শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৫

নারী নির্যাতন কিংবা ধর্ষণ ছিল,আছে এবং থাকবে

নারী নির্যাতন,ধর্ষণ,খুন,শিশু নির্যাতন,রাহাজানি,সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর লুটপাট,আগুন,মন্দির,মূর্তি,গির্জা,প্যাগোডা ভাংচুর ইত্যাদি ইত্যাদি অপরাধ যেন আজ আমাদের খবরের কাগজ কিংবা অনলাইন নিউজ পোর্টাল অথবা টিভির পর্দার নিচ দিয়ে ভেসে চলা হাইলাইট যেন আমাদের জীবনের একান্ত সঙ্গী।এগুলার মধ্যে নারী নির্যাতন,ধর্ষণ,ধর্ষণ অতঃপর খুন করে ফেলে রেখে গেছে দূর্বৃত্তরা।এনিয়ে আমরা কিছুদিন সুশীলতা,লিখালিখি করে প্রতিবাদ,টিভিতে টক শো করবে চেতনাময়ী বুদ্ধিজীবীরা,আবার অনেকেই নির্যাতিত মেয়ের পক্ষ হয়ে যোগ দিবে মানব বন্ধনে ধর্ষকদের সনাক্ত করন করে শাস্তির দাবিতে।অনেক সময় অপরাধীদের প্রশাসনের আওতায় আনা হয়।কিন্তু তাদের কি শাস্তি দেওয়া হয় বা দেওয়া হয় কিনা তা আমাদের আদৌ জানা নেই।হয়তো তারা ক্ষমতাবান লোকের দ্বারা জামিনে বের হয়ে যায় অতঃপর একই ঘৃণ্য অপরাধে জড়িত হয়ে পরে আবার ।মানুষ নামের এই নরপশু গুলা যেন হায়েনা হয়ে উঠছে দিনদিন।একটার পর একটা মেয়ে নির্যাতনের শিকার,ধর্ষণের শিকার এবং কি খুনও করা হচ্ছে।এদিক দিয়ে আমাদের প্রশাসন গুলো যেমন নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।অন্যদিকে এই হায়েনারাও দিনদিন হিংস্র হয়ে উঠছে।


নারী নির্যাতন কিংবা ধর্ষণ ছিল,আছে এবং থাকবে যতদিন না পর্যন্ত নারী-পুরুষদের মাঝে সমাধিকার,বৈষম্য দূর,প্রশাসনের নীরব ভূমিকা পালন এবং যতদিন না পর্যন্ত নারীবাদীত্ব,নারীদের মাঝে ভয়ের ভীতি এবং যতদিন পর্যন্ত নারীরা পুরুষ শাসিত সমাজ ব্যবস্থাকে নিরবে সহ্য করে যাবে ততদিন পর্যন্ত নারীরা নির্যাতিত এবং নারীরা গৃহস্থলীর শুধুই গৃহিণী কিংবা নারীরা ভোগ্য পণ্যের মতই ব্যবহৃত হবে।এথেকে প্রতিকার পেতে হলে নারীকেই এর সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে এবং প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা বা সমাজের লোক চক্ষুর লজ্জার ভয় দূর করে সংগ্রাম করে আগাতে হবে।কিন্তু এ সংগ্রামের পথ এতোটা সহজ না।এরজন্য আপনি হত্যার হুমকিসহ নানা ধরনের অপবাদ নিয়ে এবং কি নির্বাসিতও হতে পারেন।অতীতের নানামূখী বিভিন্ন অবিজ্ঞতা থেকে তা হলফ করেই বলা যায়।অপরদিকে আবার আমাদের মত জনসাধারণেও নারী অধিকার কিংবা নারী নির্যাতন,ধর্ষণের ক্ষেত্রেই নীরব ভূমিকা পালন করে বেশ কিছু নারীবাদী এবং নারী অধিকার নিয়ে কথা বলে এমন কিছু প্রতিষ্ঠান বা এনজিও ব্যতীত।এ নিয়ে আমাদের একেবারে ঘা ঝাড়া অবস্থান জনসাধারণের কাছে।যার কারনেই অপরাধীরা একের পর এক নারীদের উপর নির্যাতিত হয়েই যাচ্ছে।কারণ আমরা ধরেই নিয়েছি নারীরা পুরুষদের ভোগ্য পণ্য।তাদের যেভাবে পুরুষ চালাবে সে ভাবেই চলতে হবে।তারমধ্যে আছে আবার ধর্মের নামে বিভিন্ন ফতোয়া নারীদের উপর জারি করা।তাইতো নারী জাগরণের অগ্রদূত মহীয়সী কবি বেগম রোকেয়া বলেছিলেন-“আমাদিগকে অন্ধকারে রাখিবার জন্য পুরুষগণ ঐ ধর্মগ্রন্থগুলিকে ঈশ্বরের আদেশপত্র বলিয়া প্রচার করিতেছে।“তবে এটাও অপ্রিয় হলেও সত্য যে,এই পুরুষ শাসিত সমাজে এতো সহজে নারীরা সমান ভাবে সহজেই পথ চলতে পারবেনা।এর জন্য তাদের বহু সংগ্রাম এবং ধৈর্যের পথ পাড়ি দিতে হবে এবং নানা ভাবে হেস্তনেস্ত হতে হবে।এমনকি বিভিন্ন জাগায় পুরুষের পাশাপাশি নারীরা সমান ভাবে মূল্যায়িত হবে না বলে থেমে যাওয়া যাবে না।


আজ নারীরা সবথেকে বেশী অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে ইভটিজিং এবং ধর্ষনের ভয়ে।ধর্ষন ছিল,আছে এবং থাকবে।যত দিন নারী পুরুষ এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে বিচরণ করবে তত দিন ধর্ষণ থাকবে।ছেলে-মেয়েরা একে অপরের প্রেমে পরবে এটাই স্বাভাবিক।কিন্তু মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে নরপশুরা তার নিজ প্রেমিকাকে নিয়ে ২/৩/৫/৭ যত জন ইচ্ছা মেয়েটিকে ধর্ষণ করে এবং কি নিজের ঘরের বউকেও অন্য পরপুরুষ নিয়ে স্বামী তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে,অনেক সময় মেরে ফেলে দেয় ঝুপ-ঝাড়,নর্দমা,ডোবা বা নদীতে বা রাস্তায় আবার।অনেক সময় আধা মরা করে ফেলে দেয় রাস্তায়।আবার দেখা যায় মেয়েটি হয়তো তার দীর্ঘ দিনের পরিচিত বা বিশ্বস্ত রাস্তা,বা গাড়ি বা পুরুষদের পাশ দিয়েই যাতায়াত করে সেখান থেকে সে ধর্ষিত হয়।আবার দীর্ঘ দিনের বন্ধুদের সাথে হয়তো কোথাও গেল সেখানে।আর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্লে স্কুল,মাদ্রাসা এসবের শিক্ষকের কথা কি বলবো?আর বাচ্চারা ও তাদের বিশ্বস্ত নিকট আত্মীয়ের সাথেই যায় কোথাও আর ফিরে আসে ধর্ষিত লাশ হয়ে বা গুম বা মুমূর্ষু অবস্থায়।এসব তো গেলো সরব ধর্ষণের কথা।আর নীরব ধর্ষণ! এটা নারীরা ও বোঝে না সে ধর্ষিত হচ্ছে।।সেহেতু হলফ করেই বলা যায়,অদূর ভবিষ্যৎ পর্যন্ত নারীরা পুরুষের কাছে নির্যাতিত হয়েই চলবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন