শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৫

ব্লগ,ব্লগের ইতিহাস,ব্লগিং এবং ব্লগার



আপনারা সবাই ব্লগের উৎপত্তি,ব্লগ এবং ব্লগার মানে ভালোভাবে জানেন বুঝেন।কিন্তু আসলে আমি আপনাদের ব্লগ কাকে বলে আর ব্লগারই বা কারা এসব বিষয়ে জানানোর জন্য লিখছিনা। তাই কিছু মনে করবেন না। আমি ব্লগিং জগতে আসা আমার মত নবীন এবং যারা ব্লগিং করতে চাইছেন কিন্তু এখনো ব্লগিং করেনি তাদেরকে কিছু বলার উদ্দেশ্যে লিখছি। আরও লিখছি তাদের উদ্দেশ্যে যাদের ব্লগ এবং ব্লগার শব্দ নিয়ে খানিক চুলকানি আছে। নিয়মিত ব্লগ পাঠকরা শুধু পড়ে যান এবং আপনার মতামত জানিয়ে চলে যান। আর নতুনরা দয়া করে পড়ুন, বুঝুন, ধারনা পাল্টান।


ব্লগ: ব্লগ হচ্ছে এমন একটা ওয়েব সাইট যা দৈন্দিন দিন লিপি হিসাবে ডাইরীর মত করেই একজন ব্যক্তি তার মতামত লিখে ব্যবহার করতে পারে শুধু মাত্র নির্দিষ্ট ব্লগ ওয়েব সাইট গুলাতে রেজিষ্ট্রেশন করে বা নিজস্ব ব্লগ ওয়েব সাইট খুলে।ব্লগে সাধারনত ব্যক্তিগত বিষয় অভিজ্ঞতা থেকে যে কোন কিছু লিখে তা অন্যের সাথে শেয়ার করা।এখানে আপনি ফেইসবুকের মত বরং আরো সুন্দর করে পোস্ট দেয়া তো বটেই আরো মিডিয়া ফাইল এখানে আপলোড দিতে পারবেন। এর জন্যে আপনাকে ওয়েব কোডিং যেমন – HTML, CSS, Javascript, Php জানতে হবে না।
অর্থাৎ ব্লগ হচ্ছে এমন এক উন্মুক্ত প্লাটফর্ম যেখানে আপনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা শেয়ার করতে পারবেন এবং সেখানে সকলে মতামতও প্রকাশ করতে পারবে।
এই উন্মুক্ত প্লাটফর্মে কেউ লিখছেন দেশ নিয়ে, কেউবা লিখছেন দেশের বিরুদ্ধে। আর কেউবা লিখছেন ধর্মের পক্ষে-বিপক্ষে। যে যাই লিখেন না কেন, প্রত্যেকের রয়েছে নিজ নিজ অভিমত। যাই লেখেন না কেন, মানসম্মত আর তথ্যবহুল লেখায় খোরাক পাচ্ছেন তাদের বেশুমার ভক্তবৃন্দ।
ব্লগ হচ্ছে শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের মুক্তচিন্তা ও মত প্রকাশের মাধ্যম।যেমন আগে মানুষ বিভিন্ন কিছু লিখে বা নোট করে রাখত ডায়রীতে তেমন সভ্যতার বিকাশের ফলে মানুষ এখন তা লিখে বা নোট করে রাখে ব্লগ নামক উন্মুক্ত প্লাটফর্মে যা অন্যের সাথে শেয়ার করার যোগ্য বলে বিবেচিত।


ইতিহাস : ব্লগ শব্দটি ইংরেজি Blog এর বাংলা প্রতিশব্দ, যা এক ধরণের অনলাইন ব্যক্তিগত দিনলিপি বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক পত্রিকা। ইংরেজি Blog শব্দটি Weblog এরসংক্ষিপ্ত রূপ। ।ওয়েবলগ শব্দটির শব্দটির স্রষ্টা মার্কিন নাগরিক জোম বার্গার যিনি ১৯৯৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন । ব্লগাররা প্রতিনিয়ত তাদের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট যুক্ত করেন আর ব্যবহারকারীরা সেখানে তাদের মন্তব্য করতে পারেন। ১৯৯৯ সালে পিটার মহোলজ নামে এক ব্যাক্তি weblog শব্দটিকে ভেঙ্গে দু’ভাগ করেন- ‘We Blog’।‘We Blog’ শব্দটার ছোট্ট সংস্করণ "ব্লগ" চালু করেন পিটার মেরহোলজ। ১৯৯৯ এর এপ্রিল বা মে মাসের দিকে পিটার মহোলজ তার ব্লগে ‘Weblog’শব্দটিকে ভাগ করে কৌতুক করে ‘BLOG’বলে সম্বোধন করেন।তার ঠিক পরপরই, পাইরা ল্যাবস-এ ইভান উইলিয়ামস "ব্লগ"শব্দটা বিশেষ্য এবং ক্রিয়া দুটো হিসেবেই ব্যবহার করা শুরু করেন এবং পাইরা ল্যাবের ব্লগার পণ্যের সাথে সম্পর্ক রেখে "ব্লগার" শব্দটা ব্যবহার করেন, জনপ্রিয় করে তোলেন পরিভাষাটি।ব্লগিং-এর ইতিহাসের সবচেয়ে পুরনো ব্লগার হল জাস্টিন হল নামক ব্যাক্তি।১৯৯৮ সালে ব্রুস আবেলসন সর্বপ্রথম ওপেন ডায়রি নামক দিনপুঞ্জিকার মত ব্লগ তৈরি করেন যেখানে খুব দ্রুত হাজারো অনলাইন দিনপত্রী জন্ম নেয় এবং ওপেন ডায়রিকেই সর্বপ্রথম উন্মুক্ত ব্লগ হিসেবে ধরা হয়।আধুনিক ব্লগের উৎপত্তি ঘটে অনলাইন দিনপত্রী থেকে, যেখানে লোকেরা তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনের বিবরণ রাখতেন। এধরনের বেশিরভাগ লোকেরাই নিজেদের বলতেন ডায়েরিস্টস, জার্নালিস্টস অথবা জুমালারস। সোয়ার্থমোর কলেজ-এ ১৯৯৪-এর দিকে পড়ার সময় ব্যক্তিগত ব্লগিং-করিয়ে জাস্টিন হল-কে অন্যতম আদি ব্লগার হিসেবে ধরা হয়, যেমনটা ধরা হয় জেরি পুমেল-কেও। ডেভ উইনার-এর স্ক্রিপ্টিং নিউজ-এরও সবচাইতে পুরনো আর সবচাইতে বেশি দিন ধরে চালু থাকা ওয়েবলগ হিসেবে খ্যাতি আছে।(তথ্য-উইকিপিডিয়া)


প্রকারভেদ : ব্লগ সাইট যেমন ব্যাক্তিগত হতে পারে তেমনি শুধু আলোচনা আর মতামত নিয়ে প্রফেশনাল ব্লগসাইটও হতে পারে। শুধু তাই না, আজকাল বড় বড় সব কোম্পানী তাদের প্রডাক্ট লাইনেরও ব্লগসাইট তৈরী করেন। ব্লগ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।তার উপর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ব্লগের প্রকার তুলে ধরলাম-
১)ব্যক্তিগত ব্লগ :নিজের ব্যক্তিগত বিষয় যে ব্লগে তুলে ধরে যে ব্লগ তৈরী করা হয় সেটাই ব্যক্তিগত ব্লগ।
২)কোম্পানি/প্রাতিষ্ঠানিক : প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্য দিয়ে যে ব্লগ তৈরী করা হয়।যেমন-মাইক্রোসফ্ট, গুগল তাদের নিজস্ব ব্লগ আছে।
৩)সামাজিক ব্লগ : সমাজের বিভিন্ন সাম্প্রতিক বিষয়,সামাজিক উন্নয়ন,অবক্ষয়ের আলোকে যে ব্লগ তৈরী করা হয়।
৪)বিনোদন মূলক ব্লগ : এই ব্লগে ফটো,মুভি,নাটক,ভ্রমন,সাংস্কৃতি বিষয়ের আলোকে তুলে ধরা হয়।
৫)প্রশ্ন ব্লগ : প্রশ্ন ব্লগে ব্লগার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন। এই প্রশ্ন কোন ফর্ম বা ই-মেইলের মাধম্যে ব্লগাদের কাছেপৌছানহয়।
৬)খবর ব্লগ : যে সকল ব্লগে বিভিন্ন সাম্প্রতিক খবরের উপর বিশ্লেষন স্থান পায় তাদেরকে খবর ব্লগ বা News Blog বলে। এরকম আরো অনেক ব্লগ সাইট রয়েছে যা খুবই জনপ্রিয়।


ব্লগিং : ব্লগিং জিনিসটা যদি সংক্ষেপে বলি তাহলে বলব বিভিন্ন ব্লগে বা ওয়েভ সাইটে যা লেখা লেখি হয় তাই হল ব্লগিং । এই ছাড়ানিজের প্রত্যাহিক জীবনের কিছু ঘটনা বা একটি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে লিখা এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে সবার সাথে শেয়ার করাকে ব্লগিং বলে।


ব্লগিং করতে যা প্রয়োজন :
১)ব্লগিং করতে আপনার অবশ্যই যা প্রয়োজন তা হল মোবাইল/পিসি/ট্যাবে ইন্টারনেট কানেকশন।
২)একটা ইমেইল এ্যাকাউন্ট।
৩)নির্দিষ্ট ব্লগের সাইটে আপনার একটা ব্লগ এ্যাকাউন্ট।
৪)টাইপিং সফটয়্যার ইনস্টল থাকতে হবে এবং টাইপিং স্পিড মোটামুটি সন্তোষজনক হতে হবে।
৫)ব্লগ সাইটের সাথে পরিচিত হতে হবে এবং ব্লগের নীতিমালা গুলো জানা থাকতে হবে।


ব্লগার : যারা মুলত ব্লগে লিখে তাদেরই ব্লগার বলার হয়।নামে বেনামে ব্লগে কত শত লেখক নিজের চিন্তা-চেতনার আঙ্গিকে কতকিছু নিয়ে মন্তব্য আর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে থাকেন। হাজারো লেখকের সারিতে লুকিয়ে থাকেন কত শত মুক্তচিন্তার মুক্তবুদ্ধির মহানায়করা।যে যাই লিখেন না কেন, প্রত্যেকের রয়েছে নিজ নিজ অভিমত। যাই লেখেন না কেন, মানসম্মত,যুক্তিগত লেখায় ভরপুর থাকে লেখনীর মাঝে।


পরিশেষে, ব্লগিং হচ্ছে একটি শক্তিশালি মিডিয়া বা গণমাধ্যম।ব্লগিং এর সাহায্যে অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। ব্লগিং এর ফলে প্রতিটি দেশের সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন ব্যাপারে অভাবনীয় পরিবর্তন আনা সম্ভব।এর সঠিক প্রয়োগ আমাদের সকলের জন্য সুফল বয়ে আনবে ।ব্লগিং সত্যিই এখন অনলাইন লাইফের সবচেয়ে স্মার্ট প্রফেশন। তাই আজই ব্লগিং শুরু করতে পারেন আপনিও! ব্লগিং লাইফে আপনাকে স্বাগতম!
বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রকাশিত লেখা ও মন্তব্যের দায় একান্তই সংশ্লিষ্ট লেখক বা মন্তব্যকারীর, ব্লগ কর্তৃপক্ষ এজন্য কোনভাবেই দায়ী থাকবে না।অর্থাৎ প্রতিটা ব্লগিংয়ের জন্য সম্পুর্ন অপরাধ কিংবা মিথ্যা অপচারের দায় ব্লগারের উপর বর্তাবে।

সনাতন/হিন্দু ধর্মের বর্ণ প্রথা সম্পর্কে সবিশেষ



সনাতন বা হিন্দু ধর্মের ভয়াবহ অভিশপ্ত অন্যতম প্রথা হলো বর্ণ প্রথা।যা মানুষকে উচুস্তর এবং নিম্নস্তরে বিভক্ত করা হয়েছে।অর্থাৎ হিন্দু ধর্ম অনুসারে সব মানুষ সমান নয় এবং এটি একটি জাত ধর্ম অর্থাৎ আপনি জন্মের সময় যে অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেন আপনার বর্ন পরিচয়ও তাই হবে।এই বর্ণ প্রথা মূলত বিভক্ত করা হয়েছে কর্মের ভিত্তিতে।আধুনিক সংস্কারক হিন্দুরা যদিও এখন এসব জাত-পাত মানেন না, কিন্তু মধ্যবিত্ত ও মধ্য-শিক্ষিত সমাজে এর প্রভাব এখনো রয়ে গেছে।সাম্প্রদায়িকতাই এ ধর্মে বর্ণভেদের একমাত্র কারণ। নৈতিক আচরণভেদ, গায়ের রঙ ও পেশার ভিত্তিতে হিন্দু ধর্মে বর্ণভেদের সৃষ্টি হয়েছে।উচুবর্ণের হিন্দুরা তাদের দৃষ্টিতে যারা নিচুবর্ণ তাদেরকে নিয়ে প্রতিনিয়ত তুচ্ছ তাচ্ছিল,হাসি তামাশা করে এবং নিম্ন বর্ণদের বিভিন্ন নামে সম্বোধন করে থাকে।যেমন-মুচি,মেথর,পোদ,চাড়াল ইত্যাদি।এছাড়া উচ্চ ও নিম্ন বর্ণের হিন্দুর হাতের রান্না কিংবা একসাথে কখনও খেতে পারবেনা।কাপড় পরিধানের ক্ষেত্রেও বর্ণবাদ প্রথায় ব্রাহ্মণদের জন্য সাদা, ক্ষত্রিয়দের জন্য লাল,বৈশ্যদের জন্য হলুদ আর শুদ্রদের জন্য কালো রঙয়ের কাপড় পরিধান নির্ধারিত ছিল।ধর্মীয় নেতৃত্ব প্রদান করত ব্রাহ্মণগণ,রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিত ক্ষত্রিয়গণ আর বৈশ্যগণ ক্ষমতায় একেবার হীন আর শুদ্রগণ ছিল তাদের সকলের সেবক।এবং পৈতা পরিধান করা ব্রাক্ষণ ছাড়া আর কারও জন্য অনুমোদিত ছিল না।ব্রাহ্মনরা আরো প্রচার করে যে,ব্রাহ্মনদের সৃষ্টি হয়েছে ভগবানের মস্তক থেকে, ক্ষৈত্রীয়র সৃষ্টি হয়েছে ভগবানের বুক থেকে, বৈশ্যের সৃষ্টি হয়েছে ভগবানের পেট থেকে আর শুদ্রের সৃষ্টি হয়েছে ভগবানের পা থেকে।সুতরাং,ব্রাহ্মনরা উচু জাতী আর শুদ্র সর্বনীচু জাতী।


সনাতন ধর্মালম্বীদের মাঝে এখনও বর্ণ প্রথা প্রবল।এদেশে এখনও ব্রাহ্মণের ছেলের বিয়ের জন্য ব্রাহ্মণ মেয়ে ,দত্ত ছেলের জন্য দত্ত মেয়ে,কর্মকারের ছেলের বিয়ের জন্য কর্মকারের মেয়ে লাগবেই।কারন অন্য জাতের মেয়ে হলে নাকি আবার জাতকূল ধুয়ে এক হয়ে যায়।এমনই অনেক হিন্দু পরিবার আছে,যেখানে অভিভাবকরা তাদের ছেলেদের/মেয়েদের বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেলেও বিয়ে দিতে পারছে না শুধুমাত্র একই বর্ণের সুযোগ্য ছেলে/মেয়ে পাওয়া যাচ্ছে না বলে।দুঃখের কথা কি বলব,আমার মামা বিয়ে করতে পারছেনা সুযোগ্য ভালো মেয়ে পাওয়া সত্যেও।তার কারন হচ্ছে জাতের সাথে জাতের মিল হচ্ছে না।তাহলে আপনারাই বুঝোন এই জাত প্রথাটা কতটা ভাইরাস হিসাবে এখনো আমাদের সমাজে যুগের পর যুগ টিকে আছে।বর্ণ প্রথার প্রভাব সনাতন ধর্মালম্বীদের মাঝে কেমন তার সম্পর্কে আশা করি কিছু হলেও ধারনা পেলেন।এখন মূল কথায় আসা যাক-

প্রথমেই বলে নিই, হিন্দু সমাজে চারটি বর্ণ প্রচলিত আছে।যেমন- ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়,বৈশ্য ও শূদ্র। আমরা মনে করি যে, একজন ব্রাহ্মণের পুত্রই ব্রাহ্মণ,ক্ষত্রিয়ের পুত্রই ক্ষত্রিয়, বৈশ্যের পুত্রই বৈশ্য, শূদ্রের পুত্রই শূদ্র। আসলে ঘটনাটি সঠিক নয়।বেদে স্পষ্ট বলা আছে, যার যার কার্যকারণে তার বর্ণ নির্ধারণ করবে। এবং সকলেই সকলের উপর নির্ভরশীল।

তাহলে আসুন এবার দেখি সনাতন ধর্মে বর্ণ প্রথা সম্পর্কে ‘বেদ’ এ কি বলা আছে—

ঋগবেদ ১.১১৩.৬

"একজন জ্ঞানের উচ্চ পথে(ব্রাহ্মন) ,অপরজন বীরত্বের গৌরবে(ক্ষত্রিয়) , একজন তার নির্দিষ্ট পেশাভিত্তিক(বৈশ্য), আরেকজন সেবার পরিশ্রমে(শূদ্র)। সকলেই তার ইচ্ছামাফিক পেশায়,সকলের জন্যই ঈশ্বর জাগ্রত।

ঋগবেদ ৯.১১২.১

একেকজনের কর্মক্ষমতা ও আধ্যাত্মিকতা একেক রকম আর সে অনুসারে কেউ ব্রাক্ষ্মন কেউ ক্ষত্রিয় কেউ বেশ্য কেউ শূদ্র।

ব্রাক্ষ্মন কে? ঋগবেদ ৭.১০৩.৮

যে ঈশ্বরের প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত, অহিংস,সত্য,নিষ্ঠাবান, সুশৃঙ্খল,বেদ প্রচারকারী, বেদ জ্ঞানী সে ব্রাহ্মন।

ক্ষত্রিয় কে?

ঋগবেদ ১০.৬৬.৮

দৃঢ়ভাবে আচার পালনকারী, সত্‍কর্মের দ্বারা শূদ্ধ, রাজনৈতিক জ্ঞান সম্পন্ন,অহিংস,ঈশ্বর সাধক,সত্যের ধারক ন্যায়পরায়ন,বিদ্বেষমুক্ত ধর্মযোদ্ধা,অসত্‍ এর বিনাশকারী সে ক্ষত্রিয়।

বৈশ্য কে?

অথর্ববেদ ৩.১৫.১

“দক্ষ ব্যবসায়ী দানশীল চাকুরীরত এবং চাকুরী প্রদানকারী।”

শূদ্র কে?

ঋগবেদ ১০.৯৪.১১

“যে অদম্য,পরিশ্রমী, ­ অক্লান্ত জরা যাকে সহজে গ্রাস করতে পারেনা,লোভমুক্ত ­ কষ্টসহিষ্ণু সেই শূদ্র।”

এজন্যেই পবিত্র বেদ ঘোষনা করেছে সাম্যের বানী-“অজ্যেষ্ঠাসো অকনিষ্ঠাসো অকনিষ্ঠাস এতে সং ভ্রাতারো তাবৃধুঃ সৌভগায় যুবা পিতা স্বপা রুদ্র এযাং সুদুঘা পুশ্নিঃ সুদিনা মরুদ্ভঃ।”(ঋগবেদ ৫.৬০.৫)

অর্থাৎ,কর্ম ও গুনভেদে কেউ ব্রাহ্মন,কেউ ক্ষত্রিয়,কেউ বৈশ্য,কেউ শুদ্র।তাদের মধ্যে কেহ বড় নয় কেহ ছোট নয়।ইহারা ভাই ভাই । সৌভাগ্য লাভের জন্য ইহারা প্রযত্ন করে ।ইহাদের পিতা তরুন শুভকর্ম ঈশ্বর এবং জননীরুপ প্রকৃতি।পুরুষার্থী সন্তানই সৌভাগ্য প্রাপ্ত হন।

বেদের কোথাও বলা নেই এক বর্ণের মানুষ আরেক বর্ণের পার্থক্য।কিন্তু উচ্চ বর্ণের মানুষরা নীচু বর্ণের মানুষদের মানুষ মনে করে কিনা সন্দেহ।

আশা করি বর্ণ প্রথা সম্পর্কে সনাতন ধর্ম বিশ্বাসীদের আদি অন্ত পরিষ্কার করতে পেরেছি।আর এখনও যদি কেও ভাবেন সনাতন ধর্মে ব্রাহ্মনরাই উচুস্তরের তাহলে আপনাকে আমার আর বুঝানোর ক্ষমতা নাই।কারন ব্রাহ্মন সেই হওয়ার যোগ্য রাখে যে পাণ্ডিত দিক দিয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারে।হোক সে বৈশ্য,ক্ষত্রিয় অথবা শূদ্র।বর্তমান সমাজে যেহেতু শিক্ষা ও পেশা সবার জন্য উন্মুক্ত তাই এ প্রথা আজ অপপ্রথায় পরিণত হয়েছে।বরং সমাজে বর্ণ ভেদের কারনে বিভাজন দৃশ্যমান, অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দারিয়েছে।এ কারনে চূড়ান্ত রুপে এ প্রথাকে বর্জন করাই মঙ্গলজনক।

বি.দ্রঃআমি কোন জাত-ভেদ,ধর্মের দুনিয়া চাই না,আমি মানুষের দুনিয়া চাই।আমার বড় পরিচয় আমি মানুষ এবং আপনারাও মানুষ।

ধর্ম এবং নাস্তিক্যবাদ



আমরা সকলই বিভিন্ন কারণ-অকারণে ধর্ম এবং নাস্তিকতা নিয়ে একটু বেশী বাড়াবাড়ি করি।সেটা জেনে হোক,আর না জেনে হোক।তবে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে আমরা সকলই না জেনে ধর্ম নিয়ে একটু বেশী কথা বলি কোন প্রসঙ্গ পেলে হয় শুধু।কিন্তু বেশীর ভাগ লোকই ধর্ম সম্পর্ক ভালোভাবে ধারণা না নিয়েই মনগড়া তথ্য নিয়ে শুরু করে দেয় তর্ক এবং নিজের মনগড়া তথ্যকেই সত্য বলে জাহির করার জন্য হানাহানি শুরু করে দেয়।শুরুতেই আমি বলে রাখতে চাই ধর্ম সম্পর্কে আমিও তেমন কিছু জানিনা।তবে আমি আমার ব্যাক্তিগত উপলব্ধি থেকে ধর্ম বলতে যা বুঝি, 'ধর্ম' হচ্ছে কোন কিছুর গুণ বা বৈশিষ্ট্য। জলের ধর্ম তারল্য, অগ্নির ধর্ম তাপ; তেমনিভাবে মানুষের ধর্ম হচ্ছে মনুষ্যত্ব। ধর্মকে একেকজন একেকভাবে সংজ্ঞায়িত করে এবং বিভাজন করে থাকে।আমাদের জন্মের সময় আমরা জানিনা আমাদের ধর্ম সম্পর্কে।কিন্তু ধীরে ধীরে আমরা বড় হতে থাকি এবং একসময় জানতে পারি আমাকে এই ধর্মে বিশ্বাসী হয়ে বড় হতে হবে।সেই হিসেবে ধর্মকে আমরাই সৃষ্টি করেছি।ধর্ম নিয়ে কৌতুহলকে অনেকে নিন্দার চোখে দেখেন। তারা পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত ধর্ম বিশ্বাসে অবিচল আস্থা দেখানোর পক্ষপাতী। কিন্তু অনেকেই পাল্টা এই যুক্তি দেন যে, সবাই যদি বংশসূত্রে প্রাপ্ত ধর্মে অবিচল থাকতো তবে পৃথিবীতে নতুন ধর্ম আসতো না।তাই ধর্মকে কিছু জাতিগত প্রথা ও সাম্প্রদায়িক মতাদর্শের মধ্যে সীমাবদ্ধ করাটা উচিৎ নয়। নিজের মনুষ্যত্ব বজায় রেখে, নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখা, ও একটি নৈতিক আদর্শ অনুসরণ করে স্বাভাবিক জীবন যাপন করাটাই প্রকৃত ধর্ম। ধর্ম মানবের, মানবিক ও সামাজিক চিন্তা, ব্যবহারও নৈতিকতার বিষয় নিয়ে কথা বলে । মুলত প্রাচীন কাল থেকেই ধর্ম মানুষের দৈনন্দিন আচার ও সংস্কৃতির ধারক হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে । যা প্রজন্ম পড় প্রজন্ম মানুষ জন্মগত ও সামাজিক ভাবে শিখে বড় হয়।

অপর দিকে বিভিন্ন দার্শনিকদের মতে ধর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন ব্যাখ্যা পোষন করেছে..............................

''ধর্ম এমন একটি ভাব, যাহা পশুকে মনুষ্যত্বে ও মানুষকে দেবত্বে উন্নীত করে।পরোপকার ই ধর্ম, পরপীড়ন ই পাপ। শক্তি ও সাহসিকতাই ধর্ম। দুর্বলতা ও কাপুরুষতাই পাপ। স্বাধীনতাই ধর্ম, পরাধীনতাই পাপ। অপরকে ভালবাসাই ধর্ম,অপরকে ঘৃণা করাই পাপ। ঈশ্বরে এবং নিজ আত্মাতে বিশ্বাস ই ধর্ম, সন্দেহ ই পাপ। ''-- স্বামী বিবেকানন্দ

“বাঁচা বাড়ার মর্ম যা, ঠিকই জেনো ধর্ম তা।

বাচঁতে নরের যা যা লাগে, তাই নিয়েইতো ধর্ম জাগে।

অন্যে বাচায় নিজে থাকে, ধর্ম বলে জানিস তাকে।’’--শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র

"ধর্ম মানুষের চেয়ে উন্নত ধরণের একটি শক্তির বিধান, যে শক্তি মানব জীবন ও প্রকৃতির ধারাকে নিয়ন্ত্রণ ও বিশ্লেষণ করে।"--জেমস জি ফ্রেজার

১)আমি কে?

২)আমি কোথা হতে এসেছি?

৩)কোথায় যাচ্ছি?

৪)পৃথিবীতে আমার কাজ কী?


প্রশ্নগুলোর উত্তর এক এক মানুষের কাছে এক একভাবে ধরা দেয়। আর বিস্তারিত ব্যাখ্যায় না গিয়ে ও বলা যায় যে, এ উত্তরের ভিন্নতার উপরই প্রাথমিকভাবে তৈরী হয়ে যায় ভিন্ন দু'টি পথ-ধর্ম আর নাস্তিকতা!

এতো গেলো জীবনাচরনের ওপর ভিত্তি করে ধর্ম আর নাস্তিকতার অবস্থান নির্ণয়। এবার, যদি ঐশ্বরিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখি, তাহলে বলা যায় যে, এক মহামহিম শক্তি বা স্বত্তা মানুষ সহ এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা ও নিয়ন্তা- এই কথা মেনে নেওয়াই হলো ধর্মের মূল কথা আর এই কথার স্ববিরোধিতাকারীই নাস্তিক।

অর্থাৎ যেকোনো ধর্মের প্রধান এবং প্রথম উপাদান হল বিশ্বাস। মোট কথা হল ধর্ম হল স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস। অন্যভাবে বলা যায় ধর্ম হল স্রষ্টার সাথে সৃষ্টির সম্পর্ক।পৃথিবীতে ধর্মের কি ভাবে শুরু কিংবা উৎপত্তি হয়েছিল তার ব্যাখ্যা ও ইতিহাস বিস্তর। তবে ৩ থেকে ৫ লক্ষ বছর আগে মধ্য প্রস্তরযুগে ধর্মীয় আচার আচরনের সাক্ষ্য প্রমান পাওয়া যায়।কিন্তু মানুষ যখন মাত্র ৫০০০ বছর আগে লিখার প্রচলন শুরু করে কেবল তখনই ধর্ম লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয়েছে।৫০০০ বছর পূর্বে ধর্ম সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ভাবে কোন জাগায় তেমন কিছু বলা হয় নাই বলে জানি আমি যতদূর।আবার কালের আবর্তে অনেক ধর্মের উৎপত্তি,উস্থান,পতন এবং হারিয়েও গেছে।তবে ধর্মের অন্য একটি বিশেষ উপাদান হল আচার অনুষ্ঠান। প্রতিটা ধর্মেই নির্দিষ্ট আচার বিদ্যমান।যেমন মুসলমানরা বছরে ২ টা ঈদ উদযাপন করে,হিন্দুরা দুর্গাপূজা, কালীপূজা ইত্যাদি পালন করে। খ্রিস্টানরা বড়দিন উদযাপন করে ইত্যাদি ইত্যাদি।তাই সকল ধর্মেই কিছু পবিত্র বিষয় থাকে।যেকোনো ধর্মই ঐক্য সৃষ্টি করে। সকল ধর্ম পালনকারীদের ভিতর একটা গভীর ঐক্য থাকে। যদি কোন ধর্মের কেউ কোন ভাবে অন্য ধর্মের লোকের কাছে শারীরিক বা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে তাকে তার ধর্মের লোকজন একত্রিত হয়ে সাহায্য করে।ধর্মের মূল প্রাপ্তি সামাজিক মূল্যবোধ ।পাপ ও পুণ্যের বিচার । ভাল ও মন্দের ধারক । ধর্ম সেই আদিম কাল থেকেই মানবের মানবিক উৎকর্ষ বিকাশের প্রথম উপায় ।


এখনকার সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ব্যাপার মনে হয় “নাস্তিক"। ইংরেজি ‘এইথিজম’ (Atheism) শব্দের অর্থ হল নাস্তিকতা বা নিরীশ্বরবাদ। এইথিজম শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে গ্রিক ‘এথোস’ শব্দটি থেকে। শব্দটি সেই সকল মানুষকে নির্দেশ করে যারা ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই বলে মনে করে এবং প্রচলিত ধর্মগুলোর প্রতি অন্ধবিশ্বাসকে যুক্তি দ্বারা ভ্রান্ত বলে প্রমাণ করে।

নাস্তিক কি? নাস্তিক্যবাদ কি আধুনিক কোন মতবাদ?

আমরা জানি নাস্তিক শব্দটির অর্থ হল, যে ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না। এটি খুবই সরল এবং স্পষ্ট।বৈদিক যুগ থেকেই কিছু মানুষ কল্পিত ঈশ্বরের উপর তাদের অনাস্থা জ্ঞাপন করে এসেছে।এই অনাস্থা প্রকাশের ভাষাই হচ্ছে নাস্তিক্যবাদ। নাস্তিকতা ও ধর্মহীনতা সম্পুরন আলাদা ।নাস্তিকতা একটি সম্পূর্ণ দার্শনিক মতবাদ , নাস্তিক হতে হলে কোন আচার করতে হয় না।

এক কথায়, ঈশ্বরে অবিশ্বাসী একজন ব্যক্তিই নাস্তিক। যিনি যুক্তি-তর্ক-প্রমান-বিশ্লেষণের বাইরে গিয়ে শুধু বিশ্বাসের খাতিরেই ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করেন না এবং যুক্তিবাদী চিন্তাশীল হিসেবে অবশ্যই ঈশ্বর এবং ধর্মের ধারনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন। অনেকেই ধর্ম-বিশ্বাস এই বিষয়গুলোতে গভীরভাবে চিন্তা না করেই নাস্তিক হিসেবে নিজেকে জাহির করে ঠিকই কিন্তু বাস্তবে একজন নাস্তিকের শক্তি তার মুক্তচিন্তায়, সে ধর্ম এবং ঈশ্বর সম্পর্কে তার যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর যুক্তি-প্রমানের ভিত্তিতে করতে আগ্রহী। তাই যৌক্তিক সমালোচনাবিহীন নাস্তিকতার কোন মূল্য নেই। পৃথিবীতে প্রায় ৪২০০ ধর্ম রয়েছে এবং সকল ধর্মেরই একটা বিশ্বাস যে,আমাদের সৃষ্টির পিছনে একজন সৃষ্টিকর্তা রয়েছে।প্রত্যেক ধর্মেরই একটা নিজস্ব আচার,ব্যবহার,অনুষ্ঠান,সংস্কৃতি এবং সৃষ্টিকর্তাকে বিভিন্ন নামে সম্ভোধন করে থাকে।কিন্তু আজ পর্যন্তই কোন ধর্ম অন্য ধর্মের আচার-আচরন,সংস্কৃতি এবং তার সৃষ্টিকর্তাকে স্বীকৃতি দেই নি।এক ধর্মের বিশ্বাসীর কাছে স্বাভাবিকভাবেই অপর ধর্মে বিশ্বাসীর "ঈশ্বর" কাল্পনিক এবং গুরুত্বহীন, আর নাস্তিকের কাছে তেমনই যেকোন ধর্মের ঈশ্বরই কাল্পনিক। রিচার্ড ডকিন্সের এসম্পর্কে উল্লেখযোগ্য একটি উক্তি হচ্ছে- “We are all atheists about most of the gods that humanity has ever believed in. Some of us just go one god further.”

মুলত অনেক কারনে মানুষ নাস্তিক হয়।একজন আস্তিকের নাস্তিক হওয়ার তেমনি কিছু কারন উল্লেখ করা হলো-

১) অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ে।

২) প্রার্থনার উত্তর না পাওয়া।

৩) এক ধর্মের সাথে আরেক ধর্মের সাংঘর্ষিক কাড়নে।

৪)মানুষের মাঝে জাতভেদ থাকার কারনে।

৫)হাজারো ধর্মের উৎপত্তি এবং প্রত্যেক ধর্মের দাবি নিজ ধর্ম এবং নিজেদের বিশ্বাস ব্যতীত সকল ধর্ম মিথ্যা।

৬)সকল সৃষ্টির মূলে যদি একজনই হোন তাহলে এতো এতো ধর্ম কেন?

৭)ধর্ম গ্রন্থ গুলো নিজ ভাষায় পড়ার পর হাজারো অমানবিক দৃষ্টি ভঙ্গির কারনে।

৮) পারিবারিক ভাবে কঠিন ধর্মীয় বিধি নিষেধের মধ্যে বড় হওয়ার কারনে অনেকের মধ্যে ধর্ম এবং আল্লাহ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়।

৯) ধর্মীয় অনুশাসন পছন্দ না হওয়া নাস্তিক হবার পেছনে প্রভাব ফেলে।

১০)বিজ্ঞানের সাথে ইশ্বরের অস্তিত্ব না মিলাতে পেরে এবং বিভিন্ন নাস্তিক লেখকদের প্রশ্নবিদ্ধ বই পড়ে ইত্যাদি ইত্যাদি কারনে একজন মানুষ আস্তিক থেকে নাস্তিক হয়।

নাস্তিকতা শুধুই একটি ব্যাক্তিগত বিশ্বাস যা সে নিজের বিবেক, বুদ্ধি, বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে । এতে কারো অধিকার নেই তার ব্যাক্তিগত বিশ্বাসকে অসন্মান করা । প্রতিটি মানুষের মত তারও অধিকার রয়েছে সন্মান পাবার । যদি কোন ধর্মীয় গুষ্টি সেটাকে সন্মান করতে না পারে তাহলে সেটা সেই ধর্মীয় গুষ্টির ব্যার্থতা । যুক্তি তর্ক অবশ্যই আসবে কিন্তু সেটার জন্য দরকার পারস্পারিক শ্রদ্ধা বোধ । সত্য সব সময় সত্যি বলেই প্রমানিত হয় । হোক সেটা হাজার বছর পরে।

যুক্তির জবাব সব সময় যুক্তির মাধ্যমে দিতে হয় কিন্তু তার জবাব তালোয়ারের মাধ্যমে দেয়া নেহাত বোকামী ছাড়া কিছু নয় । সত্য কে সত্যি বলে স্বিকার করতে দরকার শুধু নিজের বিবেক এবং বিচার বিশ্লেসন করার মত বুদ্ধিমত্বা । সিদ্ধান্ত প্রতিটি মানুষের নিজের উপর । আর মানুষের ব্যাক্তিগত স্বিদ্ধান্তের উপর অবশ্যই শ্রদ্ধা থাকা প্রয়োজন ।

অপরিচিত বিরক্তকর কলদাতার পরিচয় বের করার উপায়



বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার ফলে আমাদের জীবন যাত্রা যেমন সহজ হয়েছে,ঠিক তেমনই আমাদের বিভ্রান্তিতে পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার ফলে আবার সেই বিভ্রান্ত থেকে মুক্তি পাবার জন্যই প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে অনেকেই।আজ আমি তেমনই একটা বিষয় নিয়ে কথা বলব,মোবাইলের অপরিচিত বিরক্তকর কলদাতার পরিচয় বের করার সহজ উপায়।আশা করি অনেকটাই কাজে লাগবে।তবে হয়তো আপনি যতটুকু আশা করছেন ততটুকু না হলেও অনেকটাই কাজে দিবে।আমি নিজেই প্রয়োগ করে দেখিছি বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে।১০০%সমস্যার সমাধান না হলেও ৭৫% সমস্যার সমাধান হবে বলে আমি আশাবাদী।মোবাইলে অচেনা নম্বর থেকে ক্রমাগত কল বা মিসকল আসার মত বিরক্তিকর ব্যাপার কিছুই হতে পারে না। বিশেষত মেয়েদের জন্যে এই ভোগান্তি তো একেবারেই অলিখিত। বকাঝকা, ফোন সাইলেন্ট করে রাখা কোন কিছুতেই যেন কাজ হয় না। কিন্তু ভাবুন তো, অচেনা এই লোকটির নাম ঠিকানা যদি এক মিনিটেই আপনার হাতের মুঠোয় চলে আসে, আর আপনি উল্টা তার নাম ধরে ডেকে বেশ ভালো রকম একটা হুমকী দিতে পারেন, কিংবা সহজেই পুলিশের কাছে তার নাম ঠিকানা দিয়ে দিতে পারেন, তাহলে কি ভালোটাই না হতো! না স্বপ্ন নয় একেবারেই, প্রযুক্তির উৎকর্ষে এই ছোট্ট কাজটি আপনি করতে পারেন স্রেফ ঘরে বসেই। আপনার স্মার্টফোনে গুগল প্লে স্টোর থেকে কয়েক সেকেন্ডেই নামিয়ে নিতে পারেন, এইসব অচেনা নাম্বার থেকে ফোনদাতার নাম ঠিকানা বের করার জন্য।









Facebook:বার বার ফোন করতেই থাকা বিরক্তিকর নম্বরটিকে কিন্তু আপনি ট্র্যাক করতে পারেন ফেসবুকের মাধ্যমেও। ফেসবুকের সার্চ অপশনে গিয়ে ফোন নম্বরটি টাইপ করুন। সে ব্যক্তি যদি এই ফোন নম্বরটি তার একাউন্টে ব্যবহার করে (করার সম্ভাবনা খুব বেশী), তাহলে তাকে সহজেই খুঁজে পাওয়া সম্ভব।











True Caller:এই ছোট্ট অ্যাপস টি পাবেন গুগল প্লে স্টোরে। এটি আপনার ফোনে ইন্সটল করে নিন। তারপর কোন অচেনা নম্বর থেকে ফোন এলেই, স্রেফ জাদুর মত আপনার ফোনে ভেসে উঠবে কলদাতার নাম। তবে হ্যাঁ, শর্ত প্রযোজ্য। সেই নম্বরটি যদি তার নামে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে, তবেই আপনি এই সুবিধাটা পাবেন। আর সেই লোক যদি ফেসবুকে এই নম্বরটি ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে তো দেখতে পাবেন তার ছবি সহই! দেখে নিন তো, পরিচিত কেউই আপনার সাথে এই বিরক্তিকর আচরণটি করছে কিনা! বাড়তি পাওনা হিসেবে বিনেপয়সায় আপনি এই কলদাতাকে ব্লক করে রাখতে পারবেন।



LINE Whoscall:এই ছোট্ট অ্যাপস টি পাবেন গুগল প্লে স্টোরে। এটি আপনার ফোনে ইন্সটল করে নিন।অনেকটা ট্রুকলারের মতই এটিও অচেনা ফোনদাতার রেজিস্টার্ড নাম ও অন্যান তথ্য ও তার মোবাইলে লোকেশন অন থাকলে তার ঠিকানা অব্দি দেখিয়ে দেবে আপনাকে।



Mobile Number Locator:অচেনা নম্বর থেকে ফোনদাতার রেজিস্টার্ড নাম জানবে এই অ্যাপটি। অ্যাপটির অন্যতম সুবিধা হচ্ছে, এটি ইন্টারনেট কানেকশন ছাড়াই কাজ করে। ইনকামিং ও আউটগোয়িং কল চলাকালীনই কলারের ও প্রাপকের বিস্তারিত জানিয়ে দেয় এই অ্যাপ। গুগল ম্যাপের সাহায্যে এই অ্যাপ কলারের লোকেশনও দেখিয়ে দেবে। আমি নিজে ট্রুকলার ব্যবহার করি। তবে, আপনি আপনার সুবিধামত যে কোনটি বেছে নিতে পারেন।

ধন্যবাদ,ভালো থাকুন,সুখে থাকুন।জয় হোক বিজ্ঞানের।

ধর্ম এবং ধর্মের উৎপত্তি



সাধারণ ভাবেই যদি কাউকে জিজ্ঞাসা করা হয় ধর্ম কি এবং কাকে বলে তাহলে সে সোজাসাপ্টা উত্তর না দিতে পেরে ত্যানা পেঁচিয়ে ভুলভাল বকা শুরু করে দিবে।তাই শুরুতে ধর্ম কি এবং কাকে বলে তা জেনে নেওয়া দরকার।

কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাক্তন অধ্যাপক শৈলেন্দ্র ‘স্বভাব, শক্তি, গুণ’ অর্থাৎ বস্তুর অভ্যন্তরস্থ সেই নীতি যা সে মেনে চলতে বাধ্য থাকে। যেমন আগুনের ধর্ম হলো পোড়ানো, পানির ধর্ম ভেজানো বিশ্বাস এম. এ প্রণীত সংসদ্ বাঙ্গালা অভিধানে ধর্ম শব্দের অর্থ করা হয়েছে- ইত্যাদি। আগুন ও পানির এই গুণ চিরন্তন সত্য। লক্ষ বছর আগেও আগুন পোড়াতো, লক্ষ বছর পরও পোড়াবে। এটাই তার ধর্ম।

জেমস জি. ফ্রেজার বলেন,‘ধর্ম মানুষের চেয়ে উন্নত ধরণের একটি শক্তির বিধান, যে শক্তি মানব জীবন ও প্রকৃতির ধারাকে নিয়ন্ত্রণ ও বিশ্লেষণ করে।’

টেলার বলেছেন,‘ ধর্ম হচ্ছে প্রেতাত্মায় বিশ্বাস।’

নাস্তিক কার্ল মার্কস বলেন,‘ধর্ম হল আফিম এর মতো।’

ডঃ অভিজিৎ রায় বলছেন,‘ধর্ম একটি ভাইরাস।’

স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন,”ধর্ম এমন একটি ভাব, যাহা পশুকে মনুষ্যত্বে ও মানুষকে দেবত্বে উন্নীত করে। ”

মোট কথা হল ধর্ম হল স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস। অন্যভাবে বলা যায় ধর্ম হল স্রষ্টার সাথে সৃষ্টির সম্পর্ক।

পৃথিবীতে ধর্মের কি ভাবে শুরু কিংবা উৎপত্তি হয়েছিল তার ব্যাখ্যা ও ইতিহাস বিস্তর। তবে ৩ থেকে ৫ লক্ষ বছ্র আগে মধ্য প্রস্তরযুগে ধর্মীয় আচার আচরনের সাক্ষ্য প্রমান পাওয়া যায়।কিন্তু মানুষ যখন মাত্র ৫০০০ বছর আগে লিখার প্রচলন শুরু করে কেবল তখনই ধর্ম লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয়েছে।৫০০০ বছর পূর্বে ধর্ম সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ভাবে কোন জাগায় তেমন কিছু বলা হয় নাই বলে জানি আমি যতদূর।আবার কালের আবর্তে অনেক ধর্মের উৎপত্তি,উস্থান,পতন এবং হারিয়েও গেছে।

তবে ধর্মের উৎপত্তি হিসেবে কয়েকটি তত্ত্ব আছে। যেমন-

১। সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত মতবাদ

২।মানবীয় বিচার-বুদ্ধি ভিত্তিক মতবাদ

৩।মনস্তাত্ত্বিক মতবাদ

৪।নৃ-তাত্তিক মতবাদ


সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত মতবাদব মানুষকে বিশ্বাস করতে বলে যে- পৃথিবী সৃষ্টির আদিকাল থেকেই একজন ঈশ্বর আছেন এবং তিনিই ধর্মের প্রবক্তা।


মানবীয় বিচার-বুদ্ধি ভিত্তিক মতবাদ বিশ্বাস করে যে-পৃথিবীর সকল ধর্মের উৎপত্তি হল পুরোহিতদের মাধ্যমে।

নৃ-তাত্তিক মতবাদ এবং মনস্তাত্ত্বিক মতবাদের মতে ধর্মের উৎপত্তি বা ক্রমবিকাশ একদিনেই ঘটেনি।কালের বিবর্তে বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও ঘটনার মধ্যদিয়ে উদ্ভূত হয়েছে ‘ধর্ম’ শব্দটির।ক্রমবিকাশ বলতে বোঝায়- ক্রমশ বিকাশ,ক্রমোন্নতি,একটু একটু করে উন্নতি,অভিব্যক্তি,বিবর্তন,Evolution।অর্থাৎ কোন অলৌকিক ঘটনার মধ্য দিয়ে ধর্মের উৎপত্তি হয় নাই।আমি যতদূর জেনেছিলাম পৃথিবীতে প্রায় ৪২০০ ধর্ম রয়েছে এবং সকল ধর্মেরই একটা বিশ্বাস যে,আমাদের সৃষ্টির পিছনে একজন সৃষ্টিকর্তা রয়েছে।প্রত্যেক ধর্মেরই একটা নিজস্ব আচার,ব্যবহার,অনুষ্ঠান,সংস্কৃতি এবং সৃষ্টিকর্তাকে বিভিন্ন নামে সম্ভোধন করে থাকে।কিন্তু আজ পর্যন্তই কোন ধর্ম অন্য ধর্মের আচার-আচরন,সংস্কৃতি এবং তার সৃষ্টিকর্তাকে স্বীকৃতি দেই নি।বরং মানুষ আজ ধর্মকে ব্যবহার করে অন্য ধর্মের মানুষকে অবলীলায় হত্যা করছে এবং তা ধর্ম গ্রন্থের বিভিন্ন হাদিস চষে তা জায়েজ করা হচ্ছে।প্রত্যেক ধর্মেরই এক দাবি তার ধর্ম,সৃষ্টিকর্তা এবং তার ধর্মগ্রন্থ ব্যতীত বাকী সকল ধর্মই বানোয়াট এবং মিথ্যা ধর্ম।কিন্তু আমি বলি মানব ধর্ম ব্যতীত বাকী সকল ধর্মই বানোয়াট এবং ধর্ম ব্যাবসায়ীদের ধর্মের ফন্দী একে অন্য কোন কিছু হাসিল করা।যার জন্যই সাধারন সহজ সরল মানুষগুলোকে ব্যাবহার করে ধর্ম নামের অন্ধ বিশ্বাসকে আজো জিইয়ে রেখেছে এই আধুনিক বিজ্ঞানের জগতে। জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য, মানুষের মনোভাব, চিন্তা-চেতনা ইত্যাদির উন্নতি ও উন্মেষ ঘটতে দেখলেই ধর্মের দোহাই দিয়ে ধার্মিকেরা তার গলা টিপে হত্যা করতে চেয়েছে, আজও করেছে অনেক।

সব ধর্মই জঘন্য, বিষাক্ত এবং এক ধর্মের সাথে অন্য ধর্মের সাপ-লাঠির সম্পর্ক।তবে কালের বিবর্তনে সিংহভাগ ধর্মই আজ শুধু পুঁথিগত হয়ে পড়ে রয়েছে। বাস্তবে তার তেমন একটা প্রয়োগ নেই।অনেকের কাছে ধর্ম এখন শুধু উৎসব হয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে।তবে সকলের উদ্দ্যেশে একটি কথাই বলব “সবার উপরে মানুষ সত্য,তাহার উপরে নাই।”তাইতো কবি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘হায় রে ভজনালয় তোমার মিনারে চড়িয়া ভন্ড গাহে স্বার্থের জয় ! মানুষেরে ঘৃণা করি ও’ কারা কোরান, বেদ, বাইবেল চুম্বিছে মরি মরি ও মুখ হইতে কেতাব- গ্রন্থ নাও জোর করে কেড়ে যাহারা আনিল গ্রন্থ- কেতাব সেই মানুষেরে মেরে । পুজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল !– মুর্খরা সব শোনো মানুষ এনেছে গ্রন্থ,–গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো।’আর ফকির লালন সাঁই বলেছিলেন,

‘এমন মানব সমাজ কবেগো সৃজন হবে

যেদিন হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খৃষ্টান

জাতি গোত্র নাহি রবে।’

সব শেষে একটি কথাই বলব জয় হোক মানবতার,জয় হোক সকল শান্তি প্রিয় মানুষের।

কেই সেই পরবর্তী টার্গেট



শহরের একই থানার অন্তর্ভুক্ত বেশ কিছু পাশাপাশি এলাকায় খুন,মাদক ব্যবসায়ী,মাদক সেবনকারী,ছিনতাইকারী,চোর,ডাকাতের পরিমান বেড়েই চলছে।কে খুন করছে,বা কে এই যুব সমাজের মাঝে মাদক ছড়িয়ে দিচ্ছে,এবং কারাই বা রাতের অন্ধকারে অন্যের বাড়ি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি,ডাকাতি কিংবা ছিনতাই করছে পথচারীদের টাকা,মোবাইল কিংবা স্বর্বস?পুলিশের উৎপাতও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কারন উপর তলা থেকে বেশ চাপ পোহাতে হচ্ছে ডিউটিরত অফিসারদেরো।এর মধ্যেই এলাকার বেশ কজন যুবককে সন্দেহাতীত আটক করা হচ্ছে এবং তাদের পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।কিন্তু আটককৃত বখাটে যুবকরাও কোন হদীস দিতে পারছেনা এসব কে বা কারা করচ্ছে।এর মধ্যেই গত ১১ মাসে ১১ জন উপজাতি মেয়ে ধর্ষন অতঃপর খুন করা হয়েছে।দিনের পর দিন অপরাধের সংখ্যা বেড়েই চলছে কিন্তু অপরাধীদের সনাক্ত না করতে পেরে প্রশাসনও হতাশায়।কারন আজকাল সাধারন মানুষ গুলাও প্রশাসনকে মুখের উপর ধিক্কার জানিয়ে চলে যাচ্ছে।


এসব অরাজকতার মধ্যে বেশ সাড়া পড়ে গেছে কেনই বা সিরিয়ালী উপজাতি মেয়ে ধর্ষন অতঃপর খুন করা হচ্ছে।ধর্ষনের পর খুনের স্টাইল দেখে পুলিশ এবং ডিবির ধারনা একই ব্যক্তি দ্বারা এই জগন্য অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।কিন্তু সবারই এক কথা কে এই ধর্ষনকারী এবং খুনি?যে প্রতিমাসে ১ টা করে উপজাতি মেয়ে ধর্ষন করে খুন করে সবার চোখে ধুলা দিয়ে প্রশাসনের আড়ালে চলে যাচ্ছে।আর এই খুন হওয়া মেয়ে গুলাও বেশীর ভাগ এই এলাকায় নতুন।তাহলে তাদের খুন হওয়ার পিছনের কারণও কি একই সূত্র?কেও যেন কিছুতেই কোন হিসাব মিলাতে পারছেনা।অপরদিকে বেশ কিছু এলাকায় পুলিশের অতিরিক্ত গার্ড এবং টহল বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।যার কারনে অন্যান্য অপরাধ গুলো বেশ কিছু নিয়ন্ত্রের মধ্যে চলে আসছে।অপরদিকে এই মাসও শেষ হওয়ার পথে।তারমানে এই মাসে হয়তো আর কোন উপজাতি মেয়ে ধর্ষন কিংবা খুন হবেনা সবার ধারনা হচ্ছে।কারন প্রতিটা ধর্ষন এবং খুন হয়েছে প্রতি মাসের ১৫ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে।আজ মাসের ২৭ তারিখ।কিন্তু পুলিশের অতিরিক্ত টহল জুড়ালো ভাবেই চালানো হচ্ছে এই ঠান্ডা মাথার সিরিয়াল কিলারকে ধরার জন্য।


উপজাতি মেয়েদের খুনি এখনও নাগালের বাইরে!১১ মাসে ১১ খুন!


শহর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।বিশেষ করে উপজাতি পরিবারদের মাঝে।কে এই ১২ নম্বর?যাকে প্রথমে ধর্ষন অতঃপর খুন করে রাস্তায় ফেলে রাখা হবে?তাই শহরের বেশ কিছু উপজাতি পরিবারের উপর নজর রাখা হচ্ছে।কিন্তু সবার মনে একই ভীতি কাজ করছে ১২ নম্বর কি রেহাই পাবে নাকি বাকীদের মত ১২ নম্বরকে ঘাতক মেরে আবারো সবার আড়ালে চলে গিয়ে একের পর এক ধর্ষন অতঃপর খুন করে যাবে।


অপরদিকে খুনীরো একই চিন্তা আর একজনকে ফেলে দিতে পারলেই হবে।কিন্তু কাজটা খুবই কঠিন হয়ে গেছে প্রশাসন,মিডিয়া এবং জনসাধারনের উত্তেজনার কারনে।কিন্তু খুনীকেও যে সবার আড়ালে থেকেই ১২ নম্বরকে ফেলে দিতে হবে।তাছাড়া তার কাজ যে অসম্পূর্ন থেকে যাবে।তার অনেক কাজ বাকী থেকে যাবে যদি সে ১২ নম্বরকে খুন করতে না পারে।কিন্তু প্রতিটা খুনের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ওর কাছাকাছি চলে এসেছে।মনে হচ্ছে এবার সে ধরা পড়ে যাবে এবং তার গলায় রশিও পড়ে যাবে।খুব ভঁয়েই আছে খুনী।ধরা পড়ার সম্ভাবনা বাড়ছে দিনকে দিন।কিন্তু তার কাজ এখনো অসমাপ্ত রয়ে গেছে।


পত্রিকাগুলো যেভাবে লিখছে,কিন্তু কাজ গুলো তত সহজ নয়।কেউই বুঝতে চাইছেনা যে কাজ শিকার গুলা ঠিকই ছিল।প্রত্যেকের উপর নজর রাখা হচ্ছে।সবাই এখন বেশ সতর্ক।পুলিশ সবসময় কড়া পাহারা দিচ্ছে।আবার অনেক উপজাতি মেয়েই বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না।ওরা কোথায় থাকে এটা বের করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।অনেকের উপর দিনরাত নজর রাখা হচ্ছে।ও সবই জানে।সব সম্ভাবনা পরখ করেও দেখেছে,কিন্তু কাওকে কাছে পাবার আশা নাই।


রেকর্ড ভাঙ্গার জন্য আরেকজন দরকার।পত্রিকাগুলোর আজকাল হেড লাইনগুলা যেন এই খুনের পিছনে পরে আছে তা প্রথম পৃষ্টার রহস্যমুলক হেড লাইন দেখেই বুঝা যায়।


উপজাতিদের খুনি এখনো নাগালের বাইরে!


১১ মাসে ১১ খুন!


শহড়জুড়ে উপজাতিদের মনে আতংক!


খুনি এখনও নাগালের বাইরে!


১২ নম্বর কে?


কে এই সিরিয়াল কিলার?


প্রতি মাসে একজন উপজাতি।ব্যপারটা তত সহজ না।দীর্ঘ ১১ মাস ধরে ১১ টা খুন।সপ্তাহ খানেক আগে কাজটা ছেড়ে দিতে চেয়েছিল ও।আশংকা করেছিল ধরা পরে যাবে।কিন্তু তার কাজ যে এখনো অসম্পুর্ন রয়ে যাবে।তাই ছেড়ে দিতে চেয়েও ছেড়ে দিতে পারলো না।বিশেষ করে টিভি আর পত্রিকাগুলা ওর অপকর্মের কথা ফলাও করে প্রচার করা হয়।বলা হয়,উপজাতি খুন করা শ্রেষ্ঠ ঠান্ডা মাথার শ্রেষ্ঠ সিরিয়াল কিলার।কিন্তু সে এই কথা গুলো কিছুতেই উপেক্ষা করতে পারতেছিল না।


আজই ১২তম মাসের শেষ রাত।আজ রাতের মাঝেই তাকে ফেলে দিয়ে তার কাজ শেষ করতে হবে।কিন্তু আজ তার মনে প্রচুর ভয়ের সঞ্চার করছে।কেন জানি মনে হচ্ছে সে আজ তার কাজ সম্পন্ন করতে পারবেনা।কিন্তু সে তার সিদ্ধান্তে দৃঢ় বিশ্বাস যে সে পারবে।কিন্তু কে জানে তার শেষ অবধি কি হয় এবং কি তার পরিস্থিতি?


একজন উপজাতি মেয়েকে খুজে পেয়েছে গত দুই দিন আগে।কিন্তু গতকালই সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করে নেক্সট টার্গেট এই মেয়েই।গত কাল রাতেই তার বাসার ঠিকানা,কোন বিল্ডিংয়ের,কত তলার,কয় নম্বর রুমের কত নম্বর রুমে থাকে।আজ রাতেই সেই মেয়েটির শেষ রাত হবে।মেয়েটি স্থানীয় এক এমপির বাসায় ভাড়ায় থাকে এবং একটা তিন তারা হোটেলের ড্যান্স ক্লাবে বিভিন্ন ভিআইপি লোকদের সাথে ড্যান্স করে।রাত ১১ টা বেজে ৭ মিনিট,কিন্তু মেয়েটা এখনো বের হচ্ছে না কেন জানি!অবশেষে মেয়ের দেখা পেল শিকারি রাত ১১ টা বেজে ২৫ মিনিটে।হোটেল থেকে বেরিয়ে বাসায় যাওয়ার জন্য এদিক ওদিক তাকাচ্ছিল রিকশার করার জন্য।কিন্তু রাত একটু বেশী হওয়া এবং বৃষ্টির কারনে কোন রিকশা পাওয়া গেলনা।তাই বাধ্য হয়েই হেটে পাড়ি দিতে হবে মেয়ের বাসায়।রিকশার জন্য কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে মেয়েটি রাস্তা হাটা শুরু করে দিল।কিলার এবার তার পিছু নিল এবং তাকে ফলো করতে শুরু করলো।কিন্তু মেয়েটি বুঝতে পারছিল হয়তো কেও তাকে ফলো করছে।তাই সে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায় এবং পিছনে তাকায়।কিন্তু অমনি সিরিয়াল কিলার একটা দাঁড়ানো গাড়ির পিছনে নিজেকে লুকিয়ে ফেলে।পিছনে কাওকে দেখতে পায় না।তাই আবার সে তার পথ চলতে থাকলো।ল্যাম্পপোষ্টের আলোয়। অবশেষে মেয়েটির বাসায় এসে পৌছল।বাড়িটা ১২ তলা।মেয়েটা থাকে ৭ তলায়,ফ্ল্যাট নম্বর ৬/এ।খুব দ্রুততার সঙ্গে ও এসে পাশে দাঁড়ালো।


মেয়েটা চমকে ওঠে প্রায় লাফ দিল।


ওহ,হাই,আমি দুঃখিত।বুঝতে পারছিনা চাবিটা যে কোথায় রাখলাম......


মেয়েটা ঘুরে দাড়িয়ে তার আপাদমস্তক জরিপ করল।


ও ভাবল,কোথাও ভুল হলো কিনা?


নাহ,মেয়েটা ওর জন্য দরজা মেলে দিয়ে হাসল।


ও হাসল।ব্যপারটা বেশ ওর পছন্দ হয়েছে।


আপনি নিশ্চয় ৭-বিতে থাকেন?


হ্যাঁ,জনসন।চাবিটা খুজে পাচ্ছি না!


দুজনে ভিতরে প্রবেশ করল।লিফটের ভিতরে এগিয়ে গেল। মেয়েটি ৬ লিখা বোতাম চাপল।ওপরদিকে সে ৭ লিখা বোতাম চাপল।


মেয়েটা একটু এবার রিলাক্সবোধ করলো।


অদ্ভুত এক অনুভুতি হচ্ছে ওর।চুপ চাপ দাঁড়িয়ে আছে।আর আড়চোখে মাঝে মাঝে মেয়েটাকে দেখছে।মেয়েটা ওর দিকে তাকিয়ে হাসল।


উত্তরে ও-ও হাসল।


৭ তলার দরজা খুলে গেল।মেয়েটি লিফট থেকে নেমে নিজের ফ্ল্যাটের সামনে চলে গিয়ে দরজার রুমে চাবি ঢুকাচ্ছে।তারপর মেয়েটি দরজা খুলে দরজা একটু ফাক করল।কিন্তু লিফটের দরজা বন্ধ হওয়ার আগে নেমেই কিলার অ্যাকশনে নেমে গেল।এবং মেয়েটিকে ধাক্কা দিকে রুমের ভিতরে নিয়ে গেল।ওকে মেঝেতে ফেলে দিল এবং দরজা বন্ধ করে দিল।যাতে মেয়েটি পালাতে না পারে।


তারপর মেয়েটির দিকে কামুক চোখে তাকাল।মেয়েটির রুপউজ্জল যৌবন দেখে উত্তেজনায় নিজেকে স্পর্শ করল।কিন্তু এরই মাঝে ফ্ল্যাটের ভিতরে থাকা তিন জন যুবক এসে ধরে ফেলে।ঘাতক তাকে মারার জন্য বকতে থাকে।


মেয়েটি ওঠে দাড়ালো।এবং তার চুল এবং মুখোশ খুলে ফেলে।আসলে যে মেয়েটির কথা বলতেছিলাম সে আসলে মেয়ে না সে একজন হিজড়া।ঘাতক চিৎকার করতে থাকে,আর বলতে থাকে তুই মিথ্যুক।আমি ওই ১১ জনের মত তোকেও খুন করতে চেয়েছিলাম।


মেয়েটি তাকে জিগায় কোন হে সেই ১১ টি মেয়ে?সেই ১১ টি উপজাতি পাহাড়ী এলাকা থেকে এসে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজে টাকা আয় করার জন্য ড্যান্স ক্লাবে,রেষ্টুরেন্ট,শপিং মলে,পার্লারে রাত ১১ টা/১২ টা পর্‍্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে টাকা ইনকাম করত তাদের কথাইতো বলতাছ?কি তাদের এমন দোষ যে,তাদের খুন করতে হলো তুমার?কি করেছিল তারা?তারাতো কোন অন্যায় কিছু করে নাই?


ঘাতক চুপ করে থাকল।তাকে পুলিশের কাছে দেওয়া হলো।তারপর তাকে রিমান্ডে নেওয়া হলো পুলিশি জিজ্ঞাসা বাদের জন্য।যখন তাকে বলা হল- কেন তাদের তুমি খুন করেছ?তার উত্তরে সে বলেছিল,কারন সে বিধর্মি।সে রাতকে রাত মনে না করে,আমদের সমাজকে কোন তুয়াক্কা না করে পর-পুরুষদের সামনে বিভিন্ন হোটেলে নাচে,গায় ফুর্তি করে,গভীর রাতে বাসায় আসে,পার্লারেতো নিজেরা সেজে থাকেই অন্যদিকে আবার মুসলিম মেয়েদের সাজিয়ে দিয়ে আমার ধর্মকে অপমান এবং অবমাননা দুটাই,করছে বিভিন্ন শপিং মলে এরা যে ভাবে সেজেগুজে থেকে ছেলের আকর্ষিত করে এতে যুব সমাজের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।এদের জন্যই আজ যুবসমাজ কিংবা মধ্যবয়সী পুরুষেরাও তাদের গা ঘেষে বিপথে পা বাড়াচ্ছে।যা আমাদের সমাজে নিষিদ্ধ।আর তাদের খুন করা ওয়াজিব বড় হুজুর বলেছেন।আর বিধর্মী মেয়েরা হলো গনিমতের মাল।আমার আরো অনেক কাজ বাকী আছে।আমি তাদের একে একে সবগুলাকে শেষ করে দিতে চাইছিলাম।আমি না পারলেও আমার ভাইয়েরা তাদের ছাড়বে না............।।

নারীবাদী নাকি পুরুষবিদ্বেষী



তোমাদের নারীবাদী নাকি পুরুষবিদ্বেষী বলব বুঝে উঠতে পারতেছিনা!আসলে আমার সাথে বেশ কজন নারীবাদী অনলাইন এক্টিভিষ্টের সাথে পরিচয় হইছে।তারা অনলাইনের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুক কিংবা বিভিন্ন ব্লগেও নারীঅধিকার নিয়ে জোড়ালো আন্দোলন কিংবা লিখালিখি করে।আমিও তাদের লিখা নিয়মিত পড়ি,লাইক,কমেন্ট করি।তাদের মতের সাথে অনেক সময় ঘোর বিরুধীতা কিংবা সহমত পোষন করি।তবে তাদের মতের সাথে অনেক সময় নিজেকে মিলাতে পারি না,তাই হয়তো বিরুধীতাটাই বেশী করি।কারণ তাদের লিখা বা বলার ধরন এমনি যে,তারা আসলে নারীবাদী বা নারী অধিকার নিয়ে লিখালিখি করে না।আসলে তারা যা লিখে বা বুঝাতে চায় তা সরাসরি প্রতিটা পুরুষকে আঘাত করে কিংবা পশুর থেকেও ছোট করে ঘৃণ্য প্রানী হিসাবে দেখে পুরুষদের।তাদের কথা এমন যে,দুনিয়ার প্রতিটা পুরুষ বলতেই কুৎসিত নোংরা মনের অধিকারী,প্রতিটা পুরুষই নারী নির্যাতনকারী কিংবা ধর্ষক অথবা দুনিয়ার কোন পুরুষই কারো বাবা,ভাই,স্বামী,সন্তান,প্রেমিক কিংবা বন্ধু হওয়ার অধিকার রাখে না ইত্যাদি ইত্যাদি.........।


আপনারা আসলে,নারীবাদী নাকি পুরুষবিদ্বেষী তা বলার আগে আমাদের সবার আগে যেটা জানা দরকার তা হলো নারীবাদী এবং পুরুষবিদ্বেষী কি?আমি জানিনা কাকে নারীবাদী বা কাকে পুরুষবিদ্বেষী বলে?আমি শুধু জানি আমরা সবাই মানুষবাদী বা মানবতাবাদী।তারপরেও এই দুইটার মধ্যে যদি আমি বা আপনারা আগে ঠিক পার্থক্যটা না বুঝে উঠতে পারেন তাহলে তারা যে আসলে কি,তাও আমার কিংবা আপনাদের নির্ধারণ করা বেশ কঠিন হয়ে যাবে।তাই আগে নারীবাদী এবং পুরুষবিদ্বেষী সম্পর্কে হালকার উপর ঝাপসা একটু ধারণা নেওয়া যাক কেমন?


নারীবাদীঃনারীবাদী বলতে আমি যেটা বুঝি তাহলো,নারীদের অধিকার আদায়,নারী পুরুষের মাঝে থাকবেনা কোন রকম বিবেদ(সমতা অর্জন),সামাজিক,অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক,সাংস্কৃতিক সকল ক্ষেত্রে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও সমভাবে অংশগ্রহন কিংবা সমতালে নারী-পুরুষ একই সাথে সমস্ত কার্যক্ষেত্রে একে অপরের সহযোগী হয়ে পথ চলা।এক কথায় লিঙ্গ বৈষম্য বলে যে,একটা কথা আছে তা না মেনে স্বাধীনভাবে নারীপুরুষ একত্রিত হয়ে একে অপরের উপর হাত রেখে সকল প্রকার অপবাদ কিংবা বৈষম্যকে রুখে দেওয়া।নারীকে কোন অবলা কিংবা শুধু গৃহকর্মী করে আবদ্ধ না করে তার মতামতকে পুরুষের পাশাপাশি সমান ভাবে গ্রাহ্য করা।আর নারীদের উপরোক্ত বিষয় নিয়ে যারা লিখালিখি কিংবা আন্দোলন করে তাদেরই এককথায় নারীবাদী বলা হয়।অর্থাৎ যারা পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের সমঅধিকার নিয়ে কথা বলে তাদেরই নারীবাদী বলা হয়।নারীবাদী কোন নারী না শুধু যেকোন পুরুষও নারীবাদী হতে পারে।যদি সে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে নারীর সমধিকার নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করে তবেই।তাই এ নিয়ে কোন চিন্তা করার দরকার নাই যে,নারীবাদী কেবলই নারী ব্যতীত পুরুষ হতে পারবে না।


পুরুষবিদ্বেষীঃপুরুষবিদ্বেষী বলতে এককথায় নারীর বিপরীতে পুরুষকে ঘৃণ্য প্রানী কিংবা সমাজের জঞ্জাল কোন অতিরিক্ত বস্তু অথবা প্রানী যাই বলেন না কেন,মানে অস্তিতহীনতা ভেবে বিভিন্ন ভাবে দুনিয়ার সকল পুরুষকে এককাতারে দাঁড় করিয়ে অবহেলা,ঘৃণা,ছোট বা সমাজের কুৎসিত কিছু করে দেখা।যেখানে সমাজের হর্তাকর্তা নারী থাকবে,সমাজের সব অধিকার নারীদের উপর বর্তাবে,পুরুষদের বৈষম্য করে দেখা হবে,সমাজের নানা কারণ-অকারণ ছাড়াই অযথা যে কোন দোষ পুরুষদের উপর অযৌক্তিক ভাবে চাপিয়ে দেওয়া এবং পুরুষদের যে কোন কারণে তিরষ্কার করে কথা বলা বা অধিকার বন্টনে পুরুষদের হেস্তনেস্ত ইত্যাদি করাই হলো পুরুষবিদ্বেষী কার্যকলাপ।আর এই সকল বিষয়ের সাথে যে সকল লোক সংযুক্ত থেকে নারীদের কাজে সাহায্য-সহযোগীতা করে তাদেরই পুরুষবেদ্বেষী বলা হয়।


এখন আমরা নারীবাদী এবং পুরুষবিদ্বেষী সম্পর্কে বেশ কিছু হলেও ধারণা পেয়েছি।যা আমাদের সাহায্য করবে ওরা আসলে নারীবাদী নাকি পুরুষবিদ্বেষী নির্ধারনে।তাই আর কথা না বাড়িয়ে মুল কথায় চলে যাই-

আমার সাথে যতগুলা নারীবাদী নারীর সাথে পরিচয় হয়েছে এবং অন্য যাদের মুখে বিভিন্ন নারীবাদীর কথা শুনি তারা সবাই নারীবাদীদের উদ্দ্যেশে বলে এবং আমারও একটা কমন কথা যে,নারীবাদী মানে কি পুরুষকে ঘৃণার চোখে দেখে দুনিয়ার সকল পুরুষকে একই পাল্লায় পাল্লায়িত করা।দোষ করবে একজন পুরুষ আর সবাই এই দোষের ভাগী হবে দুনিয়ার সকল পুরুষ তা না কিন্তু!কিন্তু আমাদের নারীবাদীরা তাই করতাছে,একজন পুরুষের দোষে দুনিয়ার সকল পুরুষ জাতিকে ঢালাও ভাবে সকালে ঘুম থেকে উঠা শুরু করে রাতে চোখ বুঝে শান্তিতে নিঃশ্বাস ছেড়ে ঘুমের রাজ্যে চলে যাওয়ার পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত।পারলে হয়তো ঘুমের মাঝেও নারীবাদীর নামে পুরুষবিদ্বেষী আন্দোলন করে যেত।আর এই সকল নারীবাদীদের ভাব খানা এমন যেন,দুনিয়ার সকল নারী পুরুষদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে রাত দিন ২৪ ঘন্টা।কিন্তু এর মধ্যে কোন নারী ব্যতীত কোন পুরুষ নির্যাতনের বিরোধীতা কিংবা নারীর সমঅধিকার নিয়ে কোন কথা বা প্রতিবাদ করে না।যদি কোন পুরুষ নারীদের সমধিকার নিয়ে কথা বলে তবে ওই একজনের জন্যই দুনিয়ার সকল পুরুষকে এক পাল্লায় পাল্লায়িত করা যাবে না।অপরদিকে আমি এটাও বলব না যে,আজ পর্যন্ত আমাদের দেশে নারীদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে কিংবা নারীরা ধর্ষিত,শোষিত কিংবা নির্যাতিত হচ্ছে না।বরং আমি এটাই বলব নারীরা আমাদের দেশে পুরুষ শাষিত সমাজে অনেক নারী বলি হচ্ছে পুরুষের হাতে বিভিন্ন কারণ অকারণে।কারণ আমাদের সমাজটা বেশ যুগের পর যুগ পুরুষ শাষিত সমাজ বলেই চলে আসছে।এই পুরুষ শাষিত সমাজে এতো সহজে কিংবা রাতারাতি বদলে নারী-পুরুষের মাঝে সমাধিকার বন্টন হবে না।এ জন্য নারীবাদীদের যথার্থ উপায়ে যথার্থ কথা কিংবা আন্দোলণের পথ বেছে নিয়ে ধীরে ধীরে আঘাতে হবে।কিন্তু আমাদের নারীবাদীরা রাতারাতি পরিবর্তন চায়।যেন তারা হাতে আলাউদ্দিনের কোন চেরাক পাইছে যে,মনের আশা সে চেরাকের সামনে উপস্থাপন করবে আর সাথে সাথে সব পরিবর্তন হয়ে যাবে।নারীবাদীরা এটা বুঝতে চায় না যে,হঠাৎ করেই আমাদের সমাজ ব্যবস্থা পুরুষ শাষিত হয়ে চলা শুরু করছে না।বরং তা বহু বছর আগ থেকেই চলে আসছে এবং তার মধ্যে আছে ধর্ম নামে কালপিটের নারীদের শোষন করা নিয়ে এবং পুরুষে ছায়াতলে নারীকে যেভাবে রাখা হবে সে ভাবেই থাকতে হবে তারও অনেক কৌশল বর্নণা করা হইছে বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থে।সেহেতু এসব বাধা বিপত্তি রাতারাতি সংশোধন করে ফেলা যাবে না।কিন্তু আমাদের নারীবাদীরা তাই চাচ্ছে যে,রাতারাতি সবকিছু কেন পরিবর্তন হচ্ছে না!লেবু যেমন বেশী চিপলে তিতা হয়ে যায় আজ তেমনি নারীবাদীরা বিভিন্ন জন কিংবা বিভিন্ন উগ্রনারীবাদী নামে পুরুষবিদ্বেষী কার্যকলাপের জন্য তিতা হয়ে যাচ্ছে জনসাধারণের নিকট।অপরদিকে এই নারীবাদীরা এই চিন্তা করে না যে,আমাদের সমাজে নারীরা এখন অনেক ক্ষেত্রেই তাদের সমাধিকার এবং অনেক ক্ষেত্রে ছেলেদের থেকেও বেশী অধিকার ভোগ করছে।আর নারীরা আজ বিভিন্ন জায়গা কিংবা প্রতিষ্ঠানে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও কাজ করে তাদের সমাধিকার আদায় করে নিচ্ছে।তা আমরা আজ দৈন্দিন জীবনে বেশ ভালোভাবেই খেয়াল করছি।


পরিশেষে আমি এই বলব যে,তুমি নারীবাদী হও,পুরুষবাদী যাই হও না কেন,তার আগে তোমার মানবতাবাদী হতে হবে।তাছাড়া তোমার মাঝে বৈষম্যতা নিজের অজান্তেই চলে আসবে এবং তোমার কার্যকলাপগুলো বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই উস্কানিমূলক হয়ে যাবে।কারণ তোমরা যারা নিজেদের নারীবাদী বলে দাবী করো তারা কিন্তু পুরুষ শাষিত সমাজ ভেঙ্গে নারী-পুরুষের সমধিকার বন্টনে কাজ করতে চাচ্ছ।কিন্তু তোমাদের কথা বার্তায় তা পুঙ্খানোপুঙ্খ ভাবে তা পুরুষবিদ্বেষী বৈষম্য মূলক আচরণ প্রকাশ হচ্ছে।কারণ নারীবাদীদের মতে,পুরুষ মানেই ধর্ষণকারী,নারী নির্যাতনকারী ইত্যাদি ইত্যাদি।আর তার মানে প্রতিটা পুরুষ আপনাদের কাছে পশু সমতুল্য।কিন্তু এই পুরুষদের মাঝে কিন্তু আপনার বাবা,ভাই,স্বামী,সন্তান,প্রেমিক কিংবা বন্ধুও হতে পারে।আর আপনাকে আজ যে বাবা তার মাথার ঘাম পায়ে ফেলে গায়ের রক্ত পানি করে টাকা উপার্জন করে আপনাকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে পারছে,এবং আজ আপনি যার কারণে শিক্ষিত হয়ে নারীবাদী হয়ে উঠেছেন,নারীদের সমাধিকার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে পুরুষদের অপমান করছেন সেই সারিতে কিন্তু আপনার বাবাও পরছে সে কোন অপরাদি না হয়েও।সেহেতু একটা কথা নারীবাদীরা মনে রাখবেন যে,নারী নির্যাতনকারী কিংবা ধর্ষকের কোন জাত নাই,আর সকল পুরুষই ধর্ষক বা নারী নির্যাতনকারী না।তাদের মধ্যে আপনার বাবা,ভাই,সন্তান,স্বামী,প্রেমিক কিংবা আপনার কাছের বিশ্বাসী ভালো এবং সৎ বন্ধুও লুকিয়ে থাকতে পারে।আর আজকাল অনেক শিক্ষিত সচেতন পুরুষও কিন্তু নারীবাদী এবং নারীদের সমাধিকারের সমর্থিত।সেহেতু আপনাদের নারীবাদীর নামে পুরুষবিদ্বেষী হওয়ার কোন মানেই হয় না।তাই দয়া করে আপনাদের চিন্তাধারাকে পরিবর্তন করুন যদি আপনি সত্যি নারী-পুরুষের মাঝে যে বৈষম্যতা মূলক হিংস্রতা তা দূর করতে চান।


অ.টঃপ্রতিটা নারীবাদীদের মাঝে পুরুষবিদ্বেষী ভাব অপ্রিয় সত্য হলেও খুব জোড়ালো ভাবে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে লক্ষ্য করা যায়।