সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০১৯

সারেগামাপা-নোবেল-ভারতবিদ্বেষী


সারেগামাপাএকটি অত্যন্ত জনপ্রিয় রিয়ালিটি শো, অনেক প্রতিশ্রুতিমান শিল্পীর ভবিষ্যত গড়ার স্বপ্ন এই শো। বিগত ১১ মাস ধরে চলা জি বাংলা সারেগামপা ২০১৯-এর সমাপ্তি হল। এদিন ৬ জনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে এটাই স্বাভাবিক। প্রীতম, অঙ্কিতা, গৌরব, স্নিগধজিৎ, সুমন, নোবেল এরা প্রত্যেকেই এদিন নিজেদের সেরাটা উজার করে দিয়েছে। ফলে সেরার শিরোপা কার হাতে তুলে দেওয়া হলো এবং অমুক না হয়ে তমুক হলো না কিংবা তমুক প্রথম না হলো তাই বলে কি দ্বিতীয় না হয়ে একেবারে তৃতীয় হয়ে গেলো এ নিয়ে আমাদের মাঝে বিভিন্নজনে বিভিন্ন মতামত দিবে।যেহেতু দর্শকরা কেউ সঙ্গীৎ বিশেষজ্ঞ না।আমিও সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ না আমিও, সবার মত দর্শকসারির মানুষ।
আর এই দর্শকসারির মানুষরা সাধারণত অন্ধ হয়।এরা নিজের পছন্দসই মানুষ ছাড়া সর্বোচ্চ স্থানে অন্য কাউকে ভাবতে পারে না।বলছিলাম সারেগামাপা খ্যাত মাইনুল আহসান নোবেলের কথা।ইতিমধ্যে নোবেল এপার ওপার বাংলার বেশ পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছে দর্শকদের মন জয় করে সারেগামাপা থেকেই।

গতকাল (২৮ -৭-২১৯)শেষ হয়েছে সারেগামাপা ২০১৯।নোবেল তৃতীয় স্থান অর্জন করায় বাংলাদেশের মানুষের মনে বাঁধে বিপত্তি।কেউ বলছে নোবেল শুধু মাত্র বাংলাদেশী হবার কারণেই তাকে প্রথম বানানো হয় নাই।আবার যারা রাজনৈতিক সচেতন তারা বলছেন, নোবেলের গান নির্বাচন ভুল ছিলো ।কারণ হিসাবে তারা বলছে, ফাইনালে গেয়েছে "আমার সোনার বাংলা" এই গানে উল্লেখ আছে হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী আর শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের নাম।
এই দুই জন ব্যক্তি যতই বাংলাদেশে জনপ্রিয় ব্যক্তি হোন না কেন ওপার বাংলায় তথা পশ্চিম বাংলায় খুবই বিতর্কিত ব্যক্তি। কারন দেশ ভাগের জন্য এই দুইজন ব্যক্তিকে দ্বায়ী করা হয়। বিশেষ করে গ্রেটার ক্যালকাটা কিলিং/ নোয়াখালীর গনহত্যার জন্য প্রধান অভিযুক্ত অবিভক্ত বাংলার ততকালীন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী।উনার নিস্ক্রিয় ভুমিকার কথা পশ্চিম বাংলার কেহ ভুলেনি। আর লাহোর প্রস্তাব করে সেখানকার মানুষের কাছে বিতর্কিত হয়েছিলেন ফজলুল হক।

তাছাড়া আবার অনেকেই বলছে, এই গানটা নোবেল যখন বাংলাদেশে গেয়ে কাভার করে একটা সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে গানটা বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় সংগীত এর থেকে হাজার গুন বেশী বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করে।তখন অনেকেই চরমভাবে বিরক্ত হয়েছিল এই সাক্ষাৎকারের জন্য।এতে ভারতের মানুষের রবীন্দ্রানুভুতিতে আঘাত লাগছে।এই কারণেও তাকে ইচ্ছা করেই তৃতীয় বানানো হতে পারে।

আবার অনেকে বলছেন টিআরপি বাড়ানোর জন্য কিংবা বাংলাদেশের দর্শক ধরে রাখার জন্যই কেবলমাত্র নোবেলকে এতদিন ধরে রাখা হয়েছিলো।অর্থাৎ ঘুরে ফিরে সন্দেহ এবং শেষে ভারত বিদ্বেষী কথা ঢেলে বিষাদাগার করা।

কিন্তু সত্যি কি তাই? আমার তা মনে হয় না যে, নোবেল শুধু মাত্র বাংলাদেশী হওয়ায় ,তার নির্বাচিত গান কিংবা রবীন্দ্রানুভুতিতে আঘাত পাওয়ার কারণে এমনটা হতে পারে।আমার কাছে দুইটা কারণ আছে।সেই কারণ দুইটার আগে বলে নেই, আমরা যা বলতাছি সবই ভারত বিদ্বেষ থেকে।আর কিচ্ছুনা।নিজেকে আগে স্বতন্ত্র অবস্থানে নিয়ে যান তারপর এইসব কথা বলেন দেখেন আপনার কথা সাথে আপনি মিলাতে পারবেন না।মনে এতোটাই ভারত বিদ্বেষী জিইয়ে রাখি যার কারণে আমরা যা ইচ্ছা তাই বলে যাচ্ছি আর বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টাল থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলছে ভারত বিদ্বেষী কথাবার্তা সাথে গালাগালি। কিন্তু এইটা ভুলে গেলে চলবে না এই নোবেলকে সবার মাঝে পরিচয় করিয়ে দিছে কিন্তু ভারত সারেগামাপা দিয়েই।এর আগে তাকে কেউ চিনে নাই।শুধু তাই না, বাংলাদেশে হওয়া এক প্রোগ্রাম থেকে নোবেল বাদ পড়ে যায় আর কলকাতায় গিয়ে সে বাজিমাৎ করে।তারপরেও আমরা কতসুন্দরভাবে অবলীলায় বলে দিচ্ছি, নোবেল শুধু মাত্র বাংলাদেশী হবার কারণেই তাকে তৃতীয় বানানো হয়েছে! এই নোবেলকে ভারতের জি বাংলায় দেখা না গেলে আজকের কয়জন তাকে মূল্যায়ন করতে পারতেন? কতজন মূল্যায়ন করতে পারতেন সেটাতো আগেই বুঝা গেছে যখন সে বাংলাদেশের প্রোগ্রাম থেকে বাতিল মাল হয়ে যায়।যারে নিজের দেশের মিডিয়া পুছে না তাকেই কিন্তু ভারত সেলিব্রেটি বানাইছে। এসব অন্তত একটু বলেন।আমরা কতটা অকৃতজ্ঞ জাতি হলেই কেবল এইভাবে ভারত বিদ্বেষী কথা বলতে পারি একটু ভাবুন।পান থেকে চুন খসলেই দোষ হয়ে যায় ভারতের।এইভাবে কারা দোষারুপ করে সব কিছুতে জানেন? নিজেদের কিছু করার, মূল্যায়ন করার যাদের সক্ষমতা নাই।অথচ দেখুন, ভারতই তাকে তাদের ইন্ডাস্ট্রিতে সিনেমার প্লে-ব্যাক করার সু্যোগ দিয়েছে সারেগামাপা চলাকালীন সময়ে।আর কত সুযোগ চান আপনারা? এতোটা ভারত বিদ্বেষী পুষে রাখেন যার কারণেই আপনারা এমন ভাবে চিন্তা করতে পারেন।দিলেই ভালো না দিলেই খারাপ এই কালচার থেকে আমরা যত তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসতে পারবো ততোই ভালো।

আপনার একটু অতীত মনে করিয়ে দিয়ে বলতে চাই, আবুহেনা রনি, সজল, শাওন, কাজুদের কথা মনে আছে? যারা ভারতের মিরাক্কেল থেকে সেরা হয়ে দেশে এসেছিলো? তখনতো আপনারা বলেন নাই, বাংলাদেশী হবার কারণে, টিআরপি বাড়ানোর জন্য কিংবা বাংলাদেশী দর্শক ধরে রাখার জন্যই তাদের বিজয়ী মুকুট পড়ানো হয়েছিল!যাউজ্ঞা সেই কথা বাদ দেই।আপনারা অতীত ভুলে যান এবং কৃতজ্ঞতা বলতে যেটা থাকা দরকার এটা আমাদের কোনদিন ছিল না।তাছাড়া ৭১ আমাদের ভারত সাহায্য করার পরেও আমরা বলি তাদের লাভের জন্যই সাহায্য করেছিল এবং যে পরিমান ভারত বিদ্বেষী পুষোন করি তার বিন্দুমাত্র করিনা পাকিস্তানের এমন নির্মমতার পরেও।শুধু মাত্র এটা ধর্মের কারণেই।এই উপমহাদেশের সব থেকে বড় সাম্প্রদায়িকতা ধর্ম।এইসব আপনাদের বুঝানো যাবেনা।এবার আসি আসল কথায়।






নোবেল তৃতীয় স্থান অধিকার হবার কারণ একমাত্র তার পারফর্মেন্স।এই ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নাই।ভালো গলা, ভালো গাইতে পারে মানেই তাকে প্রথম বানাতে হবে এমন না।একজন প্রতিযোগীকে সেরা বানানোর ক্ষেত্রে আগের থেকে বেশী সচেতন হয়ে যায় বিচারকেরা।যা আমরা দর্শকরা হয়তো বুঝতে পারিনা।সারেগামাপা-২০১৯ ফাইনালের আগে নোবেল প্রিন্স মাহমুদের কথা ও সুরের তিনটি গান গেয়েছেন। ‘বাবা’, ‘মা’ এবং ‘এত কষ্ট কেন ভালোবাসায়’। তিনবারের একবারও গীতিকার বা সুরকার হিসেবে প্রিন্স মাহমুদের নাম উচ্চারণ করেননি তিনি।‘এত কষ্ট কেন ভালোবাসায়’ গানের শুরুতে গানটিকে আর্ক ব্যান্ডের গান বলেও উল্লেখ করেন। এটি ভুল তথ্য। বিষয়টি প্রিন্স মাহমুদের নজরে আসার পরে ফেসবুকে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসে প্রিন্স মাহমুদ লিখেছেন, ‘দুঃখিত, “এত কষ্ট কেন ভালোবাসায়” আর্ক ব্যান্ডের গান না। এটা ১৯৯৮ সালে রিলিজ হওয়া আমার কথা ও সুরে মিক্সড অ্যালবাম “শেষ দেখা”–তে হাসান গেয়েছিল।’

তাছাড়া বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় প্রিন্স মাহমুদের সাক্ষাতকার।তিনি বলেন, ‘আমি হতাশ। একই ঘটনা বারবার হলে সেটা ভুল না, অপরাধ। আগে দুবার এমন ঘটনা ঘটেছে। আমি শুরুতে অনেক ছাড় দিয়েছি, উদারতা দেখিয়েছি। আর না।’

প্রিন্স মাহমুদ বলেন, ‘একটা মানুষের সৃষ্টিকে এভাবে অপমান করা হয়, তখন কী পরিমাণ খারাপ লাগে, এটা এদের মতো নবীন অবুঝেরা বুঝতে পারবে না। তবে বারবার এভাবে ছাড় দিলে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া হবে।’ প্রিন্স মাহমুদ জানান, তাঁর সঙ্গে নোবেলের আলাপ হয়েছে, জি বাংলার কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলাপ হয়েছে।

প্রিন্স জানান, দুই মাস আগে ‘বাবা’ গানটি প্রচারের পর নোবেলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। প্রতিটি গান নিয়ে বিস্তারিত আলাপ হয়। প্রিন্স মাহমুদ বলেন, ‘যতটা জানি, জি বাংলায় এ অনুষ্ঠান ধারণের সময় নোবেল যা যা বলেছে, সেটাই প্রচার করেছে কর্তৃপক্ষ। কোনো কিছু বাদ দেওয়া হয়নি। তার মানে নোবেল ইচ্ছা করেই বারবার এমনটা করছে। আমার করা গান যেকেউ গাইতেই পারে, কোনো সমস্যা না। তবে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য সে বিষয়ে অনুমতি নিতে হবে। যথাযথ নিয়মের মধ্যে যেতে হবে।’

যদিও ফাইনালে এমন ভুল করে নাই।কিন্তু এর রেশ কিন্তু একটা থেকেই যায়।কারণ প্রিন্স মাহমুদ তখন বেশ ভালোই নড়েচড়ে বসেছিলেন এবং বিতর্কের ঝড়ও হয়েছিল।এই প্রভাবটা যে ফাইনালে পরেছে এটা আমার কাছে স্বাভাবিক ভাবেই মনে হচ্ছে।এই হলো আমার দুইটা কারণের মধ্যে একটা কারণ তার পিছিয়ে পড়ার।

দ্বিতীয় কারণটা হলো, নোবেলের গানে লিরিকে উচ্চারন ভুল।‘তুমি রাগে অনুরাগে মুক্তি সংগ্রামের সোনা ঝরা সেই রোদ্দুর'।সে রোদ্দুরের স্থানে রোদ বলে।একটা গান আপনি সুর এবং লিরিক ঠিক রেখে নিজের স্টাইলে গাইতে পারেন।কিন্তু ভুল উচ্চারণ কিংবা ভুল লিরিকে গাইলে সেটা ভুলই।সেটা যত ভালো উপস্থাপনই হোক না কেন।ভুল যেটা ভুলই।সেহেতু তার তৃতীয় স্থান হওয়াটা স্বাভাবিক বলেই আমার মনে হয়েছে।

সেহেতু আমি একজন শ্রোতা হিসাবে বলতেই পারি নোবেল যে স্থান অধিকার করেছে সেটা বরং সে বেশী পেয়েছে।কারণ ভুল লিরিক কিংবা ভুল উচ্চারনেও সে তৃতীয় এবং এটাও হতে পারে বাকীরা মানে তার পরের স্থান অধীকারিরাও কোন না ভুল করেছিল।যার কারণে নোবেল এগিয়ে থাকে।

এখানে আরও একটা বিষয় উল্লেখ করা ভালো যে, আমি নোবেলের কিংবা সারেগামাপা নিয়ে আগে পরে কোন আগ্রহ ছিল না।কিন্তু সারেগামাপাতে ৪ চারটা গান জেমসের এবং বাচ্চু ভাইয়ের গান করেছিল সে গানগুলা ইউটিউবে শুনেছিলাম।শুধু তাই না, আমি ফাইনাল রাউন্ডের গানও আজ সকালের আগে শুনিনাই কিংবা দেখি নাই।হঠাৎ আজ সকালে শুনতে পেলাম সে , "আমার সোনার বাংলা" গানটা সে গেয়েছে।এরপরেই আমি গানটা ইউটিউব থেকে শুনি এবং প্রথমেই আমার কাছে রোদ্দুরের জায়গায় রোদ বলে উচ্চারন করে।কয়েকবার শুনি।কিন্তু একই ভুল আমার কাছে মনে হয়েছে।এরপর লিরিক দেখলাম, দেখি লিরিকেও রোদ্দুর।

আমি যেহেতু একজন ফিলিংস থেকে নগর বাউল এক কথায় জেমস ভক্ত এবং তার গাওয়া প্রতিটা গান আমার খুব ভালো করে শুনা সেহেতু ভুলটা সহজেই ধরা পরে।

এখন আসি বাকী কথায়, যারা বলতাছেন আপনারা আগেই জানতেন সে প্রথম হতে পারবেনা এবং রেজাল্ট আগেই পাবলিশ হয়েছে এই ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নাই।কারণ এই গান গুলা লাইভ হয় না।আগেই রেকর্ডিং করা হয়ে থাকে।সেহেতু রেজাল্ট আগেই প্রকাশ পাওয়াটা অস্বাভাবিক না।অন্যদিকে যে বা যারা প্রথম এবং যৌথভাবে দ্বিতীয় হয়েছে তারা কেউ নোবেলের থেকে কোন অংশে কম মনে হয় নাই ফাইনালে।সেহেতু আগের প্রোগ্রাম দিয়ে না, শেষ ভালো যার সব ভালো তার।সেহেতু বিজয়ের মুকুট শেষ ভালোর মাথায় উঠবে এটাই স্বাভাবিক।

শেষ কথা বলবো, নোবেলের জন্য শুভ কামনা।তার একটা প্লাটফর্ম হয়েছে।সে পরিচিত লাভ করেছে।এখন নিজের মৌলিক গান করে সেই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাক।কভার করা গান দিয়ে বিখ্যাত হওয়া যায় না হয়তো একটা প্লাটফর্মে নিজেকে উপস্থাপন করা যায়।কারণ এমন অনেকেই হারিয়ে গেছে অতীতে নিজের মৌলিক গান না করতে পারার জন্য।নিজের টিকে থাকতে হলে অবশ্যই মৌলিক গান দিয়ে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হবে।আশা করি নোবেল সেটা পারবে এবং তাকে পারতেই হবে।

অনেক অনেক ভালোবাসা এবং নোবেলের জন্য শুভ কামনা।

শনিবার, ২০ জুলাই, ২০১৯

আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় স্ত্রী মিন্নিকে নিয়ে এলোমেলো ভাবনা



বরগুনায় প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে খুন হওয়া রিফাত শরীফ হত্যায় স্ত্রী মিন্নির দোষ অবশ্যই আছে।ভিডিও ফুটেজ দেখে অনেকেরই মাথা ঘুরান্টি দিছে।কিন্তু আমার এখানে মনে হয় এখনো একটা কিন্তু লুকিয়ে আছ।যা আমরা ভাবতে পারছিনা ভিডিও ফুটেজ দেখার পর এবং রিফাত শরীফের বাবার বক্তব্য শুনে। হয়তো নিজের উপরেই আমরা অনেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছি রিফাতের উপর হামলার আগে এবং শুরুতে মিন্নির বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে।


যাই হোক, মিন্নি দোষী হওয়ায় যেভাবে আপনারা প্রতিবাদ করছেন তার সিকি ভাগও খুনীদের বিরুদ্ধে না!অনেকেই শুরু থেকেই মিন্নি খারাপ এবং মিন্নির চরিত্র নিয়ে টানাটানি শুরু করে দিছেন।এলাকাবাসীসহ তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে।অবশ্যই এটা ভালো দিক।অপরাধীর শাস্তি হওয়া উচিত।


কিন্তু খুনতো আরও হয়।প্রকাশ্যেই হয়।সেগুলা নিয়ে এতো প্রতিবাদওতো দেখি না।বরং মানুষ এইসব থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে।দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।মানুষ যদি এতোটাই সচেতন হতো তাহলে নয়ন বন্ডদের মতো সন্ত্রাসীর জন্ম হতো না। এখন যতোটা মিন্নিকে নিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা হচ্ছে তার আগে কেন নয়ন বন্ডের মতো সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জনগন এমন সোচ্চার কিংবা সচেতন হয় নাই।এখনতো পুরা বাংলাদেশই লেগে গেছে মিন্নির সংশ্লিষ্টতা খোঁজার জন্য! আপনার এলাকার সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে কি এতোটা সোচ্চার আপনারা? আজ রিফাত শরীফ না হয় একটা মেয়ের জন্য খুন হইছে।কিন্তু আপনার এলাকাতেও এমন অনেক ছোট খাটো বিষয়ে খুন হয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে।কিন্তু খুনে কার হাত রয়েছে কিংবা থাকতে পারে তা আমরা সকলেই অনুমান করে নিতে পারি।যেমনটা অনুমান করেই মিন্নিকে দোষী বানিয়ে এখন সে সত্যি সত্যি তার সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।এটা অবশ্যই ভালো দিক যে, সমালোচনার কারণেই হয়তো মিন্নির অপরাধ সামনে আসতাছে ধীরে ধীরে।কিন্তু অন্য কোন অপরাধের সময় এমন আমরা হতে পারি না! আমরা কেন তখন ভয়ে মুখ খুলি না! নাকি এখানে মিন্নির কোন ক্ষমতা নাই এবং মিন্নির লিঙ্গ পরিচয়টার কারনেই?


নাকি এই প্রথম খুন হইছে এইভাবে আমাদের দেশে তাও আবার একটা মেয়ের প্ররোচনায় তাই এতো প্রতিবাদ?


যেখানে আবার, স্থানীয় এমপি শম্ভু দেবনাথের ছেলে সুনাম দেবনাথ শুরু থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একাধিক স্ট্যাটাস, পোস্ট ও ছবি প্রকাশ করেছেন। একটি পোস্টে তিনি রিফাত হত্যায় স্ত্রী মিন্নিকে ‘মূল ভিলেন’ হিসেবে ইঙ্গিত করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বিভিন্ন খবর ও মিডিয়াতে যাকে এখন হিরো বানানো হচ্ছে মূল ভিলেন সে নিজেও হতে পারে, রিফাত শরিফের বন্ধুদের থেকে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে তাতে এটাই বুঝা যায়।’


অপর একটি স্ট্যাটাসে স্থানীয় আইনজীবীদের রিফাত হত্যায় জড়িতদের পক্ষে না দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।সত্যি বলতে এখন মিন্নির পক্ষে কোন উকিল পাওয়া যাচ্ছে না। মিন্নির বাবা দাবী করে বলেন, ‘আমার মেয়েকে বুধবার আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালতে আমার মেয়ের পক্ষে অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন, অ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার নাসির ও অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা কাদেরের দাঁড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু কী কারণে দাঁড়াননি আমি বলতে পারবো না।’


রিফাতের স্ত্রী মিন্নি খুনি কিনা এটা এখনও প্রমাণ হয়নি। প্রমাণ হবে যেখানে সেই আদালতে তাকে আইনি সহায়তা দেওয়ার মত কেউ নাই। বরগুনার আইনজীবীদের কেউ তার হয়ে লড়তে চাননি।


মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিন্নিকে তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তার করতে পারেন, আদালত রিমান্ডে পাঠাতেও পারেন; কিন্তু তাই বলে কোন আইনজীবী তার পক্ষে দাঁড়াবেন না- এ কেমন কথা!


অন্যদিকে আলোচিত ধর্ষনের পর নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার আসামীদের পক্ষে সম্ভবত ১৬ অথবা ১৮ জন উকিল দাঁড়িয়ে যায়। এই দেশে আলোচিত ধর্ষক খুনিদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে উকিল দাঁড়িয়ে যেতে পারে।কিন্তু অপরাধী নারী এবং ক্ষমতা না থাকায় তার হয়ে উকিল দাঁড়ানোর সাহস নাই। এই সাহসটা কেন নাই তা আর ব্যাখ্যা করতে হবে না।আবার অপরাধীর পক্ষে এতো এতো উকিল দাঁড়িয়ে যায় কেমনে এটা নিয়েও আমাদের চিন্তা করতে হবে না।কারণ আমরা সবই জানি বুঝি।কিন্তু আমরা কোন কোন ক্ষেত্রে বধি এবং অন্ধ এবং কিছু ক্ষেত্রে আবেগী।


যাই হোক, এমপি পুত্রের কথা আবার উকিলদের না লড়ার পিছনের কারণটা কেমন করে যেন মিলে যাচ্ছে না?


মিন্নির দোষ থাকলে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।কিন্তু মিন্নিকে শাস্তি কিংবা ফাসিয়ে দিয়েতো আবার খুনিদের অপরাধ হালকা করে দেওয়া হচ্ছে না কিংবা এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে না কৌশলে?


কারণ অনেকেই দাবী করছে, মিন্নির জন্যই নাকি ১৪ ছেলের জীবন নষ্ট!আরে ১৪ জন ছেলে আজকে নষ্ট না।এরাতো আগের থেকেই মাদক,ছিনতাইসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিলো।যেটা কেউ অস্বীকার করতে পারবেনা।তাহলে মিন্নির জন্য কেন তাদের জীবন নষ্ট হবে মহামান্য জ্ঞানী ভাইয়েরা একটু বুঝিয়ে বলুন।


এখানে রিফাত শরীফ খুন হলেও সেও দোষী।কারণ সেও ভালো ছিলো না বলেই আমার ধারণা। যদি ভালোই হতো তাহলে রিফাত শরীফ নয়ন বন্ডের বন্ধু হয় কি করে?


খুনি নয়ন বন্ডের সাথে প্রেম বিয়ের কথা সবাই জানে।সেহেতু রিফাত শরীফও জানে এটা অবশ্যই বলা যায়।কারণ,


১/ নয়ন বন্ড এবং রিফাত দুইজনেই এক অপরের পরিচিত এবং বন্ধু।


২/ নয়ন বন্ড ও মিন্নি এবং রিফাত শরীফ একই এলাকার মানে কাছাকাছি সবাই থাকতো।


সেহেতু মিন্নির সাথে নয়নের সম্পর্কের কথা রিফাত কিংবা তার পরিবার জানতোনা এটা অস্বীকার করার মতো না। রিফাত শরীফের পরিবার এবং রিফাত জেনেই মিন্নিকে বিয়ে করেছে।এখন যত অস্বীকার করুক তারা কিছু জানতোনা কিংবা মিন্নির পরিবার লুকাইছে এটা মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই না বলেই আমার বিশ্বাস এবং অনুমান।সেহেতু শুধু মিন্নির চরিত্র নিয়ে টানাটানির আগে আর একটু সাবধানতা অবলম্বন করি।


লিখাটা ছোট করতে চাচ্ছিলাম কিন্তু কোনভাবেই হচ্ছে না।কারণ কোন না কোনভাবেই মাথায় অনেকগুলা প্রসঙ্গ চলে আসে। এই যেমন ধরুন মিন্নির একটা স্ট্যাটাসের স্ক্রীনশট এবং নয়নের সাথে মিন্নির কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে।যেখানে স্ক্রীনশটের কমেন্টে মিন্নি প্রকাশ্যেই নয়ন বন্ডকে সরি জান বলে সম্বোধন করে।


এবং এরই সূত্র ধরে মিন্নিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় যোগাযোগ সামাজিক মাধ্যম গুলাতে।তাদের কথার যুক্তি ছিলো এবং রিফাত শরীফ হত্যায় মিন্নিরই হাত রয়েছে বলে দাবী।এটা অবশ্য তখন উড়িয়ে দেওয়া গেলেও ভিডিও ফুটেজ এবং আসামিদের জবানবন্দি,কললিস্ট চেক করে সংশ্লিষ্টতার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।কিন্তু এখানে যে, কোন ষড়যন্ত্র নাই তা যেমন বলা যাবেনা, ঠিক তেমনি এখনো অনেক কিছুই আমাদের না দেখা কিংবা না জানার মাঝেই রয়ে গেছে।তাছাড়া নিজ স্বামীকে কেন সে খুন কিংবা মারতে চাইবে?আমি আমার নিজস্ব চিন্তাধারা থেকে যা বুঝতে পারি এবং এই হত্যা মামলা সম্পর্কে গত কয়েকদিনে যতো কথা নড়াচাড়া হইছে তার প্রেক্ষিতেই আমার অনুমান নির্ভর কিছু কথা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।


দোষ সবারই আছে।


কিন্তু আমরা শুধু মিন্নিকেই কেন দোষ দিচ্ছি?


নিজের স্বামীকে কেন মিন্নি অন্যকে দিয়ে মারার প্ল্যান করলো?


রিফাত শরীফ কি কোন না কোন ভাবে মিন্নিকে ব্ল্যাকমেইল করে বিয়ে করছে?


নয়ন বন্ড এবং মিন্নির প্রেম এবং তারা বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও কেন রিফাতকে কোন ঝামেলা ছাড়া এবং নয়ন বন্ডের মতো উঠতি সন্ত্রাসীও বাধা দিলো না বিয়েতে?


রিফাত শরীফ এবং নয়ন বন্ড বন্ধু হয়েও কেন বন্ধুর বিবাহিত বউ কিংবা প্রেমিকাকেই বিয়ে করলো রিফাত শরীফ?


মিন্নির মা এবং নয়ন বন্ডের মা জানতো নয়ন এবং মিন্নি বিবাহিত তাহলে তারাও কেন আগে মুখ খুললো না কিংবা তাদের মাঝে ডিভোর্স না করিয়েই বিয়ে দিলো?


মিন্নি বিয়ের পরেও কেন নয়ন বন্ডের সাথে যোগাযোগ রেখেই গেলো?


তাহলে কি রিফাত শরীফ মিন্নি এবং তার পরিবারকেও ব্ল্যাক মেইল করতো?


যার কারণেই কি মিন্নি এবং নয়ন বন্ড মুখ খুলতে পারে নাই এবং নিরবে বিয়েটা করে নিয়েছিলো?


মিন্নির জবানবন্দী অনুযায়ী, সে খুন না নয়নকে দিয়ে শাসানোর কথা ছিলো কেন?


মিন্নি কেন নয়নের কাছে চলে গেলো না রিফাতকে ছেড়ে কিংবা নয়নই কেনই মিন্নিকে নয়নের কাছ থেকে ফিরিয়ে নিলো না?


তাহলে নয়ন মিন্নি এবং রিফাত শরীফের মধ্যে এমন কোন শত্রুতা ছিলো যার কারণে বন্ধুর স্ক্রীকে রিফাত বিয়ে করে নেয় এবং মিন্নির সাথে স্নায়ু যুদ্ধে লিপ্ত হয়?


তাহলে এই কারণেই কি রিফাতকে শাসানোর জন্য নয়ন বন্ডের সাথে হাত মিলানো?


কিন্তু মিন্নির প্ল্যান যদি কেবল শাসানোই থাকে তাহলে কেন তাকে কুপিয়ে খুন করে ফেললো?


নয়ন বন্ডকেও কেন পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধের নাটক সাজিয়ে খুন করা হলো?


রিফাত ফরাজী এবং তার ছোট ভাই রিশাত ফরাজী কেন এই হত্যায় সরাসরি জড়িত?


এইখানে কি শুধু প্রেম নাকি অন্য কোন কিছুও রয়েছে?


এরকম বহু প্রশ্নের উদয় হয়।এই মামলাটা এতো সহজ না।কারণ প্রধান আসামী/ খুনি নয়ন বন্ড পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে খুন এবং রিফাত শরীফ নয়নের হাতে খুন হয়েছে।


তবে এটা পরিষ্কার,মিন্নি রিফাতকে চাইতোনা। কিন্তু এমন কোন কারণ আছে বা ছিলো যার কারণে মিন্নি নয়নের কাছে কিংবা নয়ন মিন্নিকে তার কাছে নিতে পারতেছিলোনা।আবার নয়নকে পাওয়ার জন্যে বা তার কাছে ফিরে যাওয়ার জন্যে রিফাত কোনো বিশাল বাঁধা বা প্রতিবন্ধকতার কারণ ছিলেন না।যার কারণে তাকে খুন করতে হবে।তাদের মাঝে এমন কোন ঝামেলা ছিলো বলেই তাকে শাসানোর কথা বলেছে নয়নকে।।কিন্তু তাকে খুন করে ফেলা হবে এমন প্ল্যান মিন্নির ছিলো না বলেই আমার ধারনা।এই ঝামেলাটা এতো সহজ না।অনেক কিছুই সামনে এসে যায়।এইখানে খুন করা হবে রিফাতকে বা তাকে চিরতরে সরিয়ে ফেলার প্ল্যানে মনে হয় না মিন্নির ছিলো।বড় জোর তাকে লাথি ঘুষি শাসানোর এইসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ প্ল্যান থাকতে পারে।


আবার আমার এটাও ধারণা হয়, মিন্নিও কোন না কোন ভাবে রিফাত শরীফ দ্বারা ম্যান্টাললি চাপে ছিল।যা কেউ বুঝতে পারে নাই।অন্যদিকে রিফাত শরীফকে খুন করা হবে এটা সে নিজেও বুঝে নাই অথবা সে এতোটা বিরক্ত থাকতে পারে রিফাত শরীফের উপর যার কারণে তাকে খুন করে ফেলার প্ল্যানে থাকতে নিজের চিন্তা বাদ দিয়ে।অনেক সময় এমন হয় না, যা হবার হবে শালা তকেই আগে দেখে নিবো।জেলের ভাত ফাসি সব কিছুই মেনে নিবে কিন্তু তকে দুনিয়ায় রাখবোনা।এমনটা হলেও হতে পারে।অন্যদিকে নয়নের সাথে রিফাতেরও শত্রুতা। যার কারণে মিন্নি ডাবল রুল প্লে করতে পারে।কিন্তু এটা ঠিক, মিন্নি রিফাতকে খুন করে নয়নের সাথে থাকবে এমন চিন্তা ভুলেও করে নাই।


এইখানে এমন কিছু ঘটনা বা কারণ রয়েছে যা আমরা বুঝতেছিনা।দিন দুপুরে মানুষের সামনে নয়নের দ্বারা স্বামীকে খুন করিয়ে আবার পুলিশের কাছে নয়নের নাম বলে দিয়ে আবার খুনি নয়নের কাছে চলে যাবে এমন স্বপ্ন দেখার মত বোকা মেয়ে বলে আমার মনে হয় না মিন্নিকে।

শনিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৮

অযৌক্তিকভাবে নারীকে হেয় করে শর্ট ফিল্ম ভাইরাল ফেসবুকে

'I Want 2 Love U' একটা facebook পেইজে নারীদের অসম্মান করে এবং নারীদের হেয় করে একটা ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। যেখানে পজেটিভ নেগেটিভ দুই ধরনের কমেন্টই আসছে।তবে বেশীর ভাগই ভিডিওকে সমর্থন করে এবং অনেক মেয়েও সমর্থন শেয়ার করেছে।ভিডিওটি নিচে দেওয়া হলো। লিঙ্ক
 

যাই হোক, প্রথমেই বলবো ভিডিও কনসেপ্ট পুরুটাই ভুল।যেটায় আমি কোন কথারই যৌক্তিক কারণ খুজে পেলাম না।

এখন আসি প্রথম পয়েন্ট থেকেই।আমি একজন চেইন স্মোকার। কিন্তু এর মানেই সিগারেট খাওয়া কোন আধুনিকতা না কিংবা ভালো কোন কাজ না। আর পাবলিক প্লেসে অনেক দেশের এবং বাংলাদেশের কিছু কিছু জাগায় স্মোক করা নিষেধ। সে সব জাগায় কড়াকড়ি থাকার কারণে আলাদা স্মোকিং জোন থাকে।কারণ সিগারেট খাওয়া অবৈধ নিয়ে যেহেতু কোন আইন নাই সেহেতু খেতে পারবে তবে নির্দিষ্ট জাগায়। আর উন্নত রাষ্ট্রে পাবলিক প্লেস কেন নির্দিষ্ট জোন ছাড়া খেতে পারবে না এমনও আছে। সে কথা বলে লাভ নাই। এখন আসি আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট হিসাবেই। আমাদের দেশে পাবলিক প্লেসে সিগারেট খাওয়া নিয়ে হয়তো আইন নাই, কিন্তু যারা বিবেকবান তারা খায় না। কারণ যে খায় তার থেকে বেশী ক্ষতি হয় পাশের জনের। সেখানে একজন ছেলে কিংবা মেয়ে কারও পাবলিক প্লেসে খাওয়া উচিত না। যদিও আমি খাই পাবলিক প্লেস,রাস্তায় সব জাগায়। এখন আমি যদি খেতে পারি আর এটা যদি বৈধ হয় তাহলে মেয়েদেরটাও বৈধ অন্যথায় দুইটাই অবৈধ। এখানে স্মার্ট বা গাইয়া বলে কোন কথা নাই। কারণ ছেলে মেয়ে যাই খাক সবার জন্যই সমান ক্ষতি। সেহেতু এখানে স্মোক নিয়ে যেভাবে বলছে সেটা পুরুটাই ভুল কনসেপ্ট। যেহেতু ছেলেটা পাবলিক প্লেসে সবার সামনে সিগারেট খেতে পারবে কিন্তু মেয়ে পারবেনা বলে দাবি করেছে। যদি সে তার বন্ধু এবং মেয়েকে সিগারেটের ক্ষতিকারক দৃষ্টিভঙ্গি বুঝাইতো এবং পাবলিক প্লেসে কাওকে সিগারেট খাওয়া উচিত না তাহলেই কেবল ঠিক ছিলো। সেহেতু এইটুকু ফ্লপ খেলো।

এখন আসি ২য় পয়েন্টে। ছেলেটা বললো ছেলেটা গায়ের জামা খুলে ঘুরতে পারবে পাবলিক প্লেসে মেয়েটা পারবেনা। এখানে এটা পুরাই অযৌক্তিক কথা। কারণ দৃষ্টিভঙ্গি বদলান,তারপরেই পারবে। কি অবাক হলেন, ফ্যামিনিজম নিয়ে সামান্য ধারণাটা নাই যেহেতু তাই এমন মনে হতে পারেই। যাই হোক,নারীবাদ নিয়ে না সাধারণ যুক্তিতেই আসবো সহজভাবেই। পারলে প্রশ্ন করবেন,তারপর কেও ত্যানা পেচাবেন আমার সাথে। যাই হোক, ছেলেটা যা বলছে এবং মেয়ে যেটা বলছে দুইটাই ঠিক আছে। কিন্তু আধুনিকতা কি আর সভ্যতা এবং মানবিকতা কিংবা বিবেক কি সেটাই আমরা জানিনা।কারণ ছেলেটা যদি বলতো আমি প্যান্ট খুলে এখানে পাবলিক প্লেসে হাটতে পারবো আপনি পারবেন কিনা তাহলে কিছুটা যৌক্তিক হতো। তাছাড়া ভুল কনসেপ্ট আমার কাছে মনে হবে। কারণ এভাবে কেও প্যান্ট এবং পায়জামা খুললে মানুষ তাদের পাগল বলবে আমাদের দেশ এবং কালচার হিসাবে। অন্যদিকে, এখন চলে যাবো উন্নত কান্ট্রির দিকে এই ব্যাপারে অল্প কথায় বুঝানোর জন্য।আমরা বিভিন্ন সিনেমা কিংবা খবর কিংবা বিদেশী পর্যটন কিংবা সমুদ্র সৈকতে মেয়েরা ব্রা-প্যান্টি পরে হাটছে,বসে আছে দেখে থাকি পর্দায়। কিন্তু কোন ছেলে ফিরেও তাকায় না। কারণ আপনার আমার মতো তাদের পচনধরা মস্তিষ্ক না। এখন বলবেন তাদের ফ্রি সেক্স দেশ,যখন তখন সেক্স করে। তার আগে বলবেন ফ্রি সেক্স সম্পর্কে কোন আইডিয়া আছে? আপনি নিজের দৃষ্টিভঙ্গি যদি ঠিক করতে পারেন তাহলেই উত্তরটা আশা করি পেয়ে যাবেন। আমাদের দেশে ব্রা পেন্টি না, যেখানে মেয়েদের ছালোয়ার কামিজের উপর দিয়েই পাছা থেকে শুরু করে বুক মাপা হয় সেখানে দোষটা আপনার না মেয়েদের?আশা করি যারা ত্যানা পেঁচাবেন তারা আগে এই উত্তর দিবেন। আর যদি দিতে না পারেন তাহলে একটা মেয়েও জামা খুলে হাটতে পারেনা আপনার মত ধর্ষকের জন্যই। উন্নত রাষ্ট্রে ফ্রি নিপল ডে পালন করে। সেই দিন ব্রা পরে না,পার্ক রাস্তা কিংবা পাবলিক প্লেসেও জামা খুলে হাটা চলা আড্ডাবাজি করে। তাহলে দোষটা কাদের বুঝতে পারছেন আশা করি। এভাবেই অযৌক্তিক কারণ দেখিয়ে মেয়েদের দাবিয়ে রাখার অবৈধ চেষ্টা করা হয় শুধু পুরুষতান্ত্রিক সমাজে।

এখন আসি ৩য় পয়েন্টে। বাসে মেয়েদের জন্য সিট বরাদ্দ রাখা হয় কেন সেটার প্রশ্ন নিজেকে করেন পেয়ে যাবেন। আচ্ছা আমি বলি, একটা মেয়ে যেখানে রাস্তায় হেটে গেলে ইভটিজিং করা হয় সেখানে আমাদের দেশে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে যাবে ছেলেদের সাথে সেখানে কি হতে পারে নিজেই বলুন না হয় প্রশ্ন করুন নিজেকে। আচ্ছা, কখনো ছেলে মেয়ে একসাথে দাঁড়িয়ে কোন অনুষ্ঠান দেখেছেন স্কুল ,কলেজের কিংবা যেকোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মাঠে দাঁড়িয়ে? যদি দেখে থাকেন তাহলে সেখানে মেয়েদের সাথে কি হয় জানেন অবশ্যই? আর বাসে মেয়েদের সিটে মেয়েরা বসার পরেও পিছন থেকে আপনার আমার মতোই এবং এই ভিডিওর নায়কের মত ছেলেরা সুযোগ পেলেই মেয়েদের শরীরে পা দিয়ে কিংবা হাত দিয়ে স্পর্শ করে থাকে। এইতো কিছুদিন আগেও মেয়েদের জামা পায়জামা কেটে দিলো বাসে যেটা নিয়ে অনেক হৈ চৈ হলো। এখন আপনি বলুন কেন তাদের জন্য সিট বরাদ্ধ করা হয়েছে?আপনার আমার মত পুরুষদের জন্যই। অন্যদিকে উন্নত রাষ্ট্রে দেখুন মেয়েদের জন্য কোন সিট বরাদ্দ নাই। কারণটা কেন এবং হিসাবটা এবার নিজেই মিলান।

এখন আসি মেয়েদের স্কলারশিপ নিয়ে কথায়। আচ্ছা মিনা কার্টুনতো সবাই দেখছেন আশা করি। সেটা দেখলেই এই উত্তরটা পেয়ে যাবার কথা।যাই হোক তারপরেও বলি,একটা মেয়ে এবং একটা ছেলেকে বাবা-মা কেমন দৃষ্টিতে দেখে? একটা ছেলেকে পড়াশুনা করার জন্য নিজের ভিটামাটি সব বিক্রি করে দিতে পারে কিন্তু মেয়ের পিছনে খরচ করতেই যতো অসুবিধা। মেয়েরা পড়াশুনা করে কি করবে,বিয়ের পর তাদের স্বামীর সংসার করতে হবে। এই হলো আমাদের চিন্তাধারা। মেয়ে পয়দা হবার সাথে সাথেই চিন্তা তাকে কবে বিয়ে দেওয়া হবে, আর চেহারা ভালো না হলে যৌতুকের জন্য আলাদা চিন্তা নিয়েই বাবা মা ভোগে। কিন্তু ছেলেটার ক্ষেত্রে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করে মূর্খ বাবা মা পর্যন্ত। তাকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য। আর মেয়েদের বলে এতো পড়াশুনা করে কি হবে , শিক্ষিত পরিবারেও এমন কালচার দেখা যায়। তার থেকে সংসারী কাম কাজ করাই অনেক ভালো। যেন পরের বাড়ি গিয়ে কোন ঝামেলা পোহাতে না হয় সংসার সামলানোর জন্য।অর্থাৎ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ সবসময় নারীদের দাসী বানিয়ে রাখতে চায়। বিশ্বাস হলো না,আপনার মার প্রতি আপনার বাবার ব্যবহার কথার ধরণ দেখুন উত্তর পেয়ে যাবেন। মেয়েরা যখন এভাবেই পিছিয়ে পড়তে শুরু করলো এবং যুগের পর যুগ পিছিয়ে আছে তখন কিন্তু সরকার তাদের স্কলারশিপের ব্যবস্থা করলো। বাবা মারা তখন সেই স্কলারশিপের টাকার লোভে এবং নিজেদের খরচের টাকা বেচে যাওয়ায় এরকম সুযোগ হাত ছাড়া করলো না এবং মেয়েদের স্কুলে যেতে দিলো এবং মেয়েরা কিছুটা হলেও এগিয়ে যেতে লাগলো। তারপ্রমান এখনকার নারীদের প্রায় সর্বক্ষেত্রে বিচরণ। আবার দেখুন, আর একটা উদাহরণ দেই ছেলেরাও এই সুযোগ নিচ্ছে গ্রামের গরীব ঘরের সন্তানেরা। এখন বলবেন কিভাবে? সরকারী প্রাইমারী স্কুলে ছেলে মেয়ে সকলের জন্য স্কলারশিপ আছে। কারণ গ্রামের মানুষ ছেলেদের ৫ম শ্রেনী পাস না করার আগেই বিভিন্ন কাজে ঢুকিয়ে দিতো কিংবা ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানোর থেকে বাবার সাথে কাজ করতে নিয়ে যায় মাঠে। কিন্তু যখন ফ্রি বই এবং স্কলারশিপ পাওয়া শুরু করলো তখন অনেক ছেলেমেয়ে স্কুলমুখী হলো। এই গেলো প্রাইমারী লেভেল।

এখন আসি হাই স্কুল, কয়েক বছর আগেও হাই স্কুলে উঠার পর বই কিনে পড়তে হতো।অনেক বাবা-মা ছেলে-মেয়েদের বই কিনে দিতে চাইতো না টাকার অভাব কিংবা এতো পড়াশুনা করার থেকে কাজ করলেই টাকা ইনকাম করে সংসারে হেল্প করতে পারবে। এই কারণে আবার অনেকের সাধ আছে কিন্তু সামর্থ্য নাই। তাই অনেকের লেখাপড়াই শেষ হয়ে যেতো সেখানেই। মানে ছেলে মেয়ে সবাই পিছিয়ে থাকলো। আর এই অবস্থায় মেয়ে হলেতো পড়াশুনার কথা চিন্তাই বাদ। সরকার বিনামূল্যে যখন বই দেওয়া শুরু করলো এসব চিন্তা করেই,তখন আর বই কিনার চিন্তা নাই অনেকের। অনেক গরীব ছেলে মেয়েই এবং সবাই এখন বইয়ের চিন্তামুক্ত। গরীব ছেলে মেয়েরা প্রাইভেট না পড়ে নিজ চেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া দেখুন ছোট বাচ্চাদের আগে ফ্রি দুধ বিস্কুট দিয়েও গ্রামের স্কুল গুলাতে স্কুলমুখী করা হয়েছে। বাবা-মা মানা করেও মানাতে পারে নাই স্কুলে যাওয়ায়। যারা গ্রামের তারা এসব ভালো বলতে পারবে। আর স্কলারশিপ শুধু মেয়েরা না ছেলেরাও পায় হাই স্কুল কলেজে এবং ভার্সিটিতেও। যাদের আর্থিক অবস্থা দূর্বল এবং মেধাবী।সেহেতু এই বালখিল্য যুক্তি কোথায় পেলো সে নিজেই জানে। তাকে রাম ভোদাই ছাগু ছাড়া আর কিছু বলবো না আমি।

লাস্ট পয়েন্টে আসি,সে চুরী করে মেয়েটার সিগারেট খাওয়া ভিডিও করে যেটা ফেসবুক লাইভে এসে ভাইরাল করলো সেটা মূলত একটা অন্যায়।কারণ অন্যের প্রাইভেসী অনুমিত ব্যতীত কিছু করা এটা গুরুতর অপরাধ। সে নিজে এই অন্যায়টা করলো এবং অন্যদের উৎসাহ প্রদান করলো। শুরু থেকে প্রতিটা পয়েন্ট ধরেই বর্ননা করছি আমি, এরপর যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে বলবেন। আর এই ছেলেটাকে আমার উত্তর গুলা এবং আমার যুক্তি খণ্ডাতে বলেন। যেটা আমার চ্যালঞ্জ রইলো তার প্রতি। বিশদ আলোচনা করবো এব্যাপারে। ছাগলামীর সীমা আছে,এর বেশী করলে তাকে থাপরানো উচিত জনসন্মূখে।নিজে অপরাধ করলো এবং অন্যকে উৎসাহ প্রদান করলো।আধুনিকতা কি সেটাই জানেনা,আবার আসছে ভিডিও বানিয়ে জ্ঞান দিতে।

আগে নিজে বদলান,রাষ্ট্র সমাজ দুইটাই বদলাবে।

বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭

ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়া কেন কুফরী এবং হারাম !?!


বাংলাদেশে কোন শিশুকে অ্যাডপ্শন বা দত্তক নেওয়ার বিষয়ে কোন আইন না থাকলেও দত্তক বা সন্তান পালক নেওয়ার বিষয়টি থেমে নেই এবং দীর্ঘকাল ধরেই নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে কম-বেশী শিশু সন্তান দত্তক নেওয়া হয়ে থাকে।তবে বাংলাদেশে দত্তক নেয়া ব্যাপারটা খুব একটা প্রচলিত নয়। সামাজিক, ধর্মীয় কিংবা স্রেফ পারিবারিক কারণে অনেকেই দত্তক নেয়ার কথা ভাবেন না।তারমধ্যে বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ হবার কারণে ধর্মীয় জটিলতাও রয়েছে।কারণ ইসলামে সন্তান দত্তক নিতে পারলেও দত্তককারী ব্যক্তি তাকে পিতৃ/মাতৃ পরিচয় দিতে পারবেনা এবং কি দত্তক সন্তান কোন ধরনের উত্তরাধিকারীও হতে পারবেনা ইসলাম ধর্মের রিতী অনুযায়ী।

তবে,ইসলামে অন্য কারো সন্তান লালন-পালন ও তার অভিভাবকত্ব নিতে পারবে।যেমনটা জায়েদকে নবী মুহাম্মদের পালক পুত্র বলা হয়।কিন্তু দত্তক কখনোই উত্তরাধিকারী হয় না। ইসলামে দত্তক নেওয়া হারাম, দত্তক নেওয়া জায়েজ নেই অর্থাৎ কেউ কোনো শিশুকে দত্তক নিলে ইসলাম তাকে তার সন্তান হিসেবে গণ্য করে না। বরং সন্তান সবসময় তার আসল পিতার দিকেই সম্পৃক্ত হবে। এ সম্পর্কে কোরানে বলা আছে,

আল্লাহ কোন মানুষের মধ্যে দুটি হৃদয় স্থাপন করেননি। তোমাদের স্ত্রীগণ যাদের সাথে তোমরা যিহার কর, তাদেরকে তোমাদের জননী করেননি এবং তোমাদের পোষ্যপুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ ন্যায় কথা বলেন এবং পথ প্রদর্শন করেন। সুরা আহযাব: ৪

কিন্তু নবী মুহাম্মদ নিজেইতো জায়েদ নামে এক সাহাবিকে দত্তক নিয়েছিলেন। তাঁর পিতার নাম ছিল হারেসা। তাঁকে সবাই জায়েদ ইবনে মোহাম্মাদ—অর্থাত্ মোহাম্মাদের পুত্র বলে ডাকা হতো।

এ প্রসঙ্গে কয়েকজন সাহাবি বর্ণনা করেন, ‘মহানবী (সা.)-এর নবুওয়েতের পূর্বে কৃতদাস শিশু যায়েদ ইবনে হারেছাকে মুক্ত করে দত্তক পুত্র করে রেখেছিলেন। সে রাসূল (সা.)-এর ঘরে, তারই পিতৃস্নেহে লালিত-পালিত হয়ে বড় হয়। আমরা তাকে যায়েদ ইবনে মুহাম্মাদ (মুহাম্মদের পুত্র যায়েদ) বলেই সম্বোধন করতাম। যখন আহজাবের ৫ নম্বর আয়াত অবতীর্ণ করে আল্লাহ নির্দেশ দিলেন, ‘তাদের (পালক সন্তানদের) পিতৃ-পরিচয়ে তোমরা তাদের ডাকবে’- তখন আমরা আমাদের পূর্বের ডাক পরিবর্তন করি।‘ (সহিহ মুসলিম:৬৪১৫)

তাহলে এবার দেখে নেওয়া যাক সূরা আহজাবের ৫ নম্বর আয়াত থেকেই,

তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাক। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সঙ্গত। যদি তোমরা তাদের পিতৃ-পরিচয় না জান, তবে তারা তোমাদের ধর্মীয় ভাই ও বন্ধুরূপে গণ্য হবে। এ ব্যাপারে তোমাদের কোন বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, তবে ইচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। সুরা আহযাব: ৫

এ-ব্যাপারে হাদিস চষে দেখা যাক তাহলে, এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জানা সত্ত্বেও অন্য কাউকে পিতা বলে ডাকবে সে কুফরি করবে। যে ব্যক্তি অন্য বংশের পরিচয় দিবে সে জাহন্নামকে তার ঠিকানা বানাবে।’ (সহিহ বোখারি: ৩৫০৮)

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি জেনেশুনে নিজের পিতাকে ছাড়া অন্য কাউকে পিতা বলে দাবি করে, তার জন্য জান্নাত হারাম। ’ (সহিহ বোখারি: ৪৩২৬)

এ জন্যই যুগশ্রেষ্ঠ ফকিহ মুফতি শফি (রহ.) বলেন, ‘লালন-পালনকারীকে সম্মান ও কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মা-বাবা ডাকা বৈধ হলেও অনুত্তম ও অনুচিত। কেননা এতে জাহেলিয়াতের কুসংস্কারের সঙ্গে সাদৃশ্য হয়ে যায়। ইসলাম এ ধরনের সাদৃশ্য পছন্দ করে না। ’ (আহকামুল কোরআন : ৩/২৯২)

পালক সন্তান উত্তরাধিকার সম্পত্তির অধিকারী হবে না, লালন-পালনকারীর মৃত্যুর পর ওই সন্তান উত্তরাধিকার হিসেবে তার সম্পত্তি থেকে কোনো অংশ পাবে না। লালন-পালনকারীরাও ওই সন্তানের ওয়ারিশ হবে না। হ্যাঁ, লালনকারী জীবদ্দশায়ই পালক সন্তানকে সম্পত্তি থেকে দান করতে পারবেন বা মৃত্যুর পর তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ দেওয়ার অসিয়ত করে যেতে পারবেন। শরিয়তের বিধান অনুযায়ী এই অসিয়ত কেবল এক-তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকেই কার্যকর হবে। অনুরূপ সন্তানের আসল মা-বাবা ও আত্মীয়স্বজন থেকে অবশ্যই সে উত্তরাধিকার সম্পত্তির অধিকারী হবে। তাকে পালক দেওয়ায় তার উত্তরাধিকার সম্পত্তির অধিকার খর্ব হয়নি। (তাকমিলাতু ফাতহিল কাদির : ১০/১২২) সূত্র

এ সুরা এবং হাদিসগুলার মাধ্যমে পালক পুত্ররা যে রক্ত সম্পর্কিত পুত্রের মর্যাদা পাবেন না সেটা ও প্রমানিত হয়।

কোরআনে বিষয়টি নিষেধ করে দেওয়ার পরে সবাই তাঁকে জায়েদ ইবনে হারেসা বলেই ডাকা আরম্ভ করে।কিন্তু কেন হঠাত করে সন্তান দত্তক নেওয়ার ব্যাপারে নিষেধ কিংবা নিরুতসাহিত করা হলো কোরআনে !?!

মদীনায় মহানবীর মধ্যস্থতায় জায়েদ ও জয়নবের বিবাহ হয়। জয়নব ছিলো আবার নবী মুহাম্মদের ফুফাতো বোন। জায়েদ ও জয়নবের বিবাহ সম্পন্ন হবার পর স্বামী-স্ত্রী মদীনায় তাদের নিজ বাসগৃহে বাস করতেন। জায়েদের সাতে জায়নাবের বিবাহ খুব সুখের ছিলনা এবং এ বিবাহ ভেঙে যায়। কথিত আছে যে, রাসুল জায়নাবের প্রতি প্রেম অনুভব করেন এবং জায়েদ তা জানতে পেরে জায়নাব কে তালাক দেন।তালাকে পর নবী মুহাম্মদ জয়নবের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাইলে অনেকের মাঝেই বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় জয়নব পালক পুত্রের প্রাক্তন স্ত্রী হওয়ায় এবং নবী মুহাম্মদও প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

সমস্যা সমাধানের জন্য নবী যেমন বারবার আল্লাহ্‌কে ব্যবহার করতেন, এ ক্ষেত্রেও ঠিক তাই করলেন। এ প্রসঙ্গে নবী আল্লাহর মুখ দিয়ে নিম্নোক্ত আয়াত নাজিল করালেন,

আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেছেন; আপনিও যাকে অনুগ্রহ করেছেন; তাকে যখন আপনি বলেছিলেন, তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর। আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ পাক প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করেছিলেন অথচ আল্লাহকেই অধিক ভয় করা উচিত। অতঃপর যায়েদ যখন যয়নবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেসব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিণত হয়েই থাকে। সুরা আহযাব: ৩৭

এ থেকে এটাই প্রমানিত হয় যে,নবী মুহাম্মদ জয়নবের প্রেমে মগ্ন ছিলেন এবং নিজের স্বার্থ  মনোবাসনা পোষন করার জন্যই  দত্তক নেওয়ার মতো মহৎ কর্মকে চুপীসারী বৈধতা দিলেও দত্তককারী ব্যক্তি তাকে পিতৃ/মাতৃ পরিচয় দিতে পারবেনা এবং কি দত্তক সন্তান কোন ধরনের উত্তরাধিকারীও হতে পারবেনা ইসলাম ধর্মের রিতী অনুযায়ী।

বুধবার, ২ আগস্ট, ২০১৭

মুসলিম নারীদের বস্তাবন্দী করার ধান্ধা কাঠ মোল্লাদের

হঠাৎ করেই বাল্যকালের এক মেয়ে বান্ধবীকে খোঁজে পাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।যদিও তার সাথে বাল্যকালে খুব একটা বেশী পরিচিতি বা খেলার সাথী ছিলো তাও না।যখন কিন্ডার গার্ডেনে পড়া হয় তখন শুধু এক সাথে স্কুলের গাড়িতে করে যাওয়া আসা আর ঠুকড়া-ঠুকড়ি পর্যন্তই সম্পর্ক ছিলো।এই ঠুকড়া-ঠুকড়ি থেকে এক পর্যায়ে তাকে একদিন গালে চপেটাঘাতও করেছিলাম।আর সেদিন অপ্রাসঙ্গিকভাবে কান্না করে একটা কথা বলেছিলো যা,আজও স্পষ্ট কানে বেজে উঠে এবং সেই সময়ের দৃশ্যটাও চোখে ভেসে উঠে।

যাইহোক,পরবর্তীতে তার প্রতি আমার একটা ভালো লাগাও কাজ করে।কিন্তু সেটা কখনো বলা হয়নি।আর বলবোই বা কি করে!তখনও অনেক ছোট বাচ্চা দুজনেই।যার কারণে, ভালো লাগাটা মনের মাঝে পোষে রাখা হয়ে গেছিলো ততোদিনে।পরবর্তী কিছুদিন পরেই তার সাথে আমার দেখা সাক্ষাৎ সব শেষ হয়ে যায় স্কুল বদলানোর কারণে।তারপরে তাকে কয়েকবার আমি দেখলেও সে আমাকে দেখেনি আর দেখলেও তার মনে নাই অথবা স্বীকার করে নিচ্ছে না।কিন্তু আমাকে খুব ভালো করেই চিনে এবং জানে।তবে আমার সাথে তার কেমন সম্পর্ক ছিলো এমন কোন কিছু মনে নাই বলে দাবি অথবা মনে থাকলেও সে স্বীকার করতে চাচ্ছে না এমনও হতে পারে।অন্যদিকে তার প্রতিটা আচরন থেকে শুরু করে তার কথা বলা,তার পোশাকসহ সব কিছুই স্পষ্ট মনে আছে।হয়তো,তার প্রতি আমার যে, ভালো লাগা ছিলো সেটাই মূখ্য কারণ তার এসব আমার মনে গেঁথে যাওয়ার জন্য।

যাইহোক,এরজন্য ফেসবুক আমার কাছে ধন্যবাদ অবশ্যই পায় কারণ এক যুগেরও বেশী সময় পরে তার সাথে আমার কথা হচ্ছে।এরমধ্যে দুইজনেরই অনেক কিছু শেয়ার করাও হয়েছে।আমার মাঝেও যেমন অনেক পরিবর্তন হয়েছে এতোদিনে ঠিক তেমনি তার মাঝেও।আমি হয়েছে মডারেট ধার্মিক থেকে অবিশ্বাসী আর সে হয়েছে মডারেট ধার্মিক থেকে বুরখাধারী হিজাবী পাক্কা ধার্মিক।

বলাবাহুল্য যে,তার বিশ্বাস অবিশ্বাস নিয়ে আমার কোন হিংসা-বিদ্বেষ কোন কিছু নাই।কারণ যতক্ষন পর্যন্ত না সে সমাজ কিংবা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর না হয়ে উঠছে।কিন্তু তার সাথে কথা বলার প্রসঙ্গে আমি তার হিজাব নিয়ে কথা বলি।সেও উত্তর দেয় খুব ভালো ভাবেই এবং কোন কিছু মনে না করেই।

যাইহোক তাকে যখন বলি,তুমি এই গরমে এরকম হিজাবী হয়ে থাকতে বিরক্ত লাগে না?সে আমাকে প্রত্যুতরে বলে ধর্মে নাকি আরও বেশী কঠিন করে হিজাব করার পরিধান আছে।আমার কাছে বিষয়টা খটকা লাগে।তাকে আমিও বলি,আচ্ছা তুমি এই কথা কোথায় পাইছো?সে বলে কেন,ধর্মগুরুরা এবং অনেক ওয়াজ আছে শুনে দেখতে পারো।আমি তাকে বললাম কোরানের বাংলা অনুবাদ পড়েছ?সে বলে কোরান পড়তে জানি কিন্তু বাংলা অনুবাদ পড়া হয়নি।আমিও তাই ভাবছিলাম এই কথাটা তাকে বলার পর সে আমাকে বলে,কেন আমি পড়েছি কিনা?আমি তাকে বলি এ নিয়ে কাল তোমাকে বিস্তারিত বলবো এবং তুমিও একটু আমার কথাগুলা পরখ করে নিও।সেও রাজী হয়ে যায়,এবং কথা অন্য প্রসঙ্গে চলে যায়।তাই আজকের লিখাটা আমার নারীদের পোশাক সম্পর্কে আলোচনাই করাই মূল উদ্দেশ্য তাকে উৎসর্গ করে।

পোশাক মোটামুটি দু’ ধরনের হয়।ভৌগলিক বা সাংস্কৃতিক আর ধর্মীয়।তবে আমি ছেলেদের না মেয়েদের পোশাক সম্পর্কে হালকা একটু ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো ।বিশেষ করে এবং উল্লেখ্য যোগ্যভাবেই মুসলিম নারীদের পোশাক নিয়ে।বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে নারীদের সবচেয়ে পছন্দের পোশাক শাড়ি, একটু কম বয়েসী তরুণীদের পছন্দ সালওয়ার কামিজ।সালওয়ার কামিজ বা শাড়ি দুটোই আমাদের দেশে শালীন পোশাক বলেই পরিচিত।

এরপরে আসি, ধর্মীয় পোশাক। ধরে নেই, আমাদের দেশের সব মুসলিম নারীদেরই ধর্মী পোশাক বুরখা/হিজাব।কিন্তু এই পোশাকটা মুলত আরাবিয়ান ভৌগলিক পোশাক।কিন্তু এটা মোল্লারা বা বাংলাদেশীসহ অনেক মুসলিম ধার্মিকরাই ধর্মীয় পোশাক বানিয়ে ফেলেছে কালের বিবর্তনে ধর্মের কারসাজী করে।কারণ কোরানের কোন জাগায় আমি পাইনি বোরখার কথা।তবে যে নির্দেশনা পাওয়া যায় সেটা হলো শালীন পোশাক।যা নারীদের লজ্জাস্থান নিবারণ করে রাখবে।



দেখুন এ ব্যাপারে কোরআন কি বলা আছে, ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।(সূরা আন-নূর:৩১)

সবচাইতে আসল কথাটি হল, শালীনতাকে স্টান্ডারডাইজড করা যায়না, কারো কাছে শাড়ি অশালীন, কারো কাছে বুরখা ব্যতিত এমনকি হিজাবও অশালীন। কারো কাছে আবার আপনার হাটা-চলা,খাওয়া-দাওয়া অথবা কথা বলার স্টাইলও অশালীন হতে পারে।

বিশ্বাস না হলে এবারও কোরআন থেকেই দেখে নিন, হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।(সূরা আল আহযাব:৫৯)

কিন্তু গোড়াপন্থি মুসলিম মোল্লারা নারীদের যে পর্দা করার কথা বলেন তার সঙ্গে ইসলামের মৌলিক বিধানের কোনো মিল নেই। বরং ইসলামের মৌলিক বিধানে পর্দার যে কথা বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রায় শতভাগ নারীই সেই বিধান মেনে চলেন। তারা সবাই শালীন পোশাক পরেন। তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে, কোরআন মেয়েদের এসব বলার আগে ছেলেদেরকে দৃষ্টি সংযত রাখতে এবং যৌনতার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছেন।

দেখা যাক তাহলে কোরআন এব্যাপারে কি বলে, মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।(সূরা আন-নূর:৩০)

অর্থাৎ পুরুষরা যদি তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে, কে কোন ধরনের পোশাক পরল, কার শরীর কতটুকু দেখা যায়, তা তো বোঝার কথা না। আসল পর্দা হচ্ছে নফসের পর্দা। ওইটা নারী পুরুষ সবার থাকা উচিত।নারীর পাশাপাশি ইসলাম ধর্মে পুরুষের জন্যও পর্দা ফরজ করা হয়েছে এবং দৃষ্টি অবনত করতে বলা হয়েছে।

দেখুন এব্যাপারে কোরআনেও স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া আছে, হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর ওফাতের পর তাঁর পত্নীগণকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ।(সূরা আল আহযাব:৫৩)

অর্থাৎ নিজেদেরই মানে পুরুষদেরই সংযত রাখতে হবে।কিন্তু মোল্লারা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য উপরের সূরাগুলো পরোক্ষভাবে এড়িয়ে গিয়ে বেশ কিছুই সূরা টেনে আনে নারীদের বন্দী করে রাখার জন্য।কিন্তু সেই সময় আর এখনকার সময় পাল্টাছে।কারণ তখন ছিলো জাহেলী যোগ আর এখন একবিংশ শতাব্দী।মানুষ এখন অনেক এগিয়ে গেছে,নারী পুরুষ একসাথে কাজ করে সভ্য থেকে সভ্যতার দিকে যাচ্ছে।কিন্তু তারপরেও মোল্লারা যে কথা বলে নারীদের বন্দী করতে চায় সেগুলাই দেখুন কিভাবে এড়িয়ে গিয়ে করে।তারা প্রথমেই যে রেফারেন্সটা টেনে আনে এবং বয়ান দেয় সে সম্পর্কেই একটু যেনে নেয়া যাক তাহলে, তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।(সূরা আল আহযাব:৩৩)

এখানে বলে রাখা ভালো যে,আয়াত দেখেই মনে হতে পারে নারীদের ঘরে চার দেয়ালের মাঝে বন্দী থাকতে বলা হয়েছে,এবং কাঠ মোল্লারা তাই বলে প্রচার করে থাকে।এবং তারা আজ অনেকটাই সফলও।তার কারণ আমরা নিজেরা না যতোটা জানার চেষ্টা করি তার থেকে বেশী বিশ্বাস করি কাঠমোল্লাদের।আর এই সুযোগটাই তারা হাতিয়ে নেয়।কিন্তু আপনি যদি ভালোভাবে খেয়াল করেন ,তাহলে এর উত্তর সহজেই খুজে পাবেন।‘তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না।‘ যদি আমি শুধু এই লাইনটুকু ধরেই ব্যাখ্যা করি তাহলে সহজেই উত্তর খুজে পাওয়া যাবে।কারণ এখানে স্পষ্ট করেই বলা আছে, মূর্খতা যুগ’র কথা।আর এই যুগটা হলো,জাহেলী যুগ।ইসলামের অনেক পূর্বের যুগের নাম হলো জাহেলী যুগ।এই যুগ যে অনেক বর্বর ছিলো তা অনেকেই জানি।আর কোরআনেও সে কথাই উল্লেখ করেছে।কারণ কোথায় ৫০০০ বছর পূর্বে আর কোথায় ১৪৫০ বছর পূর্বের যুগ আর বর্তমান যুগ।বাদ দিলাম এসব যুগ ফুগের কথা কিন্তু কোরানতো আর অস্বীকার করতে পারেন না।কারণ বিশ্বাসীদের আল্লাহই কোরানে বলেছেন, আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?( সূরা আল ক্বামার:১৭)

তারপরেও কি বলবেন কোরআন বুঝা এতো সহজ না?কোরান বুঝতে হলে হাদিস পড়তে হবে,ইসলামী পণ্ডিতদের তাফসীর পড়তে হবে?তাহলে আপনি অবশ্যই বোকার রাজ্যে আছেন।এতো ভয় কিসের !নিজের চোখ খুলে দেখুন কোরআনে কি বলা আছে, সেদিন প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে আমি একজন বর্ণনাকারী দাঁড় করাব তাদের বিপক্ষে তাদের মধ্য থেকেই এবং তাদের বিষয়ে আপনাকে সাক্ষী স্বরূপ উপস্থাপন করব। আমি আপনার প্রতি গ্রন্থ নাযিল করেছি যেটি এমন যে তা প্রত্যেক বস্তুর সুস্পষ্ট বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলমানদের জন্যে সুসংবাদ।(সূরা নাহল:৮৯)

কি হলো তারপরেও বুঝতাছেন না,এসব বানানো কথা আমার!তাহলে এবার আরও একটু ভালোভাবে পরখ করে নেন, আর যত প্রকার প্রাণী পৃথিবীতে বিচরণশীল রয়েছে এবং যত প্রকার পাখী দু’ ডানাযোগে উড়ে বেড়ায় তারা সবাই তোমাদের মতই একেকটি শ্রেণী। আমি কোন কিছু লিখতে ছাড়িনি। অতঃপর সবাই স্বীয় প্রতিপালকের কাছে সমবেত হবে।(সূরা আল আন-আম:৩৮)

এবারও যদি না বুঝেন তাহলে,হাতে পপ কর্ণ নিয়ে কাঠমোল্লাদের ওয়াজ শুনতে বসে যান।তারপর নিজেকে ধার্মিক বলে দাবি করে ফাল দিয়ে উঠুন।এতে সমাজের জন্য আপনি ক্ষতিকারক ছাড়া আর কোন কিছুই হতে পারবেন না।কিন্তু তারপরেও আপনাকে আরও বুঝার বৃথা চেষ্টা করে দেখি কিছু বুঝেন কিনা কোরআন থেকে, হে বনী-আদম আমি তোমাদের জন্যে পোশাক অবর্তীণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবর্তীণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেযগারীর পোশাক, এটি সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর কুদরতেরঅন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।(সূরা আল আরাফ:২৬)

কি মনে হচ্ছে এই আয়াত পড়ে?এইটাইতো সেই বয়ান যেটা কাঠমোল্লা হুজুরেরা দেয়?তাহলে আরও একবার বলবো আমাকে বিশ্বাস করার দরকার নাই।তবেই নিজেই নিজ ভাষায় একবার কোরআন পড়ে দেখুন।নিজেই প্রশ্নের উত্তর খুজে পাবেন এবং সিদ্ধান্তও নিতে পারবেন ধর্ম বিষয়ে।বিশ্বাস না হলে কোরআন বের করে দেখুন, “হে বনী আদম, আমি তো তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জা-স্থান ঢাকবে এবং যা সৌন্দর্যস্বরূপ। আর তাকওয়ার পোশাক, তা উত্তম”।(সুরা আরাফ : ২৬)

এখন আপনার কাছে মনে হতে পারে তাকওয়ার পোশাক কি আবার?তাকওয়ার পোশাক বলতে যা বুঝায়,যে কাপড় পরিধান করলে অপচয় ও অহংকার করা না হয়।কি হলো বিশ্বাস হচ্ছে না আমার কথা?তাহলে এবার হাদীস শরীফ থেকেই দেখে নেয়া যাক, হযরত আমর ইবনে শুআইব তার পিতা থেকে, তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা খাও, পান কর, অন্যদের দান কর এবং কাপড় পরিধান কর যে পর্যন্ত অপচয় ও অহংকার করা না হয়।-সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ২৫৫৯; ইবনে মাজাহ,হাদীস : ৩১০৫

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, যা মনে চায় খাও, যা মনে চায় পরিধান কর যে পর্যন্ত দুটি বিষয় না থাকে : অপচয় ও অহংকার।-সহীহ বুখারী ১০/১৫২

এরপরেও যদি আপনার মনে হয় এসব আমার বানানো এবং কোরআন বিকৃতি করে উপস্থাপন করে ইহুদীদের পেইড এজেন্ট আমি তাহলে আপনার জন্য এই আয়াত, কোরআনের আল্লাহর বানী অস্বীকার করবে যে সে মুনাফিক।আর মুনাফিকের পরকাল জাহান্নামের আগুন।এ সম্পর্কে কোরআনে আল্লাহ বলেছে,-আল্লাহ মুনাফেক নর-নারী ও অবিশ্বাসীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জাহান্নামের আগুনের যেখানে ওরা থাকবে চিরকাল, এই ওদের জন্য হিসেব। ওদের ওপর রয়েছে আল্লাহর অভিশাপ, ওদের জন্য রয়েছে স্থায়ী শাস্তি।(সূরা আত তাওবাহ:৬৮)

সেহেতু বিশ্বাস অবিশ্বাস আপনার,এতে আমার কিচ্ছুই যায় আসে না।

রবিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৭

ফ্যাসিবাদী সরকারের তেব্র নিন্দা জানাই

সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটা ঘটনা জুড়ে অনলাইনে জাগ্রত।এর মধ্য উল্লেখ্য যোগ্য হচ্ছে, www.Sarahah.com সহ রাজনৈতিক অরাজনৈতিক অনেক কিছুই।
গতকাল বামদলীয় ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা বিপুল অস্ত্রের ধরা খাইছে,আবার ৪ জন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা গ্রেফতার হইছে মা ও মেয়েকে মাথা নেড়া করানোর দায়ে!এই নিয়ে অনলাইন জুড়ে সয়লাব আর নিউজ শেয়ার করে ছাত্রইউনিয়নের চণ্ডী চটকানো শুরু করে দিছে ছাত্রলীগের ভাই বেরাদাররা।
অন্যদিকে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর ছাত্রলীগের হামলা এবং শিক্ষকদের আংগুল ভেংগে দেওয়া হলো তখন ডান দলীয় চামারেরা চুপ!কারণ এই ভোদাই মার্কা অবলা শিশুরা নাকী শান্তিপূর্ণভাবে খেলাধূলা করতে ছিলো।অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা লোহার গেট ভেংগে ছাত্রলীগের নেতাদের উপর হামলা চালায়।ছাত্রলীগ এবং ডানদলের উপর শিক্ষকদের এমন হামলার তেব্র নিন্দা জানিয়ে ঈদের পর ফের কোষ্ঠকাঠিন্য আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন সমাজতান্ত্রিক ম্যাডাম খালদা জিয়া উরফে জেন্টস কিলার গোলাপী।
কারণ ডানেরা অতি শিক্ষিত বই পড়ুয়া জ্ঞানের অধিকারী,তারা কোন অনৈতিক কাজ করতেই পারে না বলে দাবি করে বেজীর এমন কর্মসূচী দেওয়াই লক্ষ্য,সেই সাথে ডিজিএফআই এর সহতায় ক্ষমতায় যাওয়া বর্তমান সরকারের পতন ঘটানোও হবে স্বৈরাশাসক এরশাদকে সাথে নিয়েই বলে দাবি করা হয়।
এদিকে পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী পানামা পেপার কেলাংকারী মামলায় ক্ষমতা থেকে ছিটকে পরে যাওয়ায় বিরোধী দলের জামাতী শিক্ষামন্ত্রীর ঘর জামাই দাঁতভাঙ্গা এমরান এইডস সরকার পাকিস্তানের বিচার বিভাগের প্রশংসা করে বাংলাদেশকে পাকিস্তান থেকে শিক্ষা নিতে বললেও,আজ তার নিতী কথার কন্ঠস্বর ফাটা বাশের চিপায় পরেছে এবং তার আল্লাহ জিহ্বা কাটা পরেছে বলে বাশের কেল্লার বিশেষ প্রতিনিধি একাধিক সূত্রে নিশ্চিত করেছে।
কিন্তু ফকেট ডটকমের বিশেষ প্রতিনিধি এতো সহজে হাল ছেড়ে দিতে রাজী না ঘরজামাইয়ের কাছ থেকে নিজে কথা না বের করা পর্যন্ত।কিন্তু তার সাথে যোগাযোগ করার কোন উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত,ব্লগ দিয়ে ইন্টারনেটে ঢুকে এবং দাঁতভাঙ্গা ডাক্তার এইডস সরকার লিখে ফেসবুকে সার্চ করে তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ বের করে এবং ইনবক্স করে তার মতামত জানতে চাওয়া হয়।ওইদিক থেকে ঘরজামাইয়ের উত্তর আসে, তার প্রানের সংগঠন ছাত্রলীগের মত একটা আধা মূর্খ জ্ঞানীরা শিক্ষকদের উপর হামলা এবং আংগুল ভেঙে দিয়েছে এগুলা সবই মিথ্যা বানোয়াট এবং মিডিয়ার সৃষ্টি এবং এর পিছনের মুন্নী সাহার হাত থাকতে পারেও বলে দাবি জানান জামাতী শিক্ষামন্ত্রী টাকলার ঘর জামাই সরকার সাহেব।তিনি আরও জানান,এনিয়ে যদি তিনি শক্ত অবস্থান নিয়ে মাঠে নামতে চান, তাহলে আবার ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা ক্ষেপে গিয়ে পচা ডিম ছুড়ে মারতে পারে বলেও আশংকা করেন জীবনের নিরাপত্তার ভয়ে।
এদিকে ছাত্রলীগের নেত্রী লাকি আক্তারের কাছে একই বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে বলেন,ফ্যাসীবাদী সরকারেরই এসব চক্রান্ত।ছাত্রলীগের উপর শিক্ষকদের লেলিয়ে দেওয়ার পিছনে সরকারেরই হাত রয়েছে বলে দাবি করেন।
এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে না তর্ক-বিতর্ক সহ সমালোচনা।পর্বরতী আপডেট জানতে ঘরাজামাইয়ের পেইজে চোখ রাখুন।তার পেইজে এ নিয়ে আপডেট হলে ফকেট ডটকম আপডেট জানাবে বলে আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞবদ্ধ।

শনিবার, ২২ জুলাই, ২০১৭

৫৭ ধারার শিকার এবার ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মাহমুদ !!!

শিশুর আঁকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দিয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আমন্ত্রণপত্রের কার্ড বানিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতি ও অবমাননার অভিযোগে বরগুনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারেক সালমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রেশ কাটতে না কাটতেই, এবার ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ইমতিয়াজ মাহমুদ নামে সুপ্রীম কোর্টের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি সদর থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা হয়েছে। শুক্রবার বিকালে শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং ১৭, তারিখ-২১-০৭-২০১৭।

মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, সম্প্রতি ইমতিয়াজ মাহমুদ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক পোস্ট করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাসিন্দাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছড়ানোর লক্ষ্যে তিনি এই পোস্টগুলো করেন। এতে বাঙালি জাতিকে হেয় করে ‘সেটলার’ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে। ইমতিয়াজ মাহমুদের ফেসবুক পোস্টগুলো পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর জন্য পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি অটুট রাখতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

ইমতিয়াজ মাহমুদ খারাপ,সাম্প্রদায়িক!কারণ তিনি সংখ্যালঘুদের প্রতিবাদী কন্ঠ।তিনি পাহাড়ী বাংগালীদের সেটালার বলেন,এর জন্য এটা সাম্প্রাদায়িক উস্কানি!কিন্তু আপনারা ভিন্ন ধর্মালম্বীদের মালু, কাফের যখন বলেন তখন সাম্প্রদায়িকতা উস্কানি হয় না!
যখন কাসালং কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক চাকমাদের হত্যা বা হামলা করার ছাত্রলীগের কর্মীদেরকে রামদা নিয়ে আসতে বলে চাকমাদের কাটার জন্য তখন সাম্প্রদায়িক উস্কানি হয় না,কিংবা ৫৭ ধারায় তখন মামলা হয় না!

কারণ, পাহাড়ী উপজাতি আর সেটেলার বাংগালীরা অনেক বছর ধরেই মিলেমিশে আছে!উপজাতিদের উপর কোন হামলা হয় না!ইমতিয়াজ মাহমুদ ভাই,ফেসবুকে মিথ্যা উস্কানি দেয়!যেমন,কিছুদিন আগে রাঙামাটি জেলার লংগদুতে যা ঘটেছে,তা ইজরায়েল থেকে অবৈধভাবে আগত ইহুদীদের তাড়ানোর জন্য প্রায় ২৫০ বাড়িঘর পুড়ানো হয়েছে প্রশাসনের সহায়তায় সেটলারদের নিয়ে!কিন্তু ইমতিয়াজ মাহমুদ সেটাকে পাহাড়ী উপজাতি নির্যাতন বলে প্রতিবাদের নামে উস্কানি দিয়েছে!যা মিথ্যা এবং বানোয়াট,কারণ অনেকদিন ধরেই বাংগালী সেটেলার এবং পাহাড়ী উপজাতিরা পাহাড়ে মিলেমিশে ভাইয়ের মত বসবাস করে আসছে!

তোমরা পিনাকীর সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেখো না!কারণ সে সংখ্যালঘুদের হয়ে কথা বলে না,সে কথা বলে জামাতীদের হয়ে!জামাতীরা যেহেতু মুসলিম সেহেতু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও জাতের ভাই!অন্যদিকে ইমতিয়াজ ভাই, যেহেতু জাতের ভাই হয়েও পাহাড়ী কিংবা ভিন্ন ধর্মালম্বীদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদী কন্ঠ সেহেতু তাকে মুরতাদ বলে ৫৭ ধারায় মামলা দিয়ে কন্ঠরোধ করার বৃথা চেষ্টা করাই যেতে পারে।
যে মানুষটির স্বরে বাংলাদেশের পাহাড়ে সমতলে সকল নির্যাতিত-নিপীড়িত-বঞ্চিত মানুষের স্বর কথা ব'লে ওঠে, সেই মানুষের কণ্ঠরোধের পায়তারা শুরু হয়েছে। সত্যকথন যে শাসকের কানে বিষ ঢালবে সে তো জানাই ছিল। তবু কলম চলবে, প্রতিবাদ চলবে। সাদাকে সাদা সুন্দরকে সুন্দর নষ্টকে নষ্ট বলতে পারা,নিপীড়িত,নির্যাতিত মানুষের পক্ষে কথা বলা, আঙুল দিয়ে ভুল ধরিয়ে দেওয়া মানুষটা সুপ্রিম কোর্ট এর আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করুন।

খুব জানতে ইচ্ছে করছে, ৫৭ ধারায় কি অন্য ধর্মের নামে কটুক্তি কিংবা ওয়াজ মাহফিলের নামে উস্কানিমূলক সাম্প্রদায়িক ঝড় তোলা কথাবার্তা কি আওতাধীন নয়? যদি না হয়, তাহলে, আমাদেরও ৫৭ ধারা দিয়ে মুখ বন্ধ করতে পারবেন না।এক ইমতিয়াজ মাহমুদকে মামলা দিছেন শতশত কলম জেগে উঠেছে অন্যায়ের প্রতিবাদ স্বরুপ।

ক্ষমতা কারও কাছেই চিরদিন থাকে না।সেহেতু বর্তমান সরকারও চিরদিন ক্ষমতায় থাকবে না।হ্যা,আমি একজন আওয়ামী-লীগের সাপোর্টার হয়েই বলছি,কোন সরকারই চিরস্থায়ী না।তবে বর্তমান সরকারের দলীয় লোকেরা ক্ষমতার জোরে যেভাবে ভিন্ন মতালম্বীদের কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে,সেটা ঘুরে তাদের ঘাড়েই পরবে।তখন বুঝবে,কতধানে কত চাল।বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এখন আর বিরোধী কিংবা বামাতী কিংবা লুঙ্গী মজাহারদের দরকার নাই।সরকার দলের চাটুকারিতারাই যথেষ্ট দলের ক্ষতি করার জন্য।

# ৫৭ ধারা বাতিল হোক,কালো আইন থেকে মুক্তি চাই।