বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৭

হেফাজতের সাথে প্রেমের সম্পর্কের দায় কি শুধুই শেখ হাসিনার !!!

এখন প্রায়ই একটা কথা শুনা যায় চায়ের স্টল থেকে শুরু করে হাটে,বিলে,খাটে,ঘাটে,মঞ্চে,লঞ্চে,ট্রেনে,বাসে,নীল সাদার দুনিয়াসহ সব জাগায় যে,নেত্রী (শেখ হাসিন) যা করছে তা ভালোর জন্যই করছে এবং তা সমালোচনার উর্ধ্বে।আর যারা সমালোচনা করবে তাদের উদ্দেশ্যে চাটুকারীরা (নেতা-কর্মী) একধাপ এগিয়ে বলবে,নেত্রীর থেকে বড় দেশপ্রেম আর কারো নাই।সেহেতু সমালোচনা করা যাবে না।আরে ভাই,নেত্রী কি দেশপ্রেমের ইজারা নিছে নাকি!এখানে দেশ প্রেম কম আর বেশী কোথায় থেকে আসে।আর নেত্রী যা করছে তাই যদি ঠিক হয়,তাহলে তাকে এবার সৃষ্টিকর্তাই মেনে ফেলুন না।

কি মনে হচ্ছে,কথাটা একটু বেশী বলে ফেললাম!হুম বেশী বলছি,তা আপনাদের কারণেই।নেত্রী যা করছে তা ভালোর জন্য করছে এটা আমিও বিশ্বাস করি।কিন্তু তার থেকে বড় কথা সমালোচনা করা কোন ভুল না।আর আপনারা যে,অন্ধ সাপোর্ট দিয়ে যান এখানে আমার একটু কথা আছে।আর এই কারণেই নেত্রী কিছু ভুল পথে হাটছে।এর জন্য দায়ভার এবং দোষ আপনাদেরই।কারণ আপনারা এক সমালোচনা করতে দেন না এবং আপনারা নিজেদের উদ্যোগে কোন কাজ করেন না।নেত্রী যখন বলবে তখনই করবেন,তাও আবার তখন গ্রুপিং শুরু করে দেন।

এখন আসি সাম্প্রতিক আলোচনা তেতুল হুজুর মানে শফী হুজুর এবং মৌলবাদীদের সাথে সমঝোতা করে দলের আদর্শভুলে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার কথায়।হুম,শেখ হাসিনার এখন মূল উদ্দেশ্য ক্ষমতায় থাকা এবং তার মিশন কমপ্লিট করা।যদিও এটা আমার ব্যক্তিগত ধারণা।কিন্তু এই মিশন কমপ্লিট করায় একমাত্র বাধা হয়ে দাড়াইছে এই হেফাজত এবং কিছু মৌলবাদী দল যারা হেফাজতের সাথে তাল মিলায়।শেখ হাসিনা এখন আর বিএনপি কিংবা জামাত শিবিরকে না,শেখ হাসিনা ভয় করে হেফাজতকে।কারণ এই হেফাজতই এখন পারে পোগ্রাম,মিছিল,মিটিং করে বিভিন্ন নৈতিক অনৈতিক দাবি করার ধর্মকে ব্যবহার করে।আর এসব দেখেও আপনারা চুপ করে বসে থাকেন।কারণ নেত্রী কখন বলবে আর তখন প্রতিরোধ করবেন।কিন্তু সত্যিটা কি জানেন,কিছু কিছু বিষয় প্রকাশ্যে বলতে হয় না,নিজেদের বুঝে নিতে হয়।কারণ শেখ হাসিনা যখনই জামাত শিবির এবং বিএনপির বিপক্ষে গেছে এবং যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু করেছে তখনই দেশের মানুষকে আওয়ামী নাস্তিক এবং ধর্মবিরোধী দল বলে ট্যাগ দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে আওয়াজ পৌছে দিছে।এবং অনেক সাধারণ মানুষ তা বিশ্বাসও করে।

অন্যদিকে,আপনারা সেসব কথার কোন প্রতিবাদ করে অবস্থান নেন নাই।আপনাদের নিরবতা দেখে শেখ হাসিনা হয়তো নিজেও ভেবেছে,আপনারা ধর্মনিরপেক্ষতা চান না।মুসলিম দেশ হিসাবেই পরিচয় দিতে চান এবং দেন।সত্যি তাই,আপনারা ধর্ম নিরপেক্ষতার থেকে মুসলিমদেশ পরিচয় দিতেই গর্ভবোধ করেন।

তাই নেত্রী বুঝে গেছে,কিভাবে ক্ষমতায় থাকতে হয়।এখন যদি সে একাই জামাত শিবিরদের যেভাবে কোপকাত করেছে ঠিক সেভাবেই যদি হেফাজতকে করতে যায় তাহলে তখন দেশের প্রতিটা মানুষই ধরে নিবে হাসিনা ধর্মবিরোধী এবং নাস্তিক দল।তার ক্ষমতায় দুইদিন থাকাও কষ্ট হয়ে যাবে।কারণ বিপক্ষের দলগুলা সাধারণ মানুষকে সহজেই উস্কিয়ে দিতে পারবে ধর্ম বিরোধী নাস্তিক দল বলে।আর যদি আপনারা নিজ দায়িত্বে এসবের প্রতিবাদ করে যেতেন,নেত্রীর নির্দেশ পাবার অপেক্ষা না করে এবং নিজেদের অবস্থান ক্লিয়ার করতে পারতেন যে আপনারা ধর্মবিরোধী দল না ধর্মনিরপেক্ষ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষেরদল তাহলে আজ হেফাজত আজ সুই থেকে কুঠার হতে পারতো না।এখন বানরকে রায় দিয়ে দিয়ে গাছে তুলেছেন,সেহেতু নেত্রী যখন কোন নামানোর পথ না পাইছে তখনই তাদের সাথে সমঝোতা করে যাচ্ছে একের পর এক।আর আপনারা চুপ করে থাকবেন তারপরেও।বুঝতেছেন না,আপনারাই নেত্রীকে কোণঠাসা এবং দলের আদর্শচুত করার জন্যদায়ী।আর আপনাদের,এই নষ্ট বস্তা পচা কথা শুনলে আমার হাসি পায়,নেত্রী যা করছেন তা দলের ভালোর জন্যই করছেন।যেমনটা ধার্মিকরা বলে আল্লাহ যা করছেন তা ভালোর জন্যই করছেন!আবার বলেন,নেত্রীর থেকে বড় কোন দেশ প্রেমিক নাই।এটা এমন কথা হয়ে গেল না,আপনি আপনার মাকে যতটা ভালো না বাসেন তার থেকে আমি আমার মাকে বেশী ভালোবাসি!এখানে কম আর বেশী পরিমাপ করা যায় না।তবে প্রকাশের ভঙ্গী ভিন্ন হতে পারে।আর যদি নেত্রীর থেকে বড় দেশ প্রেমিক না থাকতো তাহলে, জীবনের বাজী রেখে কেও ভাষার জন্য জীবন কিংবা দেশের জন্য ঝাপিয়ে পরতো না।আর সে সকল বীরদের মাঝে অনেকেই বেচে আছে এখনো।জানি ভালোবাসা কিংবা দেশপ্রেম,অনুভূতি এসব তুলনা করে মাপা যায় না আমার মতে।তবে আপনাদের লুলামীর কারণেই তুলনা করা।আর একটা কথা না বললেই না হয়,আসলে আপনাদের মাঝে কোন দেশপ্রেম নাই,যেটা আছে দলপ্রেম।তাও আবার স্বার্থের জন্য।আজ লীগ ক্ষমতা থেকে চলে যাক,আপনাদের লাইট দিয়েও খুজে পাওয়া যাবে না এবং তরী ফেরাবেন ক্ষমতাসীন দলের দিকেই।আর এজন্যই নিজের দিক বিবেচনা এবং নিজের দূর্বলতা থেকে বলেন,নেত্রী যা করে তাই সঠিক এবং সেই বড় দেশ প্রেমিক।

ওহ হ্যা! আরেকটা কথা,নেত্রী কিন্তু মানুষ,কোন সুপার কম্পিউটার না যে,তার কোন ভুল হবে না সফটওয়্যার থাকার কারণে।তবে হ্যা,যদি আপনারা সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতেন তাহলে ভুল হতো না এবং আজ হেফাজতের সাথে মিশে গিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াই করতে হতো না।তাই এখনো সময় আছে,নেত্রীর পাশে দাঁড়ান এবং দলের হয়ে সাধারণ মানুষের কাছে আপনাদের অবস্থান পরিষ্কার করুন দেশকে ভালোবেসে।
জয় বাংলা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন