্তবতাকে আকড়ে ধরে বেড়ে উঠে।–বিজয়

# কোন মেয়ে যদি একের অধিক ছেলের সাথে সহবাস করে তাহলে সে হয় অবহেলিত ব্যশ্যা।আর পুরুষ যদি একাধিক মেয়ের সাথে সহবাস করে তাহলে সে হয় গর্বিত বাদশা।আজব দুনিয়ার আজব সমাজ আবার স্পেডকে স্পেড বলতে নাক ছিটকায়।–বিজয়

# চারিদিকে শুধু বিশ্বাস আর বিশ্বাস।কিন্তু কেও কাউকে সহজে বিশ্বাস করতে পারেনা,যদি না সে কোন পরক্ষ বা প্রত্যক্ষ ভাবে প্রমান না পায়।কিন্তু মানুষ বিচিত্র ভাবেই চারিদিকে গড়ে তুলেছে রুপকথার কাল্পনিক বিশ্বাস।আর এই বিশ্বাসই তাদের ভাগ করে দিছে ধর্ম,জাতি,গোত্র,বর্ন,আরও কত কি?কিন্তু এটা কেও মানতে চায়না যে,মনুষ্যতের উপরে কোন ধর্ম নাই।তাই আপনাকে ওই রুপকথার কাল্পনিক বিশ্বাসের উপর নির্ভর করেই চলতে হবে।তাছাড়া আপনার ওই পাশের লোকটি অস্বস্তিবোধ করবেন।এবং কি কোন কোন সমাজ আপনাকে চরম বিপত্তিতে ফেলে আপনার কল্লার মুল্য নির্ধারন করবে।–বিজয়

# যেখানেই প্রশ্ন করার নিষেধাজ্ঞা আছে,সেখানেই এমন কোন দূর্বল ভিতি আছে যার খোলস উন্মোচন হবে প্রশ্নেই কেবলমাত্র ।—বিজয়

# মূর্খ বাঙ্গালী বিদ্যা গ্রহন করে সম্মানের সহিত ভাত অর্জনের জন্য,জ্ঞান অর্জনের জন্য নহে শিক্ষিত সমাজ।–বিজয়

# ধর্ম রক্ষার নামে ধর্মে যেমন মানুষ হত্যার মত অপরাধকে বৈধতা দিয়েছে,তেমনি ধর্ম অনেক অপকর্মকেও চোখে আংগুল দিয়ে অপরাধ বিষয়টাকে বুঝিয়ে দিছে পরকালের বিভিন্ন রকম শাস্তির বিধান রেখে।—বিজয়

# মানুষের মত মানুষ হতে হলে ধার্মিক না হয়েও সৎ ও ন্যায় পরায়ন হওয়া যায়,কিন্তু সৎ ও ন্যায় পরায়ন না হয়েও সৃষ্টিকর্তার নাম জবেই শুধু ধার্মিক হওয়া যায়।–বিজয়

# মানুষ যেদিন থেকে ঐশ্বরিক সকল ভয়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বুঝতে পারবে যে তার মৃতদেহের কোন মূল্য নাই,আর ঠিক তখনই মানুষের উপকারের জন্য চিকিৎসা শাস্ত্রে তার মৃতদেহকে মৃত্যুর পূর্বে দান করে যাবে।–বিজয়

# ডিগ্রীধারি শিক্ষিত হওয়ার আগে মানুষ হওয়াটাই শ্রেয়।নয়তো তোমার সকল অপকাজের দোষ হবে ওই অর্জিত ডীগ্রীর।—বিজয়

# সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশু মাত্রই একজন পিতার জন্ম হওয়া।–বিজয়

# অন্যরা যা করতে বলে তা করাটা একান্তই বোকামী।বরং আপনি অন্যদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে,তারপর আপনার কাছে যেটা গ্রহণযোগ্য মনে হবে তাই করাটা বুদ্ধিমানের কাজ।–বিজয়

# প্রতিটি শব্দই সৃষ্টি হয় নি:শব্দে হারিয়ে যাওয়ার জন্য।–বিজয়

# মানুষ তখনই সম্মানিত বা অসম্মানিত হয়,যখন সে তার চরিত্র স্থান,কাল,পাত্রভেদে বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।–বিজয়

# কথা বলার ধরনই হলো আন্তরিকতা বোঝার মাপকাঠি।—বিজয়

# শানিত কর তোমার বুদ্ধিমত্তাকে,যদি শ্ত্রুর হৃদপিন্ডে আঘাত করতে চাও।—বিজয়

# বিশ্বাসীদের সৃষ্টিকর্তা বা ঈশ্বর ঐশ্বরিক ভয় দেখিয়ে পরকালের প্রলোভন করে মানুষকে বোকা বানায় নিই,মানুষকে বোকা বানিয়েছে ঐ পুঁথিগত ধর্মগ্রন্থ এবং ধর্মগুরুরা।—বিজয়

# কোন অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে চাও সাধারন মানুষের সিমপ্যাথী নিয়ে,তাহলে তার আগে ধর্মের দোহাই দিয়ে তোমার উদ্দেশ্য ব্যক্ত কর।—বিজয়

# কোন ব্যক্তি যদি ধর্ম গ্রন্থ গুলো যুক্তি-তর্কের মাধম্যে নিজ জ্ঞানে পড়ে তাহলে সে হবে ধর্ম বিচ্ছিন/নাস্তিক।কেবল মাত্র ধর্ম সম্পর্কে জানার জন্য ধর্মগ্রন্থগুলো পড়লে হবে আধুনিক ধার্মিক/প্রগতিশীল ধার্মিক।ধর্ম গ্রন্থগুলোতে যা আছে তা অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে পড়লে হবে ধর্মান্ধ/বর্বর হিংসাত্বক ধার্মিক।—বিজয়

# আমি কোন জাত-ভেদ,ধর্মের দুনিয়া চাই না,আমি মানুষের দুনিয়া চাই।আমার বড় পরিচয় আমি মানুষ এবং আপনারাও মানুষ।–বিজয়

# জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য,সৃজনশীলতা,প্রগতিশীল কিংবা সংস্কারক মনোভাব, চিন্তা-চেতনা ইত্যাদির উন্নতি ও উন্মেষ ঘটতে দেখলেই ধর্মের দোহাই দিয়ে ভণ্ড মৌলবাদীরা তার গলা টিপে হত্যা করতে চেয়েছে এবং করেছেও।–বিজয়

# জীবনটাই একটা ইস্টিশন,যেখানে রয়েছে যাত্রীদের প্ল্যাটফরমে দাঁড়িয়ে থাকার মত হতাশা,আবার ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌছার মত মুখ ভরা হাঁসি।—বিজয়

# তারাই পৃথবীর সব থেকে বেশী মূর্খ,যারা চিন্তা শক্তিতে যথেষ্ট দরিদ্র।–বিজয়

# প্রত্যেক ছেলেই তার প্রেমিকা কিংবা বান্ধবীকে বিছানায় নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে,কিন্তু যখন পাশের বাড়ীর অবিবাহিত মেয়ের প্রেগন্যান্টের কথা শুনে তখন নাক ছিটকাইতে দ্বিধাবোধ করে না।–বিজয়

# প্রত্যেক প্রগতিশীল বিপ্লবীদের সমাজতান্ত্রিক হওয়ার আগে মনে প্রানে অবশ্যই জাতীয়তাবাদী হতে হবে।নতুবা কোন বিপ্লবী সফল হতে পারবেনা তার সমাজতন্ত্রে।–বিজয়

# তোমাদের হিংস্রতা আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে কিন্তু আমাদের চিন্তা শক্তিকে না।—বিজয়

# মানবতার দেহ সেখানেই নিথর যেখানে হিংস্রতার উপদ্রব। --বিজয়

# বেচে থাকার নামই যদি জীবন হয়,তাহলে প্রত্যেক মানুষের আবাদত বেচে থাকাটাই মুখ্য।–বিজয়

# মানুষের অন্ধতাকে বরন করার কারন হচ্ছে মনের ভিতর লুকায়িত ঐশ্বরিক ভয়।–বিজয়

# প্রগতিশীল সমাজ ব্যাবস্থা নিয়ে কথা বলা মানে কোন ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলা না,তবে ধর্মের গোড়ামি অন্ধতা নিয়ে কঠোর সমালোচনা করে অন্ধকার থেকে আলোতে ফিরে আসা।কারন ধর্মের উপর অন্ধ বিশ্বাস করে অন্যকে অপমান করা বা ছোট করে দেখা কিংবা ভয় দেখিয়ে অন্যকে দমিয়ে রাখা এবং ধর্মের উপর অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে কোন জাতি বা ব্যাক্তির প্রান নাশ কিংবা ধ্বংষ লিলা কখনো কোন ধর্ম হতে পারেনা।এটাকে একথায় সন্ত্রাসবাদ ছাড়া অন্য কিছু বলে দাবি করা যায় না।যদি কেও সেটা দাবি করে বলে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করার জন্য যাই করা হবে সেটাই ঠিক।তাহলে আমি তাকে বলব তোমার এমন ধর্মের কপালে আমি লাথি মারি।যেখানে কোন মানবতা নাই সেখানে কোন সৃষ্টিকর্তাও থাকতে পারেনা।জয় যদি হতেই হয় তবে মানবতার জয় হোক ।–বিজয়

# একজন দেশপ্রেমিক হলে তাকে মুসলিম,হিন্দু,বৌদ্ধ,খৃষ্টান,আস্তিক,নাস্তিক কিংবা কোন গোত্রের হতে হয়না।শুধু একজন মানুষ হলেই হয়।–বিজয়

# আমি সভ্য হওয়ার নামে চিরটাকাল অসভ্যই রয়ে গেলাম।–বিজয়

# জীবনে চলতে গেলে ছোট বড় অনেক স্বপ্নই দেখতে হয়।স্বপ্ন বাস্তবে পরিনত না হলেও হতাশ হওয়াটা এক ধরনের মানসিক রোগ।কারণ স্বপ্নের মৃত্যু নেই,স্বপ্ন অবিচল।–বিজয়

# কষ্টকে উপভোগ করতে শিখ এবং সুখকে আকড়ে ধরে রাখ।তবেই দূর্দিনে পিছনে ফিরে তাকাতে হবেনা।–বিজয়

# তোমরা সভ্য থেকে আরো সভ্যত্তোর হতে চাও ?মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোতে আনাতে চাও?রুপকথার কাল্পনিক বিশ্বাসকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে আধুনিক চিন্তা ধারায় উপনিত করে বাস্তব ধারায় প্রবর্তিত করতে চাও ?আধুনিক মুক্তচিন্তা ধারার অধিকারি এবং স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার চাও? কিন্তু তোমাদের সে অধিকার দেওয়া হয় না বলে চিৎকার কর।তোমাদের স্বাধীন মতের উপর নির্ধারন করা হয় তোমার কল্লার মুল্য।কিন্তু তুমি যদি সত্যি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোতে আনিতে চাও তাহলে তোমার কল্লার এতো দরদ কেন?হাসি মুখে সেটা দান করে দাওনা তোমার এবং তোমার পরের প্রজম্মের জন্য।তোমার একটা প্রানের বিনিময়ে জেগে উঠবে আরো ১০ টা প্রান। তুমি তোমার জাগায় অটুট থেকে তোমার দর্শনকে তুমিই এগিয়ে নিয়ে যাও।কিসের এতো ভয় তোমার?ভয় কখনো বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারেনা।বরং দুর্বার ধুমকেতু হয়ে যারা সংগ্রাম করে জয় শুধু তাদেরই।রবার্ট ব্রুশ যদি ৬ বার যুদ্ধেক্ষেত্রে পরাজয়ের পরেও জয়ের স্বপ্ন দেখে ৭ম বারে জয় ছিনিয়ে আনে তবে কেন তোমার এতো সংশয়।পরিবর্তন আপনা-আপনি আসেনা।উস্থান-পতনের মাধ্যমেই আসে জয় অথবা পরাজয়।যারা পরাজয়কে মেনে নিয়ে তার পথ থেকে সরে যেতে দ্বিধাবোধ করে না সে কাপুরুষ-ভীতু।আর যে পরাজয় এবং ক্লান্তির ঘাম মুছে আত্মবিশ্বাসের অদূরদুরে জয়ের হাতছানি খুজে বেড়ায় সে উড়ন্ত ধুমকেতু।যুগে যুগে এর অনেক ইতিহাস রয়ে গেছে এই ব্রহ্মাণ্ডে।আমরা অবশ্যই সবাই সক্রেটিসের নাম শুনেছি এবং জানি তাকে স্বাধীনমত প্রকাশ করার জন্য হেমলক বিষ পান করতে হয়েছিল নির্দ্বিধায়।তবে কেন তোমার ভয় হে দুর্বার?পরিবর্তনের স্বপ্ন যখন বুনতে শুরুকরেছ,তবে কঠিন দুঃস্বপ্ন দেখারো সাহস চাই দুর্বার।–বিজয়

# পৃথিবীর প্রতিটা প্রানী মৃত্যুর জন্য জন্মায়।–বিজয়

# প্রত্যেক বাবা-মা তার ছেলে মেয়েদের উপদেশ দেয় তুই বড় হয়ে লেখাপড়া শিখে অমুকের ছেলে মেয়ের মত বড় অফিসার হবি,কিন্তু বলে না তুই অমুকের ছেলে মেয়ের মত একজন সৎ মানুষের মত মানুষ হবি।–বিজয়

# মানুষ কখনো ইচ্ছে করে বদলায় না।কিছু মানুষের অবহেলা,কিছু স্মৃতি,এবং কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মানুষ কে বদলে যেতে বাধ্য করে।–বিজয়

# বিশ্বাসীরা তার ঈশ্বরকে নিয়ে যতটুকু ভাবে,ঠিক তেমনি যদি ঈশ্বর তার সৃষ্টিকে নিয়ে কিঞ্চিত ভাবতো তাহলে এতো দূর্দশা থাকতো না বিশ্বাসীদের মাঝে।–বিজয়

# বিশ্বাসীরা তার কাল্পনিক ঈশ্বরকে খুশি করার জন্য যে সময়টুকু বিভিন্নভাবে ব্যয় করে,ঠিক ওই সময়টুকুই যদি বিশ্বাসীরা এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড এবং সকল প্রানীকূলের জন্য ব্যয় করতো তাহলে এই ভূবন আরো বেশী সুন্দর এবং সুশৃঙ্খল হত।–বিজয়

মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৬

পুরুষ রচিত ধর্মের চোখে নারী –পর্বঃ০১ (হিন্দু ধর্ম)

নারী কখনো জননী, কখনো কন্যা অথবা স্ত্রী। এই সবই নারীর অবস্থান। এই অবস্থান বেধে নারী এক এক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। জননী হিসাবে নারী সন্তান পালনে প্রধান ভুমিকা পালন করলেও ঐ সন্তানের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন অধিকার জননীকে দেওয়া হয় না। পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক অবকাঠামোয় নারীকে নানা ভাবেই ছোট করে রাখা হয়েছে। আমাদের সমাজ-সংস্কৃতিতে জৈবিক নারীকে এমনভাবে শিক্ষা-দীক্ষা দেয়া হয়, জন্মের পর থেকেই, যাতে তাদের মধ্যে নারীত্ব বা নারীধর্ম প্রবলরূপে বিকাশ লাভ করে। নারী কি শুধুমাত্র ভোগপণ্য, সন্তান উৎপাদন ছাড়া তার কি কোন নিজস্ব সত্তা নেই?

এই বিশ্বব্রহ্মান্ডে প্রায় ৪২০০ ধর্ম এবং প্রায় ২৮৭০ টা গডের উৎপত্তি হয়েছে বিভিন্ন একেশ্বরবাদী এবং বহুঈশ্বরবাদীদের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে(কোন এক *Ricky Gervais* দার্শনিকের মতে)।কিন্তু প্রতিটা ধর্মই নারীদের কম বেশী পুরুষতান্ত্রিক সমাজে করে রেখেছে পুরুষের ভোগ্যপণ্য কিংবা দাসী করে।আসুন এবার দেখা যাক,হিন্দু ধর্ম,খ্রীষ্টান ধর্ম,বৌদ্ধ ধর্ম,ইসলাম ধর্ম এবং ইহুদী ধর্মে নারীদের অবস্থান সম্পর্কে জেনে নিই।

এই নারী একেক সময়ে এক এক জায়গায় স্থান পায়। বিয়ের আগে বাবার বাড়ীর অধীনে কন্যার অবস্থান হয়। বিয়ের পর সেই কন্যা স্বামীর অধীনে চলে আসে। স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলের সংসারে জায়গা পায় প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী। এই ভাবেই নারী একেক জায়গায় ঘুরতে থাকে। কিন্তু আদৌ তার কোন স্থায়ী ঠিকানা জুটে না তার কপালে।তাহলে নারী কি শুধুমাত্র ভোগপণ্য,নারী কি কেবল সন্তান উৎপাদনকারী আর পুরুষতান্ত্রিক সমাজের স্ত্রী নামের দাসী?

আসুন এবার তাহলে জানা যাক হিন্দু/সনাতন ধর্মে নারীর অবস্থান সম্পর্কে কি বলে- হিন্দু ধর্ম বড় ধরণের আঘাত হেনেছে নারী সমাজের প্রতি। "নারী নরকের দ্বার" কথার মধ্যেই হিন্দু ধর্মের মনোভাব পরিষ্কার ফুটে ওঠে। হিন্দু সমাজে নারী-পুরুষের ভূমিকা একেবারেই বিপরীতধর্মী। ধরে নেওয়া হয় নারী সংসারের ভেতরের কাজ সারবে আর পুরুষ করবে বাইরের কাজ। স্বভূমিতে দুজনকেই ক্ষমতাশীল মনে করা হলেও প্রকৃতক্ষেত্রে মেয়েদের স্থান হয় পুরুষের নিচে। তার পর বিবাহকে নারীর জীবনে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে হিন্দু ধর্ম নারী নির্যাতনকে প্রশ্রয় দিয়েছে বলা যায়। কারণ মনে রাখতে হবে হিন্দু ধর্মে বিবাহ বিচ্ছেদের স্বীকৃতি নেই।

স্বামী মারা গেলে বিধবা নারীর বাঁচার অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এই সতীদাহ প্রথা ভারতীয় সমাজে বহুদিন যাবত প্রচলন ছিল। রাজা রাম মোহন রায় বৃটিশ সাহায্যে সতীদাহ প্রথা বন্ধ করে হিন্দু ধর্মের সংস্কার করেন। এখনো বিধবা হলেই সেই নারীকে সাদা কাপড় পরিয়ে নিরামিষ ভোজী রাখার প্রচলন রয়েছে। হিন্দু ধর্মে বিধবা বিয়ে চালু করেন ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর।

আসুন এবারে দেখা যাক প্রাচীন ধর্মে নারীর স্থান কি রকম ছিল। হিন্দুধর্মের মূল গ্রন্থ চারটি বেদ। শুক্লযজুর্বেদের অন্তর্গত শতপথ ব্রাহ্মণে নারীকে তুলনা করে বলা হয়েছে যে - “সে ব্যক্তিই ভাগ্যবান, যার পশুসংখ্যা স্ত্রীর সংখ্যারচেয়ে বেশি” (২/৩/২/৮)। শতপথ ব্রাহ্মণের এই বক্তব্যের হয়তো অধুনা বিভিন্ন দরদী ধর্মবাদীরা ভিন্ন ব্যাখ্যা ভিন্ন যুক্তি দিতে চেষ্টা করবেন, কিন্তু পরবর্তী আরেকটি শ্লোকে আরও স্পষ্টভাবে হিন্দু ধর্মে নারীর আর্থ-সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে সম্যক ধারনা করা যায় - “বজ্র বা লাঠি দিয়ে নারীকে দুর্বল করা উচিৎ, যাতে নিজের দেহ বা সম্পত্তির উপর কোনো অধিকার না থাকতে পারে” (৪/৪/২/১৩) ।

অপরপক্ষে যে নারীরা বেদ-উপনিষদের শ্লোক-মন্ত্র রচনা করেছেন, সেই নারীদেরই উত্তরসূরীদের জন্য মনু বেদসহ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ পাঠের অধিকার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছেন। “নারীরা ধর্মাজ্ঞ নয়, এরা মন্ত্রহীন এবং মিথ্যার ন্যায় অশুভ” (মনুসংহিতা, ৯/১৮)।

সনাতন ধর্মের মণিষী মনু বলেছেন ‘নারী শৈশবে পিতার, যৌবনে স্বামীর এবং বার্ধ্যকে পুত্রের অধিন থাকবে’। এই উক্তি নারীর চিরকালের বন্দিত্বের কথাকেই স্মরণ করে দেয়। নারীর আজকের যে বন্দি দশা তা মানুষের সামগ্রীক মনুষত্বকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। শাস্ত্রীয় প্রবঞ্চনার প্রধান শিকার নারী।
স্মৃতি বা বেদাদি ধর্মশাস্ত্রে বা কোন ধর্মানুষ্ঠানে শূদ্রকে যেমন কোন অধিকার দেয়া হয়নি, নারীকেও তেমনি স্বভাবজাত দাসী বানিয়েই রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে যাতে কোনরূপ সন্দেহের অবকাশ না থাকে সেজন্যে মনুশাস্ত্রে সুস্পষ্ট বিধান জুড়ে দেয়া হয়েছে-

‘নাস্তি স্ত্রীণাং ক্রিয়া মন্ত্রৈরিতি ধর্মে ব্যবস্থিতিঃ।
নিরিন্দ্রিয়া হ্যমন্ত্রাশ্চ স্ত্রিয়োহনৃতমিতি স্থিতিঃ।।’
স্ত্রীলোকদের মন্ত্রপাঠপূর্বক জাতকর্মাদি কোনও ক্রিয়া করার অধিকার নেই- এ-ই হলো ধর্মব্যবস্থা। অর্থাৎ স্মৃতি বা বেদাদি ধর্মশাস্ত্রে এবং কোনও মন্ত্রেও এদের অধিকার নেই- এজন্য এরা মিথ্যা বা অপদার্থ (৯/১৮) ।

# নারীদের সাথে কোনো স্থায়ী বন্ধুত্ব হতে পারে না। নারীদের হৃদয় হচ্ছে হায়েনাদের হৃদয়। (ঋগবেদ ১০:৯৫:১৫)

# নারীরা কোনো নিয়মানুবর্তিতা মেনে চলে না। তাদের বুদ্ধিমত্তা নাই বললেই চলে। (ঋগবেদ ৮:৩৩:১৭)

# নারীরা শক্তিহীন বা কর্তৃত্বহীন। তারা পৈত্রিক সম্পত্তির কোনো অংশ পাবে না। (যজুর্বেদ ৬:৫:৮:২)

# নারীরা দৃষ্টিকে নত করে চলবে, সামনের দিকে তাকাবে না। (ঋগবেদ ৮:৩৩:১৯)

# বিধবা নারীরা পুনরায় বিয়ে করতে পারবে না। তাদেরকে বরং নিরামিষভোজী ও অত্যন্ত দ্বীনহীনভাবে বাকি জীবন কাটাতে হবে। (মনুসংহিতা ৫)

# নারীদেরকে অবশ্যই দিন-রাত নিজ পরিবারের পুরুষদের অধীনে থাকতে হবে। তারা যদি কোনো রকম ইন্দ্রিয়াসক্তিতে জড়িয়ে পড়ে তাহলে তাদেরকে অবশ্যই কারো নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। (মনুসংহিতা ৯:২)

# শৈশবকালে একজন নারী তার পিতার অধীনে থাকবে, যৌবনে তার স্বামীর অধীনে থাকবে, স্বামী/লর্ড মারা গেলে তার পুত্রদের অধীনে থাকবে। নারীরা কখনোই স্বাধীন হতে পারবে না। এমনকি তারা স্বাধীন হওয়ার যোগ্যই না। (মনুসংহিতা ৫:১৪৮, ৯:৩)

# একজন স্বামী যতই খারাপ হোক না কেন, তথাপি একজন কর্তব্যনিষ্ঠ স্ত্রী সেই স্বামীকে দেবতা হিসেবে ক্রমাগত পূজা করবে। (মনুসংহিতা ৫:১৫৪)

# একজন নারীর স্বামী মারা যাওয়ার পর সেই নারী কখনোই অন্য কোনো পুরুষের নাম মুখে নিতে পারবে না। (মনুসংহিতা ৫:১৫৭)

# স্বামীর প্রতি দায়িত্ব লঙ্ঘনের দ্বারা একজন স্ত্রী এই পৃথিবীতে অসম্মানিত হবে, মৃত্যুর পর তার এই পাপের শাস্তিস্বরূপ একটি শৃগালের গর্ভে বিভিন্ন রোগ দ্বারা নির্যাতিত হতে থাকবে। (মনুসংহিতা ৫:১৬৪)

# নারীদের মৃত্যুর পর তাদের মৃতদেহ সৎকারের সময় পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে কিছু পাঠ করা যাবে না। (মনুসংহিতা ২:৬৬)

# পুরুষের উচিত নয় তার মা, বোন, অথবা কন্যার সাথে একাকী বসা, পাছে কী হতে কী হয়। (মনুসংহিতা ২:২১৫)

# নারীরা পুরুষের সৌন্দর্য বা বয়স কোনোটাই বিচার না করে সুদর্শন বা কুৎসিত যা-ই হোক না কেন, পুরুষ হলেই তার প্রতি নিজেকে সঁপে দেয়। (মনুসংহিতা ৯:১৪)

# নারী ও শূদ্ররা বেদ পড়া বা শোনার উপযুক্ত নয়। (সূত্র)

# নদী যেমন সমুদ্রের সাথে মিশে লবনাক্ত সমুদ্রের গুণপ্রাপ্ত হয়, তেমনই নারী বিয়ের পর স্বামীর গুণযুক্ত হন । (মনুসংহিতা ৯:২২)

#স্ত্রীলোকদের বিবাহবিধি বৈদিক সংস্কার বলে কথিত, পতিসেবা গুরুগৃহে বাস এবং গৃহকর্ম তাদের হোমরূপ অগ্নিপরিচর্যা। (মনুসংহিতা ২:৬৭)

#আবার গৃহকর্ম এবং সন্তান উৎপাদন সম্পর্কে বলা হয়েছে - সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্যই নারী এবং সন্তান উৎপাদনার্থে পুরুষ সৃষ্টি হয়েছে। (মনুসংহিতা ৯:৯৬)

# প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, বিবাহিত নারীরা ডিভোর্স দিতেও পারবে না আবার নিতেও পারবে না। একবার কারো সাথে বিয়ে হয়ে গেলে আমৃত্য পর্যন্ত তার সাথেই থাকতে হবে । (সূত্র নিষ্প্রয়োজন)
(পর্ব আকারে লেখা হচ্ছে, চলতে থাকবে)

রবিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৬

হুমায়ুন আজাদের প্রবচন




১)এক-বইয়ের-পাঠক সম্পর্কে সাবধান।

২)এখানে অসৎরা জনপ্রিয়, সৎ মানুষেরা আক্রান্ত।

৩)রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কার পাওয়ার দরকার ছিলো না, কিন্তু দরকার ছিলো বাঙলা সাহিত্যের। পুরস্কার না পেলে হিন্দুরা বুঝতো না যে রবীন্দ্রনাথ বড়ো কবি; আর মুসলমানেরা রহিম, করিমকে দাবি করতো বাঙলার শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে।

৪)আমি এতো শক্তিমান আগে জানা ছিলো না। আজকাল মিত্র নয়, শত্রুদের সংখ্যা দেখে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাই।

৫)জন্মাতরবাদ ভারতীয় উপমহাদেশের অবধারিত দর্শন। এ- অঞ্চলে এক জন্মে পরীক্ষা দিতে হয়, আরেক জন্মে ফল বেরোয়, দু-জন্ম বেকার থাকতে হয়, এবং ভাগ্য প্রসন্ন হ’লে কোন এক জন্মে চাকুরি মিলতেও পারে।

৬)বুদ্ধিজীবীরা এখন বিভক্ত তিন গোত্রে। ভণ্ড, ভণ্ডতর, ভণ্ডতম।

৭)বাঙালি যখন সত্য কথা বলে তখন বুঝতে হবে পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য আছে।

৮)আধুনিক প্রচার মাধ্যমগুলো অসংখ্য শুয়োরবৎসকে মহামানবরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

৯)অধিকাংশ রূপসীর হাসির শোভা মাংসপেশির কৃতিত্ব, হৃদয়ের কৃতিত্ব নয়।

১০)পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও।

১১)আবর্জনাকে রবীন্দ্রনাথ প্রশংসা করলেও আবর্জনাই থাকে।

১২)নিজের নিকৃষ্ট কালে চিরশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের সঙ্গ পাওয়ার জন্যে রয়েছে বই; আর সমকালের নিকৃষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গ পাওয়ার জন্যে রয়েছে টেলিভিশন ও সংবাদপত্র।

১৩)হিন্দুরা মূর্তিপূজারী; মুসলমানেরা ভাবমূর্তিপূজারী। মূর্তিপূজা নির্বুদ্ধিতা; আর ভাবমূর্তিপূজা ভয়াবহ।

১৪)শামসুর রাহমানকে একটি অভিনেত্রীর সাথে টিভিতে দেখা গেছে। শামসুর রাহমান বোঝেন না কার সঙ্গে পর্দায়, আর কার সঙ্গে শয্যায় যেতে হয়।

১৫)আগে কারো সাথে পরিচয় হ’লে জানতে ইচ্ছে হতো সে কী পাশ? এখন কারো সাথে দেখা হ’লে জানতে ইচ্ছে হয় সে কী ফেল।

১৬)পা, বাঙলাদেশে, মাথার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পদোন্নতির জন্যে এখানে সবাই ব্যগ্র, কিন্তু মাথার যে অবনতি ঘটছে, তাতে কারো কোনো উদ্বেগ নেই।

১৭)হায় ! থাকতো যদি একটি লম্বা পাঞ্জাবি, আমিও খ্যাতি পেতাম মহাপণ্ডিতের।

১৮)এখানকার একাডেমিগুলো সব ক্লান্ত গর্দভ; মুলো খাওয়া ছাড়া ওগুলোর পক্ষে আর কিছু অসম্ভব।

১৯)পুঁজিবাদের আল্লার নাম টাকা, মসজিদের নাম ব্যাংক।

২০)সুন্দর মনের থেকে সুন্দর শরীর অনেক আকর্ষণীয়। কিন্তু ভণ্ডরা বলেন উল্টো কথা।

২১)ব্যর্থরাই প্রকৃত মানুষ, সফলেরা শয়তান।

২২)আমাদের অঞ্চলে সৌন্দর্য অশ্লীল, অসৌন্দর্য শ্লীল। রুপসীর একটু নগ্নবাহু দেখে ওরা হৈ চৈ করে, কিন্তু পথে পথে ভিখিরিনির উলঙ্গ দেহ দেখে ওরা একটুও বিচলিত হয় না।

২৩)মানুষ সিংহের প্রশংসা করে, কিন্তু আসলে গাধাকেই পছন্দ করে।

২৪)শিক্ষকের জীবনের থেকে চোর, চোরাচালানি, দারোগার জীবন অনেক আকর্ষণীয়। এ সমাজ শিক্ষক চায় না, চোর- চোরাচালানি-দারোগা চায়।

২৫)শয়তানের প্রার্থনায় বৃষ্টি নামে না, ঝড় আসে; তাতে অসংখ্য সৎ মানুষের মৃত্যু ঘটে।

২৬)যে বুদ্ধিজীবী নিজের সময় ও সমাজ নিয়ে সন্তুষ্ট, সে গৃহপালিত পশু।

২৭)টেলিভিশন, নিকৃষ্ট জিনিশের একনম্বর পৃষ্ঠপোষক, হিরোইন প্যাথেড্রিনের থেকেও মারাত্মক। মাদক গোপনে নষ্ট করে কিছু মানুষকে, টেলিভিশন প্রকাশ্যে নষ্ট করে কোটি কোটি মানুষকে।

২৮)আর পঞ্চাশ বছর পর আমাকেও ওরা দেবতা বানাবে; আর আমার বিরুদ্ধে কোনো নতুন প্রতিভা কথা বললে ওরা তাকে ফাঁসিতে ঝুলোবে।

২৯)বাঙলাদেশে কয়েকটি নতুন শাস্ত্রের উদ্ভব ঘটেছে; এগুলো হচ্ছে স্তুতিবিজ্ঞান, স্তবসাহিত্য, সুবিধাদর্শন ও নমস্কারতত্ত্ব।

৩০)পরমাত্মীয়ের মৃত্যুর শোকের মধ্যেও মানুষ কিছুটা সুখ বোধ করে যে সে নিজে বেঁচে আছে।

৩১)একটি স্থাপত্যকর্ম সম্পর্কেই আমার কোনো আপত্তি নেই, তার কোনো সংস্কারও আমি অনুমোদন করি না। স্থাপত্যকর্মটি হচ্ছে নারীদেহ।

৩২)প্রতিটি দগ্ধ গ্রন্থ সভ্যতাকে নতুন আলো দেয়।

৩৩)বাঙলার প্রধান ও গৌণ লেখকদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে প্রধানেরা পশ্চিম থেকে প্রচুর ঋণ করেন, আর গৌণরা আবর্তিত হন নিজেদের মৌলিক মূর্খতার মধ্যে।

৩৪)মহামতি সলোমনের নাকি তিন শো পত্নী, আর সাত হাজার উপপত্নী ছিলো। আমার মাত্র একটি পত্নী। তবু সলোমনের চরিত্র সম্পর্কে কারো কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু আমার চরিত্র নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন।

৩৫)বাঙালি মুসলমানের এক গোত্র মনে করে নজরুলই পৃথিবীর একমাত্র ও শেষ কবি। আদের আর কোনো কবির দরকার নেই।

৩৬)অভিনেত্রীরাই এখন প্রাতঃস্মরণীয় ও সর্বজনশ্রদ্ধেয়।

৩৭)কবিরা বাঙলায় বস্তিতে থাকে, সিনেমার সুদর্শন গর্দভেরা থাকে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত প্রাসাদে।

৩৮)মানুষের ওপর বিশ্বাস হারানো পাপ, তবে বাঙালির ওপর বিশ্বাস রাখা বিপজ্জনক।

৩৯)শ্রদ্ধা হচ্ছে শক্তিমান কারো সাহায্যে স্বার্থোদ্ধারের বিনিময়ে পরিশোধিত পারিশ্রমিক।

৪০)আজকাল আমার সাথে কেউ একমত হ'লে নিজের সম্বন্ধে গভীর সন্দেহ জাগে। মনে হয় আমি সম্ভবত সত্যভ্রষ্ট হয়েছি, বা নিম্নমাঝারি হয়ে গেছি।

৪১)‘মিনিষ্টার’ শব্দের মূল অর্থ ভৃত্য। বাঙলাদেশের মন্ত্রীদের দেখে শব্দটির মূল অর্থই মনে পড়ে।

৪২)আগে কাননবালারা আসতো পতিতালয় থেকে, এখন আসে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

৪৩)জনপ্রিয়তা হচ্ছে নেমে যাওয়ার সিঁড়ি। অনেকেই আজকাল জনপ্রিয়তার পথে নেমে যাচ্ছে।

৪৪)উন্নতি হচ্ছে ওপরের দিকে পতন। অনেকেরেই আজকাল ওপরের দিকে পতন ঘটছে।

৪৫)প্রতিটি বিজ্ঞাপনে পণ্যটির থেকে পণ্যাটি অনেক লোভনীয়; তাই ব্যর্থ হচ্ছে বিজ্ঞাপনগুলো। দর্শকেরা পণ্যের থেকে পণ্যাটিকেই কিনতে ও ব্যবহার
করতে অধিক আগ্রহ বোধ করে।

৪৬)কোন দেশের লাঙলের রূপ দেখেই বোঝা যায় ওই দেশের মেয়েরা কেমন নাচে, কবিরা কেমন কবিতা লেখেন, বিজ্ঞানীরা কী আবিষ্কার করেন, আর রাজনীতিকেরা কতোটা চুরি করে।

৪৭)যারা ধর্মের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয়, তারা ধার্মিকও নয়, বিজ্ঞানীও নয়। শুরুতেই স্বর্গ থেকে যাকে বিতারিত করা হয়েছিলো, তারা তার বংশধর।

৪৮)যতোদিন মানুষ অসৎ থাকে, ততোদিন তার কোনো শত্রু থাকে না; কিন্তু যেই সে সৎ হয়ে উঠে, তার শত্রুর অভাব থাকে না।

৪৯)নারী সম্পর্কে আমি একটি বই লিখছি; কয়েকজন মহিলা আমাকে বললেন, অধ্যাপক হয়ে আমার এ-বিষয়ে বই লেখা ঠিক হচ্ছে না। আমি জানতে চাইলাম, কেনো ? তাঁরা বললেন, বিষয়টি অশ্লীল !

৫০)এদেশে সবাই শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক : দারোগার শোকসংবাদেও লেখা হয়, ‘তিনি শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক ছিলেন!'

৫১)শিল্পকলা হচ্ছে নিরর্থক জীবনকে অর্থপূর্ণ করার ব্যর্থ প্রয়াস।

৫২)কিছু বিশেষণ ও বিশেষ্য পরস্পরসম্পর্কিত; বিশেষ্যটি এলে বিশেষণটি আসে, বিশেষণটি এলে বিশেষ্যটি আসে। তারপর একসময় একটি ব্যবহার করলেই অন্যটি বোঝায়, দুটি একসাথে ব্যবহার করতে হয় না। যেমন : ভণ্ড বললেই পীর আসে, আবার পীর বলতেই ভন্ড আসে। এখন আর ‘ভণ্ড পীর’ বলতে হয় না; ‘পীর’ বললেই ‘ভণ্ড পীর’ বোঝায়।

৫৩)ভক্ত শব্দের অর্থ খাদ্য। প্রতিটি ভক্ত তার গুরুর খাদ্য। তাই ভক্তরা দিনদিন জীর্ণ থেকে জীর্ণতর হয়ে আবর্জনায় পরিণত হয়।

৫৪)মূর্তি ভাঙতে লাগে মেরুদণ্ড, মূর্তিপূজা করতে লাগে মেরুদণ্ডহীনতা।

৫৫)আমাদের সমাজ যাকে কোনো মূল্য দেয় না, প্রকাশ্যে তার অকুণ্ঠ প্রশংসা করে, আর যাকে মূল্য দেয় প্রকাশ্যে তার নিন্দা করে। শিক্ষকের কোনো মূল্য নেই, তাই তার প্রশংসায় সমাজ পঞ্চমুখ; চোর, দারোগা, কালোবাজারি সমাজে অত্যন্ত মুল্যবান, তাই প্রকাশ্যে সবাই তাদের নিন্দা
করে।

৫৬)সৌন্দর্য রাজনীতির থেকে সব সময়ই উৎকৃষ্ট।

৫৭)ক্ষুধা ও সৌন্দর্যবোধের মধ্যে গভীরসম্পর্ক রয়েছে। যে-সব দেশে অধিকাংশ মানুষঅনাহারী, সেখানে মাংসল হওয়া রূপসীর লক্ষণ; যে-সব দেশে প্রচুর খাদ্য আছে,সেখানে মেদহীন হওয়া রূপসীর লক্ষণ। এজন্যেই হিন্দি আর বাঙলা ফিল্মের নায়িকাদের দেহ থেকে মাংস চর্বি উপচে পড়ে। ক্ষুধার্ত দর্শকেরা সিনামা দেখে না, মাংস ও চর্বি খেয়ে ক্ষুধা নিবৃত্ত করে।

৫৮)বাঞ্ছিতদের সাথে সময় কাটাতে চাইলে বই খুলুন, অবাঞ্ছিতদের সাথে সময় কাটাতে চাইলে টেলিভিশন খুলুন।

৫৯)স্তবস্তুতি মানুষকে নষ্ট করে। একটি শিশুকে বেশি স্তুতি করুন, সে কয়েকদিনে পাক্কা শয়তান হয়ে উঠবে। একটি নেতাকে স্তুতি করুন, কয়েকদিনের মধ্যে দেশকে সে একটি একনায়ক উপহার দেবে।

৬০)ধনীরা যে মানুষ হয় না, তার কারণ ওরা কখনো নিজের অন্তরে যায় না। দুঃখ পেলে ওরা ব্যাংকক যায়, আনন্দেওরা আমেরিকা যায়। কখনো ওরা নিজের অন্তরে যেতে পারে না, কেননা অন্তরে কোনো বিমান যায় না।

৬১)শৃঙ্খলপ্রিয় সিংহের থেকে স্বাধীন গাধা উত্তম।

৬২)বাঙলায় তরুণ বাবরালিরা খেলারাম, বুড়ো বাবরালিরাভণ্ডরাম।

৬৩)প্রাক্তন বিদ্রোহীদের কবরে যখন স্মৃতিসৌধ মাথা তোলে, নতুন বিদ্রোহীরা তখন কারাগারে ঢোকে, ফাসিঁকাঠে ঝোলে।

৬৪)একনায়কেরা এখন গণতন্ত্রের স্তব করে, পুজিঁপতিরা ব্যস্ত থাকে সমাজতন্ত্রের প্রশংসায়।

৬৫)বেতন বাঙলাদেশে এক রাষ্ট্রীয় প্রতারণা। এক মাস খাটিয়ে এখানে পাঁচ দিনের পারিশ্রমিক দেয়া হয়।

৬৬)পুরস্কার অনেকটা প্রেমের মতো; দু-একবার পাওয়া খুবই দরকার, এর বেশি পাওয়া লাম্পট্য।

৬৭)বিধাতা মৌলবাদী নয়। কে প্রার্থনা করলো, কে করলো না; কে কোন তরুণীর গ্রীবার দিকে তাকালো, কোন রূপসী তার রূপের কতো অংশ দেখালো, এসব তাকে বিন্দুমাত্র উদ্বিগ্ন করে না। কিন্তু বিধাতার পক্ষে এতে ভীষণ উদ্বিগ্ন বোধ করে ভণ্ডরা।

৬৮)খুব ভেবে চিনতে মানুষ আত্মসমর্পণ করে, আর অনুপ্রাণিত মুহূর্তে ঘোষণা করে স্বাধীনতা।

৬৯)মানুষ যখন তার শ্রেষ্ঠ স্বপ্নটি দেখে তখনি সে বাস করে তার শ্রেষ্ঠ সময়ে।

৭০)এ-বদ্বীপে দালালি ছাড়া ফুলও ফোটে না, মেঘও নামে না।
৭১)অভিনেতারা সব সময়ই অভিনেতা; তারা যখন বিপ্লব করে তখন তারা বিপ্লবের অভিনয় করে। এটা সবাই বোঝে, শুধু তারা বোঝে না।

৭২)বাঙলাদেশের প্রধান মূর্খদের চেনার সহজ উপায় টেলিভিশনে কোনো আলোচনা-অনুষ্ঠান দেখা। ওই মূর্খমন্ডলিতে উপস্থাপকটি হচ্ছেন মূর্খশিরোমণি।

৭৩)বাঙলা, এবং যে-কোনো, ভাষার শুদ্ধ বানান লেখার সহজতম উপায় শুদ্ধ বানানটি শিখে নেয়া।

৭৪)পৃথিবী জুড়ে প্রতিটি নরনারী এখন মনে ক’রে তাদের জীবন ব্যর্থ; কেননা তারা অভিনেতা বা অভিনেত্রী হ'তে পারে নি।

৭৫)মৌলিকতা হচ্ছে মঞ্চ থেকে দূরে অবস্থান।

৭৬)এরশাদের প্রধান অপরাধ পরিবেশদূষণ : অন্যান্য সরকারগুলো পুরুষদের দূষিত করেছে, এরশাদ দূষিত করেছে নারীদেরও।

৭৭)বাঙালি একশো ভাগ সৎ হবে, এমন আশা করা অন্যায়। পঞ্চাশ ভাগ সৎ হ’লেই বাঙালিকে পুরস্কার দেয়া উচিত।

৭৮)বিশ্বের নারী নেতারা নারীদের প্রতিনিধি নয় ; তারা সবাই রুগ্ন পিতৃতন্ত্রের প্রিয় সেবাদাসী।

৭৯)কোন বাঙালি আজ পর্যন্ত আত্মজীবনী লেখে নি, কেননা আত্মজীবনী লেখার জন্যে দরকার সততা। বাঙালির আত্মজীবনী হচ্ছে শয়তানের লেখা ফেরেশতার আত্মজীবনী।
৮০)আজকালকার আধিকাংশ পি এইচ ডি অভিসন্দর্ভই মনে আশার আলো জ্বালায়; মনে হয় এখানেই নিহিত আমাদের শিক্ষাসমস্যা সমাধানের বীজ। প্রথম বর্ষ অনার্স শ্রেণীতেই এখন পি এইচ ডি কোর্স চালু করা সম্ভব, এতে ছাত্ররা আড়াই বছরে একটি ডক্টরেট ডিগ্রি পেতে পারে।এখানকার অধিকাংশ ডক্টরেটই স্নাতকপূর্ব ডক্টরেট; অদূর ভবিষ্যতে উচ্চ-মাধ্যমিক ডক্টরেটও পাওয়া যাবে।

৮১)সত্য একবার বলতে হয়; সত্য বারবার বললে মিথ্যার মতো শোনায়। মিথ্যা বারবার বলতে হয়; মিথ্যা বারবার বললে সত্য ব’লে মনে হয়।

৮২)ফুলের জীবন বড়োই করুণ। অধিকাংশ ফুল অগোচরেই ঝ’রে যায়, আর বাকিগুলো ঝোলে শয়তানের গলায়।

৮৩)ঢাকা শহরে, ক্রমবর্ধমান এ-পাগলাগারদে, সাতাশ বছর আছি। ঢাকা এখন বিশ্বের বৃহত্তম পাগলাগারদ; রাজধানি নয়, এটা পাগলাধানি; কিন্তু বদ্ধপাগলেরা তা বুঝতে পারে না।

৮৪)বদমাশ হওয়ার থেকে পাগল হওয়া অনেক মানবিক।

৮৫)পৌরানিক পুরুষেরা সামান্য অভিজ্ঞতা ভিত্তি ক‘রে অসামান্য সব সিদ্ধান্ত নিতেন। যযাতি পুত্রের কাছে থেকে যৌবন ধার ক’রে মাত্র এক সহস্র বছর সম্ভোগের পর সিদ্ধান্তে পৌছেন যে সম্ভোগে কখনো তৃপ্তি আসে না! এতো বড়ো একটি সিদ্ধান্তের জন্যে সহস্র বছর খুবই কম সময় : আজকাল কেউ এতো কম অভিজ্ঞতায় এতো বড়ো একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার সাহস করবে না।

৮৬)একজন চাষী বা নদীর মাঝি সাংস্কৃতিকভাবে যতোটা মূল্যবান, সারা সচিবালয় ও মন্ত্রীপরিষদও ততোটা মূল্যবান নয়।

৮৭)মানুষ ও কবিতা অবিচ্ছেদ্য। মানুষ থাকলে বুঝতে হবে কবিতা আছে : কবিতা থাকলে বুঝতে হবে মানুষ আছে।

৮৮)বাঙালি আন্দোলন করে, সাধারণত ব্যর্থ হয়, কখনোকখনো সফল হয়; এবং সফল হওয়ার পর মনে থাকে না কেনো তারা আন্দোলন করেছিলো।

৮৯)এদেশের মুসলমান এক সময় মুসলমান বাঙালি, তারপর বাঙালি মুসলামান, তারপর বাঙালি হয়েছিলো; এখন আবার তারা বাঙালি থেকে বাঙালি মুসলমান, বাঙালি মুসলমান থেকে মুসলমান বাঙালি, এবং মুসলমান বাঙালি থেকে মুসলমান হচ্ছে। পৌত্রের ঔরষে জন্ম নিচ্ছে পিতামহ।

৯০)নিন্দুকেরা পুরোপুরি অসৎ হ’তে পারেন না, কিছুটা সততা তাঁদের পেশার জন্যে অপরিহার্য; কিন্তু প্রশংসাকারীদের পেশার জন্যে মিথ্যাচারই যথেষ্ট।

৯১)বাস্তব কাজ অনেক সহজ অবাস্তব কাজের থেকে ; আট ঘন্টা একটানা শ্রম গাধাও করতে পারে, কিন্তু একটানা এক ঘন্টা স্বপ্ন দেখা রবীন্দ্রনাথের পক্ষেও অসম্ভব।

৯২)একটি নির্বোধ তরুণীর সাথেও আধ ঘণ্টা কাটালে যে-জ্ঞান হয়, আরিস্ততলের সাথে দু-হাজার বছর কাটালেও তা হয় না।

৯৩)প্রতিটি সার্থক প্রেমের কবিতা বোঝায় যে কবি প্রেমিকাকে পায় নি, প্রতিটি ব্যর্থ প্রেমের কবিতা বোঝায় যে কবি প্রেমিকাকে বিয়ে করেছে।

৯৪)বিলেতের কবিগুরু বলেছিলেন যারা সঙ্গীত ভালোবাসে না, তারা খুন করতে পারে; কিন্তু আজকাল হাইফাই শোনার সাথেসাথে এক ছুরিকায় কয়েকটি-গীতিকার, সুরকার, গায়ক/গায়িকাকে খুন করতে ইচ্ছে হয়।

৯৫)এখন পিতামাতারা গৌরব বোধ করেন যে তাঁদের পুত্রটি গুণ্ডা। বাসায় একটি নিজস্ব গুণ্ডা থাকায় প্রতিবেশীরা তাঁদের সালাম দেয়, মুদিদোকানদার খুশি হয়ে বাকি দেয়, বাসার মেয়েরা নির্ভয়ে একলা পথে
বেরোতে পারে, এবং বাসায় একটি মন্ত্রী পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৯৬)তৃতীয় বিশ্বের নেতা হওয়ার জন্যে দুটি জিনিশ দরকার : বন্দুক ও কবর।
৯৭)টেলিভিশনে জাহাজমার্কা আলকাতরার বিজ্ঞাপনটি আকর্ষণীয়, তাৎপর্যপূর্ণ; তবে অসম্পুর্ণ । বিজ্ঞাপনটিতে জালে,জাহাজে, টিনের চালে আলকাতরা লাগানোর উপকারিতার কথা বলা হয়; কিন্তু বলা উচিত ছিলো যে জাহাজমার্কা আলকাতরা লাগানোর উৎকৃষ্টতম স্থান হচ্ছে টেলিভিশনের
পর্দা, বিশেষ ক’রে যখন বাঙলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠান দেখা যায়।

৯৮)রবীন্দ্রনাথ এখন বাঙলাদেশের মাটিথেকে নির্বাসিত, তবে আকাশটা তাঁর। বাঙলার আকাশের নাম রবীন্দ্রনাথ।

৯৯)গণশৌচাগার দেখলেই কেনোযেনো আমার বাঙালির আত্মাটির কথা বারবার মনে পড়ে।

১০০)আমাদের অধিকাংশের চরিত্রএতো নির্মল যে তার নিরপেক্ষ বর্ণনা দিলেও মনে হয় অশ্লীলগালাগাল করা হচ্ছে।

১০১)এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি,তুমি কথা বলো।

১০২)বিনয়ীরা সুবিধাবাদী, আর সুবিধাবাদীরা বিনয়ী।

১০৩)মোল্লারা পবিত্র ধর্মকেই নষ্ট ক’রে ফেলেছে; ওরা হাতে রাষ্ট্র পেলে তাকে জাহান্নাম ক’রে তুলবে ।

১০৪)জীবন খুবই মূল্যবান : জীবনবাদীরাযতোটা মূল্যবান মনে করে, তার চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান। আর শিল্পকলা জীবনের থেকেও মূল্যবান।

১০৫)দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম প্রেম ব'লে কিছু নেই। মানুষ যখন প্রেমে পড়ে, তখন প্রতিটি প্রেমই প্রথম প্রেম।

১০৬)মার্ক্সবাদের কথা শুনলে এখন মোল্লারাও ক্ষেপে না, সমাজতন্ত্রের কথা তারা সন্তোষের সাথেই শোনে; কিন্তুশরীরের কথা শুনলে লম্পটরাও ধর্মযুদ্ধে নামে।

১০৭)কোন কালে এক কদর্য কাছিম দৌড়ে হারিয়েছিলো এক খরগোশকে, সে-গল্পে কয়েক হাজার ধ’রে মানুষ মুখর। তারপর খরগোশ কতো সহস্রবার হারিয়েছে কাছিমকে, সে-কথা কেউ বলে না।

১০৮)মানুষের তুলনায় আর সবই ক্ষুদ্র : আকাশ তার পায়ের নিচে,চাঁদ তার এক পদক্ষেপের দূরত্বে, মহাজগত তার নিজের বাড়ি।

১০৯)কারো প্রতি শ্রদ্ধা অটুট রাখার উপায় হচ্ছে তার সাথে কখনো সাক্ষাৎ না করা।

১১০)চারাগাছেও মাঝেমাঝে ফোটে ভয়ংকর ফুল।

১১১)পুরুষ তার পুরুষ বিধাতার হাতে লিখিয়ে নিয়েছে নিজেররচনা; বিধাতা হয়ে উঠেছে পুরুষের প্রস্তুত বিধানের শ্রুতিলিপিকর।

১১২)হিন্দুবিধানে পুরুষ দ্বারা দূষিত না হওয়া পর্যন্ত নারী পরিশুদ্ধ হয় না!

১১৩)উচ্চপদে না বসলে এদেশে কেউ মূল্য পায় না। সক্রেটিস এদেশে জন্ম নিলে তাঁকে কোনো একাডেমির মহাপরিচালক পদের জন্যে তদ্বির চালাতে
হতো।

১১৪)সব ধরনের অভিনয়ের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হচ্ছে রাজনীতি; রাজনীতিকেরা অভিনয় করে সবচেয়ে বড় মঞ্চে ও পর্দায়।
১১৫)মৌলবাদ হচ্ছে আল্লার নামে শয়তানবাদ।

১১৬)একটি ধর্মান্ধের মুখের দিকে তাকালেই বোঝা যায় আল্লা অমন লোককে পছন্দ করতে পারে না।

১১৭)ঐতিহ্য বলতে এখানে লাশকেই বোঝায়। তবে লাশ জীবনকে কিছুই দিতে পারে না।

১১৮)গাধা একশো বছর বাঁচলেও সিংহ হয় না।

১১৯)একটি আমলা আর একটা মন্ত্রীর সাথে পাঁচ মিনিট কাটানোর পর জীবনের প্রতি ঘেন্না ধ’রে গেলো; তারপর একটি চড়ুইয়ের সাথে দু-মুহূর্ত কাটিয়ে জীবনকে আবার ভালবাসলাম।

১২০)আমি ঈর্ষা করি শুধু তাদের যারা আজো জন্মে নি।

১২১)ভাবাদর্শগত জীবন হচ্ছে বন্দী জীবন। মানুষ জীবন যাপনের জন্যে জন্মেছে, ভাবাদর্শ যাপনের জন্যে জন্মে নি।

১২২)মুসলমানের মুক্তি ঘটে নি, কারণ তারা অতীত ও তাদের মহাপুরুষদের সম্পর্কে কোনো সত্যনিষ্ঠ আলোচনা করতে দেয় না।

১২২)গান্ধি দাবি করেন যে তিনি একই সাথে হিন্দু, খ্রিষ্টান, মুসলমান, বৌদ্ধ, ইহুদি, কনফুসীয় ইত্যাদি। একে তিনি ও তাঁর অনুসারীরা মহৎ ব্যাপার ব’লে মনে করেছেন। কিন্তু এটা প্রতারণা, ও অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ব্যাপার,- তিনি নিজেকে ক’রে তুলেছেন সব ধরনের খারাপের সমষ্টি। এমন প্রতারণা থেকেই উৎপত্তি হয়েছে বাবরি মসজিদ উপাখ্যানের। তিনি যদি বলতেন আমি হিন্দু নই, খ্রিস্টান নই, মুসলমান নই, বৌদ্ধ নই, ইহুদি নই, কনফুসীয় নই; আমি মানুষ, তাহলে বাবরি মসজিদ উপখ্যানের সম্ভাবনা অনেক কমতো।

১২৩)ভারতীয় সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের আধুনিক উৎস মোহনচাঁদ করমচাঁদ গান্ধি।

১২৪)সতীচ্ছদ আরব পুরুষদের জাতীয় পতাকা।

১২৫)পাপ কোনো অন্যায় নয়, অপরাধ অন্যায়। পাপ ব্যক্তিগত, তাতে সমাজের বা অন্যের, এমনকি পাপীর নিজেরও কোনো ক্ষতি হয় না; কিন্তু অপরাধ সামাজিক, তাতে উপকার হয় অপরাধীর, আর ক্ষতি হয় অন্যের বা সমাজের।

১২৬)সবচেয়ে হাস্যকর কথা হচ্ছে একদিন আমরা কেউ থাকবো না।

১২৭)পৃথিবীতে যতোদিন অন্তত একজনও প্রথাবিরোধী মানুষ থাকবে, ততো দিন পৃথিবী মানুষের।

১২৮)সক্রেটিস বলেছেন তিনি দশ সহস্র গর্দভ দ্বারা পরিবৃত। এখন থাকলে তিনি ওই সংখ্যার ডানে কটি শূন্য যোগ করতেন?

১২৯)বাঙালি মুসলমান জীবিত প্রতিভাকে লাশে পরিনত করে, আর মৃত প্রতিভার কবরে আগরবাতি জ্বালে।

১৩০)নজরুলসাহিত্যের আলোচকেরা সমালোচক নন, তাঁরা নজরুলের মাজারের খাদেম।

১৩১)ভ্রষ্ট বাঙালিকে ভালোবাসার শ্রেষ্ঠ উপায় তার গালে শক্ত ক’রে একটি চড় কষিয়ে দেয়া।

১৩২)ভিখিরির জীবন মহৎ উপন্যাসের বিষয় হ'তে পারে, কিন্তু রাষ্ট্রপ্রধানদের জীবন সুখপাঠ্য গুজবনামারও অযোগ্য।

১৩৩)বাঙালির জাতিগত আলস্য ধরা পড়ে ভাষায়। বাঙালি ‘দেরি করে’, ‘চুরি করে’, 'আশা করে', এমনকি ‘বিশ্রাম করে’; বিশ্রামও বাঙালির কাছে কাজ।

১৩৪)বাঙালি অভদ্র, তার পরিচয় রয়েছে বাঙালির ভাষায়। কেউ এলে বাঙালি জিজ্ঞেস করে, ‘কী চাই?’ বাঙালির কাছে আগন্তুকমাত্রই ভিক্ষুক। অপেক্ষা করার অনুরোধ জানিয়ে বাঙালি বলে, ‘দাঁড়ান’; বসতে বলার সৌজন্যটুকুও বাঙালির নেই।

১৩৫)এখানে সাংবাদিকতা হচ্ছে নিউজপ্রিন্ট-বলপয়েন্ট-মিথ্যার পাচঁন।

১৩৬)মানুষ মরণশীল, বাঙালি অপমরণশীল।

১৩৭)এ-সরকার মাঝে মাঝে গোপন চক্রান্ত ফাঁস ক'রে ফেলে। সরকার মাটি আর মানুষের সমন্বয় ঘটানোরসংকল্প ঘোষণা করেছে। আমি ভয় পাচ্ছি, কেননা মাটি ও মানুষের সমন্বয় ঘটে শুধু কবরে।

১৩৮)বাঙলাদেশের রাজনীতিকেরা স্থূল মানুষ, তারা সৌন্দর্য বোঝে না ব'লে গণতন্ত্রও বোঝে না; শুধু লাইসেন্স-পারমিট-মন্ত্রীগিরি বোঝে।

১৩৯)এমন এক সময় আসে সকলেরই জীবনে যখন ব্যর্থতাগুলোকেই মনে হয় সফলতা, আর সফলতাগুলোকে মনে হয় ব্যর্থতা।

১৪০)রাজনীতি ও সংস্কৃতি সম্পুর্ণ বিপরীত বস্তু ; একটি ব্যাধি অপরটি স্বাস্থ্য।

১৪১)মহিলাদের ঘ্রাণশক্তি খুবই প্রবল। আমার এক বন্ধুপত্নী স্বামীর সাথে টেলিফোনে আলাপের সময়ও তার স্বামীর মুখে হুইস্কির ঘ্রাণ পান।

১৪২)আগে প্রতিভাবানেরা বিদেশ যেতো; এখন প্রতিভাহীনেরা নিয়মিত বিদেশ যায়।

১৪৩)অধিকাংশ সুদর্শন পুরুষই আসলে সুদর্শন গর্দভ; তাদের সাথে সহবাসে একটি দুষ্প্রাপ্য প্রাণীর সাথে সহবাসের অভিজ্ঞতা হয়।

১৪৪)পৃথিবী জুড়ে সমাজতন্ত্রের সাম্প্রতিক দুরবস্থার সম্ভবত গভীর ফ্রয়েডীয় কারণ রয়েছে। সমাজতন্ত্রের মার্ক্সীয়, লেলিনীয়, স্তালিনীয় আবেদন ছিলো,কিন্তু যৌনাবেদন ছিলো না।

১৪৫)স্বার্থ সিংহকে খচ্চরে আর বিপ্লবীকে ক্লীবে পরিণত করে।

১৪৬)অপন্যাস হচ্ছে সে-ধরনের সাহিত্য, যা বছরেলাখ টন উৎপাদিত হ’লেও সাহিত্যের কোনো উপকার হয় না; আর আধ কেজি উৎপাদিত না হ’লেও
কোনো ক্ষতি হয় না।

১৪৭)আঠারো তলা টাওয়ারের থেকে শিশিরবিন্দু অনেক উঁচু। চিরকাল শিশিরবিন্দুর পাদদেশে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু অনেক টাওয়ারের চুড়োয় উঠেছি।

১৪৮)সৎ মানুষ মাত্রই নিঃসঙ্গ, আর সকলের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু।

১৪৯)বিপ্লবীদের বেশি দিন বাঁচা ঠিক নয়। বেশি বাঁচলেই তারা প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে।

১৫০)পুঁজিবাদী পর্বের সবচেয়ে বড়ো ও জনপ্রিয় কুসংস্কারের নাম প্রেম।

১৫১)পৃথিবীতে রাজনীতি থাকবেই। নইলে ওই অপদার্থ অসৎ লোভী দুষ্ট লোকগুলো কী করবে?

১৫২)ক্ষমতায় যাওয়ার একটিই উপায়; সমস্যা সৃষ্টি করা। সমস্যা সমাধান ক’রে কেউ ক্ষমতায় যায় না, যায় সৃষ্টি ক'রে।

১৫৩)পশু আর পাখিরাই মানবিক।

১৫৪)অন্যদের কাহিনীর ক্ষীণ সূত্র নিয়ে হ্যামলেট বা ওথেলো বা ম্যাকবেথ লেখা, আর বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালী কেটে কেটে, নষ্ট ক'রে, সত্যজিতের পথের পাঁচালী তৈরি করা সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা। অন্যের কাহিনীসূত্র নিয়ে হ্যামলেট লেখা মানবপ্রজাতির একজনের বিস্ময়কর প্রতিভার লক্ষণ, আর বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালী ছিঁড়ে সত্যজিতের পথের পাঁচালী তৈরি চিত্রগ্রহণদক্ষতার পরিচায়ক। আরেকটি উৎকৃষ্টতর হ্যামলেট বা ওথেলো বা ম্যাকবেথ, বা মেঘনাদবধ মানুষের ইতিহাসে আর লেখা হবে না; কিন্তু সত্যজিতের পথের পাঁচালীর থেকে উৎকৃষ্ট পথের পাঁচালী হয়তো তৈরি হবে আগামী দশকেই।

১৫৫)সত্যজিত যদি ভারতরত্ন হন, তবে বিভূতিভূষণ বিশ্বরত্ন, সভ্যতারত্ন; কিন্তু অসভ্য প্রচারের যুগে মহৎ বিভূতিভূষণকে পৃথিবী কেনো ভারতও চেনে না, চেনে গৌণ সত্যজিৎকে।

১৫৬)শিল্পীর কতোটা স্বাধীনতা দরকার ? নির্বোধেরা মনে করে এবং দাবি করে যে শিল্পীর দরকার অবাধ স্বাধীনতা। যেনো শিল্পীকে সমাজরাষ্ট্র অবাধ স্বাধীনতা দিয়ে দেবে, আর সে মনের আনন্দে শিল্পকলা সৃষ্টি ক'রে চলবে। এটা শিল্পকলা ও স্বাধীনতা সম্পর্কে এক মর্মস্পর্শী ভ্রান্তি। সত্য এর বিপরীত। সাধারণ মানুষের থেকে একবিন্দুও বেশি স্বাধীনতা শিল্পীর দরকার নয়; সাধারণ মানুষেরই দরকার অবাধ স্বাধীনতা, কেননা তার স্বাধীনতা সৃষ্টি করতে পারে না। শিল্পীর কোনো দরকার পড়ে না দিয়ে দেয়া স্বাধীনতার, কেননা শিল্পীর কাজই স্বাধীনতা সৃষ্টি করা, আর স্বাধীনতা সৃষ্টি করার প্রথাগত নাম হচ্ছে শিল্পকলা।

১৫৭)মানুষ মরলে লাশ হয়, সংস্কৃতি মরলে প্রথা হয়।

১৫৮)ক্ষমতায় থাকার সময় যারা সত্য প্রকাশ করতে দেয় না, ক্ষমতা হারানোর পর তারা অজস্র মিথ্যার প্রকাশ রোধ করতে পারে না।

১৫৯)আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে।

১৬০)পৃথিবীর প্রধান বিশ্বাসগুলো অপবিশ্বাস মাত্র। বিশ্বাসীরা অপবিশ্বাসী।

১৬১)শয়তানই আজকাল আল্লা আর ঈশ্বরের নাম নিচ্ছে প্রাণ ভ’রে। আদিম শয়তান আর যাই হোক রাজনীতিবিদ ছিলো না, কিন্তু শয়তান এখন রাজনীতি শিখেছে; আল্লা আর ঈশ্বর আর জেসাসের নামে দিনরাত শ্লোগান দিচ্ছে।
১৬২)আমার লেখার যে-অংশ পাঠককে তৃপ্তি দেয়, সেটুকু বর্তমানের জন্যে; আর যে-অংশ তাদের ক্ষুব্ধ করে সেটুকু ভবিষ্যতের জন্য।

১৬৩)পৃথিবীতে একটি মাত্র দক্ষিনপন্থী সাম্যবাদী দল রয়েছে। সেটি আছে বাঙলাদেশে।

১৬৪)আমাদের প্রায়-প্রতিটি মার্ক্সবাদী তাত্ত্বিকের ভেতরে একটি ক’রে মৌলবাদী বাস করে। তারা পান করাকে পাপ মনে করে, প্রেমকে গুনাহ্ মনে করে, কিন্তু চারখান বিবাহকে আপত্তিকর মনে করে না।

১৬৫)শ্রেষ্ঠ মানুষের অনুসারীরাও কতোটা নিকৃষ্ট হ'তে পারে চারদিকে তাকালেই তা বোঝা যায়।

১৬৭)ঋষি রবীন্দ্রনাথের ছবি দেখলে বাল্যকাল থেকেই তাঁর জন্মাব্দ ১৮৬১র আগে দুটি বর্ণ যোগ করতে আমার ইচ্ছে হয়। বর্ণ দুটি হচ্ছে খ্রিপূ।

১৬৮)বাঙলার প্রতিটি ক্ষমতাধিকারী দল সংখ্যাগরিষ্ঠ দুর্বৃত্তদের সংঘ।

১৬৯)কবিতা এখন দু-রকম: দালালি, ও গালাগালি।

১৭০)বাঙলাদেশের সাহিত্যে আধুনিকতাপর্বের পর কি আসবে আধুনিকতা-উত্তর-পর্ব ? না। আসতে দেখছি গ্রাম্যতার পর্ব।

১৭১)পাকিস্থানের ইতিহাস ঘাতক আর শহীদদের ইতিহাস। বাঙলাদেশের ইতিহাস শহীদ আর ঘাতকদের ইতিহাস।
১৭২)বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালীর পাশে সত্যজিতের চলচিত্রটি খুবই শোচনীয় বস্তু, ওটি তৈরি না হ’লেও ক্ষতি ছিলো না; কিন্তু বিভূতিভূষণ যদি পথের পাঁচালী না লিখতেন, তাহলে ক্ষতি হতো সভ্যতার।

১৭৩)সৌন্দর্য যেভাবেই থাকে সেভাবেই সুন্দর।

১৭৪)শরীরই শ্রেষ্ঠতম সুখের আকর। গোলাপের পাপড়ির ওপর লক্ষ বছর শুয়ে থেকে, মধুরতম দ্রাক্ষার সুরা কোটি বছর পান ক’রে, শ্রেষ্ঠতম সঙ্গীত সহস্র বছর উপভোগ ক’রে যতোখানি সুখ পাওয়া যায়, তার চেয়ে অর্বুদগুণ বেশি সুখ মেলে কয়েক মুহূর্ত শরীর মন্থন ক’রে।

১৭৫)মানুষের উৎপত্তি সম্পর্কে দুটি তত্ত্ব রয়েছে : অবৈজ্ঞানিকটি অধঃপতনতত্ত্ব,
বৈজ্ঞানিকটি বিবর্তনতত্ত্ব। অধঃপতনতত্ত্বের সারকথা মানুষ স্বর্গ থেকে অধঃপতিত। বিবর্তনতত্ত্বের সারকথা মানুষ বিবর্তনের উৎকর্ষের ফল। অধঃপতনবাদীরা অধঃপতনতত্ত্বে বিশ্বাস করে; আমি যেহেতু মানুষের উৎকর্ষে বিশ্বাস করি, তাই বিশ্বাস করি বিবর্তনতত্ত্বে। অধঃপতন থেকে উৎকর্ষ সব সময়ই উৎকৃষ্ট।

১৭৬)শোনা যায় পুরোনো কালে ঘটতো নানা অলৌকিক ঘটনা, তবে পুরোনো কালের অলৌকিক ঘটনাগুলো বানানো বা ভোজবাজি। প্রকৃত অলৌকিক ঘটনার কাল হচ্ছে বিশশতক। পুরোনো কালের কোনো মোজেজ লাঠিকে সাপ বানাতে, বা সমুদ্রের উপর সড়ক তৈরি করতে পারতেন- ক্ষণিকের জন্যে। ওগুলো নিম্নমানের যাদু। সত্য স্থায়ী অলৌকিকতা সৃষ্টি করতে পেরেছে শুধু বিশশতকের বিজ্ঞান। বিদুৎ, বিমান, টেলিভিশন, কম্পিউটার,নভোযান, এমনকি সামান্য শেলাইকলটিও অতীতের যে-কোনো অলৌকিক ঘটনার চেয়ে অনেক বেশি অলৌকিক। বিজ্ঞান অলৌকিকতাকে সত্যে পরিণত করেছে ব’লে গাধাও তাতে বিষ্মিত হয় না, কিন্তু পুরোনো তুচ্ছ অলৌকিকতার কথায় সবাই বিহ্বল হয়ে ওঠে।

১৭৭)পুরোনো কালের মানুষ যদি দৈবাৎ একটি টেলিভিশনের সামনে এসে পড়তো, তাহলে তাকে দেবতা মনে ক’রে পুজো করতো। আজো সেই পুজো চলতো।

১৭৮)ধর্মের কাজ মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা; তাই এক ধার্মিকের রক্তে সব সময়ই গোপনে শানানো হ’তে থাকে অন্য ধার্মিককে জবাই করার ছুরিকা।

১৭৯)ধার্মিক কখনোই সম্পুর্ন মানুষ নয়, অনেক সময় মানুষই নয়।

১৮০)মৃত সিংহের থেকে জীবিত গাধাও কতো জোতির্ময় উজ্জ্বল !

১৮১)আমার অনুরাগীরা চরম অনুরাগ প্রকাশের সময় খুব আবেগভরে বলেন যে আমার মতো পণ্ডিত ও প্রতিভাবান লোক আর নেই; তাই আমার অনেক কিছুই হওয়া উচিত। যেমন অবিলম্বে আমার হওয়া উচিত কোনো একাডেমির মহাপরিচালক, বা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইত্যাদি।শুনে আমি তাঁদের ও নিজের জন্যে খুব করুণা বোধ করি। আমি হ'তে চাই মহৎ, আর অনুরাগীরা আমাকে ক'রে তুলতে চান ভৃত্য।

১৮২)আপনি যখন হেঁটে যাচ্ছেন তখন গাড়ি থেকে যদি কেউ খুব আন্তরিকভাবে মিষ্টি হেসে আপনার দিকে হাত নাড়ে, তখন তাকে বন্ধু মনে করবেন না। মনে করবেন সে তার গাড়িটার দিকে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ ক'রে আপনাকে কিছুটা পীড়ন ক'রে সুখী হ'তে চায়।

১৮৩)শিশু, সবুজ, তরুণীরা আছে ব’লে বেঁচে থাকা আজো আমার কাছে আপত্তিকর হয়ে ওঠে নি।

১৮৪)টাকাই অধিকাংশ মানুষের একমাত্র ইন্দ্রিয়।
১৮৫)বাঙলার বিবেক খুবই সন্দেহজনক। বাঙলার চুয়াত্তরের বিবেক সাতাত্তরে পরিণত হয় সামরিক একনায়কের সেবাদাসে।

১৮৬)বাঙলাদেশ অমরদের দেশ। এ-দেশের প্রতি বর্গমিটার মাটির নিচে পাঁচ জন ক’রে অমর ঘুমিয়ে আছেন।

১৮৭)একবার রাজাকার মানে চিরকাল রাজাকার; কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা মানে চিরকাল মুক্তিযোদ্ধা নয়।

১৮৮)গত দু-শো বছরে গবাদিপশুর অবস্থার যতোটা উন্নতি ঘটেছে নারীর অবস্থার ততোটা উন্নতি ঘটে নি।

১৮৯)মসজিদ ভাঙে ধার্মিকেরা, মন্দিরও ভাঙে ধার্মিকেরা, তারপরও তারা দাবি করে তারা ধার্মিক, আর যারা ভাঙাভাঙিতে নেই তারা অধার্মিক বা নাস্তিক।

১৯০)মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায় আসে না; যায় আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

১৯১)মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি। কিন্তু ওরা তাকে চালায় ধর্মের নামে।

১৯২)মসজিদ ও মন্দির ভাঙার সময় একটি সত্য দীপ্ত হয়ে ওঠে যে আল্লা ও ভগবান কতো নিষ্ক্রিয়, কতো অনুপস্থিত।

১৯৩)জীবনের সারকথা কবর।

১৯৪)শাড়ি প’রে শুধু শুয়ে থাকা যায়; এজন্যে বাঙালি নারীদেরহাঁটা হচ্ছে চলমান শোয়া।

১৯৫)শাশ্বত প্রেম হচ্ছে একজনের শরীরে ঢুকে আরেকজনকে স্বপ্ন দেখা।

১৯৬)প্রেম হচ্ছে নিরন্তর অনিশ্চয়তা; বিয়ে ও সংসার হচ্ছে চূড়ান্ত নিশ্চিন্তির মধ্যে আহার, নিদ্রা, সঙ্গম, সন্তান, ও শয়তানি।

১৯৭)মধ্যবিত্ত পতিতাদের নিয়ে সমস্যা হচ্ছে তারা পতিতার সুখ ও সতীর পূণ্য দুটিই দাবি করে।

১৯৮)ইতিহাস হচ্ছে বিজয়ীর হাতে লেখা বিজিতের নামে একরাশ কুৎসা।

১৯৯)এখানে কোনো কিছু সম্পর্কে কিছু লেখাকে মনে করা হয় গভীর শ্রদ্ধার প্রকাশ। গাধা সম্পর্কে আমি একটি বই লিখেছি, অনেকে মনে করেন আমি গাধার প্রতি যারপরনাই শ্রদ্ধাশীল। গরু সম্পর্কে আমি একটি বই লিখেছি, অনেকে মনে করেন গরুর প্রতি আমি প্রকাশ করেছি আমার অশেষ শ্রদ্ধা। নারী সম্পর্কে আমি একটি বই লিখেছি। একটি পার্টটাইম পতিতা, যার তিনবার হাতছানিতেও আমি সাড়া দিই নি, অভিযোগ করেছেন, নারী সম্পর্কে বই লেখার কোনো অধিকার আমার নেই, যেহেতু আমি পতিতাদের শ্রদ্ধা করি না, অর্থাৎ তাদের হাতছানিতে সাড়া দিই না।

২০০)পুরুষতান্ত্রিক সভ্যতার শ্রেষ্ঠ শহীদের নাম মা।(সংগ্রহীত)